#বিচ্ছেদের_পরেও_ভালোবাসি❤️
পর্ব ০৫
#লেখনিতেঃনুসরাত
বিকট আওয়াজ পেয়ে আরাফের মা আর ভাবি ওর রুমে এসে দেখেন আরাফের হাত থেকে রক্ত ঝড়ে পড়ছে আর ভাঙা আয়নার টুকরোগুলো ফ্লোরে পড়ে আছে।ছেলের এমন অবস্থা দেখে সাহানা চৌধুরী সামনে এগিয়ে এসে আরাফের হাত ধরতে চান।কিন্তু আরাফ বাধা দিয়ে বলে,
“না মা।একদম আসবেনা।”
“আরাফ!”, অবাক হয়ে।
” চিল্লাছো কেনো মা?তুমি এটা আমার সাথে কেনো করলে?তুমিতো আমার মা আর মা রা তো সন্তানের ভালো চায় কিন্তু তুমি আমার সাথে এরকম টা কিভাবে করতে পারলে?”
“তুমি কি বুঝাতে চাচ্ছো আমি তোমার খারাপ চাই?”
“তা নয়তো কি?” চেচিয়ে বলে উঠে।
আরাফের চেচানো আর এমন উগ্র ব্যবহারে মিরা নিরাশ হয়।এমনটা আরাফের থেকে আশা করেনি।ওর শাশুড়ীকে বড্ড ভালোবাসে মিরা।তাই আরাফকে গম্ভীর কন্ঠে বলে,
“আরাফ এটা কোন ধরনের ব্যবহার উনি তোমার মা!”
” হ্যা ভাবি উনি আমার মা কিন্তু আমার ও একটা সিদ্ধান্ত আর মতামত আছে।আমি বলার পরেও আমাকে একবার না জানিয়ে বিয়ে পাকাপাকি করে ফেলা এটা কেমন ধরনের সিদ্ধান্ত? ”
“হ্যা মানছি এটা ঠিক হয়নি তাই বলে তুমি মায়ের উপর চিল্লাতে পারোনা”
আরাফের একটু খারাপ লাগে।আসলেই এমন চিল্লানোটা উচিত না যতই হোক মা তো!মাথাটা নিচু করে বলে,
“সরি ভাবি”
” আমাকে না বলে মা কে বলো”
“সরি মা।কিন্তু তুমি আমাকে না জানিয়ে এমন টা কেনো করলে?”, আস্তে সুরে।
“আমি কি তোর ভালো চাইনা বাবা বল?সব বাবা-মা ই চায় তার সন্তান ভালোভাবে বাচুক।বিগত ৬ টা বছর তুই হাসিখুশি থাকিস না।কেনো থাকিস না জানিনা হয়তো বলতে চাস না তাই কখনো জোর করিনি।কিন্তু আমি তো মা?৯ টা মাস তোকে গর্ভে ধারণ করেছি।প্রসব যন্তণায় কাতর হয়ে তোকে এই দুনিয়ায় এনেছি।তোর অল্প আঘাতে আমার বুকের ভিতর ক্ষত বিক্ষত হয়ে যেতো।আমার আরাফ তো এমন চুপচাপ আর মনমরা ছিলোনা?প্রায় প্রায় ই খেতিনা।কিছু বললে রাগ করে চলে যেতি এমন ও সময় গেছে তুই বাসায় ফিরিস নি তারপর ও কিছু জিজ্ঞেস করিনি।বড় হয়েছিস পার্সোনাল লাইফ তোর। হস্তক্ষেপ করা পছন্দ করি না করিনি ও।কিন্তু আমি চাই আমার ছেলেটা হাসিখুশি থাকুক একটু ভালো থাকুক আর তাই ইশার সাথে তোকে বিয়ে দিয়ে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চাই ব্যাস এই টুকুই।আর আমি জানি তুই রাজি হতিস না আর সেইজন্যই তোকে না জানিয়ে সব পাকাপোক্ত করেছি”
“কিন্তু মা তোমার কি মনে হয় আমি ইশার সাথে ভালো থাকবো?”
