বউ Part- 11

0
1633

Story: বউ
Part- 11
writer: #Nur_Nafisa
.
.
নাফিসা- হোয়াট! পালিয়ে কেন বিয়ে করবো। আব্বু আম্মু তো আমাদের এমনিতেই বিয়ে দিবে। প্ল্যান ও চলছে সব কিছুর।
.
রেহান- পালিয়ে বিয়ে করার মজাই আলাদা। চলো আজই বিয়ে করবো…
.
নাফিসা- ইম্পসিবল ! বিয়ের শপিং ও করি নি! এই ড্রেসাপে বিয়ে! বউ না সেজে বিয়ে করবো না।
.
(রেহান নাফিসার উপর থেকে উঠে বিছানা থেকে নেমে সোজা আলমারি খুললো। নাফিসা ও শোয়া থেকে উঠে বসলো। তারপর ১টা লাল শাড়ি সাথে গহনা এনে নাফিসার সামনে রাখলো রেহান। নাফিসা শাড়ি দেখে রীতিমতো শকড!)
.
রেহান- আপাতত এটা পড়ো, পরে না হয় আবার শপিং করে নিবে…
.
নাফিসা- তুমি এই শাড়ি এখনো যত্ন করে রেখে দিয়েছো!
.
রেহান- আমার বউয়ের শাড়ি আমি রাখবো না!
.
নাফিসা- এটা কিন্তু তুমি দাও নি, দুবছর আগে আব্বু কিনে দিয়েছিলো।
.
রেহান- আজ এটা পড়ো, পরে আমি কিনে দিবো। সেম ওইদিনের মতো সাজবে…
.
নাফিসা- ওইদিন পার্লারে সেজেছি…
.
রেহান- মেকাপ লাগবে না, শুধু শাড়ি আর গহনা পড়ার কথা বলেছি…. চলো চলো….
.
নাফিসা- এই আব্বু আম্মু সবাই ড্রয়িং রুমে বসে আছে… কিভাবে যাবো!
.
রেহান- দাড়াও আমি আসছি….
.
রেহান- চলো, কেউ নেই। আব্বু আংকেল এর সাথে রিয়াদের রুমে দাবা খেলছে। আর আন্টি আর আম্মু কিচেনে।
.
নাফিসা- ওকে…
.
(দুজনেই চলে গেলো বিয়ে করতে। রাত ১০টার দিকে বাসায় এসেছে । আজও রুবিনা দরজা খুলেছে, তিনি সেই দুবছর আগের পরিস্থিতি ই দেখলেন আজ। কিন্তু একটু ও অবাক হলেন না বরং মুচকি একটা হাসি দিলেন…)
.
রুবিনা- আবার সেই দুবছর আগের কথা মনে করিয়ে দিয়েছিস।
.
রেহান- আম্মু বরন করবে না?
.
রুবিনা- ১৫দিন পর আনুষ্ঠানিক ভাবেই বরন করে নিবো। ফাজলামো বাদ দিয়ে এখন ভেতরে আয়…
.
রেহান- আম্মু আজ সত্যিই বিয়ে করে এসেছি কাজী অফিস থেকে।
.
রুবিনা- কিইইইই!
.
রেহান- হুম। কাজীর ফোন নং ও এনেছি, জিজ্ঞেস করতে পারো কল করে..
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
(ব্যাস! শুরু হয়ে গেল তুমুল কান্ড। সবাই দৌড়ে এলো চিৎকার শুনে।)
.
রিয়াদ- ভাইয়া আবার বিয়ে কিরেছো! আব্বু আমিও কিন্তু ২বার বিয়ে করবো…
.
রায়হান- বেটা, তোর মা আমাকে সহ বাসা থেকে বের করবে।
.
রেহান- আম্মু প্রব্লেম কি! তোমরা তো আমাদের বিয়েই ঠিক করছিলে, আমি অন্য কাউকে তো আর বিয়ে করিনি!
.
রুবিনা- বেরিয়ে যা বাড়ি থেকে। তুই আমার ছেলে না।
.
(সবাই অবাক হয়ে দাড়িয়ে দেখছে শুধু, কেউ কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না!)
.
নাফিসা- (রেহানকে খোচা দিয়ে) এই এখন কোথায় যাবো? শাশুড়ী আম্মু তো বেরিয়ে যেতে বললো…
.
রেহান- আম্মু চলে যাবো? বউ নিয়ে কিন্তু কারো বাসায় যাবো না, রাস্তায় ই থাকবো….
.
রুবিনা- একটা থাপ্পড় দিয়ে সব দাত ফেলে দিবো, একে তো পালিয়ে বিয়ে করে এসেছে এখন আবার বউ নিয়ে রাস্তায় থাকবে! চৌধুরী পরিবারের মানসম্মান কি রাখবি না কিছু!
.
নাফিসা- শাশুড়ী আম্মু, পানি পান করার জন্য একটা দাত রেখে দিও তোমার ছেলের।
.
রুবিনা- পাজি মেয়ে একটা। পানি পান করতে দাতের প্রয়োজন হয় না, ভেতরে আয়।
.
(নাফিসার কথা শুনে এবার সবাই হেসে দিলো, রুবিনা আর রাগারাগি না করে ভেতরে আসতে বললো। দুজনেই সবাইকে সালাম করলো। তারপর বিয়ের অনুষ্ঠান ১৫ দিন না রেখে ১সপ্তাহ পর ফাইনাল করলো। একসাথে ডিনার করে তারপর নাফিসা রেহানের রুমের সামনে আসতেই পেছন থেকে ডেকে রেহান নাফিসাকে থামিয়ে দিলো। নাফিসা “কি” জিজ্ঞেস করতেই রেহান আশেপাশে তাকিয়ে চট করে নাফিসাকে কোলে তুলে নিলো, তারপর রুমে প্রবেশ করলো।)
.
নাফিসা- স্টুপিড একটা, কেউ দেখে ফেললে কি হতো এখন!
.
রেহান- কিছুই হতো না। সবাই তো জানে আমরা এখন ম্যারিড। দরজা লক করো……
.
নাফিসা- পারবো না। নামাও আমাকে….
.
রেহান- নো, লক করতে বলেছি লক করো….
.
নাফিসা- আরে আমি বাইরে যাবো, নামাও।
.
রেহান- কেন?
.
নাফিসা- আমার লাগেজ ওই রুমে, শাড়ি পড়ে আমি ঘুমাতে পারবো না।
.
রেহান- পালানোর চেষ্টা করছো, খুব ভালো করে বুঝতে পারছি।
.
নাফিসা- পালাবো না, সত্যি বলছি।
.
রেহান- ওকে, তাহলে আমি নিয়ে আসছি।
.
নাফিসা- এই না, তুমি চিনবে না আমি যাবো।
.
(রেহান আর কিছু না বলে নাফিসাকে নামিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা লক করে পাশের রুম থেকে নাফিসার লাগেজ নিয়ে এলো। নাফিসা লাগেজ থেকে লাল টিশার্ট বের করলো।)
.
রেহান- এই, এটা কোথায় পেলে! আমি খুজেছিলাম হলুদটা পেয়েছি কিন্তু এটা পাই নি!
.
নাফিসা- হিহিহিহি পাবে কিভাবে! লন্ডন খুজেছো?
এটা আমি সাথে করে নিয়ে গেছি, আর প্রতিটি রাতে আমি এটা পড়ে ঘুমিয়েছি।
.
(নাফিসাকে কাছে টেনে নিয়ে)
রেহান- আমিও কিন্তু হলুদ টিশার্ট পড়ে প্রতি রাতে ঘুমিয়েছি। একটি বার বলে গেলে কি হতো, আমাকে ভালোবাসো। ২টা বছর না হয় আমরা প্রেম করেই কাটিয়ে দিতাম।
.
নাফিসা- সারপ্রাইজ টা তো দিতে পারতাম না!
.
(রেহান নাফিসার হাত থেকে টিশার্ট নিয়ে ঢিল মেরে সোফায় ফেলে দিয়ে আবার নাফিসাকে কোলে তুলে নিলো। বিছানার দিকে যেতে লাগলো… )
.
নাফিসা- কি হচ্ছে এসব! নামাও আমি চেঞ্জ করবো।
.
রেহান- আমি তো ভালো করে দেখলাম ও না, এখনি চেঞ্জ!
.
নাফিসা- এতোক্ষণ কি চোখ বুজে ছিলে!
.
রেহান- হুম, এখন দেখবো। জানো তো, আজ আমাদের স্পেশাল নাইট, বাংলায় যাকে বলে বাসর রাত।
.
নাফিসা- যাহ!
.
(রেহান নাফিসাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে সেও পাশে হাতে মাথা ভর দিয়ে শুয়ে পড়লো। পলকহীন নাফিসার দিকে তাকিয়ে রইলো। নাফিসা চোখ বন্ধ করে ফেললো।)
.
নাফিসা- এভাবে তাকালে আমার লজ্জা লাগে।
.
রেহান- আমি তোমার লজ্জাময়ী সুন্দরের পূজারী।
.
নাফিসা- (রেহানের দিকে তাকিয়ে) এই, ওই ডাইনীটা পরে আর কোনো প্রব্লেম করেনি তো!
.
রেহান- কার কথা বলছো?
.
নাফিসা- নেহা
.
রেহান- এসব ভাষা কোথায় শিখো? লন্ডন নিশ্চয়ই কেউ ডাইনী বলে না।
.
নাফিসা- গুগোলে সার্চ করে শিখেছি। আরো অনেক কিছু জানি বাংলায়।
.
রেহান- আর কিছু খুঁজে পেলে না, এসব ভাষা শিখতে গিয়েছো!
.
নাফিসা- ধ্যাৎ! বলো না….
.
রেহান- না, ওর সাথে আর দেখা হয়নি।
.
(নাফিসার এক হাত নিয়ে খেলা করতে করতে)
.
রেহান- #বউ..
.
নাফিসা- হুম?
.
রেহান- সরাসরি উত্তর দিবে। আমাকে ভালোবাসো কবে থেকে?
.
নাফিসা- যেদিন শশুর আব্বু বলেছিল তুমি আমার বর সেদিন থেকে।
.
রেহান- আমি তোমাকে ভালোবাসি কবে থেকে জানো?
.
নাফিসা- না।
.
রেহান- যেদিন তুমি রাগ করে বাসা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলে সেদিন থেকে আজও ভালোবাসি বউ।
.
নাফিসা- আমিও ভীষণ ভালোবাসি মাই হ্যান্ডসাম বর।
.
রেহান- (নাফিসার কপালে চুমু দিয়ে) এখন থেকে আর টিশার্ট জিন্স পড়বে না।
.
নাফিসা- আমি কামিজ পড়ে থাকতে পারি না।
.
রেহান- শাড়ি তো পড়তে পারো।
.
নাফিসা- হুম।
.
রেহান- সবসময় শাড়ি পড়বে। কিন্তু শরীর দেখা যায় এমন পাতলা শাড়ি পড়বে না । আমি শাড়ি এনে দিবো ওগুলো পড়বে।
.
নাফিসা- ওকে, আমিও যাবো শপিংমল এ।
.
রেহান- ওকে। ঘুমানোর সময় টিশার্ট পড়তে পারবে শুধু আমি দেখবো, অন্যকেউ যেন না দেখতে পারে। প্রতিদিন রাতে লাল আর হলুদ টিশার্ট দুটো পড়ে আমরা ঘুমাবো। ৫ওয়াক্ত নামাজ পড়বে। কোনো বাহানা চলবে না। কুরআন পড়তে পারো?
.
নাফিসা- হুম, বাট পিউর না……
.
রেহান- যখনি সম্ভব হবে, কুরআন পড়বে। আম্মুর কাজে হেল্প করবে। সবসময় বড়দের সম্মান দিয়ে কথা বলবে। দুষ্টুমি করলেও লিমিটেশন রাখবে। কেউ অসন্তুষ্ট হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকবে। তোমার যত উল্টাপাল্টা দুষ্টুমি আছে, সব আমার সাথে করবে। আমার কাছে কোন কিছু লুকাবে না। কোন কিছুর প্রয়োজন হলে ডিরেক্টলি আমাকে বলবে। পারবে না আমার দেয়া রুলস গুলো মানতে?
.
নাফিসা- ইনশাআল্লাহ। আরও কিছু?
.
রেহান- (নাফিসার ঠোঁটে আলতো করে চুমু দিয়ে) আর আমাকে বেশি বেশি ভালোবাসবে….
.
(রেহান লাইট অফ করে কাথাটা টেনে নাফিসাকে নিয়ে শুয়ে পড়লো)
নাফিসা- এই আমি চেঞ্জ করবো।
.
রেহান- সেই সুযোগ আর আজ হচ্ছে না মিসেস। আজ সবটা আমি করিয়ে দিবো…
.
(ছোট নৌকায় রেহান তার ভালোবাসা #বউ কে নিয়ে ভালোবাসার বিশাল সমুদ্র পারি দিতে চলে গেলো।)
.
চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে