বিধবা পর্ব-২+৩+৪

0
5310

2+3+4

♥ বিধবা ♠
Writer : Nabila Ishq
Part : 2
In Bangladesh
IN Airport 4PM…
মেনেজার : স্যার লাগেজ আমাকে দিন।
ইম্রেত : take it.
Btw where is my car!
মেনেজার : ওই তো স্যার।
ইম্রেত : ওকে তুমি লাগেজ নিয়ে বাসায় আসো im Going!
ইম্রেত তার গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পরলো।
কিছুক্ষণ পড় ইম্রেত এর বেস্ট ফ্রেন্ড “আফরাত” কল করলো।
[ মুচকি হেসে কলটা রিছিভ করলো ইম্রেত ]
আফরাত : ****m তুই নাকি বাংলাদেশ আসছিস?
ইম্রেত : Come down আফরাত!
গালি কেন দিচ্ছিস, মাত্র গাড়িতে উঠলাম।বাসায় গিয়ে আমি কল করতাম।
আফরাত : বাসায় পৌছা আমি আসছি।
ইম্রের কলটা কেটে সেলফোনটা রেখে সামনে তাকিয়েই….
oh no damn man!
[ গাড়িটা ব্রেক করে সাইড করলো ইম্রেত ]
That’s why i hate Bangladesh!
কোনো রুলছ ফোলো করে না। রাস্তায় বাচ্চা ছেড়ে আবার বাচানো হচ্ছে।
রাগে গজগজ করতে করতে গাড়ি থেকে নেমে সামনে গেলো ইম্রেত।
ইম্রেত : বাচ্চাটাকে এভবে স্ট্রিট এ ছেড়ে দিলে তো এক্সিডেন্ট করবে।
টাইমলি গাড়ি ব্রেক করতে না পারলে কি হতো বুঝতে পারছেন।
ইম্রেত যখন কথা গুলি বলছিলো মেয়েটি পিছনে মুরে পায়ে ভর করে বাচ্চাটাকে দেখছিলো কোথাও ব্যাথা পেলো কিনা।
ইম্রেত এর আওয়াজ শুনে মেয়েটি উঠে ইম্রেত এর দিক ফিরলো।
ইম্রেত শুধু মেয়েটির দিক তাকিয়েই রইলো।
ইম্রেতের মাইন্ডে….
“লাজুক দুটি চোখ তুলে ও আমার দিক তাকালো।অধরে তার হাসির ছোয়া।আমার হৃদয় ভরিয়ে দিলো। কালো ওরনার আচল দিয়ে মুখখানি ছিলো অল্প ঢাকা। হলুদ তার গায়ের রঙ। রেশমি ঘনো কমড় পড়া চুল তার।
সাগরের ঢেইয়ের মতো মনের পানি গুলি উথাল,পাথাল করছে আমার।
মেয়েটি মিস্টি হাসি দিয়ে বলে উঠলো….
:– সরি ভাইয়া আসোলে মেয়েটি হয়তো বা ভুলে রাস্তার মাঝে চলে এসেছে।
আমি বুঝিয়ে দিয়েছি আর এমন করবে না।
মেয়েটির আওয়াজ এ ইম্রেতের চেতনা হয়। মেয়েটির দিক তাকিয়েই মুচকি হেসে বলল…
ইম্রেত : তোমার কিছু হয় না?
মেয়েটি : না তো।
ইম্রেত : গাড়ি ব্রেক করতে না পারলে তো তোমার উপর দিয়েই যেতো।
be care fool!
মেয়েটি : জি।
মেয়েটি সেই মিস্টি হাসি দিয়ে চলে যাচ্ছিল, ইম্রেত পিছন থেকে ডাক দিলো।
ইম্রেত : এই যে পিচ্চি শুনো?
মেয়েটি : আমি?
ইম্রেত : আর কাউকে কি দেখতে পাচ্ছ?
মেয়েটি : আমি মোটেও পিচ্চি নই।
১৭ পেরিয়ে ১৮ তে এসেছি [ প্রাউড নিয়ে বলল]
ইম্রেত : তাই আচ্ছা নাম কি তোমার?
মেয়েটি : ইছমি রাহমান।
ইম্রেত : কোথায় যাবে বলো আমি ড্রোপ করে দিচ্ছি?
ইছমি : সিউর?
ইম্রেত : ইয়াহ!
ইছমি : মেইন রোড এর পাশে।
ইম্রেত : ওকে কাম!
ইম্রেত গাড়ি স্টার্ট দিবে বাট দেখলো ইছমি সিট বেল্ট লাগায় নি।
ইম্রেত : সিট বেল্ট?
ইছমি : উপছ সরি। [ তারহুরো করে সিট বেল্ট লাগিয়ে নিলো ]
ইম্রেত গাড়ি স্টার্ট দিলো। ইছমি বাহিরের দিকে চেয়ে আছে।
আকাশের মেঘ জাদুর খেলা খেলছে। আর সেই আকাশ চুপটি করে দেখছে ইছমি।
আর ইম্রেত মুগ্ধকর চোখে দেখছে ইছমি কে।
ইম্রেত বলে উঠলো…
ইম্রেত : আমার নাম তো জিজ্ঞেস করলে না?
ইছমি : মনে ছিলো না। তা আপনার নাম কি?
ইম্রেত : এমোরেততি লিনোর।
ইছমি : এটা কি নাম ছিলো?
ইম্রেত : হুম কেনো?
ইছমি : আমার দাত তো ভেংগে গেছে ওল্রেডি আপনার নাম উচ্চারণ করতে গিয়ে।
ইম্রেত : আসোলে এটা আরাবিক নেম।দাদু আরাবিক, তাই সখ করে আরাবিক নাম রেখেছেন।
btw ছোটো করে ইম্রেত বা ইমছ বলতে পারো।
ইছমি : ইম্রেত আনকোমন নেম।লাইক ইট।
ইম্রেত : তোমার নাম কিন্তু অনেকটা আমার নামের মতো। ইছমি ইম্রেত
ইছমি : ওকে ওকে রাখেন এখা
নেই।
ইম্রেত : এটা বাসা তোমার?
ইছমি : না এখানে আমি দুটো বাচ্চাকেই পড়াই।
ভালো থাকবেন এন্ড ধন্যবাদ লিফট দেওয়ার জন্য।
ইম্রেত শুধু মেয়েটির দিক তকিয়েই ছিলো।
ইম্রেত গাড়ি ঘুড়িয়ে বাসার রওনা দিলো।
ইছমি বাড়িতে ঢুকতেই,একটা বাচ্চা ছেলে বলে উঠলো…
ছেলেটি : আপু আপু এতো লেট করলে কেন?
ইছমি : সরি [ ম্রিদু হেসে ]
ইম্রেত তার গাড়ি একটি বিল্ডিং এর গেট এ ঢুকালো। দাড়োয়ান সালাম দিলো।
পাশের বিল্ডিং এবং ইম্রেতদের ছাদের থেকে কিছু মেয়ে উকি ঝুকি দিয়ে দেখছে ইম্রেত কে। ইম্রেত গাড়ি পার্ক করে লিফট দিয়ে ৬ তালায় উঠলো।
বাড়ির কলিং বেল বাজাতেই একটা মহিলা ঘেট খুলে দিলো আর মুখ ভড়া হাসি নিয়ে বলল….
মহিলাটি : বড় বাবা।
ইম্রেত : ইয়াহ [ ঢুকতে ঢুকতে বলল ] তো নিলা আন্টি কেমন আছো?
ইম্রেত : জি বড় বাবা ভালো।
পাশের রুম থেকে এক পুছকি মেয়ে ৬ বছরের হবে দৌরিয়ে এসে ইম্রেত এর কোলে উঠলো….
ইম্রেত : আমার বেবি ডল কেমন আছে?
বাচ্চাটা : ভালো মামা তুমি?
ইম্রেত : তোমাকে দেখে এখন পুরো ভালো।
কিরে আপু তুই মুখ এমন করে রাখছিস কেন?
আপু : তো কি করবো?
ইম্রেত : এতো রাগ?
আরেহ বড় আপু, মা, ছোটো ভাই সবাই দেখি মুখ ফুলিয়ে রেখেছে।
তা আমার ডেড কোথায়?
ইম্রেত এর ছোটো ভাই কিমরান বলে উঠলো …
কিমরান : অফিসে আসতে প্রব্লেম হয় নি তো ভাই?
ইম্রেত : নট এট ওল।
মম listen na [ জড়িয়ে ধরে ]
মা : তোর সাথে কথা নেই।
ইম্রেত : অনেক খুদা পেয়েছে তো।
মা : আল্লাহ এখনো খাস নি তুই।
আমার বাবাটা শুখিয়ে কি হয়েছে।
আয় আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
ইম্রেত : ফ্রেস হয়ে আসি আমি তুমি রেডি করো।
আর এই যে বড় ভাই এর আগে প্রেম ট্রেম করে ফেলছো?
কিমরান : এতোদিন তোর জন্যই তো বিয়েটা হলো না।
ইম্রেত : মেয়েটা কে?
ইম্রেতের বড় আপু শিলা বলল…
শিলা (বড় আপু): এইতো আমাদের ৫ তালায় ভাড়া থাকে।
নাম মহিনি।
মহিনির প্রেমে পড়ে হাবু ডুবু খাচ্ছে আমাদের ভাই। 🙄
ইম্রেত : তাই নাকি।
যাচ্ছি তো সন্ধায় দেখতে তাই না?
মা : হুম তোর বাবা আসুক?
তুই গিয়ে ফ্রেস হয়ে নে।

♥ বিধবা ♠
Writer : Nabila Ishq
Part : 3
শিলা (বড় আপু): এইতো আমাদের ৫ তালায় ভাড়া থাকে।
নাম মহিনি।
মহিনির প্রেমে পড়ে হাবু ডুবু খাচ্ছে আমাদের ভাই। 🙄
ইম্রেত : তাই নাকি।
যাচ্ছি তো সন্ধায় দেখতে তাই না?
মা : হুম তোর বাবা আসুক?
তুই গিয়ে ফ্রেস হয়ে নে?
ইম্রেত সজা তার রুমে চলে গেলো। টি সার্ট খুলছে আর সেই মেয়েটা ইছমির কথা ভাবছে।
“”বারে বারে মেয়েটা মনে উকি দিচ্ছে, আজ যদি তোমার দেখা পাই। “”
হুট করেই সেলফোনটা খুজতে লাগলো।
সোফার থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে কাউকে কল করলো।
ইম্রেত : ইয়াহ মেনেজার?
মেনেজার : ইয়েস স্যার।
ইম্রেত : একজনের সম্পর্কে ইনফরমেশন প্র‍য়োজন তাড়াতাড়ি।
নাম ইছমি রাহমান।
মেইন স্ট্রিট রোড এর দিতিয় বিল্ডিং এ দুটো বাচ্চা পড়ায়।
আমার মেয়েটার সম্পর্কে সব তথ্য চাই।মানে a —z everything.
Got it?
মেনেজার : ইয়েস স্যার।
ইম্রেত তাওয়াল টা নিয়ে ওয়াস্রুম এ চলে যায়।
ইছমি ফ্লাট এ এসে দেখে আশেপাশের বিল্ডিং এর মেয়ে গুলি তাদের ফ্লাটে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। কিছু মেয়ে ইছমিদের বিল্ডিং এর তাড়া দাঁড়িয়ে কথা বলছে গেট এর সামনে।
ইছমি : কি হয়েছে তোমাদের?
এতো হাসি, লজ্জা কাকে দেখে দিচ্ছো?
আর ওই বিল্ডিং এর মেয়েগুলি উঁকি দিচ্ছে কেন?
ওখান থেকে একটি মেয়ে বলে উঠলো…
:—– জানিস আজকে মালিকের বড় ছেলে লান্ডান থেকে এসেছে।
মাশাল্লাহ এতো সুন্দর যে সবাই পারছেনা এখান থেকে তাকে গিলে খেতে।
ইছমি : বাস… তার জন্য তোমরা এভাবে উঁকি দিচ্ছিলে। আজিব?
আরেকজন বলে উঠলো…
: তুই কি বুঝবি বিধবা বলে কথা।
[ সবাই হেসে উঠে আর ইছমি মুখ টা কালো করে লিফট এ উঠে যায় ]
লিফট এ ৬ প্রেস করে মুখ মলিন করে ভাবছে “”
মাঝে মাঝে মনে হয় বসে আছি বালুচরের সাগরের তীরে, বিকেলে গাংচিলরা ফিরে যায় নীরে। সাগরের ঢেউ গুলির মতো হতে পারলে হয় তো প্রিথীবির এতো কস্ট নিতে হতো না আমায়।
সারা জীবনের ভালোবাসার দিনগুলিকে বিশিয়ে দিলাম #বিধবা হয়ে।
কোথায় যাব, কাকে বলবো মনের সব ব্যাথার কথা। আর কেউ বা কেনো শুনবে এক বিধবা মেয়ের কথা।
কথা গুলি মনের গহিন থেকে ভাবছে ইছমি। ফ্লাটে পৌছাতেই মুখে বড় করে হাসি একে দিলো। তার একাকিত্ত অন্য কাউকে দেখাতে চায় না ইছমি..
