বসের সাথে প্রেম
পর্ব- ০৫
লেখা- অনামিকা ইসলাম।
ছেলেটির ডায়েরী_
শুয়ে শুয়ে ফোন টিপা-টিপি করছিলাম। প্রায় আধঘন্টার মত ফোন টিপার পর সবার ঘুমের অসুবিধা হবে ভেবে ফোন’টা বালিশের নিচে রেখে কপালে হাত রেখে শুয়ে পরলাম। হঠাৎ’ই মনে হলো কেউ যেন ঘন ঘন নিঃশ্বাস ফেলছে, আমার খুব কাছ থেকে’ই শব্দটা আসছে। ভাবলাম বোন শিমু নয়তো?!!!!
বালিশের নিচ থেকে ফোন’টা এনে টর্চটা এনে তার আলোয় দেখার চেষ্টার করলাম। তারপর যা দেখলাম—
‘ নিশ্বাস’টা শিমুর নয়, মায়ার।’
মনে হচ্ছে চোখগুলো শক্ত করে বোজে আছে, ইচ্ছে করে’ই। ফোনের টর্চ’টা নিভিয়ে ডিসপ্লের আলো’টা একটু কমিয়ে নিলাম। ডিসপ্লের মৃদ্যু মৃদ্যু আলোয় স্পষ্ট দেখতে পেলাম, কাঁপা কাঁপা চোখে ও চোখ মেলে তাকাচ্ছে। চোখ মেলে তাকিয়েই ও ফোনের স্কিনের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। একটানা ৪মিনিট স্কিনের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল মায়া। তারপর আলতো করে চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলল। নিঃশ্বাসের শব্দ’টা ধীরে ধীরে কমে আসতে লাগল। ডিসপ্লে’টা অফ করে ফোন’টা হাতে নিয়েই ঘুমিয়ে পরলাম। মাঝ রাত্রে ঘুম ভেঙে যায়। কেন জানি মনে হচ্ছিল, কেউ আমার মাথার নিচের বালিশ’টা ধরে উপড়ে ফেলতেছে। মনে হচ্ছে, বালিশসহ’ই যেন কেউ আমায় ফেলে দিতে চাচ্ছে। চোর-টোর নয়তো?!!! :O
দেখার জন্য এক চোখ একটু একটু করে খুললাম। ঐ একটুখানি দৃষ্টি’তেই বুঝতে পেলাম চোর’ই আসছে। আমার ফোন’টা চুরি করতে আসছে বোধ হয়। ?
হুহ, আমার ফোন চুরি?! :/
দেখে নে চুর?!!!
আজ একা’ই আমি তোর কি অবস্থা করি….?
চোরটা যখন ফোন’টা নিয়ে চলে রুম থেকে বের হয়ে গেল, তখন আমিও আলমারি থেকে বোনের একটা ওড়না বের করে ওর পিছু পিছু ছুটলাম। কিন্তু একি?!!! চোরটি ছাদে যাচ্ছে কেন??
আর এতো দেখছি মেয়ে চোর?!!!?।ওর হাঁটা দেখে তো সেটা’ই বুঝে যাচ্ছে….
ওহ্, তারমানে চোরটা বিয়ে বাড়িতে মেহমান হয়ে ঢুকেছে। ওর ধান্ধা বিয়ে খাওয়া নয়, চুরি করা। যায় হোক, আজ তোর রক্ষা নাই। ছাদ দিয়ে পালাবে ভেবেছিস? দাঁড়া। তোকে আজ রাত’টা ছাদে’ই বেঁধে রাখব। ☺☺☺
মেয়েটির ডায়েরী_
ভীরু এবং কাঁপা দৃষ্টিতে চেয়ে দেখি আমার চোখের সামনে একটা ফোন। তার স্কিনের মধ্যে আমার সিয়ামের ছবি। স্কিন’টা থেকে চোখ সরাতে পারছিলাম না। আবার তাকিয়েও থাকতে পারছিলাম না। ঘুমিয়ে পরি একসময়। মাঝরাত্রে ঘুম’টা ভেঙে যায়। কিছুতেই ঘুম চোখে আসছিল না। ভিতর’টা অস্থির অস্থির লাগছিল। তাহাজ্জদ নামাজ’টা না হয় এখন পরে নিলেই ভালো হয়। উঠলাম নামাজ পরার জন্য। অযু করে ড্রয়িংরুমে গিয়ে নামাজ’টা পরে নিলাম। তারপর ছাদে গিয়ে বেশকিছু ক্ষণ বসে থেকেও যখন দেখলাম ঘুম আসছে না, তখন কয়’টা বাজে দেখার জন্য রুমের দিকে পা বাড়ালাম। মনে হলো ফোন’টা সন্ধ্যারাত্রে সাইমা নিয়েছিল। এতরাত্রে সাইমা’কে ডাকা তো সম্ভব না, তাই মামির কাছে গেলাম। ওনাকে ডাকতে গিয়েও ডাকলাম না ঘুমের ডিস্টার্ব হবে ভেবে। নানুর কাছে এসে বালিশের নিচে হাত দিয়েও ওনার ফোন পেলাম না। এবার মনে হলো স্যার তো ওনার ফোন’টা সাথে নিয়েই ঘুমাইছে। ভীরু পায়ে হেঁটে চলে গেলাম ওনার কাছে। আশেপাশে কোথাও ফোন’টা পেলাম না। বালিশের নিচে থাকতে পারে ভেবে ওনার মাথাসহ বালিশ’টা একটু উপরে তুললাম।হ্যাঁ, ফোনটা বালিশের নিচেই। লুকিয়ে, সাবধানে ফোন’টায় হাত দিলাম। ফোন’টা হাতে আসলে সেটা নিয়ে ছাদে চলে যায় এই ভেবে, ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত ফোন’টা আমার কাছেই থাকবে। এত রাত্রে ওর মুখ দেখা’তো সম্ভব না, তাই স্কিনে থাকা ওনাকেই দেখব। ছাদে যাচ্ছি, কেন জানি মনে হচ্ছে আমায় কেউ অনুসরন করে আমার পিছু পিছু আসতেছে। কিন্তু এত্ত রাত্রে কে আমায় অনুসরন করবে? বিষয়’টা ভ্রম ভেবে উড়িয়ে দিলাম। এগিয়ে যেতে লাগলাম ছাদের দিকে।
হঠাৎ কেউ আমার মুখটা চেপে ধরল। প্রথমে মুখ চেপে ধরলো। তারপর মুখ’টা বেঁধে ফেলল কাপড় দিয়ে। আমি কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারছিলাম না। মুখের সাথে সাথে আমার নাক’টাও কাপড়ে ঢেকে গেছে। আমার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল।
চলবে….