#বর্ষণ_সঙ্গিনী
#হুমাশা_এহতেশাম
#পর্ব_২২
–আমার সম্পদ আর আমাকেই জিজ্ঞেস করছো মালিক কে?
ম্যাসেজটা পড়ে মনের মধ্যে অন্যরকম একটা প্রশান্তির হাওয়া বইছে।মনের মধ্যে চেপে রাখা একটা প্রশ্ন করে বসলাম তাকে।
–আচ্ছা আমাদের দেখা হবে কোথায়?
ওপাশ থেকে জবাব এলো,,,
— ঠিক সময়ে জানিয়ে দেব।
এই লোকটা কেমন যেন অদ্ভুত। সব কিছুই আমার কাছে ধোঁয়াশা ভাবে উপস্থাপন করেন। তাকে বিদায় জানিয়ে শান্ত মস্তিষ্ক নিয়ে খুব আরাম করে ঘুমাতে গেলাম।
কোন একটা পে পো ধরনের বিকট শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল। চোখ মেলতে আমার সামনে তাসফি আপুকে আবিষ্কার করলাম। হাতে একটা কেক নিয়ে দাঁড়ানো।পাশেই দাঁড়িয়ে আছে নিয়াজ ভাইয়া হাতে দুইটা বেলুন নিয়ে।আমি উঠতেই সাথে সাথে বেলুন দুইটা ফাটিয়ে ফেলল। আমার মাথার পাশে দাঁড়িয়ে আছে সাদু। ঠিক মাথার পাশে নয় বলতে গেলে একেবারে কানের পাশে একটা বাঁশির মতো কিছু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আরেক কানের পাশে একটা ছোট্ট বক্স থেকে সুর ভেসে আসছে…
আজকের আকাশে অনেক তারা
দিন ছিল সূর্যে ভরা
আজকের জোছনাটা আরও সুন্দর
সন্ধ্যাটা আগুন লাগা
আজকের পৃথিবী তোমার জন্য
ভরে থাকা ভালো লাগা
মুখরিত হবে দিন গানে-গানে আগামীর সম্ভাবনায়
তুমি এই দিনে পৃথিবীতে এসেছো শুভেচ্ছা তোমায়
তাই অনাগত ক্ষণ হোক আরও সুন্দর উচ্ছল দিন কামনায়
আজ জন্মদিন তোমার।
গানটা শুনে ওদের মতলব বুঝতে পারলাম। উঠে বসে ঠোঁটের কোণে একটা চওড়া হাসি নিয়ে সবার দিকে তাকালাম। নিয়াজ ভাইয়া গানটা বন্ধ করে দিল। এবার সবাই একসাথে বলতে লাগলো “হ্যাপি বার্থডে টু ইউ, হ্যাপি বার্থডে টু ইউ, হ্যাপি বার্থডে ডিয়ার জুইঁ, হ্যাপি বার্থডে টু ইউ”। ওদের এমন কর্মকাণ্ডে চোখ বেয়ে খুশির জলকণা পরল। বিগত তিন চার বছরে সাদু, বাবা আর নিয়াজ ভাইয়া ছাড়া কেউ আমাকে বার্থডে উইশ করেনি। আমার জন্মদিন টা উইশ করা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। আর কোনো আয়োজন হতো না। হবেই বা কি করে?বিগত দুই বছর ছিলাম জায়েফের বাড়িতে। সবাই কেবল ফোন করে একটু খোঁজখবর নিতো আর উইশ করতো। ব্যাস এইটুকুই ছিলো আমার জন্মদিন। জায়েফের বাড়িতে যাওয়ার তিন বছর আগেই নিয়াজ ভাইয়া বিদেশে চলে গিয়েছিল। বাবা জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেও কখনো কেক কাটা হতো না। কারণ বাবা এসব পছন্দ করেন না। কমলা আন্টি আমার জন্মদিনের দিন আমার পছন্দের খাবার রান্না করে দিয়ে যেত। আর সাদু সেই সকালে আসতো সারাদিন বাসায় থাকত আর রাতে চলে যেত।
আজকে ওরা যে বাবার অগোচরে আমার রুমে এসে এসব কর্মকাণ্ড করছে তা আমি ভালোই জানি। কারণ এই সময়ই বাবা বাইরে হাঁটতে যান। ফ্রেশ না হয়েই কেক টা কাটলাম। তারপর সবাইকে একটু একটু করে মুখে তুলে দিলাম। সাদু আমার জন্য নিজের হাতে চটপটি বানিয়ে নিয়ে এসেছে। তার সাথে একটা চকলেট বক্স আর একটা কালো হিজাব এনেছে। কালো হিজাব এনেছে কেন তার কারণও আমি জানি। আমার বেশিরভাগ সময়ই কালো হিজাব পরা পড়ে। বলতে গেলে কালো হিজাবটা সবচেয়ে বেশি প্রিয়।
আজ আলআবি ভাইয়া আর সজল ভাইয়া বাসায় আসবে।তার কারণ হলো দুইটা।এক,আমার জন্মদিন বলে আর দুই, তাসফি আপুর হাতের রান্না খাবে বলে।ভাইয়ার বিয়ের পর এই প্রথম তারা দুই জন আমাদের বাসায় আসবে। তাই সজল ভাইয়ার কথা হলো ভাবির হাতের রান্না খাবে।
দুপুরে গোসল করে বের হতেই উপলব্ধি করি পুরো বাড়িতে আমার পছন্দের খাবারের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পরেছে।দুইটার দিকে আমাদের বাসায় সজল ভাইয়া, আলআবি ভাইয়া আর সাথে আরেকটা ভাইয়া আসে।পরিচয় পর্বে জানতে পারি তার নাম সাঈম। সাঈম ভাইয়া নিয়াজ ভাইয়ার ভার্সিটি ফ্রেন্ড। তাদের দুজনের যোগাযোগ ছিল কিন্তু বাসায় আসা হয়নি কখনো। আজকেই প্রথম আমাদের বাসায় এসেছে।তাদের কথা বলাতেই বুঝতে পেরেছি সাঈম ভাইয়া একটু অন্য ধাঁচের ব্যাক্তিত্ব বহন করে।কিছুটা ফ্লার্টবাজ টাইপ।সাথে কিছু টা রসিকও বটে। অবশ্য সাঈম ভাইয়া দেখতে মন্দ নন।
দুপুরে খাবার এর টেবিলে আমি,সাদু, বাবা,নিয়াজ ভাইয়া,তাসফি আপু,আলআবি ভাইয়া, সজল ভাইয়া আর সাঈম ভাইয়া বসে খাচ্ছিলাম। আমার ঠিক সামনে বসেছে সাঈম ভাইয়া।তার একপাশে সজল ভাইয়া আর আরেক পাশে আলআবি ভাইয়া।খাওয়ার মাঝে মনে হলো আমার পায়ে কেউ অনবরত গুঁতো দিয়ে যাচ্ছে। একবার মনে হচ্ছে কেউ সামনে থেকে গুঁতো মারছে আরেকবার মনে হচ্ছে কেউ আড়াআড়ি ভাবে গুঁতো মেরে যাচ্ছে। এভাবে আমি শান্তি মতো আমার প্রিয় ইলিশ মাছ টা খেতেও পারছি না।এতোক্ষণের গুঁতো গুঁতিতে মেজাজ টা এবার বিগড়ে গেলো। জোরে আমার সামনে থাকা পা জোড়ায় একটা লাথি মেরে দিলাম। সঙ্গে সঙ্গে আমার সামনে বসা সাঈম ভাইয়া চিৎকার দিয়ে উঠল। তার দিকে তাকিয়ে আমি নিজেই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। তখন নিয়াজ ভাইয়া বলে উঠল,,,
— কোন সমস্যা?
সাঈম ভাইয়া কিছু টা কাতর কন্ঠে বলে উঠলো,,,
–দোস্ত কে যেন লাথি মারলো।
সাঈম ভাইয়ার কথা শেষ হতে না হতেই টেবিলের উপর রাখা আমার ফোনটা তে আলো জ্বলে উঠল বুঝতে পারলাম কোন ম্যাসেজ এসেছে। খাবার টেবিলে সবাই একসাথে থাকবে বলে ফোনের সাইলেন্ট মুড অন করে নিয়েছিলাম। বাহাতে টেবিলের নিচে ফোনটা নিয়ে দেখি একটা আননোন নাম্বার থেকে ম্যাসেজ এসেছে,,,
“খাবার খাওয়ার সময় কেবল খাবারের দিকেই সব ধ্যান জ্ঞান দিলে চলে না। আশে পাশেও তাকাতে হয়। তাড়াতাড়ি জামার ওড়না ঠিক করো”
ম্যাসেজটা পড়ে তড়িৎ গতিতে নিজের দিকে তাকালাম আসলেই আমার ওড়না কিছুটা সরে এসেছে। একটু নড়েচড়ে নিজেকে পরিপাটি করে বসলাম। তবে বোধগম্য হচ্ছে না এই মহান ব্যক্তিটা কে। আমার চিন্তা ভাবনার মধ্যেই আলআবি ভাইয়া সজল ভাইয়াকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,,,
–সজল আমি নতুন সিম নিয়েছি তোর ফোনে কল করেছিলাম।দেখ লাস্টের দুইটা ডিজিট ৫৯,গ্রামীন নাম্বার।
— ভাই এত জরুরি কথাতো পরেও বলতে পারতি। একটু শান্তিতে খেতে দেনা।(সজল ভাইয়া)
আলআবি ভাইয়ার বলা কথাটা আমার কর্ণপাত হতেই তাড়াতাড়ি করে আমার মোবাইলে আসা ম্যাসেজটার নাম্বারটা আবার চেক করে নিলাম। নাম্বারটা আলআবি ভাইয়ার বলা নাম্বারটার সংক্ষিপ্ত ডিটেইলস এর সাথে মিলে যায়। মাথা তুলে আলআবি ভাইয়ার দিকে তাকালাম। দেখি সেও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তবে আমি তাকানোর সাথে সাথে একটা বেপরোয়া ভাব নিয়ে নিজের মতো করে খেতে লাগলেন। এই লোকটার এমন ভাব দেখলে গা জ্বলে যায়। সাহায্য করবে ঠিকই কিন্তু পরে আবার এমন ভাব করবে যেন মনে হচ্ছে সাহায্য করে আবার আমাকে খোটা দিচ্ছেন। তবে এই মুহূর্তে সাঈম ভাইয়ার কথা মনে করে বেশ খারাপ লাগলো। কারন বেচারাকে খুব জোরেই একটা লাথি মেরেছিলাম।
খাওয়া দাওয়ার পর্ব চুকিয়ে আমরা সবাই ড্রইং রুমের ফ্লোরে মাদুর পেতে গোল হয়ে বসে পড়লাম। আমাদের উদ্দেশ্য হলো সবাই মিলে বালিশ ছোড়াছুড়ি খেলব। বুদ্ধিটা অবশ্য তাসফি আপু আর সাদুর।সকাল বেলার সেই ছোট্ট বক্সটায় ছোট্ট করে গান ছেড়ে দিলাম। অর্থ্যাৎ কিছু টা কম সাউন্ড দিয়ে। কিছুসময়ের মধ্যেই আমাদের খেলার আসর জমে উঠলো। খেলার শেষ পর্যায়ে গিয়ে টানটান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে নিয়াজ ভাইয়া আর আলআবি ভাইয়ার মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করল আলআবি ভাইয়া।
গত মাসেই আলআবি ভাইয়ারা বাসা চেঞ্জ করে আমাদের এলাকায় শিফট হয়েছেন। তার প্রধান কারণ হলো আলআবি ভাইয়ার অফিস। আমাদের এখান থেকে অফিস টা একটু কাছে বলে তারা বাসা শিফট করে এই এলাকায় এসেছেন। নিয়াজ ভাইয়ার থেকে শুনেছিলাম আমাদের বাসা থেকে তাদের বাসায় যেতে আধা ঘন্টার পথ অতিক্রম করতে হয়। তাই আলআবি ভাইয়া আজ আমাদের বাসা থেকে একটু দেরী করেই বের হবেন।সজল ভাইয়া আজকে আলআবি ভাইয়ার বাসায় থাকবেন।
সন্ধ্যার দিকে সাঈম ভাইয়া চলে যায়। সাদুকে আগেই বলে দিয়েছিলাম ও যেন আজকে রাতে আর বাসায় না যায়। তার একমাত্র কারণ হচ্ছে আমার বর্ষণ সঙ্গীর সাথে দেখা করতে যাওয়া। একা থাকলে কোনো বাহানা দিতে পারব না। কিন্তু সাদু থাকলে কোনো রকমের বাহানায় বাসা থেকে বের হতে পারব। সাদুকে যখন বলেছি আমি আমার বর্ষণ সঙ্গীর সাথে দেখা করতে যাব। তখন ও নিজে থেকেই বলেছে আমাকে দেখা করার জন্য ও রাতটা থেকে যাবে।
বিকেল পর্যন্ত খুশিই ছিলাম। তবে ধীরে ধীরে সন্ধ্যা ঘনিয়ে যখন চারদিকে অন্ধকার হয়ে রাত বাড়তে লাগল তখন আমার মনেও অন্ধকার নামতে লাগল। কারণ বর্ষণ সঙ্গীর কোন খোঁজ খবরই নেই। তাকে ম্যাসেজ দিয়েছিলাম কিন্তু সে আমাকে কোনো উত্তর দেয়নি। বিকেলবেলা সাদুর সাহায্য নিয়ে তার দেওয়া শাড়িটা পড়ে অপেক্ষায় ছিলাম কখন এসে দেখা করার কথা বলবে। কিন্তু একটু আগে এশারের আজান দিয়ে দিয়েছে বলে শাড়ি টাও খুলে ফেললাম। মনটা বিষন্নতায় ভরে গেল। আজ বুঝি আর তাকে দেখা হবে না। খুব খারাপ লাগছে এই মুহূর্তে।মনে হচ্ছে একটু পরেই আমার চোখের জল গড়িয়ে পড়বে। সাদু শুধু আমাকে সান্ত্বনা দিয়েই যাচ্ছে। একটু পর পরই বলছে “আসবে আসবে”।কিন্তু তার তো আসার কোন নামই নেই। আর কখনোই বা আসবেন? রাত ৮ টার বেশি বাজে। অপেক্ষা করতে করতে রাতের ডিনারটা সেরে ফেললাম। কিন্তু সে এখনো ম্যাসেজ দেয়নি। সজল ভাইয়া আর আলআবি ভাইয়া বিদায় নিয়ে চলে যাচ্ছে। রাত প্রায় সাড়ে দশটা। বিষন্নতায় ঘেরা ভাঙ্গা মন নিয়ে ঘরে এসে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। অজান্তেই চোখের কার্নিশ বেয়ে এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়ল। চোখের জল পড়তে দেরি কিন্তু আমার ফোনের মেসেজ টোন বাজতে দেরি হলো না। তাড়াতাড়ি করে উঠে তড়িৎ গতিতে ফোনের ম্যাসেজ চেক করলাম। যে কাঙ্খিত ব্যক্তির ম্যাসেজ দেয়ার কথা ছিল সেই ই ম্যাসেজ দিয়েছে।
” প্রথমেই আমার বর্ষণ সঙ্গিনীকে অনেকগুলো সরি জানাই। সরি! সরি! সরি!তিন সরি বললাম। এবার ঝটপট করে তোমাদের বাসার ছাদে এসে পড়ো”।
ম্যাসেজটা পড়ে খুশিতে আটখানা হয়ে বাসার পুড়নো থ্রি পিছটা পড়েই দৌড় লাগালাম। একদৌড়ে দরজার সামনে এসে দরজা খুলে যেই না পা বাড়াতে যাব অমনি কেউ এসে পিছন থেকে খপ করে আমার হাতের বাহু ধরে ফেলল। এরকম হওয়ায় অনেকটা ভয় পেয়ে গেলাম। কিন্তু পরক্ষনেই পিছনে তাকিয়ে দেখি আমার কলিজার বান্ধবী শয়তান মার্কা একটা হাসি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ওর এমন হাসি দেখে অগ্নিমূর্তি হয়ে ওর দিকে তাকালাম। সঙ্গে সঙ্গে গড় গড় করে ও বলতে লাগল,,,
— বইন এমনে তাকাইছ না। তোরে এহন পুরাই পেত্নীর মত লাগতাছে। একটু নিজের দিকে তাকা।দেখ তুই কি পইড়া আছোস?এমন রংচঙ ওঠা জামা পইড়া তো আমি হাগতেও যাইনা। এগুলো পইড়া যদি তুই আমার জিজুর সামনে যাছ মান-সম্মান তোর না গেলেও আমার যাইবো।
ওর কথা শুনে আমি আমার পরনের জামার দিকে তাকালাম সত্যিই জামাটা একেবারেই বেমানান। রং জ্বলে গিয়ে খুব বিশ্রী অবস্থা জামাটার। নিজের অবস্থা উপলব্ধি করতে পেরে সাদুর দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলাম। তারপর সাদু আমার হাত ধরে টেনে রুমে নিয়ে আসলো। পুনরায় ও আমাকে খুব যত্ন করে সেই শাড়িটা পরিয়ে দিল। এরপর আমি নিজ হাতে সাদুর কালো হিজাবটা পড়ে নিলাম। কালকের দেয়া তার সেই আধশুকনো বেলি ফুলের মালাটা এক হাতের কব্জিতে জড়িয়ে নিলাম।কাঁধের একটু নিচে সেফটি পিন দিয়ে গোলাপ গাছ থেকে একটা হালকা হলুদ গোলাপ নিয়ে আটকে দিলাম।সাদু আমাকে চার দিকে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে দেখে বলে উঠলো,,,
–একদম মাশাল্লাহ। পুরা ঝাক্কাস। এবার যা। সিমরান টাইপ একটা দৌড় দিয়ে চলে যা।
ওর কথায় একটু লজ্জা পেলাম। এরপর হাতে মোবাইলটা তুলে দেখি এগারোটা বেজে গিয়েছে। তাই তাড়াতাড়ি করে দরজা খুলে বের হতে যেয়ে আবার ভেতরে ঢুকে পড়লাম। সাদুকে এসে জিজ্ঞেস করলাম,,,
–ভাবি বা ভাইয়া যদি খোঁজ করতে আসে তখন কি হবে?
— তোমার ভাই ভাবী এখন রোমান্সে বিজি আছে। প্যারা নাই। চিল চিল। যা তুই মনের সুখে তোর বর্ষণ সঙ্গীরে দেইখা আয়।(সাদু)
— ওই ছ্যামরি তুই জানোছ কেমনে আমার ভাই ভাবী এখন কি করে?(আমি)
— আরে বোইন এইটা কমন সেন্স এর ব্যাপার। নতুন নতুন বিয়ে হইছে। এখন তুমি বুঝবা না তোমার বিয়ে হইয়া নেক তারপর বুঝবা।(সাদু)
— ও নিজে তে মনে হয় যেন ১০০ টা বিয়ে কইরা বইসা আছো।(আমি)
–বোইন তোর কি যাইতে মন চাইতাছে না? এতোক্ষন তো কাইন্দা সব ভাসাইয়া ফেললি।যা এখন দয়া কইরা।(সাদু)
ওকে একটা মুখ ভেংচি দিয়ে আমি আমার গন্তব্যে যাওয়ার জন্য উদ্যত হলাম। কয়েক ধাপ সিঁড়ি পেরিয়ে এসে কেমন যেন গা ছমছম করে উঠল। কারন এখানে আলো বলতে গেলে একেবারে নেই ই। প্রথমে ভেবেছিলাম অন্ধকারে উঠতে পারব তবে এখন মনে হচ্ছে ফোনের ফ্লাশ লাইট জ্বালাতে হবে। ফোনের লাইট জ্বালানোর জন্য ফোনটা অন করে অর্ধেক পিনকোড দিয়েছি, ঠিক সেই সময়ে কেউ একজন ঝড়ের গতিতে নেমে এসে আমার সঙ্গে ধাক্কা লাগিয়ে চলে গেল। ধাক্কা সামলাতে না পেরে আমার হাত থেকে ফোনটা পড়ে গেল। ফোনের সাথে আমিও ছিটকে আমার দাঁড়ানো সিঁড়ি থেকে কয়েক ধাপ নিচে পড়ে গেলাম। পড়ে গিয়ে মাথার মধ্যে তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করতে পারলাম। মনে হচ্ছে কোন ব্ল্যাকহোল আমাকে গিলে ফেলছে। চারপাশে অন্ধকার দেখে আমার মনে হচ্ছে সব অন্ধকার গুলো আমার চোখে এসে ভর করছে। বুঝতে পারছি ধীরে ধীরে আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসছে।
চলবে…..……
[বিঃদ্রঃ গল্পটি সম্পূর্ণরূপে কাল্পনিক। অনুগ্রহ করে বাস্তবিক অর্থ খুজতে গিয়ে বিভ্রান্ত হবেন না আর লেখিকা কে ও বিভ্রান্ত করবেন না]