#বর্ষন_ছোঁয়ায়_মিষ্টি_রোদ💖
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
পর্ব-১২
ছোঁয়ার দিনটা কাটে চিন্তায়।
এদিকে,
ফোনটাও বাবা নিয়ে নিয়েছে।
বর্ষন কে ফোন করতে পারছে না না বলতে পারছে তার অবস্থার কথা।
ছোঁয়া পায়চারি করছে ঘরের মধ্যে।
এমন সময় হটাৎ ছোঁয়ার মা এলো,
নয়লা বেগম কে দেখে ছোঁয়া এগিয়ে গেল,
–মা।
–কি?
–মা কি হয়েছে মা।
–কিছু হয় নি মা।
তুই যখন ভার্সিটি গেছিলি তার পর তোর ফেন অনেক সময় ধরে বেজে চলেছিল।
ত আমি রান্না ঘরে ছিলাম তোর বাবা ছিল বাইরে।
তোর ফোন বাজার জন্য তোর বাবা ফোন তুলে তার পরেই তার মুখটা গোমড়া হয়ে যায়।
আমি অনেকবার প্রশ্ন করার পরেও উত্তর পাই নি।
আমি তোর ফোনে দেখলাম বর্ষন এর কল উঠে আছে।
আমি জানি না কি হয়েছে।
তবে আন্দাজ করতে পারেছি।
সত্যি করে বল তোর আর বর্ষন এর মাঝে কিসের সম্পর্ক।
মায়ের কথা শুনে ছোঁয়ার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।
তাহলে এবার নিশ্চিত বাবা সব জেনে গেছে।
কিন্তু বর্ষন এমন কি বলেছিল।
সাধারণত হ্যালোই ত বলে।
ছোঁয়ার হাত পা অবশ হয়ে আসতে লাগলো।
কিছুই বুঝতে পারছে না কি করবে।
এভাবে দিন কেটে গেল।
চলে এলো বিকাল।
ছোঁয়া কে সাজানো হয়েছে।
ছোঁয়া কে তার মা একটা শাড়ি পরিয়ে একটু লিপস্টিক লাগিয়ে দিছে শুধু।
ছোঁয়া ও চুপচাপ ডব মেনে নিয়েছে।
মায়ের শাড়ি পড়ানো দেখে বুঝেই গেছে যে আজ কি হতে চলেছে।
ছোঁয়া ঠিক করেছে তার বাবার যদি এমনটা করে।
আজ যদি সত্যি তার বিয়ে ঠিক করে তবে সে কখনো মানবে না।
সে এখন যথেষ্ট বড়ো।
তাকে এখন বুঝতে হবে সবটা।
নিজের বুঝ।
ছোঁয়া কে তার মা বাইরে নিয়ে এলো।
ছোঁয়া মাথা নিচু হয়েই আছে।
সামনে কে আছে তা দেখার কোন ইচ্ছে ই নেই ছোঁয়ার।
ছোঁয়া কে বসানো হয়।
ছোঁয়া শুনতে পায় দু’জন অর্ধ বয়স্ক দম্পতি তার কাছে কিছু কথা জিজ্ঞেস করলো।
ছোঁয়া মাথা নিচু করেই উত্তর দিয়ে দিলো
সব প্রশ্নের।
ছোঁয়া উঠে চলে এলো।
কাউকে কিছু না বলে
ছোঁয়ার বাবা বুঝতে পারলো।।
–বাচ্চা মেয়ে লজ্জা পেয়েছে।
–হ্যা তাই হয়ত৷।
আপনার মেয়ে কিন্তু ভিশন মিষ্টি।।
–হ্যাঁ একটা মাত্র মেয়ে আমার।
–চিন্তা করবেন না ভাই আমারো এক মাত্র ছেলে।
–হ্যাঁ সেটাই ত৷
ওদের দু’জন এর সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করি৷
তারা।
–হ্যাঁ তাহলে আগামি সপ্তাহের রোজ শুক্রবারে বিয়েটা হয়ে যাক।
–জি অবশ্যই।
— শুধু হলুদ আর বিয়ে।
–জি।
–তাহলে আজ উঠি আমরা।
আল্লাহ হাফেজ।
মধ্য বয়স্ক দম্পতি দু’জন চলে যায়।
ছোঁয়ার বাবা আর ছোঁয়ার মা বসে আছে,
–মেয়েটার সম্মতি না নিয়ে এভাবে সব ঠিক করা কি ঠিক হলো।
–তোমার জন্য আজ আমায় এই দিন দেখতে হয়েছে তুমি আমায় কোন কথা বলবা না।
তোমার দায়িত্ব ছিল আমার মেয়ে।
কথাটা বলে ছোঁয়ার বাবা চলে যায় রুমে।
ছোঁয়া আড়াল থেকে সব শুনে ফেলে।
ছোঁয়া রুমে গিয়ে শাড়ি খুলে ফেলে,
–ইয়া আল্লাহ এটা কি পরিক্ষা নিচ্ছো।
আমায় এর থেকে বের করো।
ছোঁয়া তার মায়রে কাছে তার ফোনটা চায়।
ছোঁয়ার মা ছোঁয়া কে ফোনটা দিয়ে দেয়,
–ফোন নিয়ে যা ইচ্ছে কর ছোয়া।।কিন্তু এই বিপদ থেকে তোকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।
নয়লা বেগম কথাটা বলে চলে যায়।
ছোঁয়া সোজা বর্ষন কে ফোন করে,
দুই বার ফোন বাজতে বর্ষন ফোন রিসিভ করে,
–কি ব্যাপার ছোঁয়া তোমার কোন খোঁজ নেই কেন.
–বর্ষন বাবা সব জেনে গেছে আর আমার বিয়েও ঠিক করে ফেলেছে।
–ও।।
–কি ও।
তুমি কিছু করো।
–এ ক্ষেত্রে আমার কি করার আছে?
–মানে!
–মানে আঙ্কেল বিয়ে ঠিক করেছেন তিনি ত তোমার বাবা।
তিনি যা বুঝে ভালোই বুঝেছে
–তুমি এটা বলছো। বর্ষন কি করে?
–যা বলছি সত্যি বলছি।
বিয়ে করে নেও আর আমায় ফোন দিও না।
ভালো থাকো।
ছোঁয়া সাত আসমান থেকে নিচে পড়লো।
এটা কি ওর বর্ষন সত্যি ওর বর্ষন কি করে।
ওর বর্ষন ত এমন ছিল না।
হচ্ছে টা কি।
ছোঁয়া কিছু বুঝতে পারছে না।
কি হচ্ছে এগুলা।
ছোঁয়া উপায় না পেয়ে মিষ্টি কে কল করে,
–হ্যালো মিষ্টি।
–হ্যাঁ ছোঁয়া।
ছোঁয়া মিষ্টি কে সব খুলে বলে,
মিষ্টি সব শুনে কিছু সময় চুপ থাকে,
–ছোঁয়া।। —
–কি করব আমি মিষ্টি।
–বিয়েটা করে নে আর কি করবি।
–মানে কি তুই কি বলছিস এগুলো।
–যা বলছি ভালোই বলছি।
আঙ্কেল ঠিক করেছে ভালোই হবে
–মিষ্টি তুই ও।
–আমি কি বলব।
তুই কাদিস না আমি আসছি।
মিষ্টি ফোনটা রেখে দেয়।
,
(আমিও যে চাই এই বিয়েটা হয়ে যাক।
এই বিয়েটা হবে আর তা শুক্রবারেই হবে ছোঁয়া।
তুই হাজার চেষ্টা করেও আটকাতে পারবি না )
মিষ্টি মনে মনে কথা গুলো বলে ছোঁয়ার বাসার উদ্দেশ্য রওনা হলো।
ছোঁয়ার বাসায় পৌঁছে মিষ্টি সোজা ছোঁয়ার রুমে চলে যায়।
ছোঁয়া মিষ্টি কে জড়িয়ে কাঁদতে থাকে,
মিষ্টি ছোঁয়ার মাথায় হাত রাখে,,
–তুই কাদিস না।
ছেলেটা ভালো
–তুইও বর্ষনের মতো।বলিস না।
ওর কি হয়েছে মিষ্টি একটা বার আমার সামনে ওকে আনতে পারিস।
–আমি কি করে আনবো৷
–তোরা সবাই এমন কেন বলছিস।
–সবাই তোর ভালো চায়।
ছোঁয়া ক্লান্ত আর কাউকে কিছু বুঝাতে চায় না ছোঁয়া।
,
,
,
দিন পর দিন কাটাতে থাকে।
আজ হোয়াট গায়ে হলুদ।।। এই পাঁচ দিন ছোঁয়া ভিশন কেঁদেছে।
ভিশন কেঁদেছে।
কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
না খেয়ে মুখ শুকিয়ে গেছে।
কার সাথে তার নতুন জীবন শুরু হচ্ছে তা ছোঁয়া জানে না।
বর্ষন কে বলে বলে আজ সে ক্লান্ত ছেড়েই দিয়েছে সব আশা।
যা হয় হবে।
ছোঁয়া কে কাঁচা হলুদ রঙের একটা শাড়ি পরিয়ে দেওয়া হয়েছে ঠোঁটে লাল লিপস্টিক।
হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে।
বরের বাড়ি থেকে হলুদ চলে এসেছে।
ছোঁয়া কে লাগানো হলো।
গোসল করানো হলো
সবাই খুশি শুধু ছোঁয়ার মুখ ভার।
আনিলা বেগম ও এসেছে।
মেয়ের মতো করে ছোঁয়ার বিয়েতে সব কাজ করছে।।
ছোঁয়ার ভেরত কোন প্রতিক্রিয়া নেই।
সব কর্ম তার উর্ধে।
ঢ়া হচ্ছে মেনে নেওয়া ছাড়া কোন কাজ নেই।
হলুদ শেষ।
সবাই ঘুম।
শুধু ঘুম নেই ছোঁয়ার দু’টো চোখে,
চোখ তাকিয়ে আছে।
আজকের পর জীবন টা বদলে যাবে।
সত্যি বদলে যাবে,
পুরোন সব স্মৃতি আজ শুধু স্বপ্ন।
বর্ষন এভাবে বদলে যাবে তা ছোঁয়া কখনো ভাবে নি।
যেখানে ভালোবাসা ধোঁকা দিলো সেখানে আর কারোর কিছুই করার নেই।
আজ ছোঁয়ার কাতেও কিছু নেই।
মনের মাঝে সেই দু’টো কথাই আসছে,
–ধরো যদি হটাৎ সন্ধ্যাে,
তোমার দেখা আমার সঙ্গে,
মুখোমুখি আমরা দু’জন,
মাঝখানে অনেক বারন।
চলবে,