#বর্ষন_ছোঁয়ায়_মিষ্টি_রোদ💖
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
পর্ব-০৬
মিষ্টি ছোঁয়াকে দেখে হাসি মুখে বলল,
–আরে ছোয়া! ওয়াট এ সারপ্রাইজ।তুমি এখানে! কেমন আছো ছোঁয়া?
–আমায় এখানে দেখে অবাক হবার কথা কি?
–না তা না।
–আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুমি কেমন আছো মিষ্টি?
–এই ত আলহামদুলিল্লাহ চলে।
ফুপি কেমন আছো?
–এই ত ভালো মিষ্টি তোর ঘর রেডি আছে যা ফ্রেশ হয়ে আয়।
–আচ্ছা আমার ঘরটা কোথায় ফুপি?
–ওই ত বর্ষনের ঘরের ওপাশে।
বর্ষনের ঘরের ওপাশে শুনে ছোঁয়ার মেজাজ টা এক দমে বিগড়ে গেল।
–কেন শুধু খালামনি (চিল্লিয়ে)
হটাৎ ছোঁয়ার চিল্লানো শুনে সবাই অবাক হয়ে ছোঁয়ার দিকে তাকালো,
–কি হয়েছে ছোঁয়া (অবাক হয়ে অনিলা বেগম)
–ইয়ে মানে আমারে কি খেতে দিবা?
–ওহ তুই খাবি আয় আয় মিষ্টি তুই যা।
–না (আবার চিল্লিয়ে)
–না কেন ছোঁয়া?
–আমার মানে মিষ্টির ঘরটা আমিও দেখবো শুধু খালামনি।
আমি যাবো ওর সাথে?
–হ্যাঁ যা এর জন্য আবার অনুমতির কি আছে।
–না আসলে,
–আচ্ছা তোমরা বাদ দেও আমি একটু টায়ার্ড চলো ছোঁয়া।
ছোঁয়া আর মিষ্টি উপরে চলে আসে।
ছোঁয়া মিষ্টির রুম গুলো পরিলক্ষিত করে দেখতে থাকে।
সমস্যা কি এখানে বর্ষন কে কি দেখা যায় কোথাও থেকে।
–কি গো ছোঁয়া কি দেখছো তুমি?
–কিছু না গো তুমি থাকো আমি আসি।।
ছোঁয়া বেরিয়ে আসে।
–ধুরো আমিও না একটা পাগল।
ছোঁয়া সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল হটাৎ হাতে হেঁচকা টান অনুভব করে।।
ছোঁয়া সাথে সাথে পাশে থাকা রুমের মধ্যে চলে যায়।।
ছোঁয়া কিছু বুঝে উঠার আগে বর্ষন রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়।
ছোঁয়াকে দেয়ালে চেপে ধরে আছে বর্ষন।
ছোঁয়া ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে আছে।। কিছুই বুঝতে পারলো না এখানে বিগত কিছু সেকেন্ড এ কি ঘটে গেল।
কিছু সময় পর,
–ছাড়ুন আমাকে।
–ছাড়ার জন্য কি ধরেছি নাকি।
–ও মা।
–কি ও মা।
–সমস্যা কি?
–সমস্যা ত নেই কোথাও।। —
–তাহলে ছাড়ুন।
–না ছাড়বো না।
–আরে
–আরে!
–কি চাই?
–ভালোবাসি ছোঁয়া।
হটাৎ বর্ষন এর মুখে ভালোবাসি শুনে ছোঁয়া জেন ফ্রিজ হয়ে গেল।
ছোঁয়া কল্পনাও করতে পারে নি বর্ষন তাকে নিজ থেকে ভালোবাসি বলবে।
ছোঁয়ার কাছে জেন সবটা স্বপ্ন লাগছে।।
–কি বললে বর্ষন ভাইয়া।
–এখনো ভাইয়া বলবি?
–মানে!
–মানে হলো,
বর্ষন ছোঁয়ার কোমড় আঁকড়ে ধরে ছোঁয়াকে কাছে টেনে নেয়।
–ভালোবাসি আজ থেকে আর তুই আমায় ভাই বলবি না।
আজ থেকে আমি তুমি করে বলব তোমায়।
আর আজ থেকে ঠিক ১ বছর পর আমাদের বিয়ে।
–কি বলছো তুমি!
–সত্যি বলছি ভালোবাসি এটা হয়ত আজ না বললে অনেক বড়ো ভুল হয়ে যাবে।
–ভালোবাসলে কষ্ট দেও কেন?
–কষ্ট ইচ্ছে করে দেই না রে ছোঁয়া।
সেদিন তোর হাতের ঠিক এমন চুড়ি আমি রোদকে কিনতে দেখেছিলাম।
তাই ভেবেছি তোকে এই গুলো রোদ দিয়েছে।
পরে দেখলাম না রোদ ওগুলা শুধু দেখেছিল কিনে নি।।
–সন্দেহ?
–ভুল হয়ে গেছে আর করবো না।
–সত্যি!
–৩ সত্যি।
–আমিও ভালোবাসি।
বর্ষন ছোঁয়ার কপালে চুমু একে দেয়।
–ছাড়ুন আমায় কেউ দেখলে কি হবে।
ছোঁয়া নিজেকে ছাড়িয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসে।
আর বর্ষন ঠোঁটে বাঁকা হাসি টানে।
ছোঁয়া দৌড়ে নিচে চলে আসে,
–কিরে ছোঁয়া কোথা থেকে দৌড়ে আসছিস মা।
–আমি কোথাও থেকে না।
,–সত্যি!
–হ্যাঁ সত্যি ত।
খালামনি চলো খাবার দেও।
–ওহ খাবার আয়।
ছোঁয়া সারা বিকাল অনিলা বেগমের সাথে কাঁটায়।
বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে,
–খালামনি এখন ত যেতে হবে।
–আজ থাক না।
–নাহ মা কে ত বলি নি।
–আরে তোর মাকে বলা এটা কি কঠিন কি কাজ। আমি বলছি,
এর মধ্যে বর্ষন নিচে নামে।
–এই দেখো বর্ষন এসেছে।
এই বর্ষন।
অনিলা বেগমের মুখে বর্ষনের কথা শুনে ছোঁয়ার হৃদয় ঢোল পিনোর মতো বিট করা শুরু করে।
–হ্যাঁ মা বলো।
–নয়লা কে ফোন করে বল আজ ছোঁয়া রাত এখানে থাকবে কাল সকালে এক বারে ভার্সিটি থেকে বাসায় যাবে।
–ওকে ঠিক আছে।
–তুই কোথায় যাচ্ছিস এখন?
–বাইরে।
–না কোন বাইরে যাওয়া হবে না আজ।
আমাদের সাথে বসে গল্প করবি আজ।
–কিন্তু মা।
–বর্ষন!
–আচ্ছা ঠিক আছে।
বর্ষন এসে ছোঁয়ার পাশে বসে।
ছোঁয়ার হৃদয় এখন আরো জোরে কম্পন সৃষ্টি করছে।
–আচ্ছা তোরা বস আমি চা নিয়ে আসি।
অনিলা বেগম রান্না ঘরে যেতে বর্ষন ছোঁয়ার হাতটা শক্ত করে ধরে বসে,
ছোঁয়ার এবার চোখ বড়ো বড়ো হয়ে যায়।
ছোঁয়া নিজের হাত ছাড়াতে চাইছে কিন্তু হচ্ছে না।
বর্ণ ক্রমশ আরো গভীর ভাবে ছোঁয়ার হাত আঁকড়ে ধরেছে।
এর মাঝে মিষ্টি আসে উপর থেকে।
মিষ্টি কে দেখে ছোঁয়া হাত ছাড়াতে চায়।
বর্ষন ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে চোখ রাঙিয়ে নেয়।
তা দেখে ছোঁয়া চুপ হয়ে যায়।
কিন্তু তাও হাত ছাড়াবার জন্য পাগল হয়ে যায়।
মিষ্টি শেষ সিঁড়িতে আসতে বর্ষন ছোঁয়ার হাত ছেড়ে দেয়।
ছোঁয়া হাফ ছেড়ে বাচে,
–কি হচ্ছে এখানে? (মিষ্টি)
–গল্প হচ্ছে তুইও জোগ দে। (বর্ষন)
–হ্যাঁ তার জন্য ই ত আসলাম রে দা ভাই।
–ভালো কথা।
–তুই ওর পাশে কেন বসে আছিস তুই এখানে আয় আমি ওর পাশে বসি।
–কেন?
— ও মা কেন কি আমদের এতো দিন পরে দেখা হলো আর তুই মাঝে বসে থাকবি নাকি।
বর্ষন ভ্রু কুঁচকে উঠে আসে।
ছোঁয়া বর্ষনের মুখটা দেখে মিচ মিচ হাসতে থাকে
তা দেখে বর্ষন এর আরো রাগ হয়।
বর্ষন গিয়ে অন্য সোফায় বসে
আর মিষ্টি গিয়ে ছোঁয়ার পাশে বসে।
–তো ছোঁয়া বলো খবর কি।
–কি খবর হবে ভালো খবর।
–কাল থেকে ত তুমি আর আমি এক সাথে ভার্সিটি যাবো।
–ওহ তুমি কোন ডিপার্টমেন্ট?
–আমি ত ইতিহাস।
–ওহ তাহলে ত ডিপার্টমেন্ট ও সেম।
–হ্যাঁ ভালোই হবে বলো এক সাথে থাকবো সব সময়।
–হ্যাঁ।
এরি মাঝে অনিলা বেগম চা নিয়ে আসে।
বর্ষন মুখ গোমড়া করে বসে আছে।
ছোঁয়া বর্ষন এর দিকে তাকিয়ে হেঁসে দেয়।
–বেচারা (মনে মনে ছোঁয়া)
–এখন উড়ে নেও ছোঁয়া রানি সময় আমারো আসবে দেখো (বর্ষন মনে মনে)
,
,
রাতে খেয়েদেয়ে সবাই শুয়ে পরেছে।
ছোঁয়া মিষ্টির সাথে ঘুমিয়েছে আজ।
খুব মজার রাত কাটলো আজ।
,
,
সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে ছোঁয়া আর মিষ্টি বর্ষনের সাথে ভার্সিটিতে চলে যায়।
ভার্সিটিতে পৌঁছে ছোঁয়ার দেখা হয় রোদের সাথে,
–হেই ছোঁয়া কেমন আছো?
–আলহামদুলিল্লাহ ভাইয়া আপনি কেমন আছেন?
–এই ত আলহামদুলিল্লাহ।
–এই ছোঁয়া চলো বাসায় যেতে হবে।
বেবি ব্লু কালারের থ্রি পিচ পরা একটা মেয়ে হটাৎ এগিয়ে এলো ছোঁয়া আর রোদের দিকে,
মেয়েটা বেশ লম্বা নয় কিন্তু খাটো ও নয়।
মেয়েটার মুখে তেমন সাজ নেই।
ভিশন মায়াবী আর মিষ্টি একটা মেয়ে।
রোদ আনমনে বলে ফেলে,
–কি মিষ্টি।
ছোঁয়া রোদের মুখে মিষ্টি নাম শুনে অবাক হয়ে যায়,
–আপনি ওকে চিনেন ভাইয়া?
–কাকে?
–মিষ্টি কে?
–ওর নাম মিষ্টি।
–তুমি ওকে চিনো?
–হ্যাঁ ও ত আমার বোন হয় সম্পর্কে।
–আচ্ছা বোন হয় তোমার ও কি নতুন?
–হ্যাঁ আজ থেকে জয়েন হয়েছে।
–ওহ।
এর মধ্যে মিষ্টি চলে আসে।
–ছোঁয়া চলো,
–হ্যাঁ চলো মিষ্টি।
ও দাঁড়াও ইনি হলেন রোদ ৪ র্থ ইয়ারের স্টুডেন্ট।
–ওহ আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া।
–ওয়া আলাইকুম সালাম আপু।
–বাসায় জেয়েন আজ আসি।
–ঠিক আছ।
চলবে,