বাসার কলিং বেল বাজাচ্ছে বাট কেউ খুলছে না। তাই বার বার বাজাচ্ছে।
ইছমি : আজিব কি করছে মা?
কখন থেকে কলিং বেল বাজাচ্ছি? উফ
আবার বাজতে যাবে তখনি মহিনি গেট খুলে দেয়।
ইছমি : কি করছিলি কখন থেকে বেল বাজাচ্ছিলাম?
মহিনি : মা রান্নায় ব্যাস্ত আর বাবা বাজারে, মাহিন খেলছে, আমি গান শুনছিলাম তাই আর কি😂
ইছমি রুম এ ঢুকে হেন্ড ব্যাগটা সোফায় রেখে রান্নাঘরে চলে যায় মা কে হেল্প করতে।
মা : ইছমি জানিস মালিকের বড় ছেলে ও আসবে সন্ধ্যায়। তাই বলছিলাম মহিনিকে ভালো ভাবে সাজিয়ে দিস।
ইছমি : আচ্ছা।
ইম্রেত বিছানায় উপুর হয়ে শুয়ে চোখ বুঝে সেই মেয়েটির কথা ভাবছে তখনি ফোনটা বেজে উঠে। ইম্রেত কলটা রিছিভ করলো…
ইম্রেত : ইয়াহ।
any information?
মেনেজার : স্যার আমি আপনাদের বাড়ির বাহিরে দাঁড়িয়ে আছি। সামনাসামনি বলাটা বেটার হবে মনে হয়।
ইম্রেত : okyh wait!
ইম্রেত তাড়াহুড়ো করে হাপ কুয়াকাটার এর জিন্স আর ব্লাক গেঞ্জি, হাতে ফোন নিয়ে লিফট দিয়ে নিচে নেমে আসলো।
ইম্রেত বাহিরে বের হতেই মেনেজার সামনে এসে দাঁড়ায়।
ইম্রেত : সো কি ইনফরমেশন পেলে?
মেনেজার : স্যার মেয়েটার নাম ইছমি রাহমান। বয়স ১৭ _১৮ হবে। মেয়েটি কয়েকদিন আগে 2nd ইয়ার এ উঠেছে।
………….এই কলেজে পড়াশুনা করছে। মা_বাবা মেয়েটিকে ৭ বয়সে রেখে মারা জান।তখন থেকে মামা_মামির কাছে বড় হয়েছে। শুনলাম মেয়েটির মামি মেয়েটিকে দেখতে পারতো না।তাই ২ মাস আগে বিয়ে দিয়ে দেয় নিসান নামের ছেলের সাথে।
বিয়ে শুনে ইম্রেত থম হয়ে গেলো কিছু সময়ের জন্য।সে এখনো নিজের কান কে ট্রাস্ট করতে পারছে না।
ইম্রেত : ওই পিচ্চি মেয়েটি বিবাহিতা?
মেনেজার : আগে ছিলো এখন না?
ইম্রেত : ক্লিয়ার করো damn it? [ রেগে ]
মেনেজার : স্যার
মেয়েটির বিয়ের দিন তার হাসবেন্ড নিসান মাড়া যান। বিয়ের আধঘন্টার মদ্ধে তার লাশ বাসায় আসে। এক্সিডেন্ট কেস ছিলো। অতিরিক্ত ড্রিনক করায়।
নিসান এর মা_বাবা ছেলের সোকে মেয়েটিকেই নিজের মেয়ের মতো রেখেছে।
এখন মেয়েটি তার শশুড়বাড়ি তেই থাকে উনাদের মেয়ে হিসেবে।
ইম্রেত এর মাথায় একটাই কথা” এতো ছোটো মেয়েটা #বিধবা। এতো অল্প বয়সে এতো বড় বড় ধাক্কা নিয়ে বেচে আছে মেয়েটা। জীবন টা বড়ই অদ্ভুত কেউ সব পায় আর কেউ কিছুই পায় না। কারো জীবন সুখের আর কারো দুঃখের।
ইম্রেত : থাকে কোথায়?
মেনেজার : [ মুচকি হেসে ] স্যার আপনাদের বিল্ডিং এর পাচ নাম্বার ফ্লাট এ।
ইম্রেত: 🙄সিরিয়াসলি?
মেনেজার : ইয়েস স্যার…
সবচেয়ে ইম্পরট্যান্ট কথা স্যার আপনার ছোটো ভাই কিমরান স্যার এর সাথেই মেয়েটির ননদ মহিনির বিয়ে হবে শুনলাম।
ইম্রেত শুধু বিল্ডিং এর পাচ নাম্বার ফ্লাট এ কিছুক্ষন চেয়ে থেকে মেনেজার কে বলল…
ইম্রেত : thanks 🤗
মেনেজার : স্যার মেয়েটির ইনফরমেশন কেন নিলেন?
ইম্রেত : [ মেনেজার এর কাধে হাত রেখে ]
হৃদয় আমার ভরে আছে পরম শান্তিতে। একটা খুশির আবেগ ভরে গেছে হৃদয়ে।
বুঝলে মেনেজার।
এন্ড…
কারন ও পিচ্চি #বিধবাটাই তোমার ম্যাডাম হবে। [ হেসে হেসে ]😇
মেনেজার : স্যার লান্ডান থেকে পড়াশুনা করে আপনি এতো ভালো বাংলা বলতে আরেন?
ইম্রেত : আমার মতো মা থাকলে সব ই পারবে।
মেনেজার বেচারা চুপসে গেলো😷।আর ভাবছে ” এতো বড়লোক বাবার বড় ছেলে যে কিনা লান্ডান থেকে এসে বাংলাদেশের এক বিধবা মেয়েকে বিয়ে করতে চাচ্ছে আজিব। আমিই তো শাক্ষি স্যার এক এক দিন এক এক মেয়ের সাথে লিভ টুগেদার করে। তাহলে বিয়ে নো ওয়ে মনে হচ্ছে ওয়ান নাইট স্টেন্ড করে ছেড়ে দিবে।
ইম্রেতের কথায় মেনেজার এর হুস এলো…
ইম্রেত : কি ভাবছেন…
বাই দা ওয়ে আবার থেংকিউ।
আচ্ছা এখন যেতে পারেন।
মেনেজার : ওকে স্যার সালাম।
ইম্রেত গেট দিয়ে ঢুকবে তখনি সব মেয়েগুলি ইম্রেত এর দিক তাকিয়ে আছে😯। ইম্রেত আশেপাশে তাকিয়ে সবগুলি মেয়েকে চোখ টিপ মেরে হায় জানালো। 😎
আর মেয়ে গুলি হাত নারাচ্ছে।
ইম্রেত বলল…
অকে বায় লেডিস.. সি আ😘
মেয়েগুলি মুচকি মুচকি হাসছে।
ইম্রেত লিফট এ ৫ এ ক্লিক করলো।
৫ নাম্বার ফ্লাট এ পৌছিয়ে ইছমিদের ফ্লাট এ বেল বাজালো। 😯
ইম্রেত সাথেসাথে লুকিয়ে পরলো। ইছমি ওরনা ছাড়া ছিলো তাই ধিরে ধিরে গেট খুলে কাউকে না দেখতে পেয়ে বের হলো।
ইম্রেত অবাক চোখে ইছমিকে দেখছে।
ইছমি কালো কামিজ পড়া ছিলো [Without dupatta😛] আর হাতে বই ছিলো।
ইম্রেত বলে উঠলো….
“” কুচ বরন কন্যা সে মেঘ বরন তার চুল।
নিটোল কালো চুলের মাঝে একটি রঙিন ফুল।হাসিতে তার মুক্ত ঝরে।”উফ আর আমার গলার গান উপচে পড়ে।😑
আসোলেই মেয়েটি অসম্ভব সুন্দর। পিচ্চি হলে কি হবে রুপ আছে বলতে হয়।আর ওরনা ছাড়া তো আরো হট লাগে।😜
ইছমি আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো কেউ নেই।😒
তাই আবার গেট লাগিয়ে দিলো।
ইম্রেত ব্লাশিং ব্লাশিং হতে হতে আবার লিফট এ উঠে নিজের ফ্লাট এ চলে গেলো।
সন্ধ্যায়…..
ইছমি মহিনিকে খুবি সুন্দর ভাবে সাজায়।
আশেপাশের ফ্লাটের সকল মেয়েরা আন্টিরা ইছমিদের বাসায় এসে পড়ে।
সবাই বলাবলি করছে ” কতো ভালো কপাল মহিনির এতো বড়লোক বাড়ির ছেলের সাথে বিয়ে হতে যাচ্ছে।
ইছমির শশুড়_শাশুড়ি সবাই নতুন পোশাক পড়েছে।শুধু ইছমি সকালের কালো ড্রেস পড়েই আছে।
কারন ইছমি অনেকটা সুন্দর আবার সাজলে আরো রূপবতী লাগে যেটা দেখলে আশেপাশের মানুষ ইছমিকে বাজে কথা বলে। #বিধবা মেয়েরা সাজতে পারবেনা এমন কথা বারতা বলে।
ইছমির অনেক সখ অন্য মেয়েদের মতো একটু সাজা ঘুরাঘুরি করা।নতুন কাপড় পড়া কিন্তু তার কপালে নেই এগুলি সমাজের জন্য।
কলিং বেল বাজছে মানে ছেলে পক্ষরা এসে পরেছে। ইছমিকে তার মা গেট খুলতে পাঠিয়ে দেয়।
ইছমি গেট খুলে ইছমির মা_বাবা, বড় আপু,কিমরান কে সালাম জানায়। আর পিচ্চি বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নিলো [ ইম্রেত এর বড় আপুর মেয়ে সাফিয়া ]
ইছমি : আসুন ভিতরে।
ইম্রেত এর বড় আপু (শিলা) : তো ইছমি আজ কি রান্না করে খাওয়াবা।
কিমরান : ইছমি আপু ভালো কিছু রেধে খাওয়াতে হবে কিন্তু।
সাফিয়া : না না আমি যা বলবো আপু তাই রান্না করবে।
ইছমি : আচ্ছা আমার সাফিয়া মামুনির জন্নই সব রান্না করবো। [ হেসে]😄
সবাই সোফায় বসে কথা বলছে।ইছমির মা বলে উঠলো…
ইছমির মা : তা বেয়ান আপনার বড় ছেলে কোথায় দেখছি না যে?
শিলা : আন্টি ও বাবার সাথে আসবে।
কিমরান : ওই তো এসেছে?
ইম্রেত ঢুকে সবার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
সবাই ফেট ফেট করে তাকিয়ে আছে ইম্রেত এর দিক [ বাংগালিদের কাজ যেটা আর কি 😂]
ইম্রেত সেই একি পোশাক পড়ে এসেছে। চেঞ্জ করে নি।
মেয়েরা ইম্রেত কে দেখছে আর মুচকি হাসছে।
ইম্রেত : hi everyone,
Hey hi beautiful লেডিস😘[চোখ মেরে ]
সবাই রিপ্লায় দেয় হায় বলে।ইম্রেত কিমরান এর পাশে বসলো।
আর মহিলারা বলাবলি করছে মাশাল্লাহ মালিকের ছেলেটা তো প্রিন্সের মতো দেখতে।😁
ইম্রেত আশেপাশে ইছমিকে খুজছে দেখতে পাচ্ছে না।
ইম্রেত : আপু সাফিয়া কোথায়?
শিলা : ওই তো ইছমি আনছে।
ইম্রেত পাশে তাকিয়ে দেখলো ইছমি সাফিয়া কে কোলে নিয়ে হাসতে হাসতে রুম থেকে বের হয়ে আসছে। ইম্রেত সেই মুখ উজ্জ্বলতার মাতাল করা হাসি দেখছে।
ইছমি মুখ উচু করে সামনে তাকিয়েই থম😯
চলবে..

♥ বিধবা ♠
Writer : Nabila Ishq
Part : 4
ইম্রেত : আপু সাফিয়া কোথায়?
শিলা : ওই তো ইছমি আনছে।
ইম্রেত পাশে তাকিয়ে দেখলো ইছমি সাফিয়া কে কোলে নিয়ে হাসতে হাসতে রুম থেকে বের হয়ে আসছে। ইম্রেত সেই মুখ উজ্জ্বলতার মাতাল করা হাসি দেখছে।😍
ইছমি মুখ উচু করে সামনে তাকিয়েই থম।😯
নিমিষেই হাসিটা মুখ থেকে হাড়িয়ে গেছে সাথে দিয়ে গেছে চিন্তার ছাপ একে।
কারন তার সামনে সেই ভদ্রলোকেটি দাঁড়ানো যে তাকে লিফট দিয়েছিলো।
নিধির তো ক্লিয়ারলি লোকটির নাম ও মনে নেই। ইছমি যথেষ্ট ভয়ে আছে কারনটা সহজ এক বিধবা মেয়ে আগে থেকে একটা ছেলেকে চিনে আবার তার সাথে মিশে বেপারটা কেউ ভালো বলবেন না। তার উপর আশে পাশের আন্টি এবং আরো মেয়েরা,, এবং লোকজন তো রয়েছেনই। সেখানে যদি ছেলেটি ইছমিকে কিছু জিজ্ঞেস করে বা কথা বলতে চায়। 😷
তাই ইছমি চোখ নিচে নামিয়ে ফেলল। আর ইম্রেত যদি কোনো কথা তার সাথে না বলতে পারে তাই সে সাফিয়া কে কোল থেকে নামিয়ে ভেতরে চলে গেলো।😞
ইম্রেত এখনো ইছমির চলে যাওয়ার পথে তাকিয়ে আছে।ইম্রেতের বেপারটা হজম হলো না। কারন তাকে দেখে সেই স্থান থেকে কোনো মেয়ে চলে যাবে তা কখনো হয় নি।
তাও ইম্রেত ভ্রুক্ষেপ করলো না।😏
কিমরান আর মহিনির বিয়ের তারিখ এবং বিয়েটা কিভবে হবে তা নিয়ে কথা চলছে।
আজ থেকে ১৪ দিন পর কিমরান আর মহিনির বিয়ের তারিখ ঠিক করা হয়েছে।আর বিয়েটা মুসলিম ধর্ম মেনে হবে।কারন ইম্রেত এর বাবা তাদের ধর্মের নীতি খুবি ভালো ভাবে পালন করেন।😇
ইছমি মহিনিকে নিয়ে আসে বসার রুম এ।কিমরান এর পাশেই বসানো হয়েছে মহিনিকে।অপরুপ লাগছে মহিনি আর কিমরানকে।দু’জন দু’জনকে ভালোবেসে কাছে পেতে চলল।
সবাই তাদের জুটিকে যথেষ্ট পছন্দ করেছে।এবং দু’জনকেই দু’জনের পাশে বেস মানিয়েছে।
সবাই কথা বলছে বাট ইম্রেত ইছমিকে দেখছে আর ভাবছে….🤗
রোজ রোজ সপ্ন দেখি…আর মন চলে যায় অনেক দুরে। সাত সাগর আর তের নদি পার হয়ে আমার মনের পাখির কাছে।😘
কিন্তু পাখি তো বুঝতে চাচ্ছে না। যে সে কাউকে পাগল করে দিচ্ছে🙄
মনের আয়নায় ইদানিং ভেসে উঠছে একটি মধুর মুখ। সে যে আমার অনেকদিনের চেনা।কাজল কালো ডাগর চোখে অনেক কথা বলতে চায়, কিন্তু বলতে গিয়ে পারে না বলতে,সে যেন বোবা কথা নাই তার মুখে।সারাদিনের কাজের মাঝে নদির স্রোতের মতো সময় কাটে তার যত কস্ট দুঃখ চেপে রেখেছে নিজের বুকে আমি যে তাকে বুকে নিতে চাচ্ছি।আসবে কি আমার বুকে? 🤔
হয়তো আসতে চাইবে না। জড় করে আনতে হবে পাগল আমাকে যেহেতু বানিয়েছে পাগলামিটাও ওকেই সজ্জ করতে হবে। ওকেই নিভাতে হবে আমার পাগলামি।😔
ইম্রেত একধেনে ইছমির দিক তাকিয়ে ভবছে কথাগুলি…😎
বেপারটা কেউ লক্ষ না করলেও মহিনি লক্ষ করেছে।আর মহিনি বুঝেছে এটা কোনো সাধারণ তাকিয়ে থাকা নয়।
মহিনি কিছুটা বুঝেছে।🙄
ইছমি অনেক্ষণ যাবত দেখছে ইম্রেত তার দিকে তাকিয়ে আছে।সে না এখান থেকে যেতে পারছে না কিছু বলতে পারছে।তাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে সবার কথা শুনছে।😷
ইছমির বাবার কথায় ইম্রেত এর ঘোর কাটে।😴
ইছমির বাবা : তো ইম্রেত বাবা কি জব করো।
ইম্রেত : আংকেল লান্ডান এ আমাদের বিজনেস আছে, এখানেও আছে তাই দুটোই আমি চালাই।
ইছমির বা : আচ্ছা তো আবার চলে যাবে নাকি?
