বউ চুরি পর্ব : ৯

0
1886

বউ চুরি
পর্ব : ৯
লেখিকা : জান্নাতুল নাঈমা

মুসকানের জ্ঞান হারানোর খবড় শুনে ছুটে আসে ইমন। কি করে এমন হলো প্রশ্ন করায় রূপম বলে দেয় যে সে সব জানিয়ে দিয়েছে মুসকান কে।

এটা তুমি কি করলে ? আমার কাছে না শুনেই তুমি কেনো করলে এটা বলেই মুসকানের কাছে গিয়ে গালে হাত দিতেই বেশ তাপ অনুভব করলো।
কপালে হাত দিয়ে, গলায় হাত দিয়ে দেখলো জ্বরে গা পুরে গেছে। এটাই স্বাভাবিক কাল রাতে যা হয়েছে এরপর এটুকুই তো স্বাভাবিক । বয়সটা নিতান্তই কম কিন্তু ওর এতোবড় ভুলটা আমি কি করে সহ্য করতাম । মনপ্রান দিয়ে যে শুধুই ওকে ভালোবেসেছি আমি।  দ্বিতীয় কোন নারীর আগমন ঘটতে দেইনি। শুধুমাএ ওকে চেয়ে এসেছি সেই ছোট বয়স থেকেই। আমার ভালবাসার গভীরতা কতোটা সেটা তো এই বাড়ির সবাই, মহান আল্লাহ তায়ালা জানে। তাহলে কেনো এইসব ঘটছে। আমিতো এসব চাইনি আমি তো মুসকান কে সুন্দর একটা জীবন উপহার দিতে চেয়েছিলাম । ভালবাসায় ভরিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। এরকম বিবস্ত্র করে তো ওকে কাছে চাইনি কখনো তাহলে কেনো এসব ই হলো। কি করে মেনে নিতাম আমি মুসকান এর পাশে অন্য কাউকে। নিজের জিনিসে কখনো এই ইমন অন্যকারো ভাগ বসাতে দেয় নি আর ভবিষ্যতেও কখনো দিবে না। যা আমার তা তো আমারই হবে । এতোদিন যেটা আমি ভালোবেসে উসুল করতে চেয়েছি ভালোবেসে কাছে পেতে চেয়েছি সেটা না হয় এখন অন্যভাবে উসুল করে নিবো। তবে আমার আঠারো বছরের পরিশ্রম বৃথা হতে দিবো না । এতো তারাতারি হাল আমি ছাড়বো না। যেটুকু করেছো তার শাস্তি পেয়েছো মুসকান কিন্তু ভবিষ্যতে যেনো আর কখনো এমন কিছু তোমার কল্পনা তেও না আসে সেই ব্যবস্থাও করবো। ভালবাসার মানুষ অন্যকারো হয়ে যাওয়ার ভয়, নিজের মানুষ ছেড়ে গেলে যে তীব্র যন্ত্রনা হয় সেটা তুমি এবার হারে হারে টের পাবে। মনে মনে অসংখ্য ভাবনা ভেবে ডক্টর কে ফোন করলো ইমন।

ইমন এটা বলাটা উচিত ছিলো বলেই বলেছি । কিন্তু এখন কি হবে দাদুকে নিয়ে আসছে। ভাবতে পারছিস মুসকান কে দেখলে সবার মনোভাব কি হবে। মুসকানের সাথে কি হবে ভাবতে পারছিস। ( রূপম )

