#বিরহবিধুর_চাঁদাসক্তি
লেখনীতে—ইলোরা জাহান ঊর্মি
১.
লোকাল বাসের যা-তা ভিড়ের মধ্যে শরীরে অপরিচিত পুরুষের অযাচিত স্পর্শ পেয়ে শিউরে উঠল আরিন্তা। মাথা ঘুরিয়ে সে তাকাল তার ডানপাশে একটু পেছনে দাঁড়ানো পেলবের দিকে। পেলবের সাথে চোখাচোখি হতেই আরিন্তা চোখের ইশারায় স্পর্শকারী মাঝবয়সী লোকটাকে দেখাল। তার চোখ-মুখের অভিব্যক্তি আর ইশারা দেখেই পেলব বুঝতে পারল এখানে বিপদ আছে। আরিন্তার বাহু ধরে টেনে এনে কোনোমতে পেলব জায়গা পালটাপালটি করে দাঁড়াল। তাতেও লাভ হলো না। লোকটা পেছনে থাকায় আবারো সুযোগ বুঝে একই কাজ করল। এবারে আরিন্তার গা ঘিনঘিন করে উঠল। লোকটা হাত সরানোর আগেই খপ করে হাতটা মুঠোয় চেপে ধরল। শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে হাত মুচড়ে ধরে দাঁতে দাঁত পিষে চেঁচিয়ে উঠল,
“হারামজাদা, তোর ঘরে মেয়ে নেই?”
সঙ্গে-সঙ্গে পেলব ঘুরে দাঁড়াল। লোকটা হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করায় আরিন্তা হাতের মুঠি আরও শক্ত করল। পেলব তাড়াতাড়ি আরিন্তার হাত সরিয়ে নিয়ে দুহাতে লোকটার শার্টের কলার চেপে ধরল। রাগে-ক্ষোভে লোকটাকে সিটের সাথে ঠেসে ধরে ধমকে উঠল,
“শালা বুইড়া খচ্চর, বাপের বয়সী হয়েও মেয়েদের দেখলে হাত নিশপিশ করে? তোর হাত যদি আজ আস্ত রেখেছি।”
বলেই পেলব লোকটার দুই হাত পেছনদিকে এনে মুচড়ে ধরল। লোকটা মুখে ব্যথাতুর শব্দ করে ছাড় পাওয়ার জন্য ছটফট করছে। বাস ভর্তি মানুষের উৎসুক দৃষ্টি তখন তাদের দিকেই। সবার মাঝে কানাঘুষা শুরু হয়েছে। কেউ-কেউ লোকটাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছে, কেউ বলছে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাস থেকে নামিয়ে দিতে। দু-একজন লোক গলা তুলে ড্রাইভারকে বাস থামাতে বলছে। পেলব বেশ খেপে উঠেছে। তার রাগের পরিমাণ দেখে আরিন্তার-ই এখন ভয় ধরে গেছে। এটা নিয়ে এখন নিশ্চিত ঝামেলা বাঁধবে। কিন্তু ব’জ্জাত লোকটাকে তার নিজেরই জুতাপে’টা করতে ইচ্ছা করছে। বদমেজাজি পেলবের রেগে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। বাসের মধ্যে কুরুক্ষেত্র দেখে ড্রাইভার স্টিয়ারিং থামাতে বাধ্য হলো। ততক্ষণে পেলবের সাথে আরও দুজন ছেলে লোকটাকে চেপে ধরে বাস থেকে টেনেহিঁচড়ে নামানোর পাঁয়তারা করছে। তাদের সাথে বাসের অধিকাংশ জনতা-ই রাস্তায় নেমে পড়েছে। পেলবের হাত থেকে কিছুতেই নিজেকে ছাড়াতে না পেরে লোকটা যত কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গা’লিগালাজ করতে শুরু করেছে। লোকটার মুখের ভাষা শুনে পেলবের মাথা ঝট করে দ্বিগুণ গরম হয়ে গেল। মুষ্টাঘা’ত পড়তেও বেশি সময় লাগল না। শক্তপোক্ত হাতের চার-পাঁচটা মুষ্টাঘা’ত খাওয়ার পর আর লোকটা মুখ খোলার সাহস পেল না। কারণ আশপাশের কয়েকটা ছেলেও তখন খুব উৎসুক হয়ে পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। গণধোলাই দেওয়ার উৎস দেখে তাদের হাত নিশপিশ করছে। যেকোনো সময় তারাও পেলবের সাথে যোগ দিতে পারে। পেলবের একার হাতের জোরেই লোকটার প্রাণ ওষ্ঠাগত, এতগুলো জোয়ান ছেলের হাতে পড়লে আর রক্ষা নেই। নিজের প্রাণের মায়ায় লোকটা মাথা নিচু করে চুপ মে’রে দাঁড়িয়ে রইল। আশেপাশের মানুষের মাঝে গুঞ্জন লেগেই আছে। তারা খুব তেজ নিয়ে উৎসাহিত করছে যাতে লোকটাকে গণধোলাই দেওয়া হয়। আরিন্তা চাপা স্বরে পেলবকে বলল,
“আমাদের বাড়ি পৌঁছাতে দেরী হবে। ঝামেলা বাড়তে দিয়ো না।”
পেলব লোকটাকে ধমকে উঠল,
“মাফ চা। পা ধরে মাফ চাইবি, আর প্রতিজ্ঞা করবি জীবনে আর মেয়েদের দিকে চোখ তুলে তাকাবি না। বোস, মাফ চা।”
আরিন্তা বলল,
“পা ধরা লাগবে না।”
লোকটা ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকায় পেলব আবারো ধমকে উঠল,
“মাফ চা।”
লোকটা মাথা আরও একটু নিচু করে মিনমিনে গলায় বলল,
“মাফ কইরা দ্যান মা।”
আরিন্তা বলল,
“আজকের কথা মনে থাকলে জীবনে আর কোনোদিন নিজের মেয়ের বয়সী মেয়েদের এমন পরিস্থিতিতে ফেলবেন না। আপনাদের মতো লোকেদের জন্যই কোত্থাও মেয়েদের নিরাপত্তা নেই। মনের মধ্যে বাজে মতলব নিয়ে ঘোরাঘুরি করলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন। তবে যদি আপনার পাপ ঘোচে।”
লোকটাকে ছেড়ে দিয়ে পেলব আরিন্তাকে নিয়ে বাসের ভিড়ের কাছ থেকে সরে এল। আরিন্তা শুধাল,
“কী করবে? বাসে যাবে না?”
“না। মাঝপথ থেকে আবার বাস পাব কোথায়?”
“অটো নিবে?”
“হুম।”
পরপরই পেলব ধমকের সুরে বলল,
“তোর তাড়ার কারণে এই লোকাল বাসে উঠতে হয়েছে। শিক্ষা হয়েছে এখন?”
আরিন্তা চুপসানো মুখে বলল,
“আমি কী করতাম? দাদিই তো বারবার বাবাকে দিয়ে ফোন করাল।”
“এত তাড়া থাকলে আমাদের পাঠিয়েছিল কেন? নিজেরা যেতে পারল না?”
“দাদির ছড়ি ভেঙে গেছে। আমরা আনতে না গেলে দাদি হাঁটাচলা করত কীভাবে?”
“কেন? যে ঢাকা থেকে সদর পর্যন্ত ছড়ি আনতে পেরেছে, সে সদর থেকে আমাদের বাড়ি আসতে পারল না? হাত-পা ভেঙে যেত তার?”
“এখন তো নিয়েই এসেছ, শুধু-শুধু আর রাগারাগী কোরো না তো। দেখো গাড়ি পাও কি না।”
লোকাল বাসটা মাত্রই তাদের পাশ কা’টিয়ে চলে গেল। এই রাস্তায় আর বাস পাওয়া যাবে না। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে তারা একটা অটো পেল। তা-ও অটোতে দুজন বৃদ্ধ দম্পতি ছিল। খালি অটো পাওয়ার আশায় দাঁড়িয়ে থাকলে আরও সময় নষ্ট হবে ভেবে এই অটোতেই উঠে পড়ল।
গতকাল হঠাৎ পেলবের বৃদ্ধা দাদির ছড়িটা ভেঙে গেছে। ছড়ি ছাড়া সে হাঁটাচলা করতে পারে না। তাই নতুন ছড়ি কেনার দরকার ছিল। পেলবের ফুপাতো ভাই রাগীব ঢাকায় চাকরি করে। গতকালই সে ইদের ছুটিতে বাড়ি ফিরেছে। নানির ছড়ির কথা শুনে সে আসার সময় নতুন ছড়ি কিনে নিয়ে এসেছে। রাগীবদের বাড়ি জেলা সদর, আর পেলবদের বাড়ি যেতে সদর থেকে দুই ঘন্টার পথ। তাই বাড়ি ফিরে সঙ্গে-সঙ্গে রাগীবের দূরে কোথাও বেরোতে ইচ্ছা করেনি। তার মা তাকে পাঠানোর জন্য অনেক জোরাজুরি করলেও, সে কিছুতেই বাড়ি থেকে বেরোতে রাজি হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে পেলব আর আরিন্তাকেই তাদের মা ঠেলেঠুলে পাঠিয়ে দিয়েছে। তারা গিয়েছিল সেই সকালে। দুপুরে ফুপুর বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করে ছড়ি নিয়ে বিকালেই ফিরে এসেছে। তারমধ্যে রাস্তায় আবার এমন বিপত্তি।
এদিকে অটোতে উঠে হতে বৃদ্ধ দম্পতি যেন তাদের দুজনের ইন্টারভিউ নিতে বসেছে। তারা কোথায় গিয়েছিল, কেন গিয়েছিল, নাম কী, বাড়ি কোথায়, কোন ক্লাসে পড়ে, দুজনের সম্পর্ক কী। পেলব মুখটাকে গম্ভীর করে বাইরের দিকে মুখ করে বসে আছে। আরিন্তার হয়েছে বিপদ। বৃদ্ধ দম্পতির প্রশ্নের উত্তর দিতে-দিতে সে হাঁপিয়ে উঠেছে। তার কাছে মনে হচ্ছে কোনো বড়ো কোম্পানিতে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গেলেও তাকে এত প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হত না। চটপটে মেয়ে আরিন্তার মাঝে বিরক্তি আসার পর আর সে এসব মেনে নিল না। খুকখুক করে একটু কেশে বলল,
“কিছু মনে করবেন না দাদি। আমার গলার সমস্যার কারণে ডাক্তার বলেছে কথা কম বলতে।”
বৃদ্ধা চোখ বড়ো করে বললেন,
“কী কও বইন! এই বয়সে গলায় সমস্যা? কী হইছে? বড়ো রোগ?”
“না, না। ওই একটু ঠান্ডার কারণে গলায় সমস্যা। আমি কিন্তু আর কথা বলছি না।”
“আইচ্ছা, আইচ্ছা। ভাই, তুমি কথা-টথা কও না ক্যান?”
পেলবের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়তেই পেলব ফিরে তাকাল। এক পলক তাকিয়েই আবার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ে সোজাসাপ্টা বলে দিলো,
“আমি বেশি কথা বলা পছন্দ করি না।”
কথাটা বৃদ্ধ দম্পতির একদমই ভালো লাগল না। আজকালকার ছেলে-মেয়েরা এমনই ঠোঁটকা’টা। বয়স্ক মানুষের মুখে-মুখে কথা বলতে বাঁধে না।
তবে পেলবের আচরণটা উপকারে এল। বৃদ্ধ দম্পতি এরপর আর তাদের বেশি বিরক্ত করেনি। কিন্তু নিজেদের মধ্যে তাদের বকবক থামেনি। সারাটা পথ তাদের মুখ চলেছে, আর পেলব-আরিন্তা মুখে একরাশ বিরক্তি নিয়ে বসে রয়েছে। তাদের আগেই বৃদ্ধ দম্পতি অটো থেকে নেমে পড়ল। যাওয়ার আগে আরও একবার জিজ্ঞেস করেছে তারা ঠিক কোন বাড়ির ছেলে-মেয়ে। অটো আবার ছাড়তেই আরিন্তা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলল,
“তোমরা যে আমাকে বাচাল বলো, আমার তো মনে হচ্ছে আমি ওনাদের চেয়ে দশগুণ কম কথা বলি।”
পেলব শ্লেষের সুরে বলল,
“হুম, ওনাদের একের পর এক প্রশ্নের উত্তর তো আমি দিয়েছি।”
“প্রশ্ন করলে উত্তর দিবো না? আশ্চর্য!”
“আমি দিয়েছি?”
“তুমি দাওনি বলেই তো আমাকে দিতে হয়েছে।”
“হুম…তালুকদার বাড়ির অতি ভদ্র মেয়েটা।”
•
গোসল সেরে ভেজা চুলগুলো পিঠময় ছড়িয়ে দিয়ে হেলেদুলে রুম থেকে বেরিয়ে এল আরিন্তা। খাবার টেবিলের কাছে দাঁড়িয়ে গলা তুলে ডাকল,
“মা…ক্ষুধা লাগছে।”
মেরিনা ছাদ থেকে শুকনা কাপড় নামিয়ে এনেছেন মাত্রই। মেয়ের ডাক শুনে বললেন,
“এমন করে চেঁচাচ্ছিস, মনে হচ্ছে সারাদিন ধরে পেটে দানাপানি পড়েনি। তোর ফুপুর বাড়ি থেকে না খাইয়ে পাঠিয়েছে?”
আরিন্তা বলল,
“ফুপুর বাড়ি থেকে পেট ভরেই খাইয়ে পাঠিয়েছে। বাড়িতে এসে ক্ষুধা পেলে আমি কী করব?”
“কাপড় ভাঁজ করে রেখে নিই আগে, দাঁড়া।”
“আজকে কী রান্না করেছো?”
“হাঁস রান্না করেছি। মিশকাতকে খেতে ডাক।”
মেরিনা ঘরের দিকে চলে যাচ্ছিলেন। পেছন থেকে আরিন্তা প্রশ্ন করল,
“মিশু ভাইকে কই পাও?”
“তোর দাদির ঘরে গিয়ে দেখ।”
আরিন্তা কপাল কুঁচকে কিছু মুহূর্ত দাঁড়িয়ে রইল। তারপর ছুট লাগাল দাদির ঘরের দিকে। দাদির ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে কান পেতে শুনল ভেতরে দাদি-নাতির আলাপ চলছে। দরজার কাছ থেকে ধীর পায়ে ঘরের ভেতর ঢুকতে-ঢুকতে বলল,
“কী গো দাদি? ছড়ি পাইয়া আমারে ভুইলা আরেকজনের সাথে রসের আলাপ করতে বইছো?”
আশির্ধ্বো খায়রুন নেসা আরিন্তাকে দেখে ফোকলা দাঁতে হেসে বললেন,
“ও লো রঙ্গিলা, তোরে আবার ভোলতে পারে কেডা? এইহানে আয়।”
আরিন্তা গিয়ে ধপাস করে বিছানায় উঠে বসল। খায়রুন নেসার ওপাশে বসা মিশকাতের দিকে এক পলক তাকিয়েই দৃষ্টি ফিরিয়ে নিল। ছেলেটার স্থির দৃষ্টি তার মুখে আটকে। আরিন্তা খায়রুন নেসার গা ঘেঁষে বসে কপট চাপা স্বরে বলল,
“হ্যাঁ গো বুড়ি, এই পোল্ট্রিটার রোজ-রোজ তোমার কাছে কী কাজ? গোপনে প্রেম-ট্রেম করো না কি? আব্বারে কাজি ডাকতে কমু নি?”
খায়রুন নেসা হো-হো করে হেসে উঠে বললেন,
“তা ক গিয়া, পোলা কি খারাপ নি? এক্কেরে রাজপুত্তুর পাইছি।”
“তুমি একা রাজি হইলে তো হইব না বুড়ি। তোমার পাত্র রাজি আছে তো?”
এই বলে আরিন্তা দ্বিতীয়বার মিশকাতের দিকে চোখ তুলে তাকাল। মিশকাত এখনো সেই একইভাবে মূর্তির মতো তার দিকেই চেয়ে আছে। আরিন্তা ঠোঁট টিপে হেসে এক ভ্রু নাচিয়ে বলল,
“কবুল?”
মিশকাতের উত্তর আসতে এক মুহুর্ত দেরী হলো না। আরিন্তার চোখে চোখ রেখেই চট করে শান্ত স্বরে বলে উঠল,
“কবুল।”
চটজলদি চোখ সরিয়ে নিয়ে আরিন্তা খায়রুন নেসাকে বলল,
“তোমার পাত্র তো এক পায়ে রাজি গো বুড়ি। শুভ কাজ কবে সারতে চাও?”
মিশকাতের উত্তর এল,
“যেদিন বউ সাজবে।”
আরিন্তা সরু চোখে তাকাল। খায়রুন নেসা ফিক করে হেসে উঠে বললেন,
“দেখছো নি পোলা কত চালু? ও লো রঙ্গিলা, আমার ভাইজান কই?”
“তোমার ভাইজান বাড়ি আইসাই সোজা রুমে ঢুইকা দরজা আটকায় দিছে। কড়া কইরা কইছে কেউ যাতে না ডাকে। সে গোসল কইরা ঘুমাইব। তোমার নাতি ফোন করলে কইয়ো তোমার ছড়ি পছন্দ হইছে কি না।”
“আমার আবার একটা পছন্দ! হাঁটতে পারলেই হইল। হ্যাঁ রে, রাগেবে কবে আইব আমারে দ্যাখতে?”
“তিন-চারদিন পর তো এমনেই ইদ। তহনই আইব মনে হয়।”
মেরিনার ডাক পড়ল,
“আরি, ভাত বেড়েছি, খেতে আয়।”
আরিন্তা লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে পড়ল। বলল,
“দাদি, খায়া আসি আগে। মিশু ভাই, চলো। মা খেতে যেতে বলছে।”
মিশকাত বলল,
“আমি খেয়ে এসেছি।”
আরিন্তা কপাল কুঁচকে তাকিয়ে বলল,
“কেউ না খেলে আমি একাই খেতে পারব।”
আরিন্তা হনহনিয়ে হাঁটা ধরল। দরজা পর্যন্ত যেতেই মিশকাত দ্রুত উঠে পড়ল। খায়রুন নেসাকে বলল,
“খেয়ে আসছি দাদি।”
বড়ো-বড়ো পা ফেলে মিশকাত আরিন্তার কাছাকাছি এসেই গলা ঝাড়া দিলো। আরিন্তা ফিরে না তাকালেও পায়ের গতি মন্থর করল। মিশকাত হাঁটতে-হাঁটতে নিচু স্বরে বলল,
“ওই পোনি, তোর বাপরে বল কাজি ডেকে আনতে। বিয়ে করব।”
“ক্যান? খায়রুন বুড়ির জন্য তর সইতাছে না?”
“উঁহু, বুড়ির নাতনির জন্য। বুড়ির নাতনিটা সুন্দর না?”
আরিন্তা চোখ ঘুরিয়ে কপাল কুঁচকে তাকাল। মুখ বাঁকিয়ে বলল,
“বুড়ির সুন্দরী নাতনির এমন পোল্ট্রি বিয়ে করতে বয়ে গেছে।”
মিশকাত প্রত্যুত্তরে কড়া কিছু বলতে চাইল। কিন্তু খাবার টেবিলের কাছে চলে আসায় চুপ মে’রে যেতে হলো।
চলবে, ইন শা আল্লাহ্।