ইম্রেত : তেমনটাই ভেবেছিলাম। বাট এখন ঠিক বলতে পারছি না।
[ কথাটা ইছমির দিক তাকিয়ে বলল ইম্রেত ]😜
কথা বারতা সেশ হলে ইম্রেতরা চলে আসে তাদের বাসায়।আসার সময় অনেকবার ইছমির সাথে কথা বলতে চেয়েছে বাট ইছমি আর সামনেই আসে নি ইম্রেত এর।😟
ইম্রেত ভাবছে ” ইছমি কি আমাকে এভোয়েড করার চেস্টা করছে ”
নিজে নিজেই অনেক চিন্তা ভাবনা করছে।
রাত ১২ টা বাজতে চলল ইম্রেত এর ঘুম আসছে না। বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভাবছে ইছমির কথা এতো মেয়ের সাথে লিভ টুগেদার করেছে সাথে ওয়ান নাইট স্টেন্ড ও। সব মেয়েগুলোই যথেষ্ট রূপবতী ছিলো।কাউকেই তার মনে ধরলো না তাহলে ইছমির মদ্ধে কি এমন আছে যে ও এক দেখায় পাগল হয়ে যাচ্ছে।😕
ইম্রেত এর পাগলামিটা শুধুই বাড়ছে কমার নাম নেই। প্রতিদিন দেখা হচ্ছে বাট ইছমি বেপারটা এড়িয়ে যায়। ইম্রেত ইছমিকে দেখার জন্য ৬ টায় উঠে পরে। এভবে ইম্রেত কখনি এতো যলদি উঠার কথা সপ্নেও ভাবে না। 😪
একটা কথা আছে না,,,
ভালোবাসা কাঠালের আঠা লাগলে পরে ছারে না।😁
এই কথাটাই ইম্রেত এর মনে পড়ছে আজ খুব, হাসিও পাচ্ছে। 🤔
লান্ডান যাওয়ার পর থেকে একাকিত্ত দূর করতে সদা মেয়েদের সাথে থাকতো ইম্রেত।
বেশি খারপ লাগলে অন্ধকার রুম এ বসে থাকতো। ইছমিকে দেখার পর থেকে ইম্রেত এর ঘুম একাকিত্ত সব দূর হয়ে গেছে।
আজ ২ দিন হচ্ছে ইম্রেত ইছমিকে দেখেছে চিনেছে😬
বারান্দায় দাঁড়িয়ে স্পস্ট দেখতে পাচ্ছে ইছমিকে কলেজ ড্রেস পরে কাধে ব্যাগ নিয়ে বাচ্চাদের মতো দৌরিয়ে বাস ধরতে।
বাসটা এখনো দাঁড়িয়ে হয়তো আরো যাত্রি নেবে। ইছমি জানালার পাশে বসেই কানে হেডফোন গুজে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
আর তা দাঁড়িয়ে দেখছে ইম্রেত। স্পষ্ট দেখতে না পেলেও কল্পনা করতে পারছে।😋
আবার ঠিক ১ টার দিক ইছমি সেম বাস থেকে কলেজ ড্রেস পরে নামছে। তা বারান্দায় দাঁড়িয়ে মুচকি হেসে দেখছে ইম্রেত। 😘
ইছমি বাস থেকে নেমে হঠাত ই উপড়ে তাকালে ইম্রেত কে দেখতে পায়।তার দিকেই তাকিয়ে হাসছে।😎
ইছমি ও মুচকি হাসি দিলো।😄
ইম্রেত ইছমির এই মুচকি হাসিটা বড্ড পছন্দ করে।
বাট ইছমি কথা বলতে চায় না ইম্রেত এর সাথে কারন সে কোনো রকম বাজে মন্তব্যে শনতে চায় না সমাজ থেকে। আর তা ইম্রেতকে বলে দিয়েছে ইছমি।😶
ইম্রেত কিছু বলছে না বা করছে না কারন তার একটাই ইছমি যথেষ্ট ছোটো।ঠিক ভাবে জানেও না ১৮ হয়েছে কি না।ইছমির মা বলেছে ১৭। ইম্রেতের বয়স ২৫+। তার মানে অনেকটা বড় সে ইছমির থেকে। আবার এভবে ইছমি ইম্রেত কে বড় ভাইয়া আর কিমরান কে ছোটো ভাইয়া ডাকে।
তাই ইম্রেত কিছু বলতে পারছে না😑
বাট ইছমি তো জানে না ইম্রেত তাকে ভালোবেসেছে আর যে তাকে ভালোবেসেছে সে তাকে পাওয়ার জন্য সমাজ না পুরো প্রিথিবীকে নড়িয়ে দিতে দু’বার ভাব্বে না।😎
চলবে……..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে