বজ্জাত বর পর্ব ১৭

0
3037

বজ্জাত_বর
পর্ব ১৭
লেখক বিলকিস

পরশ বাড়িতে এসে সোজা উপরে রুমে চলে গেলো।
তারপর ওয়াশরুমে গিয়ে অনেকক্ষন সাওয়ার এর নিচে দাড়িয়ে আছে। রাগে তার মাথা ফেটে যচ্ছে। মিষ্টি যে ওকে এভাবে বোকা বানাবে ও সেটা ভাবতেই রাগ উঠছে।
হঠ্যাৎ দিশা ঘরে এসে পরশকে ডাকলো। পরশ ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে এলো। দিশা বললো,
দিশা: ভাইয়া তোর চা এনেছিলাম।
পরশ: হুম রেখে যা।
দিশা: ভাইয়া তোর কি মন খারাপ।
পরশ: নাহ কেন?
দিশা: এমনি, তোর মুখ দেখে মনে হলো। আচ্ছা আমি যাই।
পরশ: দিশা শোন
দিশা: হ্যা বল
পরশ: আচ্ছা আমার চেহারার কোনো এ্যাঙ্গেলে কি আমাকে বখাটে মনে হয় বা লাইক ইফটিজার
দিশা: কি? কি বলিস এসব?
পরশ: যা বলছি তার উওর দে।
দিশা: আমার এরকম হিরো মতো ভাইকে কে ইফটিজার বলেছে জানতে পারি কি?
এক মিনিট এক মিনিট ভাইয়া ভাবির সাথে তোর দেখা হয়েছিলো?
পরশ: হুম। ও আমাকে আজ কি পরিমান হেনস্তা করেছে তুই জানিস।
দিশা: ভাবি তোকে ইফটিজার বলেছে। oh my good বলে খিল খিল করে হাসতে লাগলো দিশা।
পরশ: এতো হাসার কি হলো। এখন কিন্তু আমার তোর উপর ভিষন রাগ। হচ্ছে দিশা। আমি শুধু ওর হাত ধরেছি আর ও দুজন লোককে ডেকে বললো আমি নাকি ওকে ইফটিজিং করছি ভাবা যায়।
কাল আগে হাতের কাছে পাই তুলে একটা আছাড় মেরে দেবো। ফাজিল মেয়ে নিজের বরকে ইফটিজার বলে।
দিশা: তোদের মধ্যে ঝগড়া, হয়েছে ভাইয়া?
পরশ: একটু misunderstanding তাই বলে এরকম করবে।
দিশা: ভাইয়া তুই জানিস আমাদের মেয়েদের অভিমান বেশি। তুই এমন কর যেটা দেখে ভাবি তোর থেকে দূরে থাকার কথা চিন্তাই করতে পারবেনা। আচ্ছা আমি এখন আসি। এই বলে দিশা, রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
পরশ: দিশা ঠিকই বলেছে। মিষ্টি এবার তুমি দেখবে তোমার বর কি করে।
তারপর ফোন নিয়ে কারো সাথে কথা বললো।
পরদিন মিষ্টি কলেজে চলে গেলো। গিয়েই দেখে ওর বন্ধুরা বসে আছে কলেজ। মাঠে। ও গিয়ে ওদের আড্ডায় যোগ। হলো।
রুমি: কিরে ওভাবে চলে গেলি কেনো?
মিষ্টি: তো কি করবো? তোদের মুখে ওই বজ্জাত লোকটার গুনগান শুনবো। তোরা কিরে? আমার সাথে এতো শক্রতা তোদের কিসের?
আলো: আমরা আবার কি করলাম?
মিষ্টি: সব তো তোদের জন্যই হয়েছে। সেদিন যদি কথা বলার সময় একটু দরজার দিকে তাকাতি কি এমন। হতো। তোদের জন্যই তো আমার জীবনের এই করুন পরিনতি।
বন্ধরা: কি? তোর জীবনে করুন পরিনিতি? How. funny
মিষ্টি: তোরা মুখে তালা লাগা। নয়তো আমি এখন তোদের কে কুচি কুচি করে কেটে হাঙর মাছদের gift করবো।
সেই মুর্হতে পরশ গাড়ি নিয়ে কলেজে ঢুকলো। তারপর গাড়ি থেকে নেমে অফিস রুমের দিকে যাচ্ছিলো।
আলো: মিষ্টি দেখ তোর বর আর আমাদের দুলাভাই+ স্যার চলে এসেছে।
মিষ্টি: এসেছে তো আমি কি করবো। বলেই একবার তাকালো।
আর তখনই কলেজ গেট দিয়ে আর একটা গাড়ি ঢুকলো। আর গাড়ি থেকে একজন নেমে সোজা পরশের কাছে গিয়ে পরশকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।
আর সেটা দেখেই মিষ্টি রাগে High. voltage এ উঠে গেলো। কারন মেয়েটা আর কেউনা ওটা আরাধ্য ছিলো
আর পরশতো আরাধ্য কে দেখে খুব খুশি।
তারপর পরশ আর আরাধ্য অফিসরুমে ঢুকে গেলো। আবার একটু পরেরে বের হয়ে আরাধ্য কে নিয়ে পরশ গাড়িতে করে চলে গেলো।
এদিকে মিষ্টি সবকিছু দেখছিলো আর রাগে ফুলছিলো। একা একাই বির বির করে বলছিলো,
( এই নাকি তোর ভালোবাসা। কলেজে এতো গুলো মানুষের সামনে দিয়ে একটা অন্য মেয়েকে নিয়ে চলে গেলি। কেনো রে তোর বউ কি মরে গেছে। সামনে জলজ্যান্ত বসে আছে চোখে পড়ে না) এখন আমার কি হবে?
রুমি: কিরে কি এতো বির বির করছিস। আর ওই মেয়েটা কে যায় সাথে স্যার এতো হেসে কথা বলছিলো আবার জড়িয়ে ধরলো
মিষ্টি: জানি না। বলেই ক্লাস রুমে চলে গেলো। ক্লাসে স্যার পড়াচ্ছেন কিন্তু মিষ্টির কিছুতেই মন বসছেনা। শুধু ওদের গাড়িতে করে যাওয়ার দূশ্য। জোড়িয়ে ধরার দূশ্য চোখে ভেসে উঠছে। নাহ আর পারা যাচ্ছেনা। ক্লাস শেষ করে বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলো। এদিকে সারাদিন আর পরশ কলেজে ফিরলোনা।
মিষ্টি বাড়ি ফিরে নিজের ঘরে এদিক থেকে ওদিন জোড়ে জোড়ে হাটছে আর। বলছে,
এই ছিলো তোর মনে। তাহলে সেদিন এমন করলি কেনো। আমার সব শেষ হয়ে গেলো। আমার কাছে আসার সময় মনে ছিলোনা । লুচু কোথাকর।
মিষ্টিকে উপরে আসতে দেখে ওর বাবাও পেছনে পেছনে এসেছিলো। আর দরজায় বাইরে থেকে সব শুনেছিলো
শেষ পর্যন্ত ভেতরে ঢুকে বললো,
বাবা: কিরে কি হয়েছে? এভাবে পাইচারি করছিস কেনো?
মিষ্টি: বাবা এখন আমার কি হবে?
বাবা: কেনো কি হয়েছে?
মিষ্টি: বাবা তোমার মেয়ের সংসার ভেঙে যাচ্ছে।
বাবা: কি পাগলের মতো বলছিস
মিষ্টি: হ্যা এখন তো আমাকে পাগলই মনে হবে। তোমরা কেউ আমাকে ভালোবাসোনা।
বাবা: আমরা সবাই। তোকে ভালোবাসি। কিন্তু তুই বুঝতে পারিস না।
আচ্ছা তোর সংসার ভেঙে যাচ্ছে বলছিস কেনো? কি হয়েছে খুলে বল
মিষ্টি: বাবা তোমার জামাই অন্য মেয়ের সাথে ডেটিং করে বেরাচ্ছে। বাবা তোমার জামাইয়ের চরিএ নষ্ট হয়ে গেছে।
বাবা: কি বলছিস তুই। এতো বড় কথা। আমার মেয়েকে রেখে অন্য। মেয়ে সাথে ডেটিং
মিষ্টি: হুম
বাবা: আমি কি বলছি মা। তুই পরশের কাছে ফিরে যা। তুই থাকতে পরশ কেনো অন্য মেয়ে সাথে ঘুরে বেড়াবে। তুই সবসময় ওকে চোখে চোখে রাখবি। তোর। জীবনে কি কেনো দাম নেই ওর কাছে? তুই বরং আজই বাড়ি ফিরে যা। আর নিজের অধিকার বুঝে নে। কত্ত বড় সাহস!
মিষ্টি: তুমি ঠিকই বলেছো বাবা আমি এক্ষনি বাড়ি যাব। এই বলে মিষ্টি ব্যাগ গোছাতে লাগলো।
অার ওর বাবা ওর কান্ড দেখে হাসছে অার নিজ মনেই বলছে অামার মেয়েটা এখনো বাচ্চাই রয়ে গেলো। অামি জানি তুই পরশকে ভালোবাসিস। শুধু বুঝতে একটু দেরি হচ্ছে।
অতঃপর সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে ঘরে ঢুকেই দেখলো…….
(চলবে)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে