বর্ষন ছোঁয়ায় মিষ্টি রোদ পর্ব-১১

0
1127

#বর্ষন_ছোঁয়ায়_মিষ্টি_রোদ💖
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
পর্ব-১১

–মিষ্টি।
–হুম।
–তোমার সাথে কথা বলে রাত পার করে দিলেও মনে হবে আমার কথা বলা শেষ হয় নি।
–কেন বলেন ত।
–কেন আবার ভালোবাসি তাই।
–ও আচ্ছা তাই।
–তুমি বাসো না?
–ভাবার বিষয়।
আমি কি ভালোবাসি আপনাকে বলেন ত।
–ফাজিল মেয়ে।
–হা হা তা একটু আছি।
–মিষ্টি।। –
–হুম।
–ও মিষ্টি।
–জি।
–মিষ্টি (ভিশন মিষ্টি করে)
–জি (রোদের মতো করে)
–ভালোবাসি।
–আমিও।
–কি!
–ভালোবাসি কিনা জানি না। (হেঁসে)
–উফ মিষ্টি।
–উফ রোদ।। —
–প্রেমে বাঁধা দেও কেন?
–প্রেমে বাঁধা দেও কেন?
–আমাকে নকল করো?
–আমাকে নকল করো?
–ভালো হবে না কিন্তু
–ভালো হবে কিন্তু
–মিষ্টি । –
–রোদ । –
–যাহ।
–যাহ।
–রেখে দিবো কিন্তু
–রেখে দিবো না কিন্তু ।
–ভালোবাসি না কিন্তু।
–ভালোবাসি কিন্তু।।
মিষ্টি ছলে ছলে কথাটা বলে থমকে গেল।
রোদ ওপাশে হাসছে,
কিছু সময় পরে
— হ্যা ত কি বলছিলে ভালোবাসো কিন্তু
আহ মেরি জান কি সুন্দর মধুর কন্ঠে এই কথাটা বললে।
–আপনি ভিশন ফাজিল।
–তুমি মনে হয় ভদ্রমহিলা।
–হ্যাঁ আমি ত ভদ্রলোকের বউ জানেন না।
–হ্যাঁ ভদ্রলোক টা কে বলো ত।
–মম জানি না।
–হুম আমার কপালে সুন্দর করে ভালোবাসি শুনাটা নেই।
–হাহা,
,ওদের প্রেম ত চলতে থাকবে এভাবে।
,
,
এদিকে,
ছোঁয়া বাইরে চলে আসতে বর্ষন ছোঁয়ার ওড়না টেনে ধরলো,
–স্টপ।
ছোঁয়া স্থীড় হয়ে গেল।।
–পালাচ্ছো কেন?
–কোথায়।
–এই যে ধরে রাখতে হচ্ছে।।
–পালাবো না তা কি করব।
–কি করবে মানে হবু স্বামীরে সেবা করো।
(একটা ভাব নিয়ে বলল বর্ষন)
ছোঁয়া এবার হাত বুকে গুঁজে পেছনে তাকালো।
–আচ্ছা ত আমার হবু স্বামীর সেবা চাই।
–হ্যাঁ সেবা চাই৷
–ত বলুন মহাশয় কিভাবে সেবা করব।
–পা টিপে দেও।
–ও তাই আচ্ছা ঠিক আছে আসুন।
ছোঁয়া সুন্দর করে বর্ষন এর পাশে বসে।
বর্ষন এর পা টা নিয়ে হাতের নখ গুলে সব বর্ষন এর পায়ে বসিয়ে দেয়।
বর্ষন চিল্লিয়ে ওঠে,
-আউ।। কি করছো ছোঁয়া।। –
–ও মা সুয়ামি পা টিপছি দেখছেন না৷। –
–তবে রে তোমারে পা টিপাচ্ছি দাঁড়াও।
–এই না,
বর্ষন ছোঁয়াকে টেনে নিয়ে নিজের নিচে বসালো।
ছোঁয়া তাল সামলাতে না পেরে শুয়ে পড়লো আর বর্ষন ছোঁয়ার উপরে।
ছোঁয়ার মুখ উঁচু করে বর্ষন,
–কি হলো হাওয়া ফুস৷। –
–এভাবে ধরে রাখলে ত ফুস হবেই।
বর্ষন কিছু সময় তাকিয়ে রইলো ছোঁয়ার দিকে,
–তুই এতো মায়াবী কেন রে?
–প্রেমিকের কাছে তার প্রেমিকা সব সময় মায়াবী হয়৷। –
–তুই শুধু আমার৷
#বর্ষন_ছোঁয়া।
বুঝলি।
–হুম বুঝলাম তার পর।
–বিয়ে করবি মেয়ে আমায়।
–কবে?
–তুই বললে আজি।
বর্ষন ছোঁয়ার গলায় মুখ গুজে।
–এই চুলের মিষ্টি ঘ্রাণ সারা পৃথিবীর পার্ফিউম কে হার মানাবে।
–ছাড়ুন৷
–থাক না কিছু সময়৷
–সময় হলে থাকবো।
বর্ষন ছোঁয়াকে ছেড়ে দেয়,
ছোঁয়া উঠে বসে,
–আমাদের সম্পর্ক টা হয়ত দিন আর রাতের মতো হয়ে যাচ্ছে।
মিলের কোন সম্ভাবনা দেখছি না। (ছোঁয়া)
–রাত দিনের সংমিশ্রণে একটা সুন্দর সন্ধ্যা পাওয়া যায় যেটা সব থেকে বেশি মধুর মনোরম পরিবেশ। (বর্ষন)
–কেন জানি না ভয় হচ্ছে বর্ষন।
–ভয়ের কিছুই নেই ছোঁয়া তোমার ১ম বর্ষ টা শেষ হলেই আমরা বিয়ে করবো।
–বাবাকে নিয়ে ভিশন ভয় হয় বর্ষন।
বর্ষন ছোঁয়ার কথা শুনে ছোঁয়ার হাত টা ধরে,
–সবাইকে মানিয়ে নিবো দেখো।
ছোঁয়া বর্ষন এর দিকে তাকায়,
বর্ষন এর হাতে চুমু দেয়।
–জানি না কি হবে কি না হবে শুধু একটা কথা জানি ভিশন ভালোবাসি।
যদি আমার অন্য কারোর সাথে কখনো জীবন বাঁধা ও হয়ে যায় তবে ভেবে নিবেন মনের মাঝে শুধু আপনি ই আছেন।
বর্ষন ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে চোখ ছলছল হয়ে জায়।
এক অজানা ভয় ভেরতে গ্রাস করেছে।
ছোঁয়া কে হারানোর ভয়।
ছোঁয়া উঠে চলে যেতে যায় তখন হটাৎ
বর্ষন ছোঁয়ার হাত ধরে বসে।
ছোঁয়া পেছন দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন সূচক দৃশ্য নিক্ষেপ করে।
বর্ষন উত্তরে বলে,
–কিছু কি হয়েছে?
–কিছু হয় নি এখনো কিন্তু হতে ত দেরি নেই।
–আঙ্কেল কিছু বলেছে,
–না বাবা কিছু বলে নি কেউ ত আন্দাজ ই করতে পারে নি।
কিন্তু আমার ভশ যখন জানবে কেউ মেনে নিবে না।
–সব আমার উপর ছেড়ে দেও ছোঁয়া।
ছোঁয়া হেসে দেয়,
–আপনার বাবা আর আমার বাবার শত্রুতা সম্পর্কে আমরা দুজন ই জানি।
তাই আলাদা করে কিছু বলার নেই।
বর্ষন এবার বুঝতে পারে ছোঁয়ার কথা।
সত্যি ও ত ভেবে দেখে নি এ কথা।
আসলে বর্ষন এর বাবা আর ছোঁয়ার বাবার মাঝে কোন কারনে এক ঝামেলা ছিল যার মাসুল প্রায় ২ বছর দুই পরিবার কে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল।
কিন্তু তার পরে নয়লা বেগম আর আনিলা বেগম এর কঠর চেষ্টায় তারা আবার এক হয়৷
কিন্তু দুই জন মানুষের মধ্যে যুদ্ধ যেন আজও থামে নি।
,
,
ছোঁয়া বর্ষন এর থেকে সরে চলে আসে।
বর্ষন এর চোখের ঘুম প্রায় নেই নেই।
মিষ্টি সারাটা রাত রোদের সাথে গল্প করে কাটায়।
ছোঁয়া আর বর্ষন নির্ঘুম।
,
,
এভাবে কেটে যায় কিছু মাস।
প্রায় ৫ মাস পরে,
এই ৫ মাসে ছোঁয়া আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে বর্ষন এর সাথে আর মিষ্টি এবং রোদের ছোট্ট একটা সম্পর্কের সমাপ্তির খাতা টানবে বলে বলা হচ্ছে।
তাদের সম্পর্কের বিচ্ছেদ এর পেছনে ঘটনা টা না হয় পরে জানি।
এক দিন সকাল বেলা।
ছোঁয়ার মা বাবা বাইরে গেছিল। আসার পর
ছোঁয়া ভার্সিটিতে চলে যায়। একটা ক্লাস পরে ছোঁয়া ভাবে মিষ্টি কে কল করবে। আজ মিষ্টি ভার্সিটিতে আসে নি।
কিন্তু ছোঁয়া অবাক হয়ে যায় ব্যাগে ফোন না পেয়ে।
–আল্লাহ ফোন কই।
বাসায় রেখে আসি নি ত।
ছোঁয়ার মনে পরে ব্যাস্ত হয়ে বের হবার সময় ফোনটা বাসায় রেখে এসেছিল।
ছোঁয়া বাসায় চলে আসে।
ছোঁয়া বাসায় আসার সাথে সাথে ছোঁয়ার মা ছোঁয়াকে ডাক দেয়,
–জি মা।
–এদিকে এসো।
–ফ্রেশ হবো না।
–না আগে এসো।
ছোঁয়া ব্যাগ রেখে বাবা মায়ের রুমে যায়।
দু’জন ই গোমড়া মুখ করে বসে আছে
ছোঁয়া আস্তে হেঁটে রুমে যায়।
–জি বলো!
–এদিকে এসো বসো। (ছোঁয়ার বাবা গোমড়া কন্ঠে)
ছোঁয়া বসে পরে,
–হুম।
–বর্ষন এর সাথে তোমাড কি সম্পর্ক।
বাবার মুখে এই কথা শুনে ছোঁয়ার হৃদয় এর স্পন্দন বেড়ে গেল।
তাহলে কি বাবা সব যেনে গেল।
কিন্তু কি করে।।
ছোঁয়া কে চুপ করে থাকতে দেখে ছোঁয়ার বাবা আবার বললো,
–কি হলো ছোঁয়া বর্ষন এর সাথে তোমার কি সম্পর্ক।
ছোঁয়া চুপচাপ আছে এখনো।
–ছোঁয়া।
–ক কিছু ন না ত ব বাবা।
–আচ্ছা।
তুমি একটু রেডি হয়ে থাকবে ত আজ একটা সারপ্রাইজ আছে তোমার জন্য।
বাবার মুখে এ কথা শুনে ছোঁয়া আরও বেশি অবাক হলো।
চলবে,
(গল্পের মোড় হয়ত সম্পূর্ণ ঘুরতে চলেছে,)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে