বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব-১০

0
1951

#বৃষ্টি_হয়ে_নামবো
#Writer_Nondini_Nila
#Part_10

আদনান ভাইয়া নিজের বিছানায় ঘুমিয়ে আছে।আর ওই তিথী মেয়েটার ভাইয়ার পাশে বসে হা করে তাকিয়ে আছে। আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি। তারপর ভেতরে ঢুকলাম।আমার ঢুকার আওয়াজ পেয়ে কিছুটা ভয় পেয়ে গেল তিথী মনে হলে চমকে পেছনে তাকালো।
আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি তিথির দিকে।
তু—মি ?
তোতলাতে তোতলাতে বললো তিথী‌।
আমি বললাম,,”হুম আমি। আপনি এখানে কি করছেন?”
সন্দেহ চোখে তাকিয়ে বললাম।
আমার কথায় তারাতাড়ি আমার কাছে এলো আর ফিসফিস করে বলল,,”আস বাইরে কথা বলি আদনান জেগে যাবে।”
ওনার মুখে ভয় স্পট আমি দেখতে পাচ্ছি।
ওনার ভয় আমি ধরতে পারলাম ভাইয়া জেগে গেল কিনা দেখে ভয়। আমি এখন ভাইয়া কে জাগানোর ইচ্ছে পুষন করলাম।
“বাইরে কেন যাব মা বলার এইখানে বলুন।”
আর হাত ধরে ফেললো। তিথির হাতে কাঁপছে।
“এতো জোরে কথা কেন বলছো?”
“ভাইয়া তো ঘুম আপনি তাহলে একা জেগে কি করছিলেন?”
আরে চলো তো।
বলেই আমাকে টেনে বাইরে আনতে গেল।

আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি কিন্তু ভাইয়াকে জাগিয়েই ছারবো।
তাই চিৎকার করে বললাম,,,
“আরে আপু আমার হাত ছার না।এভাবে টানছো কেন ?”
আমার কাজ সম্পূর্ণ হলো ভাইয়া জেগে গেল।
ভাইয়া ধরফরিয়ে উঠে বসলো আর আমার হাত শক্ত করে ধরে তিথি বাইরে নিয়ে যাচ্ছে দেখলো।
এটা দেখে ভাইয়া হতদম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে কি হচ্ছে বুঝতে পারছে না।
তাই তিথি কে ডেকে উঠলো,,
“হোয়াট হ্যাপেনস তিথী কি হয়েছে এভাবে টানছিস কেন দোলাকে।ছার ওকে”
বলে বিছানায় থেকে উঠে দাড়ালো‌।
তিথি আদনান ভাইয়ার কথা শুনে ভয়ে আমার হাত ছেড়ে দিলো আর চমকে পেছনে তাকালো।
আদনান ভাই এগ এগিয়ে এসে বলল,,
“কি হয়েছে? তোরা আমার রুমে কি করছিস ?”
আমি কিছু বলার আগেই তিথি মেয়েটা বলল,,
“আদনান আমি নিচে যাচ্ছিলাম তখন দেখলাম দোলা তোর রুমে আসছে তাই ওকে বারন করলাম যাতে না আসে। তুই তো কাউকে তোর ঘুমে ডিস্টাব করতে মানা করছিলি তাই‌। কিন্তু দোলা আমার কথা শুনলো না জোর করে চলে এলো তাই ওকে টেনে বাইরে নিয়ে যাচ্ছিলাম।”

আমি তিথির কথা শুনে হতদম্ব সাথে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। হা করে তাকিয়ে আছি তিথির দিকে চোখ সরিয়ে আদনান ভাইয়ের দিকে তাকালাম ভাইয়া ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
তিথি শয়তানি হাসি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
কি অসভ্য খারাপ মেয়ে বাবা কি মিথ্যা টাই না বলল‌। নিজের দোষ আমার ঘাড়ে চাপাচ্ছে।
আমি কটমট করে তাকিয়ে আছি‌।
“আচ্ছা তুই যা।”
আদনান ভাই তিথি কে চলে যেতে বলল।
আমি তখন বললাম,,,” ও তো মিথ্যা বলতে ভাই আমি না ওই তো…
ভাইয়া আমাকে হাতের ইশারায় চুপ করতে বলে তিথি কে যেতে বলল,
“কি হলো যেতে বললাম তো।”
তিথি আমার দিকে শয়তানি হাসি দিয়ে চলে গেল।

তিথি বাইরে এসে হাফ ছেড়ে বাঁচলো। অফ বানিয়ে মিথ্যা বলে আমার দোষ ওই দোলার ঘাড়ে দিয়েছি। ভালোই হয়েছে আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আদনান দোলাকে ভালোবাসে। এই কি সেই মেয়ে তার জন্য আমার প্রপোজাল রিজেক্ট করেছিল।
তাই যদি হয়ে থাকে তাহলে আমাকে তো কিছু করতেই হবে। আর প্রথম দিন সবাই আমাকে খারাপ ভাবলো নো প্রবলেম বাসায় একবার ঢুকেছি এতো সহজে বের হবো না সবাইকে
কি করে বাঘে আনতে হয় খুব ভালো করে জানি আমি।
ভাবতে ভাবতে রুমে চলে এলো তিথি।

এদিকে আদনান ভাইয়া আমার দিকে কঠিন মুখ করে তাকিয়ে আছে।আমি সব বলার জন্য বসে আছি।
যেই মুখ খুলতে যাব ভাইয়া আমার একদম কাছে চলে এলো।আমি ভয়ে পিছিয়ে গেলাম।আর বললাম,,
“তুমি ওর কথা বিলিভ করছো ? আমি না ওই তো তোমার রুমে ছিলো আর সেটা আমি দেখেছি।ও সব মিথ্যা বলেছে।”
ভাইয়া যেন কথা শুনলোই না আমার দিকে আস্তে লাগলো।
আমি ভয় পেয়ে পেছাতে পেছাতে আলমারির সাথে ঢেকে গেলাম। কাঁদো কাঁদো মুখ করে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে ভাইয়া আমার কাছে এসে এক হাত আমার পাশে রেখে হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
তাই আমি কিছু বলবো তার ভাই আগে বলল,,,
“তুই সত্যি বললি আমি কেন বিশ্বাস করবো।”
“আমার থেকে ওই মেয়েটাকে তুমি বেশি বিলিভ করো।”
“তোর থেকে ওকে বিশ্বাস করাও ভালো।”
আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে ভাইয়া একদম আমাকে টাচ করেনি একদম কাছে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু কোথায় ও টাচ করেনা‌।
“তা তো করবেই গার্লফ্রেন্ড বলে কথা‌।”

আমার কথা ভাইয়া ভ্রু কুঁচকালো।
“মানে।”
“তিথি তোমার গার্লফ্রেন্ড আমি জানি।”
ভাইয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
“তোমার গার্লফ্রেন্ড এতো মিথ্যা বলে কেন? আর ভয় ও পায় ভালো। কীভাবে নিজের দোষ আমার উপর চাপিয়ে চলে গেল।”
“তুই ও তো মিথ্যা বলিস ?”
ভাইয়ার নরম কন্ঠ কিন্তু চোখ মুখে অসম্ভব রাগ।
আচমকা কথায় থমকে গেলাম। বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছি।ভাইয়া গম্ভীর হয়ে তাকিয়ে আছে।
“আমি কি মিথ্যা বলেছি?”
কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম।
“ফাহাদ নেহাকে না তোকে প্রপোজ করতে এসেছিল।”
ভাইয়া কথা শুনে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেল। বড় বড় চোখ করে ভাইয়ার দিকে ঢোক গিলে তাকিয়ে আছি।

ভাইয়া আবার বলল,,” আমি মিথ্যা বলতে মানা করেছিলাম।তোর সম্পর্কে সব কিছু আমার জানা। তুই কি করিস না করিস সব আমার জানা আছে।”
আমি ভয়ে কাঁপা কাঁপি করছি।
“কাঁপছি কেন? আমাকে ভয় পাচ্ছিস?”
আমি চুপ করে আছি।
“তাকা আমার দিকে।”
ভাইয়ার ধমক খেয়ে তাকালাম।
“তোর খুব প্রেম করার শখ তাইনা।”
আমি শুকনো ঢোক গিললাম। আর মাথা নেড়ে না বললাম।
“মিথ্যা বলছিস আবার।” চিৎকার করে উঠল।
“না আর জীবনে এমন করবো না সরি এবারের মতো মাপ করে দাও ভাইয়া।”
“সব সময় ই তুই এই কথা বলিস।”
এই বার ই শেষ আর বলবো না।”

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে