বক্ষ পিঞ্জর পর্ব-০৬

0
955

#বক্ষ পিঞ্জর
#Anaisha_Ehmat
#পর্বঃ৬

“হটাৎ আমার পা গিয়ে লাগলো আবির ভাইয়ার পায়ে। আবির ভাইয়া বিষম খেলো। বিস্ময় কাতর চোখে আমার দিকে তাকালো। আম্মু আবির ভাইয়া কে পানি দিলো। আমার ভিতর একটা জড়তা অনুভব করলাম আমি। যে টা কখনোই আমি অনুভব করিনা। ”

“বিকাল ৪ টা বাজে আবির ভাইয়া আর আভা আপু চলে গেলো তাদের বাসায়। ”

“পর পর ৪ দিন চলে গেলো। কোনো এক সন্ধায় কলিং বেল বাজলো৷ রায়াফ দরজা খুলে দিয়ে দেখলো আব্বু এসেছে। খুশিতে আব্বুকে জড়িয়ে ধরলো। আমিও রায়াফ এর হাসি শুনে লিভিং রুমে এসে আব্বুকে জড়িয়ে ধরি। বেশ কিছুক্ষন গল্প করি আব্বুর সাথে। আব্বু আমাকে একটা ফোন বক্স হাতে দিয়ে বললো এটা তোমার জন্য মাই প্রিন্সেস।”

“সত্যি!”

“হুম। সত্যি।”

“রাত ভাইয়া বলল, আব্বু ওর এখন পড়ার সময়। ওকে ফোন দিলে সারাদিন স্ক্রল করবে পড়বেনা। শেষে দেখা যাবে পরিক্ষায় লাট্টু মেরেছে। ”

“ভাইয়া তুমি একটু বেশি ভাবো। আমি মোটেও এমন নয়। মুখ ভেঙছি কে’টে বললাম। আমি পড়বো মন দিয়ে। আমার তো ভালো একটা রেজাল্ট করতেই হবে। ঢাকা ভার্সিটিতে চান্স পেতেই হবে। সেটা চিন্তা করেই পড়ছি ভাইয়া। আর ফোন আমি ইউস করবোনা বেশি সত্যি। দেখে নিও।”

“হুম তুই বলবি আর আমি শুনবো তাই না! ”

“আহ! রাত বাদ দে না বাবা। ওর সব ফ্রেন্ডদের ই তো ফোন আছে। ওর থাক সমস্যা কি। আমিই তো দিয়েছি ইচ্ছেতে তাই না! তুই ওকে কিছু বলিস না। মামনী এটা তোমারই থাকবে ওকে।”

“আব্বু এটা কি ঠিক করলে। আপুকে ফোন দিলে ঘড়ি দিলে। গোল্ড রিং ও দিলে। আমাকে একটা ফোন দিলে কি হতো।”

“কিহ! তুই কি বুড়ো হয়ে গেছিস যে তোকে আব্বু ফোন দিবে। কানের নিচে একটা দিবো বেশি পাকামো করলে৷ দিন দিন বড্ড ফাজিল হয়ে যাচ্ছিস রায়াফ৷ বলেই রাত ভাইয়া রায়াফ এর দিকে রাগী লুক দিলো।”

“ভাইয়া তুমি কিন্তু ভুলে গেছো আমি কিন্তু ভুলিনি। মনে আছে তো কি বলেছিলে হুম হুম। নাকি আমি সব ব্লাস্ট করে দিবো৷ রাত ভাইয়ার কানে কানে রায়াফ বললো। ”

“রাত ভাইয়া অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো। তৎক্ষনাৎ রাতাফ কে বললো, শুন তুই যদি রেজাল্ট ভালো করিস তাহলে নেক্সট ইয়ার তোকে ফোন কিনে দিবো। ঠিক আছে। এখন গিয়ে চুপ চাপ পড়তে বস৷ আমি এসে পড়া নিবো৷ নাও গো ফাস্ট। রায়াফ ছুটে চলে গেলো।”

“বেকুব হয়ে গেলাম। রায়াফ কি এমন বললো ভাইয়া কে যে ভাইয়া ওকে ফোন কিনে দিতে রাজি হয়ে গেলো। বুঝলাম না কাহিনী । ”

“আব্বু এসেছে আজ ১৫ দিন। আভা আপুর কথা মতো আমরা কাল সকালে সিলেট সাদা পাথর রওনা হবো ট্যুর যাত্রার উদ্দেশ্য। ”

“আমি রায়াফ রাতে বসে আলোচনা করলাম আমরা কি কি করবো। কোথায় যাবো। ”

“ভোর ৫ টায় আবির ভাইয়া আভা আপু আমাদের বাসায় চলে এলো। কিছুক্ষন পর রাত ভাইয়া গাড়ি রেডি হয়ে এলো। আমরা আমাদের গাড়ি করেই যাবো। আবির ভাইয়া বলেছিলো তার গাড়ি আনবে। কিন্তু রাত ভাইয়া নিষেধ করেছে। গাড়িতে উঠার সময় রায়াফ সামনের সিট এ বসবে ভেবে দরজা খুললো। আবার কি একটা ভেবে বললো, আজকে আমি সামনে কিছুতেই বসবোনা৷ ”

“রাত ভাইয়া ব্রু কুচকে রায়াফ এর দিকে তাকিয়ে বললো, তোর আবার কি হলো। সব সময় তো সামনেই বসিস।”

“সবাই বেশ কৌতুহল নিয়ে একই প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো রায়াফ এর দিকে ”

“ভাইয়া এই দুই মেয়ে যদি আজ একসাথে পেছনে বসে তাহলে মনে করো আমাদের তিন ভাই এর আজকে কান টা ঝা’লাপালা করে দিবে । তাই আমি প্রধানমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, এই দুই নারীকে আজ কিছুতেই আমি এক সাথে পেছনে বসতে দিবোনা। তাই আভা আপু সামনে বসবে। আমি রাত্রি আপু আবির ভাইয়া পেছনে বসবো।”

“ওহ আচ্ছা তাই না! তুই আর যুক্তি পেলিনা। একদম কান মলা দিয়ে দিবো। ক্ষেপে বললো রাত ভাইয়া।”

“ভাইয়া তোমাকে সেটিং করিয়ে দিচ্ছি বুঝোনা কেনো। উলটে আমাকে কথা শুনাও। ব্লাস্ট করে দিবো কিন্তু হুহ। রায়াফ রাত ভাইয়ার কানে কানে ফিস ফিস করে বলল।”

“আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে বস যেখানে ইচ্ছে। রাত ভাইয়া বলল।”

“ইদানীং ভাইয়ার এসব কথা বলার ভঙ্গিমা আমি কিছুই বুঝতে পারিনা। রায়াফ এর সব কথায় কেনো ভাইয়া সম্মতি দেই। কই আগেতো এমন ছিলোনা। যাই হোক আমি গিয়ে পেছনে বসলাম। সেখানেও রায়াফ এর ঝামেলা যে ও জানালার পাশে বসবে। ”

“দেখি চাপো। আমি সাইডে বসবো। আমার মাঝ খানে গরম লাগে। ”

“কি আর করার মাঝ খানে আমি। ডান পাশে আবির ভাইয়া বাম পাশে রায়াফ। গাড়ি ছুটলো গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। আবির ভাইয়ার পারফিউম এর স্মেল টা দারুন লাগছে। আজকে আবির ভাইয়ার পাশে বসে কেমন যেনো একটা অনুভূতির সৃষ্টি হচ্ছে। সেটা মি আদও আমার জানা নেই। আমি কি এই মানুষটার প্রতি কোনোভাবে আকৃষ্ট হয়ে পড়ছি। না না এসব কি ভাবছি আমি। এটা কোনো ভাবেই নয়। কন্ট্রোল রাত্রি, নিজেকে ধাতস্থ রাখ। ওনি তোর বড় ভাইয়ার সমতুল্য এসব আকৃষ্টতা তোকে মানায় না। মনে মনে কথা গুলো বলতে লাগলাম। যাই হোক নিজকে ধাতস্থ করে চুপ করে বসে রইলাম। আভা আপু মিউজিক ছেড়ে দিলো। ”

“তুমি দূরে দূরে আর থেকোনা
এ চোখে চেয়ে দেখোনা।
তুমি ভালোবেসে আমাকে
ঐ হৃদয়ে ঢেকে রাখোনা। আ আ আ

“আমার আবার বমি করার স্বভাব আছে লং জার্নি তে মাঝ পথে বমি করেই দিলাম। ভাজ্ঞিস কারও গায়ে পড়েনি। আমার অবস্থা কিছুটা খারাপ হয়ে গেলো। আবির ভাইয়া আমাকে এক হাত দিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। আর এক হাত আমার কপালে ঠেকিয়ে ধরলো আর বলল, রা রাত্রি আর ইউ ওকে। ”

“আবির ভাইয়া যেনো খুব বিচলিত হয়ে পড়লো। আমি অস্ফুট সুরে বললাম, হুম। পরক্ষনেই আমি মাথার ভার রাখতে না পেরে হেলে পড়ে যেতে নিলে আবির ভাইয়া শক্ত করে আমাকে তার বুকে চেপে ধরলো। আমার অনুভূত হলো যেনো আমি খুব শান্তির একটা যায়গায় নিমজ্জিত হয়ে আছি। ইচ্ছে করছে সব সময় এইখান টাই নিজেকে উৎস্বর্গ করে রাখতে। কিন্তু এটা কি কোনোকালে সম্ভব হবে! হইতো হবেনা। এইসব ভাবনায় আনা মানে বৃথা। কিন্তু আমি যে প্রতিনিয়ত তার নে’শায় আসক্ত হয়ে পড়ছি।”

“রায়াফ ও আমাকে এক পাশে জড়িয়ে ধরলো। আর কিছুক্ষন পর পর বলতে লাগলো, আপু তুমি ঠিক আছো তো, মাথায় পানি দিবে। সবাই যেনো খুব অস্থির হয়ে পড়লো।”

“রাত গাড়ি থামা আগে রাত্রি কে একটু ফ্রেশ করিয়ে নেয় । রানিং জার্নি করাটা হইতো ঠিক হবেনা। কিছুক্ষন পর আমরা আবার যাত্রা শুরু করবো।আবির ভাইয়া বলল।”

“রাত ভাইয়া গাড়ি থামালো। আমাকে গাড়ি থেকে বের করে মুখে পানি দেওয়া হলো। তারপর আবার আমাকে গাড়িতে বসিয়ে দিলো। আভা আপু আমার পাশে এসে জড়িয়ে ধরে বসলো। প্রায় ১০-১৫ মিনিট পর আমি কিছুটা স্বাভাবিক ফিল করছি। তাই বললাম, ভাইয়া চলো আমি ঠিক আছি। ”

“আচ্ছা আভা তুমি পেছনেই রাত্রির সাথে বসো আবির সামনে বসে পড়ুক। রাত ভাইয়া বলল।”

“না ভাইয়া আমি বসতে পারবো তো ঠিক আছি আমি। আভা আপু তুমি সামনেই বসো যাও। ”

“একদম কথা বলবিনা চুপ। ধমক দিলো রাত ভাইয়া।”

“উফ ভাইয়া তুমি আপুকে বকছো কেনো। আমরা আগের মতোই যাবো। দুই নারী কিছুতেই একসাথে বসতে পারবেনা। আবার এখন দুজন যে চিপকে বসে আছে। আমার তো হিংসে হচ্ছে। এই আভা আপু তুমি সামনে যাও তো যাও। রায়াফ বলল।”

“রাত ভাইয়া আর কথা বাড়ালোনা। আগের মতোই বসে পড়লো সবাই। রায়াফ ইচ্ছে মতো রাত ভাইয়ার ফোন দিয়ে ছবি তুলছে। আমার ফোন দিয়েও তুলছে।”

“আবির ভাইয়া আমাকে বলল, ঠিক আছো তো এখন। কমফোর্ট ফিল করছো?”

“মাথা ঝাকিয়ে হুম বললাম।”

“অবশেষে আমরা গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম। সাদা পথর যায়গাটা খুবই সুন্দর। সমতল একটা ভূমিতে বেশ বড় ছোট পাথরের সমাহার। নদীও রয়েছে হাঁটু অব্দি পানি।”

“পাথরের উঁচু টিলা ও রয়েছে। পাথর গুলো বড় হওয়ায় অনেকটা পিরামিড এর মতোই লাগে। আমরা হাঁটতে হাঁটতে নিচে নেমে এলাম। পাথরের উঁচু নিচু আনাগোনা হওয়ায় হাঁটতে গিয়ে পড়ে যাচ্ছিলাম আবির ভাইয়া হাত ধরে ফেললো। আর বলল, সাবধানে হাঁটো পড়ে যাবে তো।আমি মুচকি হেসে মাথা ঝাকালাম।”

“পানিতে নামলো সবাই। যে যার মতো ছবি তুলায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো। আমার আবার এতো ছবি তুলতে ভালো লাগেনা। তাই পানিতে নেমে শুধু হাঁটছি। এখানে এসে একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম রাত ভাইয়া আর আভা আপু একটু বেশি মেলা মেশা করছে। আবির ভাইয়া হইতো সেটা লক্ষ্য করছেনা। রায়াফ তাদের আরও ছবি তুলে দিচ্ছে।”

“কিরে তোর মতলব টা কি বল তো। ইদানীং ভাইয়ার সাথে বেশ ভাব জমিয়েছিস। রায়াফ কে বললাম।”

“তোমাকে এতোকিছু জানতে হবেনা যাও তো। ডোন্ট ডিস্টার্ব মি। বলেই ভাব দেখিয়ে রায়াফ চলে গেলো আভা আপুর কাছে। রায়াফ আমার আর আভা আপুর বেশ কয়েকটা ছবি তুলে দিলো আমার ফোন এ। ”

“আমি আর রায়াফ পানি ছিঁটানো শুরু করলাম একে অপরকে৷। রাত ভাইয়া ধমক দিয়ে বলল, এই রাত্রি তুই ও কি ওর মতো ছোট নাকি হুম।”

“মুখ টা পেঁচার মতো করে মাথা নিচু করে ফেললাম।”

“দুপুরে খাওয়ার সময় আমারা একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম। সেখানে খাওয়ার সময় আমি বিষম খেলাম।আবির ভাইয়া পানি খাইয়ে দিলো নিজ হাতে। বেশ ভালোই লাগলো আজকে তার কেয়ার গুলো।কিন্তু এতোটা কেয়ার হুট করে! তাল মা’তাল কিছু বুঝে উঠতে পারছিনা। ”

“অনেক আনন্দ করে রাত ৯ টায় আমরা আমাদের বাসায় ফিরলাম। আভা আপু আবির ভাইয়া তাদের বাসায় চলে গেলো। ”

“দুইদিন পর কলেজে গেলাম। ইতি বলল, কিরে দুস্ত কেমন লাগলো ট্যুরে।”

“হুম ভালো। এই ইতু জানিস আমার না আবির ভাইয়া কে দেখলে কেমন কেমন যেনো একটা ফিলিংস আসে। তারপর সব কিছু ইতিকে বললাম। ”

“তাই নাকি! আমার কি মনে হয় জানিস আবির ভাইয়া তোকে পছন্দ করে। আর নইতো এমন টা হতোনা। আর তুই ও পছন্দ করিস। তাইতো তোর এমন অদ্ভুত ফিলিংস হয়। বুঝলি।”

“আরে না তুই যে কি বলিস না। এমন কিছুই নয়, ওনি আমার ভাইয়ার সমতুল্য আমি এমন টা ভাবতেই পারিনা। কিন্তু একটা কথা সত্য যে আমি ওনার প্রতি কিছুটা দূর্বল হয়ে পড়ছি। কিন্তু সেটা কেনো? এটা কি পছন্দ করা কিংবা অন্যকিছু হতে পারে! ”

“হুম হতেই পারে। এখন এটা ক্লিয়ার যে তুই ওনাকে ভালোবেসে ফেলেছিস। ”

“ধূর কি বলিস এসব।”

“হুম যা সত্যি তাই তো বলি। মিলিয়ে নিস আমার কথা গুলো।”

“আমি চুপ চাপ রইলাম। তারপর ক্লাস শেষে বাসায় ফিরলাম। রাত তখন ৮ টা কফি হাতে বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। নিচে চোখ পড়তেই দেখি কেও একজন তাকিয়ে আছে আমারই বেলকনির দিকে। লক্ষ্য করতেই বুঝলাম এটা আবির ভাইয়া। আমিও কিছুক্ষন তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। হুয়াইট জিন্স লেমন কালার শার্ট এ ভীষণ ভালো লাগছে তাকে। নির্লজ্জর মতো আমার চোখ দুটো আজ তাকে দেখছে। কই এতোদিন এমন নজরে তাকায়নি তাহলে আজ কেনো এভাবে তাকিয়ে আছি। কি হয়েছে আমার। ওইদিন ট্যূর এ আবির ভাইয়া আমার এতো গুলো কেয়ার নিলো। আমাকে জড়িয়ে পর্যন্ত ধরলো কিন্তু রাত ভাইয়া কিছু বললোনা।বেপার গুলো আমার ঠিক হজম হচ্ছেমা। মনে মনে বললাম।ভাবনায় ছেদ পড়লো ফোন এর মেসেজ টোন এ তাকিয়ে দেখি অফিসের মেসেজ। ”

“আবির ভাইয়া অনেক্ষন দাঁড়িয়ে ছিলো। তারপর মোবাইল স্ক্রল করে গাড়িতে উঠে চলে গেলো।”

“রাত ১২ টা আমার ঘুম আসছেনা কিছুতেই। তাই ফোন টা হাতে নিয়ে বেলকনিতে চলে গেলাম। তখন দেখি মেসেজ এসেছে একটা আননোন নাম্বার থেকে ,
★ওহে পিচ্চি বালিকা আমি বার বার কেনো তোমাতে হারিয়ে যাই। তুমি কি আমায় বুঝোনা। নাকি বুঝেও না বুঝার ভান ধরে থাকো। তুমি কখনোই আমাতে বিলীন হবেনা। আমি যে আমার বক্ষে তোমার পিঞ্জর গড়ে রেখেছি সেটা কি তুমি বুঝোনা। এই #বক্ষ_পিঞ্জর যে শুধু তোমার আশায় বসে আছে। অতি শিঘ্রই আমি তোমাকে আমার পিঞ্জরে বসত করার সুযোগ করে দিবো। ভালোবাসি আমার পিঞ্জিরার পিচ্চি বালিকা কে। শুভ রাত্রি।★

” মেসেজ টা পড়ে দোলনায় বসে পরলাম। কে দিলো এই মেসেজ। আর এতো নিঁখুত কথা লেখা। আমাকে ভালোবাসে অথচ আমিই জানিনা না। কে সে? কেনো আমাকে সম্মুখে বলেনা। সাত পাঁচ ভেবে নাম্বার টায় কল দিলাম। যাক বাবা সুইচ অফ করে রেখেছে। ”

“পরদিন কলেজে, ইতিকে কলেজে গিয়ে মেসেজ টা দেখালাম। ”

“বুঝলাম না কে এই মহা মানব! যে আমার বেস্টুকে ভালোবাসে অথচ সামনে বলার সাহস পাইনা। আচ্ছা রাত্রি তোর কি পরিচিত কেও মনে হচ্ছে। ব্রু কুচকে বললে ইতি।”

“না তো! পরিচিত কে হবে। আর তা ছাড়া সিম টা আম্মুর আগের সিম হতেও পারে আম্মুর পরিচিত কেও। কিন্ত এসব মেসেজ কেনো লিখবে। আর সে জানেই বা কি করে যে, সিম টা আমার ফোন এ? আমি ইউস করছি সিম টা সেটা তো বাসার কেও ছাড়া আর কেও জানেনা। তাহলে কি অতি পরিচিত কেও হতে পারে! ”

“আচ্ছা রাত্রি এটা আবির ভাইয়া নই তো! ”

“হুহ বলেছে তোকে। আজাইরা কথা কম বলবি ঠিক আছে। আবির ভাইয়া কে কি ওই রকম মনে হয় নাকি। আর ওনি হলে তো আমার সামনেই বলতে পারতো। আর ওনি জানবে কি করে যে আমার কাছে এই সিম টা আছে। এটা নিশ্চিত যে মেসেজ সেন্ট করা ব্যক্তি আম্মুর অতি পরিচিত ব্যক্তি। ”

“হুম হতেও পারে। যাই হোক পরে দেখা যাবে চল ক্লাসে যাই। ক্লাস করে বাসায় ফিরলাম। সন্ধ্যায় রাত ভাইয়া বলল, আবির ভাইয়া দের বাসায় আমাদের সবাইকে দাওয়াত করেছে। কাল সকালে নাকি সবাই যাবে। ”

“রায়াফ খুশিতে গদগদ। রাত ভাইয়ার ঠোঁট এ একটু হাসির ঝিলিক দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু সেটা কিসের জন্য বুঝিনাই।”

“পরদিন ১১ টার সময় আমরা আবির ভাইয়া দের বাসায় গেলাম। সেখানে সবাই সবার সাথে কৌশল বিনিময় করছে। তাদের বাসায় আরও অনেক মেহমান রয়েছে। আবির ভাইয়ার বড় খালামনি নাকি আসছে। আমি রায়াফ কে নিয়ে আবির ভাইয়াদের বাড়িটা ঘুরে দেখছি। আবির ভাইয়া দের বাসাটা মিডিয়াম ডুপ্লেক্স। বাহির টা যেমন সুন্দর ভিতর টাও ঠিক তেমনই সুন্দর। একটা সময় হাঁটতে হাঁটতে বাসার বাইরে বাগান এ চলে এলাম। কিছুটা দূরে যেতেই কারও সাথে ধাক্কা লাগলো। উফ! এই কে রে হত’চ্ছারা দেখে হাঁটতে পারিস না, কানার মেনা। আমার নাক টা ফাটিয়ে দিলো গো আম্মু। বলেই উপরে তাকিয়ে যাকে দেখলাম। তখন তো আমি পুরাই হা হয়ে গেছি।”

#বক্ষ_পিঞ্জর
#Anaisha_Ehmat
#বোনাস_পর্ব_(রোমান্টিক_পর্ব)

“উপরে তাকিয়ে দেখি কলেজের সেই সিনিয়র ভাইয়া টা। যে আমাকে প্রপোজ করেছিলো। আমিতো মুখে হাত দিয়ে তাকিয়ে আছি। আমার মুখ থেকে কথা বের হচ্ছেনা।”

“রাত্রি তুমি এখানে!”

“হুম আমি এখানে। কিন্তু আপনি এখানে কি করছেন হুম।”

“কি করছি মানে এটা আমার খালার বাসা আমি এসেছি। তো তুমি এখানে কেনো এসেছো। নিশ্চয় আমাকে ফলো করে চলে এসেছো তাই না। আমার প্রপোজাল এক্সেপ্ট করার জন্য। আমার দিকে আঙুল তাক করে বলল।”

“ইশ শখ কতো। ঢং দেখে বাঁচিনা। বয়েই গেছে আমার আপনার পিছু করতে। এটা আমার ভাইয়ার বন্ধুর বাসা। আই মিন বেস্ট ফ্রেন্ড এর বাসা। তার উপর আমার আব্বু আর আবির ভাইয়ার আব্বু বিজনেস পার্টনার। আমাদের ইনভাইট করেছে। তাই আমরা এখানে এসেছি।”

“এই এই আপনি আমার আপুর সাথে এই ভাবে বলছেন কেনো হুম। মে’রে বালি চাপা দিয়ে দিবো কিন্তু। রায়াফ বলল সিনিয়র ভাইয়া টা কে।”

“ওহ, পিচ্চি রায়াফ তুমি এতো কিউট কেনো মেরি ভাই। দেখলেই মন চাই কুলে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেই। বির বির করে কথাটি বলল সিনিয়র ভাইয়া টা।”

“ভাইয়া ও ভাইয়া! রাত ভাইয়া! আভা আপু! ভাইয়া তোমরা কোথায় এদিকে এসো তো দেখো এই ছেলেটা আপুর সাথে ঝগড়া করছে। রায়াফ চিল্লাতে থাকলো।”

“কি হয়েছে রায়াফ চিৎকার করছো কেনো। আবির ভাইয়া এসে বলল।”

“তারপর রায়াফ সব কিছু বলল।”

“আবির ভাইয়া রায়াফ এর চুলে ঝাড়া দিয়ে বলল, পা’গল ছেলে এটা তোমার বড় ভাইয়া হয়। আর আমার খালাতো ভাই। ওর নাম ফয়সাল বুঝলে।”

“রায়াফ ফয়সাল ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে মুখ ভেঙছি কাটলো। তারপর ও সেখান থেকে চলে গেলো।”

“কিরে ফয়সাল তুই কি রাত্রি কে আগে থেকে চিনিস? মানে কিভাবে চিনিস।”

“আমরা একই কলেজে পড়ি ভাইয়া। ওই রকম ভাবেই চিনি আর কি। প্রপোজ করার ব্যপার টা এড়িয়ে গেলো ফয়সাল।”

“আচ্ছা যা ভিতরে যা। এই রোদে বাইরে কি করছিস।”

“ওকে যাচ্ছি।”

“তারপর আবির ভাইয়া আমাকে বলল, রাত্রি ও তোমাকে বিরক্ত করে।”

“ক কই না তো ভাইয়া বিরক্ত করবে কেনো। ওই আর কি আজই কথা বললাম। নাম টাও আমি জানতাম না আজকে আপনার মুখে শুনলাম। মুচকি হাসি দিলাম।”

“ওহ আচ্ছা চলো ভেতরে। আবির ভাইয়া ও মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেলো।”

“আমি একটা গোলাপ ছিঁড়তে গিয়েও ছিঁড়লাম না। ভেতরে চলে গেলাম।”

“এতো বড় বাসা এতো এতো রুম আমার কাছে এটা জঙ্গল মনে হচ্ছে। যাই হোক আবির ভাইয়ার খালাতো বোন ফারিয়া আপুর সাথে কিছুক্ষন কথা বললাম। তারা দুই ভাই বোনই। ফারিয়া আপুর অনার্স কমপ্লিট। ওনাকে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে সবাই। কিন্তু ওনি করতে চাইছেন না।”

“আমি একটা সময় হাঁটতে হাঁটতে আভা আপুর রুমের কাছে আসলাম। রুমে ঢুকতে যাবো এমন সময় ভিতরে মোমেন্ট টা দেখে আমার চোখ ছানা বড়া হয়ে গেলো। রাত ভাইয়া আর আভা আপু খুবই ক্লোজলি দাঁড়িয়ে আছে। তাদের মধ্যকার দূরত্ব খুবই কম। লজ্জায় মাথা নিচু করে এক প্রকার দৌড়ে চলে এলাম সেখান থেকে। আবারও ধাক্কা খেলাম কারও সাথে। আহ কে! উপরে তাকিয়ে দেখি আবির ভাইয়া। লজ্জায় ইচ্ছে করছে উড়ে পালিয়ে যাই। আমি কি ধাক্কা খাওয়ার জন্য পি-এইজডি অর্জন করবো নাকি। উফ আর পারিনা। ”

“কি ব্যাপার রাত্রি। কি হয়েছে দৌঁড়াচ্ছো কেনো? ব্রু কুচকে বলল।”

“আ ব না মা মানে ওই আর কি। মা মানে আমি ওইদিক টাই গিয়ে ছিলাম সেখানে তে তেলাপোকা দেখে দৌঁড় দিলাম আর কি। জোরপূর্বক হেসে বললাম।”

“এতো ব্রেব গার্ল তুমি তেলাপোকা ভয় পাও হাসালে পাগলি। এসো আমার সাথে তোমাকে তোমার মতো পরিবেশে নিয়ে যাই চলো। ”

“হুম হুম চলুন। যেতে যেতে ভাবতে লাগলাম, তার মানে কি আভা আপু আর ভাইয়া রিলেশনে আছে? আচ্ছা তাইতো বলি রায়াফ এর কথা ভাইয়া কেনো এতো শুনে। হইতো রায়াফ ও জানে। দাঁড়া বেটা রায়াফ তুই আমাকে বলিস নি। তোর মারবেল সব আমি ড্রেনে ফেলে দিবো। এটা তোর শাস্তি।”

“এই যে মিস নাইট কোথায় হারিয়ে গেলে।”

“ক কই কোথাও না তো চলুন আমি আসছি তো।”

“আমরা এসে গেছি চোখ দুটো বুলিয়ে দেখো তো চারদিক টা। ”

“আবির ভাইয়ার কথায় চোখ বুলিয়ে চারপাশ টা থেকে সত্যি অবাক হয়ে গেলাম। এটা একটা বেলকনি। বেশ বড় বেলকনিটা। এখানে আমার পছন্দের সব ফুলের গাছ লাগানো আছে। একটা দোলনাও আছে এটা আমার দোলনার চেয়ে তৃতীয়াংশ বড় হবে। মানে একদম শুয়ে পড়া যাবে। খুব খুশি হয়ে গেলাম এতো সুন্দর একটা প্লেস দেখে। খুশিতে লাফিয়ে উঠে আবির ভাইয়া কে জড়িয়ে ধরে বললাম থ্যাংক ইউ ভাইয়া অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ”

“আবির ভাইয়া যেনো ভরকে গেলো৷ তার দুই হাত উপর দিকে ছড়িয়ে দিলো। আমি যখন বুঝতে পারলাম কি করেছি তখন ছিঁটকে সরে এলাম। স সরি ভাইয়া আ আমার আসলে খেয়াল ছিলোনা। আমতা আমতা করে বললাম।”

“মুচকি হাসি দিয়ে বলল, ঠিক আছে সমস্যা নেই। কিন্তু আশে পাশে আগে দেখে নিয়ো কেও থাকে কিনা। না হলে ফেসে যেতে পারো। ”

“আমি যেনো বেশ লজ্জা পেলাম। আবার তার হাসি টার দিকেও তাকিয়ে রইলাম। কত্ত সুন্দর করে হাসেন ওনি। ভাইয়া আপনার বউ টা লাকী হবে। আনমনে বলে ফেললাম।”

“মানে! হটাৎ এই কথা বললে কেনো?”

“না মা মানে কিছুনা এমনি। এমনি বলেছি। তো বললেন না তো এটা কার বেলকনি। ”

“এটা আমার বেড রুমের বেলকনি। তুমি তোমার ভাবনা জগতে এতোটাই বিভোর ছিলে যে আসার সময় আমার রুম দিয়ে এসেছো সেটাই খেয়াল করোনি।”

“ওহ আচ্ছা। যাই হোক প্রশংসা করতেই হয়। খুব সুন্দর করে সাজিয়েছেন। আমার অনেক ভালো লেগেছে যায়গাটা।”

“বিপরিতে আবারও ভাইয়া মুচকি হাসলো।আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি তার দিকে। ”

“কি হলো এভাবে কি দেখছো। আমাকে নজর দিচ্ছো বুঝি। নজর দিতে হবেনা নিজের জিনিসে নজর দিতে নেই। ”

“তার কথায় হুশে ফিরলাম। চোখ মুখ খিচে মনে মনে বললাম, রাত্রি কন্ট্রোল! নিজেকে কন্ট্রোল রাখতে পারিস না কেনো বোকা। তুই আসলেই একটা ব’লদ। নইতো কেও এভাবে একটা ছেলের দিকে তাকিয়ে থাকে নির্লজ্জের মতো ছিঃছিঃ। চোখ খুলে বললাম এক মিনিট এক মিনিট নিজের জিনিস মানে। আপনি আবার আমার জিনিস কবে হলেন। মানুষ কখনো জিনিস হয় নাকি।”

“আবির ভাইয়া আমার কিছুটা কাছে এসে বলল, সব কিছু এতো জানার আগ্রহ কেনো। আমি দামি কথা দুইবার বলিনা। তাই এটাও বলতে চাইছিনা। তুমি সৌন্দর্য টা উপভোগ করো। সময় মতো আমি এসে নিয়ে যাবো। এখানে ভালো না লাগলে লিভিং রুমে এসো। নইতো আভার কাছে যেয়ো। আমি শাওয়ার নিতে যাবো এখন। বলেই আবির ভাইয়া চলে গেলো।”

“এতোক্ষনে ভুলেই গেছিলাম রাত ভাইয়া আভা আপুর কথা। ইশ কি একটা লজ্জায় পরে যেতাম যদি ভাইয়ার সামনা সামনি হতাম। ভাবতেই ভীষণ লজ্জা লাগছে। আমি আবার ভাবনা বাদ দিয়ে ফুল গুলো ছুঁয়ে দেখতে লাগলাম। বেশ কিছুক্ষন পর সেখান থেকে উঠে আবির ভাইয়ার রুমে আসলাম। চোখ বুলিয়ে পুরো রুমটা দেখতে লাগলাম। অনেক সুন্দর করে গুছানো। বেশ বড় সর রুমটা। দেয়ালে আবির ভাইয়ার ছবি ঝুলিয়ে রাখা আছে কয়েকটা ফ্রেমে। আমি একটা ছবির দিকে অগ্রসর হয়ে ছবিটায় হাত লাগিয়ে বললাম। এই যে বড় ভাইয়া আপনি এতো কিউট কেনো হুম। জানেন খুব ভালো লাগে আপনাকে৷ আমি আপনার ওই নেশালো চোখ দুটোর মাঝে মত্ব থাকি সব সময়। আপনি আমার ভাইয়ার বন্ধু হতে গেলেন কোন দু:খে। নইলে তো আমি এতোদিনে আপনার সাথে প্রেম করা শুরু করে দিতাম। যাই হোক হইতো আপনি অন্য কারও প্রোপার্টি আমি নজর দিতে চাইছিনা আর৷ আমার ভালো লাগাটা না হয় আমার ভেতরেই থাক।বলেই ছবিটায় আবির ভাইয়ার নাকে একটা গুতো দিলাম। পেছন ফিরে তাকাতেই দেখি আবির ভাইয়া টাওয়াল পড়নে দাঁড়িয়ে আছে। আ আ আ আ চিৎকার করে চোখ বন্ধ করে নিলাম। ”

“আবির ভাইয়া আমার মুখ চেপে ধরে বলল, হুসসস চিৎকার করছো কেনো। কি হয়েছে কি।”

“আমার মুখ চেপে ধরায় আমি চট করে চোখ খুলে ফেললাম। উম উম করতেই লাগলাম। আবির ভাইয়া হাত সরালো মুখ থেকে। ছাঁড়ুন! আ আপনি এভাবে বেড়িয়েছেন কেনো? আর আমাকে এভাবে ধরেছেন কেনো। ”

“তো কি হয়েছে এটা তো আমারই বেড রুম একদম টাওয়াল ছাড়া বের হলেও সমস্যা নেই। তাই বলে এভাবে চিৎকার করবে নাকি। বাসা ভর্তি লোকজন সবাই শুনলে কি ভাববে।”

“আমি ধাক্কা দিয়ে আবির ভাইয়া কে সরিয়ে দিতে চাইলেও পারলাম উলটে স্লিপ খেয়ে আবির ভাইয়ার বেডে পড়ে গেলাম। আমাকে ধরে ছিলো বিদায় আবির ভাইয়াও আমার উপর পড়ে গেলো। আর তার অধর যুগল আমার ললাট স্পর্শ করলো। আমি চোখ মুখ খিচে নিস্তব্ধ হয়ে আছি। নিশ্বাস যেনো বন্ধ হয়ে আসছে। ”

“বেবি হেয়ার গুলো কপাল থেকে সরিয়ে কানে গুজে দিয়ে বলল, এতো ছট ফট কেনো করো হুম। থাক সমস্যা নেই একটা সময় ঠিকি শান্ত হয়ে যাবে৷ বলেই মুচকি হাসলো আবির ভাইয়া। তারপর চুপ করে রইলো৷ ”

“আমি শান্ত পরিবেশ ভেবে চোখ খুললাম, দেখি আবির ভাইয়া ঘোরলাগা চাহনী দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আ ব আবির ভাইয়া কি কি করছেন। উঠুন। ”

“আবির ভাইয়া থতমত খেয়ে গেলো। তারপর উঠতে গিয়েও উঠলোনা আমাকে চেপে ধরে হাত গুলো খাটে। তারপর আমার গলায় মুখ গুজে রাখে কিছুক্ষন। আমি আবেশে চোখ দুটো বন্ধ করে রাখলাম। চাইলেও যেনো পারছিনা সরিয়ে দিতে। অবশ হয়ে আসছে হাত পা গুলো। দেহটা যেনো নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। ”

“নিচ থেকে ডাক পড়লো আবির বলে। ”

“ভা ভাইয়া উঠুন আপনাকে ডাকছে। ”

“আবির ভাইয়া কানে ফিস ফিস করে বলল শান্ত থাকলে সত্যি তোমাকে মানায় না। তোমার বেবিদের মতো আচরন গুলো, ছটফটানি গুলোই বেশ ভালো লাগে। যাও নিচে যাও আমি আসছি। আর হ্যাঁ সরি। বলেই আবির ভাইয়া আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে উঠে চলে গেলো ড্রেসিং টেবিল এর সামনে।”

“আমি তাড়াতাড়ি উঠে দিলাম এক দৌড়। ”

” বেচারি খুব লজ্জা পেয়েছে। ভালোই লাগে লজ্জা পেতে দেখলে। পাগলি মেয়ে! খুব ভালোবাসি তোমায়। আজ আমিও জেনে গেলাম যে তুমি আমাকে পছন্দ করো। কিন্তু ভালোবাসো কিনা জানিনা। বাট আই ডোন্ট কেয়ার। ভালোবাসা আদায় করে নিতে জানি আমি। তবে তার জন্য তোমাকে সময় দিতে চাই আমি। এখন কোনোকিছু শুনা তোমার জন্য বেটার হবেনা। স্টাডি থেকে ফোকাস কমিয়ে দিবে। যে টা আমি চাইছিনা। দিন শেষে আমি আমি তোমাকে পেলেই চলবে। জাস্ট ওয়াচ এন্ড সি। মাই কুইন। মনে মনে কথা গুলো বলল আবির আর অস্ফুট সুরে হাসলো।”

“সিঁড়ি দিয়ে হাঁটছি আর হাপাচ্ছি। ওরে বাপ আর একটু হলে তো আমার দমই বন্ধ হয়ে যেতো। কি উঁচবুক রে বাবা। ”

“কি ব্যাপার রাত্রি কি বলছো। আর হাঁপাচ্ছো কেনো?পেছন থেকে ফয়সাল ভাইয়া বলল।”

“না না ম মানে কিছুনা। ওই আর কি রায়াফ কে খুঁজে বেড়াচ্ছিলাম। ”

“তাই বলে এভাবে দৌড়ে। রায়াফ তো ছাদে ছিলো আমার সাথে ওইতো আসছে। ”

“কিরে আপু কি হয়েছে। রায়াফ বলল।”

“কিছুনা তোকে খুঁজছিলাম আর কি। একা একা ভালো লাগছেনা। চল আমার সাথে। বলেই রায়াফ কে টেনে নিয়ে বাসার বাইরে বাগানে চলে গেলাম। আবির ভাইয়া দের কৃষ্ণচূড়া গাছ টার নিচে। ওখানে বসার যায়গা রয়েছে। ফয়সাল ভাইয়া ও আসলো আমাদের পিছু পিছু। ”

“কি ব্যাপার একবারে বাইরে চলে এলে যে কোনো সমস্যা। ফয়সাল ভাইয়া বলল।”

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে