Story: বউ
Part- 13
writer: #Nur_Nafisa
.
.
অফিস থাকাকালীন রেহান ৩বার কল করেছে বউ এর সাথে প্রেম করার জন্য। একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে নাফিসা ও রিয়াদকে নিয়ে শপিং করতে গেলো। বিয়ের শপিং সহ করতে করতে রাত হয়ে গেছে। তাই তারা রেস্টুরেন্ট এ ডিনারের জন্য গেলো। রেহান খাবার অর্ডার দিয়ে দিয়েছে। হঠাৎ নেহা এসে হাজির!
.
নেহা- বাবাহ! বউকে নিয়ে ডিনারে এসেছো!
.
রেহান- হুম..
.
নেহা- ভাইকে সাথে এনেছো, বাচ্চা নিয়ে আসোনি কেন?
.
রিয়াদ- ভাইয়ার বাবু নেই তো, আনবে কিভাবে!
.
নেহা- ওমা! সেকি! দুবছর আগে বিয়ে করেছো এখনো বাবু হয়নি! বউ কি চাইল্ডল্যাস নাকি!
.
নাফিসা এদিকে রেগে আগুন। আর রেহান ভয়ে! না জানি রেস্টুরেন্ট এ কিছু করে বসে!
.
রেহান- মাইন্ড ইউর ল্যাংগুয়েজ মিস নেহা।
.
নেহা- সত্য বললে গায়ে লাগে বুঝি….
.
রেহান- কিসের সত্য! হুম? আমার বউ লন্ডন গ্রাজুয়েট কমপ্লিট করেছে। আজ বাচ্চা নিয়ে আসিনি তো কি হয়েছে! আগামী দুবছর পরে দেখো ২ বাচ্চা নিয়ে এসেছি। তোমার তো মেবি এখনো বিয়েই হয়নি। আর কত বয়ফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরবে! সন্নাসী থেকে যাবে নাকি!
.
নেহা দাতভাঙা জবাব পেয়ে আর একমুহূর্ত ও দাড়ালো না সেখানে। দ্রুত বেরিয়ে এলো। রেহান সস্তির নিশ্বাস ছাড়লো, ভাগ্যিস, নাফিসা কোন কান্ড ঘটায় নি। ডিনার শেষ করে বাসায় ফিরে এলো।
.
রিয়াদ- ভাবি আজকে আমার রুমে ঘুমাবে।
.
নাফিসা- ওকে
.
রেহান- না। তোর রুমে কেন ঘুমাবে!
.
রিয়াদ- ভাবি তো সবসময় আমার রুমেই ঘুমায়। কাল শুধু তোমার রুমে ঘুমিয়েছে।
.
রেহান- এখন থেকে এই রুমেই ঘুমাবে। যা ভাগ….
.
রিয়াদ- না, ভাবি আমার রুমে ঘুমাবে। ভাবি চলো…..
.
নাফিসা- (রেহানকে রাগিয়ে দিতে) ওকে মটো চলো….
.
রেহান কড়া দৃষ্টিতে তাকালো, আর নাফিসা হাসতে হাসতে রিয়াদের রুমে চলে গেলো। রেহানের প্রচুর রাগ হচ্ছে, দরজা লক করে সে একাই শুয়ে পড়লো।
.
নাফিসা- মটো, আমি এখন থেকে তোমার ভাইয়ার রুমেই ঘুমাবো।
.
রিয়াদ- কেন?
.
নাফিসা- ওই রুমের অর্ধেক এর মালিক আমি। তাই….
.
রিয়াদ- কে দিয়েছে তোমাকে? আব্বু?
.
নাফিসা- না, আমি তোমার ভাইয়ার কাছ থেকে জিতে নিয়েছি। এখন থেকে আর আমাকে ডাকবে না ওকে? সবাই যার যার নিজের রুমে, ওকে….
.
রিয়াদ- ওকে। গুড নাইট..
.
নাফিসা- গুড নাইট…
.
নাফিসা আবার রেহানের রুমে ফিরে এলো কিন্তু দরজা ধাক্কা দিতেই দেখলো ভেতর থেকে লক করা। বুঝতে পেরেছে রেহান রাগ করেছে। ডাকতে গিয়েও ডাকলো না, “এখন ডাকলে ডিমান্ড বাড়বে রেহানের ” তাই আবার রিয়াদের রুমে এসে শুয়ে পড়লো।
.
রিয়াদ- তুমি আবার এখানে কেন?
.
নাফিসা- ভাবছি আজ এখানেই থাকবো কাল থেকে আমার রুমে…
.
রিয়াদ- ওকে
.
সকালে ঘুম থেকে উঠে রেহান আর নাফিসার সাথে কথা বলছে না। নাফিসাকে এড়িয়ে চলছে। ব্রেকফাস্ট শেষ করে রেহান অফিসের জন্য তৈরি হচ্ছে রুমে। নাফিসা এসে দরজা লাগিয়ে দিলো। রেহান শার্ট পড়ছে…. নাফিসা এলো বোতাম লাগিয়ে দেয়ার জন্য রেহান পিছিয়ে গেলো। নাফিসা আবার রেহানের কাছে এসে রেহানের দুহাত তার কোমড়ে রাখলো। রেহান হাত সরিয়ে নিলো নিজের শার্টের বোতাম লাগাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। নাফিসা লাগানো বোতাম গুলো খুলে দিলো। রেহান পাশ কাটিয়ে চলে আসতে চাইলে নাফিসা যে কাজটি করলো তাতে রেহান হাই ভোল্ডেজ শকড! নাফিসা রেহানের শার্টের কলার খুব শক্ত করে ধরে পায়ের আঙুল ভড় দিয়ে উঁচু হয়ে রেহানের ঠোঁটে তার ঠোঁট মিলিয়ে দিলো। ১মিনিট পর নাফিসা ছেড়ে দিতে চাইলেও রেহান ছাড়তে দিলো না। সে ১মিনিটকে ৫মিনিটের অধিক সময় বানিয়ে ফেললো। নাফিসা লজ্জায় আর তাকাতে পারছে না রেহানের দিকে। রেহানের শার্টের ২টা বোতাম লাগানো ছিলো রেহান বাকি দুটোও খুলে দিলো। তারপর নাফিসার কোমড় জড়িয়ে ধরলো আর নাফিসা মাথা নিচু করেই শার্টের বোতাম লাগিয়ে কলার ঠিক করে দিলো। রেহান নাফিসার থুতনি ধরে মুখটা উচু করলে নাফিসা চোখ বুজে ফেললো। রেহান দুচোখের পাতায় ও ঠোঁটে আলতো করে চুমু দিয়ে বললো….
.
রেহান- বউ ডেইলি এই সারপ্রাইজ টা আমি চাই, মনে থাকে যেন। আল্লাহ হাফেজ….
.
নাফিসা- আল্লাহ হাফেজ।
.
নাফিসা লাঞ্চ করে রুমে এসে দেখলো ৭টা মিসড কল ১টা মেসেজ রেহানের। মেসেজ ছিলো “তোমার আজ খবর আছে বউ ”
নাফিসা মনে মনে বললো, আচ্ছা দেখি তোমার খবরের কথা মনে থাকে কিনা! খবর তো আমি নিবো মিস্টার….
তারপর নাফিসা কল করলো রিসিভ হলো না। ৫মি পর রেহান কল করলো…
.
নাফিসা- আসসালামু আলাইকুম।
.
রেহান- ওয়ালাইকুম আসসালাম। কয়টা কল দিয়েছি কোথায় ছিলে?
.
নাফিসা- বাসায়…
.
রেহান- সেটা তো জানি ই। কি করছিলে ফোন ধরনি কেন ?
.
নাফিসা- তোমার জন্য খাওয়াদাওয়া সব ছেড়ে বসে থাকি, এটাই তো চাও তাই না! এখন যে লাঞ্চ টাইম জানো না!
.
রেহান- ওফ! বউ রাগ করছো কেন! আমি তো তোমাকে মিস করছিলাম তাই…
.
নাফিসা- আমার সাথে এতোক্ষণ বাজে বিহেভ করে এখন ঢং দেখাতে আসছে… একদম কথা বলবা না আমার সাথে।
.
রেহান- সরি বউ, আর হবে না এমন৷ কল কেটো না প্লিজ…
.
নাফিসা- বলো কি বলবা
.
রেহান- নামাজ পড়েছো?
.
নাফিসা- হুম। লাঞ্চ করেছো তুমি?
.
রেহান- হুম।
.
নাফিসা- কাজ নেই তোমার, একটু পর পর কল দাও! আব্বু কিছু বলে না তোমাকে?
.
রেহান- আব্বু কি বলবে! আব্বু নিজেই তো বউয়ের সাথে ফোনে প্রেম করে। ২দিন ধরে ফোনে বউকে পায় না, তাই একটু পর পর এসে আমার প্রেমে ডিস্টার্ব করে।
.
নাফিসা- হাহাহা…. পাবে কিভাবে! আম্মু আর শাশুড়ী আম্মু সারাদিন বকবক করে।
.
রেহান- তাই তো পায়না…
.
নাফিসা- কথা কম কাজ বেশি, এখন কাজ করো। ৩বার হয়ে গেছে, আর একবার কল করলে মোবাইল ভেঙে ফেলবো। আল্লাহ হাফেজ।
.
আগামীকাল রিজোয়ান আহমেদ তাদের নতুন ফ্ল্যাটে উঠবে। রাতে সবাই একসাথে ডিনার করে যার যার রুমে চলে গেলো। নাফিসা রুমে এসে দেখলো রেহান খাটে লম্বা হয়ে শুয়ে আছে আর ফোনে কিছু করছে। নাফিসা দরজা লক করে রেহানের হাত থেকে এক টানে ফোন নিয়ে তার সমস্ত ভাড় ছেড়ে দিয়ে রেহানের উপর আকাশ মুখী হয়ে শুয়ে পড়লো। তার মাথা রেহানের বুকে। তারপর নাফিসা রেহানের ফোনে ফেসবুক চালাতে লাগলো। রেহান নাফিসার কর্মে হেসে নিজের হাত দুটো ভাজ করে নিজের মাথার নিচে রাখলো।
.
নাফিসা- আমি যে তোমার উপর শুয়ে আছি তোমার কষ্ট হচ্ছে না?
.
রেহান- না।
.
নাফিসা- হিহিহিহি…
.
রেহান- বউ
.
নাফিসা- হুম?
.
রেহান- আগে তোমার নাম জিজ্ঞেস করলে বউ বলতে কেন?
.
নাফিসা- শব্দ টা আমার কাছে খুব ভালো লাগে, বউ এর সাজটা ও অনেক ভালো লাগে।
.
রেহান- তোমাকে একটা গিফট দেওয়া বাকি আছে।
.
নাফিসা দ্রুত ফোন খাটে রেখে রেহানের উপরে থেকেই উল্টো দিকে ঘুরে রেহানের মুখোমুখি হলো। রেহান হাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরলো।
.
রেহান- আস্তে, পড়ে যাবা।
.
নাফিসা- পড়বো না। কিসের গিফট?
.
রেহান- লং ড্রাইভে নিয়ে যাওয়া।
.
নাফিসা- অপ্স! আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম! কবে যাবো?
.
রেহান- তুমি যেদিন বলবে …..
.
নাফিসা- কাল তো নতুন ফ্ল্যাটে চলে যাবো…. তুমিই বলো
.
রেহান- নতুন ফ্ল্যাটে যাবে মানে! তুমি সেখানে যাবে কেন!
.
নাফিসা- বিয়ের আগে মেয়েরা নিজের বাসায় থাকে, জানো না?
.
রেহান- এক দিনের জন্যও আমার কাছ থেকে দূরে থাকবে না। আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে।
.
নাফিসা- নো, আমাদের বিয়ে আবার হবে। ততদিন পর্যন্ত সেখানেই থাকবো। বিয়ের আনন্দ সব ধুলোয় মিশিয়ে দিবে নাকি! একদম না করতে পারবে না।
.
রেহান আর কিছু বললো না।
.
নাফিসা- এই এমন করে আছো কেন!
.
রেহান- কিছু না।
.
নাফিসা- মাত্র তো কয়েকটি দিন, আব্বু আম্মু কি ভাববে স্টুপিড। মুড অফ করবে না বলে দিলাম। আর আমরা কাল লং ড্রাইভে যাবো। শশুর আব্বুকে বলে কাল তোমার অফিস ছুটি নিয়ে নিবো। ওকে….?
.
রেহান পাশ ফিরে নাফিসাকে খাটে নামিয়ে দিলো। দুষ্টুমি হাসি দিয়ে….
.
রেহান- ওকে। কাল তো চলেই যাবে, বাকি দিনের আদরগুলো এডভান্স করে দেই, কি বলো!
.
নাফিসা- হিহিহিহি….. নো….
.
.
চলবে…..