বন্দিনী পর্ব-০৪

0
683

#বন্দিনী
#পর্ব_৪
#মেহা_মেহনাজ
.
.
.
কলিংবেল বাজতেই চিত্রা দরজা খুলে দিলো। ফয়সাল বিরক্তমুখে ঘরে প্রবেশ করে। চিত্রা দরজা আঁটকাতে আঁটকাতে স্বাভাবিক কণ্ঠে ছুঁড়ে দিলো প্রশ্নবাণ,

‘এত দেড়ি করলে যে!’

ফয়সাল তৎক্ষনাৎ পেছন ঘুরে বজ্রকণ্ঠে বলল,

‘সে কৈফিয়ত তোমায় দিতে হবে নাকি?’

চিত্রা চুপসে গেল।

‘না মানে…আমি অপেক্ষা করছিলাম।’

‘কে বলেছে তোমায় অপেক্ষা করতে? আমি বলেছি?’

‘এভাবে বলছো কেন ফয়সাল! আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করব না তো কার জন্য করব?’

‘যার জন্য ইচ্ছে করো। আমার জন্য এসব নাটক করা লাগবে না।’

তারপর বেডরুমের দিকে পা বাড়াতে বাড়াতে মুখ বাড়িয়ে ‘অসহ্য’ শব্দটি উচ্চারণ করে গেল। চিত্রা হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। আজকের দিনটি চিত্রার জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ! আজকের এই দিনেই ওদের প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল! চিত্রা সেই উপলক্ষ করে অনেক কিছু রেঁধেছে। শাড়ি পড়ে একটুখানি সেজেছেও। কই, ফয়সাল তো ওর দিকে তাকিয়েই কথা বলল, তবুও খেয়াল করল না?

রাতে ফয়সাল খেতে এলো না। চিত্রা কয়েকবার সাধাসাধি করে ফয়সালের রাগ রাগ কথা শুনলো শুধু। তারপর ব্যথাতুর হৃদয়ে শাড়ি খুলে সাজগোজ সব মুছে ফেলল। বাথরুমের আয়নায় তাকিয়ে বস্র দুয়েক কেঁদেও ফেলল ও। একটা সময় ছিল, ফয়সাল ওর কান্না সহ্য করতে পারতো না। কত হয়েছে এমন, চিত্রার কান্না মুখ দেখে ফয়সালও কেঁদেকেটে অস্থির হয়ে গিয়েছে৷ আর আজ! ফয়সাল হয়তো জানেই না চিত্রার চোখ দিয়ে দিনে কতবার পানি ঝড়ে… কত নির্ঘুম রাতের সাক্ষী হয়ে বসে থাকে ও চুপচাপ! কত অমানিশা যায় ফয়সালের ঘুমন্ত মুখখানায় পুরোনো মায়া খুঁজতে খুঁজতে! মেয়েরা অদ্ভুত, ভীষণ অদ্ভুত। এরা প্রিয় মানুষটির দেওয়া কষ্টেও যত্ন খোঁজে!

চিত্রা বাথরুম থেকে বের হতেই দেখল ফয়সাল খুব মনোযোগ দিয়ে মোবাইলে কিছু লিখছে। চিত্রা সাহস করে ওর পাশে গিয়ে বসতেই ফয়সাল ফোনটা লক করে ফেলল। পরমুহূর্তেই পাশে বসা চিত্রাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল,

‘কি? একটু বসে আছি শান্তিতে, সেটাও থাকতে দেবে না নাকি!’

চিত্রা অবাক না হয়ে পারল না। বিস্ময় ফুঁটে উঠল ওর কণ্ঠে,

‘আমি পাশে এসে বসায় তোমার অশান্তি হচ্ছে?’

‘হ্যাঁ, হচ্ছে। তো?’

‘তুমি তো এমন ছিলে না ফয়সাল! এতোটা পরিবর্তন একটা মানুষ কীভাবে হতে পারে?’

চিত্রার চোখজোড়া ছলছল করে উঠে। ফয়সালের অবহেলা, অপমান, উপেক্ষা- ওর হৃদয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে প্রতিনিয়ত। দাউদাউ করে জ্বলা বুকের যন্ত্রণা তবুও ফয়সাল দেখেনি! এই মানুষটাকে ও পৃথিবীর সবকিছুর উর্ধ্বে ভালোবেসেছিল। ভালোবাসার প্রতিদান পাচ্ছে এই ভাবে?

ফয়সাল বিরক্ত হলো।

‘কিছু বলতে না বলতেই চোখের পানি, নাকের পানি সব এক করে ফেলো! শোনো, আমার না এইসব তামাশা আর সহ্য হয় না। জাস্ট সহ্য হয় না। সারাদিন গাধার মতো খেটে তুমি আর তোমার পরিবারের দায়িত্ব পালন শেষেও তোমাদের ভেতর বিন্দুমাত্র কৃতজ্ঞতা বোধ দেখি না আমি! তোমার বোনের জন্য এত ভালো পাত্র খুঁজে নিয়ে আসলাম, আমি নিজে শাওনকে কথা দিয়েছি, এখন তোমার বোন বলছে বিয়ে করবে না! শাওনের সামনে আমি মুখ দেখাবো কেমন করে? ওর সাথে আমার বন্ধুত্বটাই না নষ্ট হয়ে যায় পরে!’

‘ফয়সাল, এটা এমন কোনো বিষয় না যে তোমাদের বন্ধুত্ব নষ্ট হবে! জোনাকি একটা মানুষ। ওর যদি ইচ্ছে না থাকে তাহলে না করবে বিয়ে। দুনিয়াতে ছেলের অভাব পড়ে যায়নি নিশ্চয়ই?’

‘হ্যাঁ অভাবই পড়েছে। আমি অন্যত্র বিয়ে দিতে যাই আর তারা এত্ত এত্ত চেয়ে বসুক! সেসব ফুলফিল করবে কে পরে? আমার কি টাকার গাছ আছে নাকি পাহাড় হ্যাঁ? শাওন কিচ্ছু চায়নি। ওর জোনাকিকে দেখামাত্র ভীষণ পছন্দ হয়েছে। আমার মনে হচ্ছে, ও জোনাকি কে ভালোও বাসে!’

চিত্রা বিদ্রুপের হাসি হাসল।

‘ভালোবাসা বলতে কোনো কিছু নেই ফয়সাল। এটা শুধুমাত্র একটা শব্দই! আর কিচ্ছু না।’

ফয়সাল ভ্রু কুঁচকে ফেলল সঙ্গে সঙ্গে,

‘কেন? তুমি কি আমাকে ভালোবাসো না?’

‘এই প্রশ্ন আমি তোমায় করবে মানাবে। তুমি আমাকে করছো! তুমি এর উত্তর আমার চেয়েও ভালো জানো নিশ্চয়ই।’

‘যদি ভালোই বাসো তাহলে নিজের বোনকে বোঝাও! শাওনের মতো ছেলে বারবার আসবে না। ও ভালো থাকবে। পাগলামো বাদ দিয়ে বিয়েটা সুষ্ঠু ভাবে হোক, এরপর জনুর লাইফে আমাদের কারো হস্তক্ষেপ থাকবে না।’

চিত্রা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। শাওনকে ওর ও বিশেষ পছন্দ হয়নি। কেন যেন এই ছেলের সবটাই লোক দেখানো মনে হয়েছে। মনে হয়েছে ওর উপরটা যত সুন্দর, ভেতরটা ততই কুৎসিত। কিন্তু মা আর ফয়সালের মতামতের ভারে ওর আর জোনাকির সিদ্ধান্ত দেবে গেছে। জোনাকিও পরে নিমরাজি হয়েছিল। কিন্তু এখন হঠাৎ কি এমন হলো যে সরাসরি বিয়ে করতে না করে দিয়েছে! চিত্রার মাথা ধরে। নিজের জীবনেই এত সমস্যা যে অন্যের জীবন নিয়ে চিন্তা করার সময় নেই।

ফয়সাল ডাকল,

‘এভাবে সং এর মতো বসে না থেকে নিজের কাজ করো যাও!’

চিত্রা ভাবনার জগত থেকে ছিঁটকে বেরোলো।

‘তোমার পাশে দু মিনিট বসলে সমস্যা ফয়সাল?’

‘আমি একটু একা থাকতে চাই!’

‘সে তো রোজ থাকো! কতদিন আমার কাছে আসো না, সে হিসেব আছে?’

‘শরীরের খাই খাই টা আর নেই চিত্রা!’

চিত্রা ভাষাহীন তাকিয়ে রইলো নিষ্পলক। ফয়সালই বিরক্তিকর চেহারা করে উঠে চলে গেল। চিত্রার চোখজোড়া আবার বর্ষণ ঝরায়। জীবন মাঝে মাঝে এত নিষ্ঠুর রূপ কেন নেয়,কে জানে!

শাওন বাড়ি নেই। মেইন ডোর বাহির থেকে তালা দিয়ে কোথাও বেরিয়েছে। সময়টা সকাল। শর্মী ঘুম থেকে উঠে নিজেকে বন্দী দশায় আবিষ্কার করেছে পুনরায়। এটা নতুন কিছু নয় ওর জন্য। এর আগেও বহুবার ও বন্দীর ন্যায় জীবন যাপন করেছে। অবশ্য শাওনের হাতে ও সবসময়ই বন্দী ছিল! শর্মীর বাবা এক কালের নাম করা ব্যবসায়ী ছিলেন। শত্রু পক্ষের লোকেরা তাঁর উপর আক্রমণ চালালে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। শর্মীর মা নেই ছোট থেকেই। বাবা-ই মাথার উপর সবটা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। অসুস্থতার সময় শর্মীর কি হবে ভেবে তিনি অস্থির হয়ে উঠলেন। ঠিক তখনই পরিচয় হয় শাওনের সঙ্গে। বাবা যে হাসপাতালে এডমিট ছিলেন, সেখানে শাওনের মা-ও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে পড়ে ছিল। কথা বিনিময় হলো। শাওনের মা জানাল তিনি ছেলের বিয়ে দেখে যেতে চান, শর্মীর বাবা ও একই ইচ্ছা প্রকাশ করল। ব্যস! ঘটনার সূত্রপাত সেই থেকে…
শাওন-শর্মীর বিবাহ সম্পন্ন হলো একেবারে হঠাৎ করে। তবুও শর্মী খুশি ছিল। তার স্বপ্নের পুরুষকে নিয়ে যত জল্পনা কল্পনা ছিল, শাওন যেন তারই বাস্তব চিত্র‍। উঁচু-লম্বা, কি সুদর্শন দেখতে! বাবা মা*রা যাওয়ার আগে আরেকটি ভুল করে বসলেন। শর্মীর নামে না দিয়ে সবকিছু শাওনের নামে লিখে দিয়ে গেলেন। তা নিয়েও শর্মীর মাথাব্যথা ছিল না। স্বামীর প্রতি অগাধ বিশ্বাস আর ভরসা তার। সেই আস্থার কাগজ ধীরে ধীরে ফুঁটো হতে লাগল। শর্মীর পড়াশোনার যোগ্যতা কম, যা আছে তা দিয়ে কিছু করা মুশকিল। টাকাপয়সা অথবা জমানো সম্পদ বলতে কিচ্ছুই নেই। তার উপর ওর একটা পা জন্মগত ভাবে ছোট বলে হাঁটে একটু খুঁড়িয়ে। এমনকি বছরের বেশিরভাগ দিনগুলো পায়ের ব্যথায় অসুস্থ ও থাকে। সবটা জেনেই শাওনের মা রাজী হয়েছিল। শাওনও রাজী ছিল। প্রথম প্রথম ওর এই ত্রুটিকে ত্রুটি হিসেবে দেখতেই দেয়নি শাওন। অথচ এখন! প্রতিনিয়ত উঠতে বসতে কথা শুনতে হয়। এতোটা শোচনীয় অবস্থা হবে- কখনো কি ভেবেছিল ও?

জানালার গোড়ে বসে থেকে অনেক কিছু ভেবে চললো শর্মী। এক সময় চোখ ভিজে উঠলে ও ভাবনার গতিপথে লাগাম টানে। উঠে দাঁড়াল। হেঁটে হেঁটে আরেক রুমে এলো। এই রুমটা শাওনের বিশেষ কক্ষ বলা চলে। যতক্ষণ বাসায় থাকে, এই ঘরেই বসে সময় কাটায় ও। শর্মী মাঝে মাঝে আসতো, এটা ওটা পরিষ্কার করতে। শাওন মানা করার পর আর এদিকে আসা-ই হয়নি। আসবাবপত্র বলতে একটি বড় টেবিল, তিনটে বইয়ের আলমারি, একটি ছোট স্টিলের আলমারি, টেবিল ল্যাম্প, ল্যাপটপ- এইসব টুকিটাকি জিনিস! শর্মী দরজা খোলার নব ঘোরাতেই বুঝল, কক্ষের দরজা লক করা। শাওন লক করে গেছে। চাবি নিশ্চয়ই তার কাছে! শর্মীর বুক চিঁড়ে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। এভাবে তালাবদ্ধ জীবন আর ভালো লাগে না! এর চেয়ে মৃ*ত্যুই বুঝি শ্রেয়!

শর্মী পুনরায় নিজ ঘরে চলে এলো। আবার ছুটে এলো ডাইনিংয়ে। টেবিলের উপর ফলের ঝুড়ি। কয়েকটা অর্ধ নষ্ট আম রয়েছে তাতে। আর একটি ছু*রি। শর্মী ছু*রিটি হাতে তুলে নিলো। এমন জীবনের চেয়ে মৃ*ত্যুই ভালো। শর্মী হাতের শিরার কাছাকাছি ছু*রিটি নিয়ে কয়েক সেকেন্ড থম খেয়ে রইলো। তার রুহ কাঁপছে। চোখ ফেটে দরদর করে পানি ঝড়ছে।

সকাল সকাল মায়ের চিৎকারে জোনাকি উঠে বসতে বাধ্য হলো। গতকাল রাতে ঘুমিয়েছিল দেড়িতে। সারা রাত ধরে ফয়সালের বলা কথা গুলো কানে বাজছিল। সাত-পাঁচ চিন্তায় মাথা ঘুরছিল শুধু। যখন চোখ লাগল তখন বাইরে ভোরের আলো ফুঁটি ফুঁটি। জোনাকি দেয়াল ঘড়িটায় ঘুম জড়ানো চোখে তাকাল। আটটা বেজে দশ- এত সকালে চিৎকার করছে কেন মা!
জোনাকি বিরক্ত পায়ে বাইরে বেরিয়ে আসতেই খানিকটা অবাক হলো। চিত্রা বসে রয়েছে। ওর চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ। মা চিত্রার সঙ্গেই চিৎকার করে করে কথা বলছেন।

‘ওই যে, এসেছে নবাবের বেটি। আমি তো বোঝাতে পারি না বাপু, তুই-ই বোঝা এবার। আমার জীবন টা শেষ করে দিলো এই মেয়ে। এত রাজ্যের চিন্তা আর ভালো লাগে না। বিয়েশাদি করে একদিকে থিতু হলে আমার ম*রেও যে শান্তি!’

জোনাকি মায়ের কথা সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে চিত্রার দিকে তাকাল। বলল,

‘তুই এত সকাল সকাল আপা!’

চিত্রা মুখখানি গম্ভীর করে উত্তরে জানালো,

‘তোরা যা লাগিয়েছিস, আসতেই হলো তাই!’

‘আমরা আবার কি লাগালাম?’

‘মায়ের কথা ছাড়। তুই নিজে কি শুরু করলি? ফয়সাল কত ক্ষেপেছে, ধারণা আছে তোর?’

জোনাকি মৃদু শ্বাস ফেলল। চিত্রা পুনরায় বলে উঠল,

‘দেখ জনু, কম তো বড় হসনি! এই বয়সে তোর মতো মেয়ের সংসার সন্তান সব থাকে। সবাইকে পড়াশোনা করে অমুক তমুক হতে হবে, এমন তো কথা নেই। আমরা সাধারণ মানুষ। আমরা সাধারণ ভাবে দিন চলে গেলেই খুশি। শাওন ছেলেটা ভালো। তোর দুলাভাই বড় মুখ করে কথা দিয়েছে। তোর কারণে যদি অপদস্ত হতে হয়, আমার সংসারে কি নেমে আসবে, তুই বুঝতে পারছিস?’

জোনাকি হঠাৎ রেগে গেল। আক্রোশের সঙ্গে বলল,

‘তোমরা আমার জীবনটাকে জীবন মনে করো না, না? একটা কিছু পেলেই আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে চাও! তোমরা এত নিষ্ঠুর আর স্বার্থপর কেন? আমি বিয়ে করতে চাই না, তবুও তোমরা আমাকে জোর করে…আমি কি বাজারের পণ্য নাকি? আমার কথার কোনো দাম নেই!’

‘দাম থাকবে না কেন! অবশ্যই আছে। কিন্তু আমরা তো তোর খারাপ চাইছি না। শাওনকে বিয়ে করতে সমস্যাটা কোথায়? তুই কি চাস না তোর একটা সংসার হোক? নিজের সংসার?’

‘ভালোবেসে বিয়ে করলি, এত বছর ধরে সংসার করে যাচ্ছিস, তবুও কি সে সংসার তোর রে আপা? তুই থাক বা না থাক তাতে কি দুলাভাইয়ের সত্যিই কিছু এসে যায়?’

জোনাকির এহেন কথায় মা ধমকে উঠতে লাগলেন, চিত্রা তাঁকে থামিয়ে দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,

‘তবুও একটা সংসার ছাড়া আমরা অসম্পূর্ণ! আমি তোর পায়ে পড়ছি, তুই আর অমত করিস না। ফয়সালকে আর রাগিয়ে তুলিস না। আমার সংসারটা ভেঙে যাবে জনু। হাতজোড় করে বলছি,একটু দয়া কর!’

চিত্রা সত্যি সত্যি হাতজোড় করে নত হলো। জোনাকি দ্রুত বোনকে ধরে সোজা করে দিলো। তার ভেতরটা ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এ কোন মোড়ে এনে দাঁড় করালো জীবন নদী!

বেলা বাড়লো। চিত্রা আর মা দুপুরের রান্নার জন্য রান্নাঘরে কাজ করতে লাগল। জোনাকি একা শুয়ে রইলো ঘরে। শুভ্র সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে ওর হঠাৎ মনে হলো, ওকে নিয়েই যখন এত জ্বালা, তখন ও-ই থাকবে না! জোনাকি ঘোরগ্রস্তের ন্যায় উঠে টলমল পায়ে এগিয়ে গেল বারান্দায়। বারান্দাটি দো’তলা, হাফ রেলিং করা, একটুকরো খোলা আকাশ দেখা যায়। জোনাকিই পছন্দ করে এ বাড়িতে উঠেছিল। সেই পছন্দের জায়গা থেকেই ও লাফিয়ে পড়ল দো’তলা থেকে…
মা চিত্রা টের পাওয়ার আগেই!

(চলবে)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে