বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-২৪ | বাংলা রোমান্টিক গল্প

0
1980

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_24

ভাইয়া তুমি আমাকে ভালোবাসো একটু না পাগলের মতো।আজকে আমি তোমার চোখে আমার জন্য অফুরান্ত ভালোবাসা যা খুব গভীর। এই ভালোবাসা অন্ত নেই কিন্তু তাহলে আমাকে বলছো না কেন? এই ভাবে লুকিয়ে কেন রাখছো কিছু তো কারন আছেই। আমার সেই কারন টাই জানতে হবে ইয়েস।
যেভাবেই হোক জানতেই হবে কি সেই কারণ তার জন্য তুমি তোমার সমস্ত অনুভূতি আড়াল করে রেখেছো।
উফফ গালে ব্যাথা করছে গরিলা একটা এতো শক্ত করে কেউ ধরে। গালে হাত বুলাতে বুলাতে নিচে নেমে এলাম।
চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছি তখন আম্মু আমার পাশে এসে বসলো। আমি চোখ খুলে আবার বন্ধ করে ফেললাম।আর আমার মাথা আম্মুর কোলের উপর রাখলাম।
আম্মু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর বলছে।
“দোলা আজকে তোর মামনির বাসায় যেতে হবে।”
আমি মামনির বাসায় যাওয়ার কথা শুনেই চোখ খুলে ফেললাম।
আম্মু বলল,,” আমাদের সবার‌ই যেতে হবে। ডিনার এর জন্য দাওয়াত আছে।”
আমি বললাম,,”আচ্ছা আমি তাহলে রেডি হয়।”

আম্মু আমার রেডি হ‌ওয়ার কথা শুনে বলল,,
“কি আবার রেডি হবি।”
“ওই একটু সাজবো।”
“সাজার কি দরকার এমন করছিস যেন আগে কখনো যাস নি।”
“আম্মু গেছি তখন তো এমনি এখন আমার সাজতেই ইচ্ছে হচ্ছিল তাই তারপর ওই বাসায় যাব এটা তো দাওয়াত বলো। সেখানে সেজে গেলে সমস্যা কি আম্মু।”
আমি চোখ ছোট ছোট করে বললাম।
“বুঝি না বাবা কি হয় তোর।আগে তো শত বলেও সাজগোজ করানো যেত না আর এখন যখন তখন সাজতে ইচ্ছে হয়।”
“তোমরা আমার সব কিছু তেই প্রশ্ন করো খালি।”
“আচ্ছা তোর যা ইচ্ছে কর।”
বলেই আম্মু চলে গেল আমি উঠে সাজতে বসলাম আমার সাজ হচ্ছে অন্যরকম আজ।আমি গালে লাল ফ্রেস পাওডার দিলাম। তারপর কাজল দিয়ে নিচে নেমে এলাম।
আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
“কি করে এটা কি হয়েছে গাল এতো লাল কেন? ব্যাথা পেয়েছিস নাকি তখন তো দেখলাম না।”
“ওইটা কিছু না চলো।”
আব্বু বললো, “সত্যি ব্যাথা পাওনি তো।”
“নো আব্বু আমি এ্যাম ফাইন।”
“ওকে ডেয়ার চলো।”
এখানে এসেই আম্মু মামনির কাছে রান্না ঘরে চলে গেল।

আব্বু তার প্রান প্রিয় বন্ধুর কাছে বসে পরলো সোফায় শুরু হলো তাদের গল্প। আমি আব্বুর পাশে এতিমের মতো বসে আছি। আর সুযোগ খুঁজছি এখানে থেকে কেটে পরার জন্য। পেয়েও গেলাম উঠে সোজা আদনান ভাইয়ের রুমে চলে এলাম। ভাইয়া রুমে নেই বাথরুমের থেকে শব্দ আসছে আমি দরজা ভেতরে থেকে বন্ধ করে দিলাম। তারপর বিছানায় উপর বসলাম ভাইয়া পাঁচ মিনিট এ আসলো আর আমাকে দেখে ভ্রু কুঁচকালো।
‘তুই এখানে কি করছিস?”
“বসে আছি দেখতে পাচ্ছ না।”
“বসে কেন আছিস সেটাই তো জিজ্ঞেস করছি।”
আমি কিছু না বলে উঠে দাঁড়ালাম আর ভাইয়ার গলা জড়িয়ে ধরলাম।
ভাইয়া হকচকিয়ে গেল আমার কান্ডে সাথে হতদম্ব হয়ে গেল।
“কি করছিস?”
আমি গাল ফুলিয়ে অভিমানী গলায় বললাম,
“কি করেছো দেখ?
বলে গাল দেখালাম।
ভাইয়া আমার গালে দিকে তাকিয়ে আছে ভ্রু কুঁচকে। এক হাত উঁচু করে ভাইয়া আমার গাল স্পর্শ করলো তারপর নিজের হাতে দিকে তাকিয়ে বলল,,
“কি এসব লাগিয়েছিস?”
“কিছু লাগায়নি, তুমি আমার গাল টিপে কি করেছো দেখ লাল হয়ে গেছে কি ব্যাথা ?”
বলেই ভাইয়ার গলা থেকে হাত সরিয়ে নিলাম।

আদনান ভাইয়া আচমকা আমার হাত শক্ত করে ধরে নিজের কাছে টেনে নিলো। এক হাত আমার কোমর ধরলো শক্ত করে। আদনান ভাইয়ার ঠান্ডা হাতের স্পর্শ নিজের নিজের কোমরে পেয়ে আমি জমে গেলাম। সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। দম বন্ধ হয়ে আসছে। বিস্মিত হয়ে ভাইয়ার দিকে তাকালাম। আমার হার্টবিট দ্রুত গতিতে লাফাচ্ছে।
“কি রে এমন কাঁপছিস কেন?”
ভাইয়া নির্বিকার ভাবে কথাটা বলল।
আমি ভীতু মুখ করে তাকিয়ে আছি।
স”ব সময় তো আমার গা ঘেঁষতে তোর ভালো লাগে। তা এখন আমি ধরলাম
এমন করছিস কেন?”
“ভাইয়া ছার আমার কেমন জানি লাগছে।”
“কেন ছারবো কেন? আর কেমন লাগছে শুনি।”
“কেমন জানি লাগছে। আমি ধরলে তো এমন লাগে না।”
‘কেমন লাগছে বল!”
বলেই ভাইয়া নিজের এক হাত উঁচু করে আমার গালে রাখলো। আমার কাপাকাপি আরো বেরে গেল।
আমি ঢোক গিলে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। ভাইয়া আমার গাল মুছে দিচ্ছে অনুভব করছি।
“তাকা আমার দিকে।”
আমি চোখ খিচে বন্ধ করে আছি।
বন্ধ অবস্থায় বললাম,,” ছার প্লিজ আমাকে ভাইয়া।”
ভাইয়া আবার বলল,,,” কি হলো চোখ খোল? আর ছাড়বো কেন? এখন থেকে বেশি করে ধরবো তুই তো এইটাই চাইছিলি তাহলে এখন এমন আন‌ইজি ফিল করছিস কেন?”
ভাইয়ার গরম নিঃশ্বাস আমার চোখে মুখে আছড়ে পরছে। আমি থরথর করে কাঁপছি ভাইয়ার নরম কন্ঠ শুনে আমি স্তম্ভিত হয়ে তাকালাম। ভাইয়া নেশাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমি এমন ভয়ঙ্কর চাহনি দেখে ভয়ে ঘামতে লাগলাম।
আমি তোতলাতে তোতলাতে বললাম,,”আমি এসব কখন চাইলাম।”
চোখ ছোট করে ভীতু মুখ করে তাকিয়ে বললাম।ভাইয়া আমাকে আরো শক্ত করে চেপে ধরলো কোমর আমি ছটফট করছি ছুটার জন্য। কিন্তু ভাইয়ার সাথে পারলে তো।
ভাইয়া আমার মুখের কাছে চলে এলো একদম আমি ভয়ে ঘাড় পিছিয়ে নিলাম ভাইয়া আমার ঘাড় ধরে নিলো শক্ত করে তারপর বলল,,
“কেন প্রেম করবি না?”
ভাইয়ার কথা শুনে আমি চকিতে চাইলাম। স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে আছি।
“কি হলো প্রেম করবি না আমার সাথে?”
আমি বললাম,,” হুম কিন্তু তার সাথে এসবের কি মানে?”
“প্রেম করলো তো এসব করবোই। আরো‌ কতো কিছু। কেন তুই জানতি না? আচ্ছা প্রেম মানে কি বুঝিস।”
আমি ভীতু মুখ করে বললাম,,”কি আবার তোমার সাথে ফোনে কথা বলবো, তারপর তুমি আমাকে গোলাপ দিবে, ঘুরতে নিয়ে যাবে এসব।”
“শুধু এইগুলো আর কিছু না।”
“না তো।”
“কে বলেছে এসব তোকে প্রেম করলে আরো অনেক কিছু হয় এই যেমন
বলেই ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে আনতে লাগলো নিজের মুখ তারপর ফট করে আমার গালে চুমু খেল আমি চমকে উঠলাম।
বড় বড় চোখ করে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।ভাইয়া কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে। আমি ভাইয়ার এমন দৃষ্টিতে আমার বুকটা ধক করে উঠল। কান আমার গরম হয়ে গেছে মনে হচ্ছে গরম হাওয়া বের হচ্ছে আমি জোরে একটা ঝামটা মেরে ভাইয়ার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম। বুকে হাত দিয়ে হাপাচ্ছি। ঝড়ের গতিতে লাফাচ্ছে আমার হার্টবিট। কি ডেঞ্জারাস অনুভূতি হচ্ছে।

আচ্ছা তুই কি প্রেম করবি না ভাবছিস।
ভাইয়ার কথা শুনে আমি আস্তে আস্তে চোখ খুললাম।
“কি রে চুপ না থেকে বল। কারন প্রেম করলে এমন কয়েকটা কিস তোকে সহ্য করতে হবে।আর একটা খেয়েই তোর এই অবস্থা আমার তো.
আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দৌড়ে রুমে থেকে বেরিয়ে এলাম। ভাইয়াকে চিনতে পারছি না কেমন করছে। আর প্রেম করলে চুমু খেতে হয় জানতাম না তো।
বুকটা এখন তো ধুকধুক শব্দ করছে।
নিচে এসে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে র‌ইলাম। আমি আসার কিছু ক্ষন পর আদনান ভাই ও নেমে এলো আমি একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলাম ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমার শরীর কাঁপছে ভাইয়ার সামনে থাকতে পারছি না এতো লজ্জা লাগছে। আবার ভাইয়ার দিকে আড়চোখে তাকালাম ভাইয়া এখন ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি সোজা পেছনে ঘুরে রান্না ঘরে চলে গেলাম।
#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে