বেলাশেষে part_1
#adrin_anisha
একটা চিঠি যে কতটা ভয়ংকর হতে পারে তা আজ বুঝতে পারছে মেঘা। ফাহিনের দেয়া শেষ চিঠিটা হাতে নিয়ে কাঁদছে মেঘা। ভাবছে, আর কি সত্যিই কখনো দেখতে পাবে না সে তার ফাহিন কে?
পাশে বিয়ের কনে সেজে বসে আছে মেঘার বেস্ট ফ্রেন্ড সুভা , মেঘাকে নানান ভাবে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছে সে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছেনা। কেও ই ভাবে নি এমন একটা শুভ দিনে এমন একটা ভয়ংকর ঘটনা ঘটে যাবে। কিছুক্ষন আগেও তো সব ঠিক ছিল। একা হাতে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড এর বিয়ের সব কাজ করছিল মেঘা। একটা মাত্র চিঠি কিভাবে পারে সবকিছু এতো তাড়াতাড়ি এলোমেলো করে দিতে?
.
.
২ বছর আগে….
.
.
.
(সকালের সূর্যের আলো এসে পড়ল সুভার মুখের ওপর। চোখ মুছতে মুছতে উঠে দেখল মেঘা এখনো ঘুমিয়ে আছে।)
– কিরে মেঘা উঠবি কখন? কয়টা বাজে খেয়াল আছে? ভার্সিটিতে তো যেতে হবে না তাই না? ( মেঘাকে ধাক্কা দিতে দিতে বলল সুভা)
– হুম। উঠছি তো। তুই যা তো। ( ঘুমের মধ্যেই বিড়বিড় করে বলল মেঘা)
– না। আগে উঠ তুই। তারাতাড়ি উঠে পড়। তারপর আমি যাব। আর আমি কি একা যাব নাকি তোকেও তো যেতে হবে তাই না। আজ ভার্সিটির প্রথম দিন বলে কথা…
– উফফ। তুই কোনোদিন ও আমাকে ভালো করে ঘুমাতে দিস না কেন বলতো? জ্বালিয়ে মারছিস আমাকে। ( কম্বল দিয়ে মাথা ঢেকে বলল মেঘা, কিন্তু সুভা আবার টান দিয়ে সেই কম্বল খুলে দিল)
– আরও অনেক বেশি জ্বালাবো। উঠ তো তাড়াতাড়ি।
– উফফ। কে যে বলেছিল তোর সাথে বন্ধুত্ব করতে? তুই না থাকলেই আমি সুখে থাকতাম।
(বিরক্তি ভাব নিয়ে সুভার দিকে তাকিয়ে বলল মেঘা। আর সুভার ও কিছুটা মন খারাপ হয়ে গেল)
– হ্যাঁ। তা তো থাকবিই।
– থাকবই তো। তোর জন্য আমাকে কত কষ্ট করতে হয় জানিস। (মেঘা)
– আমার জন্য মানে। আমি কি করলাম? (চোখ বড় বড় করে জিজ্ঞেস করল সুভা, আর অমনি ফিক করে হেসে দিল মেঘা)
– এই যে কথায় কথায় এত রাগ করিস। আর আমার কষ্ট করে রাগ ভাঙাতে হয়।
– আমি কি রাগ করেছি নাকি? (মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে বলল সুভা)
– নাহ। রাগ তো আমি করেছি তাই না? তাই তো তোর মুখ টা ফুলে আছে তাই না?
– কই না তো।
– তাই নাকি। দেখি তো।
( সুভা কে সুরসুরি দিতে লাগলো)
– এই ছাড়, ছাড় বলছি। কি করছিস। আচ্ছা ঠিক আছে আমি আর রাগ করব না।। প্লিজ ছাড়।
.
(মেঘা ছেড়ে দিল)
.
উফফ। তুই পারিস ও বটে। ১ মিনিট ও লাগে না আমার মন ভাল করতে তাই না? – সুভা
.
.
.
মেঘা আর সুভা ছোটবেলা থেকেই একসাথে বড় হয়েছে। এভাবেই হাসিখুশি, রাগ অভিমান এ কাটে ওদের সময়। দুজনেই এবার উচ্চ মাধ্যমিক পড়ছে।ভার্সিটি বাসা থেকে দূরে হওয়ায়, একটা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। মেঘা ঠিক যতটা চঞ্চল, সুভা ঠিক ততোটাই শান্ত। বলা যায় সুভাই মেঘার অভিভাবক। ছোটবেলায় মেঘার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই সুভা তার সব সুখ দুঃখের সাথী। মেঘা তার বাবার মৃত্যু টা সহ্য করতে পারেনি। তখন সুভাই ওকে সামলেছে। আর এখনো মেঘা কে দেখাশুনা করার সমস্ত দায়িত্ব সুভাকেই দিয়েছে মেঘার মা হোসনা বেগম।
.
.
আজ ভার্সিটির প্রথম দিন। মেঘা আর সুভা দুজনই একই ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে। ক্লাসে বসে মনোযোগ দিয়ে ক্লাস করছিল। প্রথমের সবাই পরিচয় নেয়া হচ্ছিল। সুভাকে স্যার পরিচয় জিজ্ঞেস করলে সে দাঁড়ায় কিন্তু কিন্তু কিছু বলার আগেই দরজায় কারো শব্দ পায়।
.
.
.
চলবে….
.
( বুঝতে পারছি না শুরুটা কেমন হয়েছে? তবে কোনো গল্পেরই প্রথম পর্বে, গল্পটা কেমন হবে তা বোঝা যায় না। তাই আশা করি, গঠন মূলক কমেন্ট করে জানাবেন, গল্পটা কেমন হয়েছে?)