কান্নাভরা কন্ঠে বলে উঠেন সাহানা চৌধুরী,
“আমি জানি তুই অন্য কাউকে ভালোবাসিস।তাহলে তাকে বিয়ে করছিস না কেনো?যতবার ওর কথা বলেছি বলেছিস বিয়ে করবিনা।তাই ভেবেছি হয়তো এখন আর সম্পর্ক নেই তাই বলছিস।আচ্ছা তুইতো পাগল হয়ে গেছিলি ওকে বিয়ে করতে।আমার সাথে কত ই না পাগলামি করেছিস তোমার বউ আসলে এই করবো সেই করবো।তোমার বউ আসলে বউয়ের সাথে টাইম স্পেন্ড করবা মেয়ের মতো ট্রিট করবা।মেয়ের আশা পূরণ করবা।আমার সেই আরাফ টা কোথায় হারিয়ে গেছে বাবা বল?”
“মা তোমাকে বলিনি কিন্তু ভাবিকে বলেছিলাম আমাদের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে আর জানো?বিচ্ছেদ হওয়ার সিদ্ধান্ত টা আমি ই নিয়েছিলাম আর আমি ই করেছিলাম।আর ওকে আমি নিজ হাতে হারিয়েছি।ওকে আর কখনো ফিরে পাবোনা।আমাকে হয়তো এখন ঘৃণা করে।সেদিন ওকে অনেক অপমান করেছিলাম কিন্তু বিশ্বাস করো মা আমি চাইনি ওকে এভাবে ভাঙতে ওকে সুন্দর লাইফ দেয়ার বদলে লাইফটা অন্ধকারে নিয়ে গেছি।যার জন্য আল্লাহ আমাকে কখনো মাফ করবেনা।কিন্তু মা আমি ওর জায়গা আর কাউকে দিতে পারবোনা।আমি ওকে #বিচ্ছেদের_পরেও_ভালোবাসি❤️।আমি এই বিয়েটা করতে পারবোনা মা আমাকে মাফ করে দিয়ো।”
“বুঝতে পেরেছি কিন্তু এভাবে জীবন চলেনা আরাফ।আমাদের কারো না কারো প্রয়োজন হয় ই।তাই বিয়েটা হচ্ছে আর এইটাই ফাইনাল”, গম্ভীরভাবে বলেন।
” আ’ম সরি বাট আই কান্ট।আমি চলে যাবো এখান থেকে অনেক দূরে আমাকে আর দেখা লাগবেনা”
বলেই সেখান থেকে বের হয়ে যেতে নেয় আর ওর মা ওকে আটকিয়ে দিয়ে বলেন,
“আমি জানতাম তুই রাজি হবিনা।তাই সাথে করে বিষ টা নিয়েই এসেছি।তুই যদি আমার মরা মুখ দেখতে না চাস তো বিয়েটা কর নাহলে তোর মা আজ ই তাকে শেষ করে দিবে”, বিষের বোতলের মুখ টা খুলতে খুলতে বলেন।
“মা!”,হতবাক হয়ে।
” মা এ তুমি কি করছো!ফেলে দাও এটা।জোর করে বিয়ে দিলেও ভালোবাসা হয়না।আর আরাফ পারবেনা অন্য কাউকে ভালোবাসতে”, হতবিহ্বল হয়ে বলে মিরা।
“বিয়ে হয়ে গেলে সব হয়।ভালোবাসা না হলেও মায়া ঠিক ই জন্মে যায়।আর আল্লাহ চাইলে ভালোবাসাটাও একসময় হয়ে যাবে।”
“মা তুমি আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছো?”
“হ্যা করছি”
“আমি বিয়ে করবোনা মানে করবো না ই।”
“ঠিক আছে।আমাকে মারতে চাচ্ছিস ওকে ফাইন”, বলেই বোতলের মুখ টা খুলে মুখে দিয়ে গিলে ফেলেন।আর মাটিতে শুয়ে পড়েন।
” মা মা মা!এটা তুমি কি করলে!তুমি আমাকে ছেড়ে যেতে পারোনা মা।ভাইয়া ভাবির বাবার কি হবে?আমার কি হবে?তুমি যাকে বলবে তাকেই বিয়ে করবো প্লিজ মা ফিরে আসো।ভাবি ভাইয়া বাবাকে কল দাও।আমি মাকে নিয়ে হসপিটাল এ যাচ্ছি”,অস্থির হয়ে বলে।
“হ্যা তাড়াতাড়ি গাড়ি বের করো আমি এখন ই কল দিচ্ছি”, চিন্তিত সুরে বলে মিরা।
আরাফ উনাকে কোলে নিতে যায় আর উনি বলে উঠেন,
” রিল্যাক্স আমার কিছু হয়নি ওটাতে পানি ছিলো।”
“মা!”, রেগে গিয়ে বলে আরাফ।
” চিল্লিয়োনা।এটা পানি ছিলো কিন্তু তুমি রাজি না হলে আমি সত্যি ই বিষ খাবো এই বলে দিলাম”
“ওকে ফাইন যা ইচ্ছে হয় করো” , রাগে গজগজ করতে করতে চলে যায় বাইরে।
“হাত টা ব্যান্ডেজ করে…যাহ চলেই গেলো”, আফসোসের সুরে বলেন সাহানা চৌধুরী।
” মা এটা তুমি ঠিক করোনি”, শান্ত সুরে বলে মিরা।
“মা তো হয়েছো।ছেলে বড় হলে এমন পরিস্থিতিতে পড়লে বুঝবে।”, হালকা হেসে বলেই চলে যান উনার রুমে।
এক সপ্তাহ পর,
আজ শুক্রবার।মায়া আর অহনা মিলে রেডি হচ্ছে।মায়া পড়েছে গোলাপি শাড়ি আর চুল খোপা করে চুলে গাজড়া দিয়েছে।যদিও দিতে চায়নি অহনার জোড়াজুড়িতে দিয়েছে।ঠোটে হালকা গোলাপি লিপস্টিক।কানে ছোট একজোড়া দুল।অহনা অনেক বলেছে পার্লার থেকে সাজতে কিন্তু মায়া না করে দিয়েছে।পরে আবার অহনা বলেছে কাজল দিতে চুল খোলা রাখতে ঠোটে গোলাপ কালার লিপস্টিক দিতে।
হাতে কাচের চুড়ি পরতে।কিন্তু মায়া সাথে সাথে অস্বীকার করে দিয়েছে পরার থেকে।বলেছে,” যার জন্য এই রূপে সাজতাম সেইতো নেই।সাজ দিয়ে কি হবে?কাকে দেখাবো?” এর প্রতিউত্তরে অহনা কিছুই বলতে পারেনি।
অহনা পরেছে সবুজ শাড়ী।চুল খোলা।ভারী মেকাপ করা।আর জুয়েলারিও পরেছে।ওর সাজতে ভালো লাগে তাই সাজা থেকে নিজেকে আটকাতে পারেনি।
সবাই রেডি হয়ে গাড়িতে উঠে বসে।মায়া,অহনা আর মায়ান এক গাড়িতে আর মায়ার মা-বাবা এক গাড়িতে।অহনার কথা মিরাকে বলাতে মিরা রাজি হয়ে যায় আর সব ফাংশনে আসতে বলে।তাই অহনাকেও নিয়ে যাচ্ছে মায়ার জন্য।বোনটা একটু খুশি হলেই মায়ানের তৃপ্তি মিলে।
অন্যদিকে প্রচন্ড বিরক্তির সাথে রেডি হচ্ছে আরাফ।কালো পাঞ্জাবী পায়জামা পরেছে।চুলগুলো সবসময়ের মতো নরমাল ই রেখেছে।ওর চুল নিয়ে মাতামাতি একদম ও পছন্দ না।চোখে চশমা।হাতে হাত ঘড়ি কালো রং এর।
ইশাকেও কালো শাড়ি পরানো হয়েছে।আর পার্লার থেকেই সেজে এসেছে।দুজনকেই স্টেজে বসানো হয়েছে।প্রচুর বিরক্ত হচ্ছে আরাফ তা তার মুখেই ফুটে উঠছে।আর ইশাতো পারেনা চোখ দিয়েই গিলে খাবে। ওর সাথে সাথে যতগুলা মেয়ে এসেছে সবাই ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছে ওর দিকে।
সবেমাত্র ওরা নামলো সেন্টারের সামনে।ভিতরে এসে অহনা আর মায়াকে দুটো চেয়ারে বসিয়ে পাশে ওর বাবা-মাকে বসিয়ে মিরাকে আর সারাফকে ডাকতে গেলো।কিছুক্ষণ পর মিরা আসলো সাথে সারাফ আর ওদের ছেলে আহান।
মিরাকে দেখেই মায়া জড়িয়ে ধরে মিরাকে আর বলে,
“আপুই আপুই আই মিসড ইউ সো মাচ!তুমিতো দেখছি আরো সুন্দরী হয়ে গেছো?ভাইয়া বুঝি অনেক ভালোবাসে?”, চোখের ভ্রু নাচিয়ে নাচিয়ে বলে।
” যা ফাযিল মেয়ে”,লজ্জামিশ্রিত মুখে।
“মিষ্টি আন্টি তুমি এইখানে?”,মায়াকে দেখে আহান বলে।
” তুমি এইখানে কেনো বাবা?”
“আমি থাকবোনাতো কে থাকবে আন্টি?”
“আমি কিছু বুঝতে পারছিনা”
“আরে মায়ু তুই আমার ছেলেকে চিনিস না?ও চিনবি কিভাবে কখনো দেখিস নি তো।আমার আর সারাফের ছেলে আহান।আর আহান এটা তোমার মায়ান মামার বোন মায়া।তোমার মায়া আন্টি”
“হ্যা আম্মু আমি জানি ওদিন শুনেছিলাম মিষ্টি আন্টির নাম।”, হাসিমুখে বলে।
” কিভাবে?” জিজ্ঞেস করে সারাফ।
তারপর আহান সবকিছু বলে ঐদিন কি কি হয়েছিলো।সবকিছু শুনে মায়ার বুকটা ধুক করে উঠে।তবে কি ওর আরফুই মিরা আপুর দেবর?ওর ই বিয়ে হচ্ছে?মায়াতো আগেই জানতো আরাফ অন্য কারো হয়ে যাবে তবে এখন কেনো কষ্ট পাচ্ছে?ও খুব করে চাইছে মিরা আপুর দেবর যেনো আরাফ না হয়।অন্য কেউ হয়।আর তাই জিজ্ঞেস করে,
“আপু তোমার দেবরের নাম কি?”
“জানিস না?”
“আরাফ।আরাফ চৌধুরী আমার ভাইয়ের নাম”, সারাফ বলে।
” হোয়াট!”, অবাক হয়ে অহনা বলে।
তারপর মায়া স্টেজের দিকে গিয়ে দাঁড়ায়।সাথে অহনাও যায়।
“এ তো সেই ছেলেটা পার্কে যে লেকচার দিয়েছিলো আমায়”, আস্তে আস্তে বলে অহনা।
মায়ার আরাফকে ইশার সাথে বসা দেখে বুকটা চূর্ন-বিচূর্ন হয়ে যায়।চোখ গুলো ঘোলা হয়ে যায়।ঝাপসা দেখছে মায়া।টপটপ করে পানি গড়িয়ে পড়লো মায়ার গাল বেয়ে।অহনা মায়ার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে মায়া কাদছে।যার মানে এই আরাফ ই ওর আরফু।অহনার রাগের মাত্রা আরো বেড়ে গেলো।এই ছেলেকে ওর কিছুতেই সহ্য হয়না।সেদিন তো অনেক বলছিলো বাধ্য হয়ে ছেড়ে চলে যায়।কিন্তু ভালোবাসে ঠিকি।এই ওর ভালোবাসা?এভাবে অন্য কাউকে বিয়ে করে নেওয়া?এসব ভেবেই প্রচুর রাগ সহ বিরক্ত হচ্ছে অহনা।কেনো যে আসতে গেলো এই ফাংশনে।তারপর মায়াকে নিয়ে একটা চেয়ারে বসায় আর এক গ্লাস পানি দেয়।খুব কষ্ট করে মায়া পানিটুকু খেলো।তারপর কাপা কাপা কন্ঠে বললো,
” আমা আমাকে এখান থেকে নিয়ে চল প্লিজ”
“আমিও থাকতে চাচ্ছিনা চল”
মায়া চোখের পানি মুছে যেতে নেয় আর এক মহিলার সাথে ধাক্কা লাগে।মহিলাটা পড়ে যায়।
মায়া দুঃখিত মনে বলে,
“সরি আন্টি আসলে আমি দেখিনি”
“কেমন মেয়ে তুমি হ্যা?চোখ কোথায় রেখে হাটো?ও অবশ্য হাটবেও বা কিভাবে? চোখ ই তো নেই।সব ভিতরে ঢুকে আছে।আর এত কালো কেনো চোখের নিচে?নেশা টেশা করো নাকি?”
মায়া হতবাক হয়ে যায় মহিলার কথা শুনে অহনা কিছু বলতে যাবে তার আগেই আবারো বলে ঐ মহিলাটি,
“যেই না শরীর এই শরীর দিয়ে আবার ধাক্কাও দাও?এত শুকনা কেনো?নিশ্চিত নেশা টেশাই করো বেয়াদব মেয়ে”
এসব শুনে অহনার রাগ উঠে যায় আর বলতে যাবে এমন সময় পিছন থেকে কথা গুলো ভেসে আসে,
“যাকে আপনি নেশা টেশা করার অপবাদ দিচ্ছেন সে একসময় ছিলো কোনো এক অপূর্ব পরী।যাকে দেখলে বাস্তবের পরীও লজ্জা পেয়ে যাবে।অবশ্য এখন ও পরী ই আছে।কিন্তু আপনার মতো মন মানসিকতার মানুষরা সেটা বুঝবেনা।কিছু সমস্যার জন্য এমন শুকিয়ে গেছে তাই বলে নেশা করবে কেনো?নিশ্চয়ই আপনার মেয়ে বা ছেলে নেশা করে?তাইতো অন্যকে বলতে আপনার মুখে বাধলোনা।আপনাকে সরি বলার পরেও এতগুলা কথা শুনানোর প্রয়োজন তো ছিলোনা আন্টি।অন্যকে সম্মান দিন আপনিও সম্মান পাবেন।হোয়াটেভার আপনারা কি দেখছেন?যার যার কাজ করুন।আর আন্টি আপনি ও অনুষ্ঠান এঞ্জয় করুন নয়তো চলে যেতে ইচ্ছে হলে চলে যান।আর মিস আপনি উপরের দিকে বা নিচের দিকে না তাকিয়ে সামনে তাকিয়ে হাটবেন আগের অভ্যাস গেলোনা হায়রে!”
“এক্সকিউজ মি”, বলেই অন্য সাইডে চলে আসে মায়া আর অহনা।
কিছুক্ষণ আগে,
আরাফ হঠাৎ করে সামনে তাকিয়ে দেখে মায়া আর ওর সাথে ঐদিনের সেই মেয়েটা যে ছেলেটাকে অপমান করছিলো।ওর আর বুঝতে বাকি নেই ওর বেস্ট ফ্রেন্ড টা কে।হ্যা মায়াই ওর বেস্ট ফ্রেন্ড আর আরাফের করা কাহিনীর জন্য রিশানকে অহনা সহ্য করতে পারেনা।তারপর দেখে মায়া উঠে যেতে নেয় আর মহিলাটির সাথে ধাক্কা খায়।ওর প্রেয়সীকে নিয়ে এমন কটু কথা সহ্য করতে পারেনা আরাফ তাইতো সাথে সাথে স্টেজ থেকে উঠে আসে সেখানে।এরকম টা দেখে ইশাও ওর পিছুপিছু আসে।চিল্লাচিল্লি শুনে মিরা মায়ান আর সারাফ ও আসে।
” তুমি ওকে চিনো আরাফ?”,ইশা বলে।
“হ্যা যেভাবে বললে মনে হয়তো চিনো তাও অনেক আগে থেকে?”, সারাফ বলে।
” হ্যা আমার বোনকে কিভাবে চিনো আরাফ?”,মায়ান বলে।
“আসলে একসময় আমরা বন্ধু ছিলাম।তারপর যোগাযোগ ছিলোনা অনেক বছর।সেই সুবাদেই চিনি আরকি”, মিথ্যা হাসার চেষ্টা করে।
মিরা ভাবছে অন্যকিছু।মায়াকে ও পরী কেনো বললো?আর এরকম প্রশংসা তো আরাফ শুধু একজনের ই করে।ওর মায়াপরীর তার মানে কি এই মায়াই ওর মায়াপরী?হ্যা মিরা এখন বুঝতে পারলো এই মায়াই আরাফের মায়া।মায়ার জীবন টা এইভাবে নষ্ট করার জন্য মিরার এখন রাগ হচ্ছে আরাফের প্রতি।মিরাতো জানে কি ট্রমাতে ছিলো মায়া আর কেমন হয়ে গেছে। এসবের জন্য শুধু আরাফ দায়ী।ওর ছোট্ট বোনটা বদলে গেছে ওর ই দেবরের জন্য।এরপর আর কিছু না বলে ওরা অন্য সাইডে চলে যায় আর আরাফ ইশা স্টেজে গিয়ে বসে।এনাউন্সমেন্ট হয় আর রিং সেরিমনী শুরু হয়।আরাফ আংটি পরায় ইশাকে আর ইশা আরাফকে।দূর থেকে দাঁড়িয়ে মায়া সবটাই দেখছিলো।কেউ যেনো ওর বুকে ছুরি চালাচ্ছে এমন বেদনাদায়ক যন্ত্রণা হচ্ছে মায়ার।আরাফ আড়চোখে মায়াকে দেখে।ও বুঝতে পারছেনা মায়াকি এখনো ওকে ভালোবাসে?নাকি ঘৃণা করে?
অহনা মায়ার জন্য পানি আনতে যায় আর তখন ই কারো সাথে ধাক্কা খায়।সামনে তাকিয়ে সরি বলবে কিন্তু তার আগেই রিশানকে দেখে ওর মাথা গরম হয়ে যায় আর বলে,
” এখানেও আমার পিছু পিছু এসে পড়েছেন?উফফ অসহ্য!”, কিছুটা চেচিয়ে।
“আস্তে অহনা!এটা তোমার বাড়ি না যে সিনক্রিয়েট করবে।সবসময় তোমার পিছুই কেন নিবো?আমার ফ্রেন্ডের ভাইয়ের এঙ্গেজমেন্ট তাই এসেছি দ্যাটস ইট।”
বলেই সেখান থেকে চলে যায়।অহনা কিছুটা অপরাধবোধে ভুগে।আর পানি নিয়ে যায় মায়ার জন্য।
To be continued…