গল্পঃ #বেড়াজাল
লেখিকা: #চন্দ্রাবতী
পর্ব – #২৭
চোখের পলকে যেন তিনদিন কেটে গেল। এই তিনদিনে কেউ কারোর সাথে কথা বলার পর্যন্ত সময় পায়নি। সিয়ামের অফিসে চাপ বেড়েছে তাই সিরাজের ঘাড়ে ভীষণ চাপ পড়েছে। নইলে অফিসের ব্যাপারে সে বেশ খাপছাড়া স্বভাবের, খুব দরকার না পড়লে তাকে পাওয়া যায় না অফিসে।
সিয়ামকে এই বিষয়ে কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলেই সে বলে সিরাজ এখনও ছোটো মাথায় চাপ পড়লে সে নিজে থেকেই কাজে মন দেবে। আস্তে আস্তে যেনো তাই হচ্ছে।
ঐদিকে চন্দ্রাও সিনথিয়ার ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে চলেছে। আপাতত সে এইটুকু জানতে পেরেছে সিনথিয়া তাদের ক্যারাটে ক্লাসের থেকে কিছুটা দূরে কোচিং ক্লাসে যায়। চন্দ্রা পরের পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সিয়ামের সাথে একবার কথা বলতে চায়। কিন্তু লোকটার সময় কোথায়..? সেই সকালে বেরোয় দুপুরে একটু বাড়ি আসে আবার অফিসে গেলে বাড়ি আসতে আসতে অনেক রাত হয়।
চন্দ্রার সাথে দেখাই হয় না। কারন চন্দ্রা বেরোয় বেলার দিকে আর বাড়ি ফেরে সন্ধ্যার দিকে। এতসবের পরেও সিয়ামের কড়া নির্দেশ সে যেনো অপেক্ষা না করে রাতে তার জন্য চুপ চাপ খেয়ে যেনো শুয়ে পড়ে। চন্দ্রাও সিয়ামের অবাধ্য হয় না।
.
.
.
কিন্তু আজ এক বিশেষ কারণে সবাই বাড়িতে। সেই বিশেষ কারণটা হল আজ অপূর্বের বাড়ি থেকে সিয়াকে দেখতে আসবে।
সকাল থেকেই তাই চন্দ্রা আর ইন্দ্রা ব্যাস্ত রান্নাঘরে। চার পাঁচটা সার্ভেন্ট থাকলেও সিয়া সিরাজ সিয়াম এখন মোটেই রান্নার বুয়াদের হাতের রান্না খেতে চায় না। তাই খুব অসুবিধা ছাড়া চন্দ্রা রান্না বন্ধ দেয় না। চন্দ্রার শরীর খারাপের সময়টা পুরোটাই ইন্দ্রা এখানে থেকে তার সাহায্য করে একা হাতে সামলেছে। ইন্দ্রা পাক্কা গিন্নি একজন, সর্বগুণে সম্পন্না বললেও ভুল হবে না। তার হাতের কাজ থেকে হাতের রান্না সবই বেশ নিখুঁত। চন্দ্রা তার থেকে বেশ কিছু জিনিস রপ্ত করেছে।
মাঝে মাঝে তার ইন্দ্রার প্রাক্তনের কথা ভেবে খুব আপসোস হয়। এতো দামী হীরে সহজে পাওয়াতে তাকে কাঁচ ভেবে কেমন ভেঙে টুকরো টুকরো করেছে মানুষগুলো।
সিয়াম সিরাজ ছুটি নিয়ে বেলা ১১ টা অবধি বাড়িতে থাকলেও জরুরী কারণে দুইজনকেই যেতে হয়েছে অফিসে। তারা জানিয়েছে মেহমান আসার আগেই তারা চলে আসবে।
_________________________________________
১২:৩০ বাজতেই চন্দ্রা ইন্দ্রাকে তাড়া লাগলো সব গুছানোর জন্য মেহমানরা আসলো বলে। ইন্দ্রা বড়ো জিনিস গুলো গুছিয়ে ছোটো ছোটো জিনিস যেমন স্যালাড, মিষ্টি জাতীয় জিনিস সার্ভেন্টকে গোছাতে বলে দুজনেই চলে হলো স্নানে।
চন্দ্রা স্নান করে একটা হালকার উপর গোলাপি শাড়ি পরে নিল। গোলাপি রঙটা তাকে একটু বেশি মানায়। তাই সিয়াম কিছু আনলেই বেশিরভাগ গোলাপি রঙের জিনিসই আনে তার জন্য।
চন্দ্রা চুল ঝাড়তে ঝাড়তে তোয়ালে নিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়ালো। সদ্য শাড়ি পড়ায় গায়ের শাড়ি এলোমেলো।
টের পেলো না এই দৃশ্য একজনের শ্বাস প্রক্রিয়া ভীষণ ভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে।
চন্দ্রা কোমরের কাছে উন্মুক্ত অংশে কারোর হাতের ছোঁয়া পেলো। হালকা কেঁপে উঠলেও মুচকি হাসি দিল, আয়নায় দেখার দরকার পড়লো না মানুষটা কে। মানুষটার তার ভীষণ আপন তাই তার স্পর্শটাও তার ভীষণ চেনা।
সিয়াম এবার পিছন থেকে জড়িয়ে ঠোঁট ছোঁয়ালো চন্দ্রার পিঠের সদ্য স্নান সেরে আসা সাক্ষী বিন্দু বিন্দু জলকণায়।
চন্দ্রা এবার নিজের হাতটা শক্ত করে চেপে ধরলো নিজের পেটের কাছে সিয়ামের হাতের উপর।
চন্দ্রা বাঁধা দিচ্ছে না দেখে সিয়াম নিজেই হেসে একটু সরে গিয়ে বললো “রোম্যান্স টা পরের জন্য তুলে রাখলাম রাণী সাহেবা। হাতে এখন সময় নেই মেহমান আসলো বলে।”
চন্দ্রা এতক্ষনে চোখ খুললো। দীর্ঘ তিনদিন পর মানুষটার একটু স্পর্শ পেয়ে সে মোমের মত গলে গিয়েছিলো। আজ আর ইচ্ছে হচ্ছিল না সিয়ামকে বাঁধা দেওয়ার, সিয়াম না নিজেকে সংযত করলে আজ সত্যিই একটা অঘটন ঘটে যেত অসময়ে।
চন্দ্রা এবার লজ্জায় পালাবে বলে ঠিক করল, দরজার দিকে তাকাতেই সে দেখে দরজা ভেজানো। চন্দ্রা এবার চমকে তাকায় সিয়ামের দিকে সিয়াম দাঁড়িয়ে অফিস থেকে আসা শার্ট খুলছে, মূলত স্নানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
চন্দ্রা তাড়াতাড়ি গিয়ে দরজা দিতে গিয়ে দেখে হালকা একটা ছায়া সরে গেলো সেখান থেকে। চন্দ্রা তা দেখে চেঁচিয়ে বললো “কে ওখানে..? উত্তর দাও কে ওখানে..?”
সিয়াম অর্ধেক শার্ট খুলেই চন্দ্রার কাছে গিয়ে বলল “কি হয়েছে চন্দ্র এভাবে চেঁচাচ্ছ কেনো..?”
চন্দ্রা এবার তাড়াতাড়ি দরজা টায় ছিটকিনি লাগতে গিয়ে দেখলো সেটা লাগছে না। কারণ উদ্ধার করতে দরজার নিচে চোখ যেতেই চন্দ্রা দেখলো একটা ছোট্ট পাথর কিন্তু তার জন্যেই ছিটকিনি ঠিক করে লাগছে না। চন্দ্রা সেটাকে সরিয়ে রেগে সিয়ামের উদ্দেশ্যে বললো ” আপনি একটু দেখে শুনে কাজ করতে পারেন না। এক্ষুনি কেউ দেখে নইলে কি হতো বলুন তো..? বলছি কি দেখে নিল বোধহয়।”
সিয়াম চন্দ্রার চিন্তিত মুখ দেখে বললো “আরেহ চন্দ্র তুমি বেকার বেকার এতো চিন্তা করছো। আচ্ছা সরি, আমি একটু তাড়াহুড়োতে ছিটকিনিটা লাগতে গিয়েছিলাম তাই ওমন হয়েছে এর পিছনে আর কারণ নেই।”
এই বলেই সিয়াম বিছানায় রাখা পাঞ্জাবি নিয়ে স্নান করতে চলে গেলো।
চন্দ্রার মন খুঁতখুঁত করলো। সে যা সন্দেহ করে পরে গিয়ে তা ঠিক হয়। সে নিজেও চায় না ঠিক হোক কিন্তু হয়।
_____________________
সেরভেন্ট ইন্দ্রাকে এসে খবর দিলো মেহমানরা গেটের কাছে। ইন্দ্রা কোনমতে হালকা ক্রিম আর লিপবাম লাগিয়ে শাড়ি পরে তাড়াহুড়ো করে সিড়ি দিয়ে নামতে লাগলো সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে থাকা মানুষটিকে দেখতে গিয়ে, হুট করেই শাড়িতে পা আঁটকে খেই হারালো নিজের। দু তিন পা এলোমেলো পড়লো সিড়িতে তারপর নিজের শরীরের ভারে নিজের নিয়ন্ত্রণ না দেখে চোখ বুজে সামনের মানুষটির কাঁধ ঝাপটে ধরলো দুই হাতে। তার মুখটা গিয়ে ঠেকলো সেই মানুষটার গলায়।
সিরাজ হতভম্ব। সে ভাবেইনি ইন্দ্রা তাকে দেখে এভাবে টাল খেয়ে পড়ে যাবে। তার নিজেরই দুই পা দুই সিড়িতে উপর নীচ করে রাখা। হটাৎ ইন্দ্রাকে ওভাবে পড়তে দেখে সেও তার কোমর জড়িয়ে ধরেছে। কিন্তু এখন তার বুকের ধুকপুকানি যেনো বাইরে থেকে মানুষ শুনতে পাবে। কই সে কত মেয়ের কাছে গেছে এইরকম তো কোনোদিন ফিল হয়নি তবে কি এটা মনের অভ্যন্তরীণ অনুভুতি থেকে বলে..?
ইন্দ্রা এবার পিটপিট করে চোখ মেলল। তার বুক ভয়ে আগে থেকেই ধুকপুক করছে। সামনের মানুষটির দিকে চোখ তুলে চাইতেই দেখলো সিরাজ ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। ইন্দ্রা লজ্জায় মাথা নীচু করে নিলো।
সিরাজ ওভাবেই ধরে বললো “একটু আস্তে চলাফেরা করলে কি হয়..? কখনও হাত পুড়িয়ে ফেলো কখনো নিজে পরে যাও। আমি না থাকলে আজ কি হতো ভেবে দেখেছো..? পারো তো খালি আমার পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করতে।”
সত্যিই তাই অন্যসময় হলে ইন্দ্রা পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করতো এখন কিন্তু কোনো এক কারণে পারলো না এইমুহূর্তে।
কোনরকমে জড়তা নিয়ে বললো “অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এবার ছাড়ুন আমায়। মেহমান এলো বলে।”
সিরাজের খেয়াল ছিল না সে এতো কাছ থেকে ইন্দ্রাকে ধরে আছে ইন্দ্রা বলতেই সে ঝট করে তাকে ছেড়ে মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো “আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।”
ইন্দ্রা একটা হাঁফ ছেড়ে দৌড়ালো সিয়ার রুমে। তাকে রেডি থাকার কথা তো বলাই হয়নি।
____________________________________
অপূর্বের ফ্যামিলি থেকে এলো সে তার বাবা মা আর অপূর্বের বোন। তাদের ছোট্ট ফ্যামিলি। সিয়াম আগে থেকেই তাদের চিনতো তাই বেশি অসুবিধাও হয়নি। তাদের সাথে বেশ অনেক্ষণ কথা বললো সবাই। বেশ আময়িক তাদের আচরণ যেনো কতদিনের চেনা পরিচিত। সবার ভীষণ পছন্দ হলো সিয়ার শশুরবাড়ি।
এরই মধ্যে সুইটি বেগম নামলেন সবার দিকে নজর বোলালেন, নাহ্ তাদের দেখে বেশ উচ্চবিত্তই মনে হলো সুইটি বেগমের। তিনি নকল হাসি মুখে রেখে সবার সাথে পরিচিত হলেন। জানতে চাইলেন ছেলের পেশার ব্যাপারে।
অপূর্বের মা বাবা একটু অবাক হলেও তার মা বললো “ওর নাম শোনেননি আগে…? ওতো এখনকার বিখ্যাত সাইকিয়াটিস্ট। এখানে কেনো বিদেশেও তার বেশ নাম ডাক।”
সুইটি বেগম আর সিয়াম ছাড়া সবাই বেশ চমকালো। সবাই এতো সুন্দর করে মেশার পরেও কিনা তার পেশা জানতো না তারা..?
সুইটি বেগমের তেমন কোনো হেলদোল দেখা গেলো না। তিনি সরাসরি সিয়াকে পছন্দ হয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করলেন।
তারা সবাই জানালেন সিয়াকে তাদের ভীষন পছন্দ হয়েছে। এবং আগামী তিনদিনের ভিতর তিনি বিয়ে পরিয়ে দিতে চান ঘরোয়া ভাবে। তার ছেলে তাড়া লাগাচ্ছে। এই বলে অপূর্বের মা তার হাত থেকে দুটি বালা খুলে সিয়ার হাতে পড়িয়ে দিয়ে দোয়া করলেন। তারপর সবাই দুপুরের খাবার খেয়ে বিকেলের দিকে চলে গেলেন।
অপূর্ব খেয়াল করলো সিয়া তার পেশার কথা শোনার পর থেকেই কেমন থম মেরে রয়েছে। কারোর সাথে তেমন কথা না বলে অল্প সল্প খেয়ে নিজের ঘরে চলে গেল।
সবাই থাকায় অপূর্বও আর কিছু বললো না।
.
.
সিয়া একদৃষ্টিতে জানলার পাশে বসে আকাশ দেখতে লাগলো। সে এখন বুঝতে পারছে অপূর্ব কেনো তার সাথে যেচে যেচে বন্ধুত্ব করেছিল। তাকে এতোটা ট্রমা থেকে কিভাবে বের করে এনেছিল। সব নিশ্চই সিয়াম ভাইয়ের কথাতেই করেছিল।
আর সে তাকে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড ভেবে কিনা বিয়ের প্রস্তাব রাখলো। তার কাজই তো সবার সাথে এইভাবে মিশে তাদেরকে মানসিক অবসাদ থেকে বের করা। সিয়ার আর ভাবতে পারলো না জীবনটা নিয়ে নাড়াচাড়া করতে আর তার ইচ্ছে হচ্ছে না। যা হবার হবে সে আর কোনকিছুতেই বাঁধা দেবে না। কারোর কাছ থেকে ভালবাসা পাওয়ার আশা সে রাখে না আর।
এসব ভেবে ড্রায়ার থেকে এক পাতা ওষুধ বের করলো।এই ওষুধ তাকে অপূর্বই দিয়েছে। তাকে বলছিলো ঘুমের ওষুধ। আসলেই এটা খেয়ে সিয়া অনেকক্ষণ ঘুমায়। সিয়া এবার বুঝলো কেনো এই ওষুধ অপূর্ব তাকে সেচ্ছায় দিয়েছিল। একটা তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে সেটা থেকে একটা ওষুধ বের করে খেয়ে বালিশে মুখ গুঁজে শুয়ে পড়লো সে ।
পাশে অনাদরে পরে ভাইভ্রেট হতে থাকা ফোনের স্ক্রিনে দেখালো জ্বল জ্বল করতে থাকা অপূর্বের নামটি।
____________________________
বিকেলে সব গুছিয়ে চন্দ্রা বেরোলো তার নতুন উদ্দেশ্যে। সিয়াম বলেছিলো কাল থেকে শুরু করতে কিন্তু চন্দ্রা আর দেরি করতে চায়নি।
চন্দ্রা নিজের গন্তব্য স্থলে পৌঁছে হাত ঘড়িতে সময় দেখল ৬:১০।
সিনথিয়ার ছুটি হওয়ার কথা তো ছয়টায়। ইশ তাহলে কি সে দেরি করে ফেললো..?
বিরক্তি নিয়ে এদিক ওদিক তাকাতেই সামনের গেট থেকে সিনথিয়াকে বেরোতে দেখলো। আরো অনেকেই বেরোলো চন্দ্রা ভাবলো আজ আর তার কাজ হবে না।
কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে সবাই চলে যাওয়ায় পরেও সিনথিয়া কাকে যেনো ফোন করে ধমকাতে লাগলো। চন্দ্রা আরেকটু কাছে যেতেই বুঝলো সে তার ড্রাইভারকে ধমকাচ্ছে এখনও না আসার জন্য।
চন্দ্রা হাসলো আজ অদ্ভুত ভাবে ভাগ্য তার সহায়। সে সামনের একজনকে হাতের ইশারায় করতেই একজন মহিলা কিছু খাওয়ার নিয়ে যাওযার সময় সিনথিয়ার জামার উপর ফেলে দিলো।
সিনথিয়া রাগে চেঁচিয়ে উঠলো “ননসেন্স! চোখ নেই আপনার এভাবে কেউ চলা ফেরা করে..? দিলেন তো আমার পুরো ড্রেস টা খারাপ করে।”
সামনের মহিলাটি কাচুমাচু করে সরি সরি বললো।
সিনথিয়া আবার রেগে গিয়ে বললো ” আপনার সরিতে আমার জামাটা ঠিক হয়ে যাবে না ইডিয়েট। এই যান তো আপনি সামনে থেকে নইলে এবার আমি কিছু করে ফেলবো।”
মহিলাটি কাচুমাচু মুখ করে চলে গেলো। যেতে যেতে চন্দ্রার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিল।
চন্দ্রা এবার সময় বুঝে এদিক ওদিক তাকিয়ে সিনথিয়ার দিকে এগিয়ে গেলো।
সিনথিয়া তখন রাগে বিড়বিড় করছে আর একটা টিস্যুপেপার দিয়ে জামাটা মুছছে। জামার রং হালকা হওয়ার বেশ খারাপ দেখাচ্ছে মোছার পরেও।
চন্দ্রা এবার সিনথিয়ার সামনে গিয়ে বললো ” এক্সকিউজ মি?”
সিনথিয়া বিরক্তি নিয়ে চন্দ্রার মুখের দিকে তাকিয়ে বললো ” ইয়েস হোয়াট..?”
চন্দ্রা এদিক ওদিক তাকিয়ে বললো “আপনার জামার অবস্থা থেকে এলাম। মুছছেন যত ততো তহ আরো ছড়িয়ে পড়ছে।”
সিনথিয়া এবার করুন মুখ করে চন্দ্রার দিকে তাকিয়ে বললো ” সামনে কোনো কল আছে জানেন..? এখন তো সেন্টারও বন্ধ হয়ে গেছে।”
চন্দ্রা বললো “না তেমন কিছু তো সামনে নেই। আপনি আমার সাথে আমার বাড়ি চলুন এই পাঁচটা বাড়ি পরই গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেবেন।”
সিনথিয়া বারণ করতে গিয়েও করলো না। আশে পাশের বেশ মানুষ কৌতুহলী দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে তার দিকে। তাই চন্দ্রার কথা মত সে তার বাড়িতেই গেলো ফ্রেশ হতে।
চন্দ্রা জামাটার অবস্থা দেখে নিজের একটা লং ফ্রক বার করে সিনথিয়াকে দিলো। এই জামা গুলো তার বিয়ের আগের। সেও কিছুটা সিনথিয়ার মতো লং ফ্রক আর মাঝে মাঝে জীন্স টপ পড়ত।
সিনথিয়া সেটা ফ্রেশ হয়ে এসে কৃতজ্ঞতা স্বরূপ মুখ নিয়ে বললো ” অনেক অনেক থ্যাংকস আপনাকে। নইলে আজকাল কার মানুষ তো সাহায্য করতেই চায় না।”
চন্দ্রা শুধু একটা মিষ্টি হাসি দিল।
#চলবে..?