যা হবে একদম ঠিক হবে  । এটাই ওর প্রাপ্য ছিলো। ভুল করলে তো তার মাসুল দিতেই হবে । এখন যদি ওর ভুলের শাস্তি ওকে না দেওয়া হয় তাহলে আবার ও ভুল করতে ওর দ্বিধা হবে না। আবারো যে একি ভুল করবে না তার কি গ্যারান্টি দিতে পারো তুমি।
ওকে আমি খুব কষ্টে বহুদূর থেকে নিয়ে এসেছি। ওকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য না ওকে সারাজীবন নিজের কাছে রাখার জন্যই।  যেটা সহজ ভাবেই করা যেতো সেটা তো ও নিজেই কঠিন করে ফেলেছে। এখন ও নিজেউ ভোগ করুক এসব । আমি যেমন ওকে ভালোবাসি ঠিক তেমনি আমার পরিবারকেও ভালোবাসি । আমার কাছে যতোটা গুরুত্বপূর্ণ আমার বউ ঠিক ততোটাই গুরুত্বপূর্ণ আমার পরিবার। যদি মুসকানের অতীত টা এমন না হতো যদি মুসকান কে আগে থেকে সব জানানো হতো। আর সব জেনে ও এমন ভুল করতো তাহলে একদম জানে মেরে দিতাম। কারন আমার জিনিস আমার না হলে আর কারোই হতে দিতাম না । এতে সারাজীবন জেলের ভাত খেতেও রাজি হতাম বা ভাসি তে ঝুলতেও দ্বিধা করতাম না । কিন্তু ওর ভাগ্য টা ভালো মহান আল্লাহ তায়ালা ওর ভাগ্যের সাথেই আমার ভাগ্য জুরে দিয়েছে। না ঠিক তা না আমার ভাগ্যের সাথে ওর ভাগ্য জুরে দিয়েছে ।
এ ভালবাসার গভীরতা বিশাল।
কারো সাধ্য নেই এই ভালবাসার মাঝে বাঁধা হয়ে আসার ।

রূপম ইমনের কাঁধে হাত রেখে বললো- সত্যি তুই পাগলের মতো ভালোবাসিস মেয়েটাকে। দেখিস মুসকান ও তোকে একদিন তোর থেকেও হাজারগুন বেশী ভালোবাসবে।
ইমন বাঁকা হেসে বললো- আমার থেকে বেশী ভালোবাসবে ও কখনোই না।  অন্য সব দিক দিয়ে ওর থেকে পিছিয়ে থাকলেও এই দিক দিয়ে আমিই এগিয়ে থাকবো । কারন ওর আগে আমি ওকে ভালোবাসতে শুরু করেছি।  তীলে তীলে সাজিয়েছি ওর জীবন আমি । ওর আঠারো বছরের জীবন গড়ে তুলেছি আমি এই ইমন চৌধুরী। ❤❤

ডক্টর এসে মুসকান কে চেক আপ করলো। ডক্টর ইমনের দিকে অবাক হয়ে একবার তাকালো । ইমন বেশ লজ্জায় পড়ে গেলো। মাথা নিচু করেই দাঁড়িয়ে রইলো। কিছু বলার মতো ভাষা নেই তার। ডক্টর কিছু ওষুধ লিখে দিলো আর বললো- শরীরটা বেশ দূর্বল পালস অনেক বেশী। ঠিকভাবে খাওয়া দাওয়া করাও, রেষ্টে রাখো আর ওষুধ গুলো ঠিকভাবে খাওয়িয়ে দিও সাত দিনেই সেরে যাবে। ডক্টর চলে যাবে দরজার কাছে গিয়েও থেমে গেলো পিছন দিকে তাকিয়ে বললো- ইমন..

জি আংকেল বলুন।
তুমি খুব বুদ্ধিমান, জ্ঞানী ছেলে আশা করি এমন কিছু করবে না যাতে সেই উপাধিটা চলে যায়।
খেয়াল রেখো নিজের বউ এর বলেই বেরিয়ে গেলো।
মইন চৌধুরীর বন্ধু ইশতাক ডক্টর ছোট থেকেই তার এ বাড়িতে আসা যাওয়া। মুসকান ইমন সম্পর্কে সে ভালোভাবেই জানে। এমনকি গতোকাল কি ঘটেছে সবই শুনেছে। তবুও তার মনে হলো মেয়েটা বাচ্চা মেয়ে  ভুল করে ফেলেছে শুধরে দেওয়া যাবে। আজ যদি তার মেয়ে এমন ভুল করতো তাহলে সেও সুদরে দেওয়ার চেষ্টা করতো। একটা সুযোগ অবশ্যই দিতো।  তাই ইমন কে ওভাবে বলে চলে গেলো।
ইমন একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আলেয়া চাচী কে সব বুঝিয়ে দিয়ে কিছুক্ষন মুসকানের দিকে তাকিয়ে রইলো। আলেয়া চাচী মুসকানের জন্য খাবাড় তৈরী করছে।
ইমন মুসকানকে বেশ ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখছে। খুটিয়ে খুটিয়ে দেখে যাচ্ছে কাল রাতের কথা ভাবতেই তার বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে ওঠছে।
কিন্তু কোন উপায় ছিলো না যে এটা ছাড়া। আমি যে সত্যি কাল নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনি। আমার এই হিংস্র রূপ তোমার কাছে বের করতে চাইনি। কিন্তু তুমিই বাধ্য করলে। ( মনে মনে )
মুসকানের ঠোঁট, গলার দাগ গুলো দেখে ইমনের বেশ খারাপ লাগলো। ওড়না দিয়ে ভালোভাবে গলাটা ঢেকে দিলো কিন্তু মুখ তো আর ঢাকা যাবে না।
থাকুক ভুল করেছো শাস্তি পেয়েছো আর এ চিন্হ টা তো আমার ই দেওয়া। ভেবেই কষ্টের মাঝেও এক চিলতে হাসির রেখা ফুটে ওঠলো ইমনের মুখে।

আলেয়া চাচী মুসকান কে ওঠিয়ে হালকা খাওয়িয়ে ওষুধ খাওয়িয়ে দিলো। মুসকান ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে গেলো । ঘুমের ঘোরেই বির বির করতে লাগলো – আমাকে ক্ষমা করে দাও, আমার খুব লাগছে ছেড়ে দাও আমায়। ইমন যখন আরেকবার মুসকান কে দেখতে তার রুমে আসে তখন মুসকানের বির বির করা কথা গুলো বুঝার চেষ্টা করে । আর সব বুঝতেও পারে । বড্ড মায়া হলো তার ভালবাসার কাছে প্রত্যকটা মানুষ ই খুব দূর্বল হয়।
রাগের বশে খুব খারাপ কিছুই হয়ে গেছে। আমার বোঝা উচিত ছিলো ওর সহ্য করার ক্ষমতা কতোটা ধ্যাত বলেই বেরিয়ে গেলো ইমন।
তাকে যে এখন অনেক কঠিন সময় দিয়ে যেতে হবে। আর একজনের ও তো শাস্তি পাওয়ার আছে। নিজের বউকে শাস্তি দিয়েছি কিন্তু এইসবের নাটের গুরু যে তাকে তো এবার শাস্তি পেতেই হবে।

মোতালেব চৌধুরী কে হইল চেয়ারে করে বাড়িতে প্রবেশ করালো মোজাম্মেল চৌধুরী। ইরাবতী, দীপান্বিতা, দিপু, মহিউদ্দিন মোতালেব চৌধুরীর ছেলে রূপমের বাবা ও এসেছেন মফিজ চৌধুরী সেজো ছেলে সেও এসেছেন । আরেক ছেলে মতিস চৌধুরী সে গ্রামে ফিরে গেছেন কিছুক্ষন আগেই ।
বাড়িতে আসতেই মুসকানের আসার খবড় শুনে মোজাম্মেল চৌধুরী হুংকার ছাড়লেন । কিছুতেই সে তার বাড়িতে মুসকানের জায়গা দিবে না।
মোতালেব চৌধুরীর এক হাত অবশ হয়ে গেছে। মুসকানের উপর তার রাগের মাএা কতোটা এ মূহুর্তে বুঝা যাচ্ছে না । তিন ছেলে মিলে মোতালেব চৌধুরী কে তার রুমে পৌঁছে দিলো৷ ইরাবতী, দীপান্বিতা ইমন কে কড়া গলায় বললো- কেনো সে মুসকান কে ফিরিয়ে নিয়ে এলো?
মা, চাচীর প্রশ্নে ইমন লজ্জিত। কিন্তু কি করবে ভালবাসার কাছে এই লজ্জা টা যে কিছুই না । ইমন আর রূপম মিলে সবটা বুঝালো তাদের তবুও তারা মানতে রাজি না । মুসকানকে তার অতীত সম্পর্কে জানানোর পর তার অবস্থার কথাও জানানো হলো। এবার দুজন ঠান্ডা হলো। বিস্মিত চোখে তাকালো রূপমের দিকে।

হ্যাঁ বড় মা হ্যাঁ কাকি সবটা শুনে অনেক বড় ধাক্কা খেয়েছে মেয়েটা। অনুতপ্ত সে আর মুসকান যে ছেলের সাথে চলে গিয়েছিলো সেও ওকে ঠকিয়েছে। আসলে ছেলেটা বিবাহিত ভন্ড উদ্দেশ্যে এসব করেছে সে।
এটাই তো হওয়ার কথা ছিলো আমার ছেলের এমন নিষ্পাপ ভালোবাসাকে ওপেক্ষা করে বেইমানী করে  প্রতারনা করে নিজেই এক প্রতারকের পাল্লায় পড়েছিলো৷ কিন্তু ওর জন্য যে আমাদের পরিবারের মান সম্মান শেষ হয়ে গেলো। বাবার এই অবস্থার জন্য তো শুধুমাএ মুসকান ই দায়ী। ওর ভুলের কি সত্যি ক্ষমা হয়।
ইমন কি বলবে আর কিছু বলার ভাষা নেই তার। সে বেরিয়ে গেলো।  যাওয়ার আগে শুধু বলে গেলো- যাই করো না কেনো ও যেনো এ বাড়ির বাইরে পা না রাখে। মনে রেখো মুসকান আমার লিগ্যাল ওয়াইফ।

ইরাবতী ছেলের যাওয়ার পানে চেয়ে রইলো।
আমার ছেলেটার এই ভালবাসার যোগ্য কি ঐ মেয়ে।
বড় মা দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে। আমার বিশ্বাস এবার মুসকান ইমনকে আর ওপেক্ষা করতে পারবে না।
দীপান্বিতা কিছু বললো না। সেখান থেকে চলে গেলো। এদিকে মুসকান বেঘোরে পড়ে ঘুমাচ্ছে জ্বর টা ছাড়েনি তার । এবাড়ির কেউ তার খোঁজ নেওয়ার জন্য আসেনি। আলেয়া ও কাজে ব্যাস্ত দীপান্বিতার মনটা ছটফট করছে খুব কিন্তু সাহস করে ওঠতে পারছেনা যাওয়ার।
দিপু এসে মুসকান কে দেখে গিয়ে দীপান্বিতা কে বললো ঘুমাচ্ছে তাই সে আর এলো না। হাজার হোক মেয়ের পরিচয়ে বড় করেছে পেটে ধরেনি কিন্তু পাঁচ দিন থেকেই মানুষ করেছে সে। মায়ের মতো স্নেহ দিয়ে মানুষ করেছে মায়াটা তার ও যে বেশ রেয়েছে মুসকানের প্রতি। দুপুরে সবাই যে যার মতো খেয়ে নিলো। মুসকানের কথা কেউই স্বরন করলো না। সবার খাওয়ার পর দীপান্বিতা আলেয়া কে দিয়ে মুসকানের খাবার পাঠিয়ে দিলো।আলেয়া মুসকানের খাবাড় সহ ওষুধ নিয়েও গেলো।

“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
হেনার বাবা মা মেয়ের সব কথা শুনে বেশ লজ্জিত।
ইমনের সামনে মেয়েকে ঠাশশ করে একটা থাপ্পর লাগিয়ে দিলো। ছিঃ এই জন্য তোকে পড়াশোনা করাচ্ছি এইসব করার জন্য তোকে ফোন হাতে দিয়েছি। অন্যের জীবন কে শেষ করে দেওয়ার জন্য।
হেনা কাঁদো কাঁদো গলায় বললো – আমার কি দোষ বাবা মুসকান ই তো বলেছিলো জয়ের সাথে কথা বলবে। জয় কে ভালোবাসে আর ইমন ভাইয়া মুসকান কে জোর করে বিয়ে করেছে।
মুসকান বলবে বলেই তুই এসব করবি বলেই আরেকটা চড় বসিয়ে দিলো গালে।
ইমন সোফা থেকে ওঠে দাঁড়ালো। ফোন বের করে একটা রেকর্ড অন করলো-

হ্যাঁলো নিলা….
হুম হেনা বল কি খবড়?
খবড় তো ঝাক্কাস…..
হেনার গলা শুকিয়ে গেলো বড় বড় চোখ করে তাকালো ইমনের হাতের ফোনের দিকে।
তাইনাকি সব প্ল্যানে কাজ হয়ে গেছে??
হ্যাঁরে এতোদিন ধরে মুসকান বোকা টা কে যে ভাবে খুশি সেভাবে নাচিয়েছি। যেদিন থেকে শুনেছি মুসকানের প্রতি ইমন ভাইয়ার আলাদা টান আছে। সেদিন থেকেই মুসকানের মনে একটু একটু করে বিষ ঢুকিয়েছি ইমন তার চাচাতো ভাই তাকে কখনো যেনো এর বেশি না ভাবে সেই জন্য দিনের পর দিন বুঝিয়ে গেছি।

তাও কি কাজ হলো বিয়ে তো করেই ফেললো। ( নিলা)

আরে শোন আগে সবটা।
হুম বল?
বিয়ে হয়েছে তাতে কি ওদের মধ্যে সেরকম কোন সম্পর্কই নেই মুসকান নিজে বলেছে আমাকে। তাই তো সেই সুযোগ টা কাজে লাগিয়ে জয়কে জানাই  তারপর মুসকান কে বুঝাতে থাকি ইমন ভাইয়া ওর জাষ্ট  ভাই  ভাই কে কখনো স্বামীর স্থান দেওয়া যায় না। আর আমি সফল ও হই মুসকান কখনোই ইমন ভাইয়ার প্রতি দূর্বল হয়নি বরং ঘৃনার পরিমান বেড়ে গেছে। সেই সাথে জয়ের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেই। জয়ের ব্যাপারে ভালো ভালো কথা বলি মুসকান ও গলে যায়। অবশেষে ছক্কা মেরে দিয়েছি। জয়ের সাথে পালিয়ে গেছে আর এই মনোরম দৃশ্য টার পিকচার ওঠিয়ে নেটে ছেড়ে দিয়েছি। ইমন ভাইয়া আর মুসকান কে ভালোবাসবে না। তাদের পরিবারের মান সম্মান ডুবিয়ে যে মেয়ে চলে গেছে সে মেয়েকে তারা আর কেউ মেনে নিবে না। ইমন ভাইয়াও শখড পাবে আর এই সুযোগ টাই কাজে লাগাবো আমরা । তোর ভাইয়ের মাধ্যমে যে করেই হোক ইমন ভাইয়ার সাথে আমার কানেক্ট করিয়ে দিবি।

ওকে দোস্ত আমি আমার সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করবো।

ইমন রেকর্ড টা অফ করে হেনার সামনে গিয়ে ঠাশশ করে একটা থাপ্পর দিলো । হেনা টাল সামলাতে না পেড়ে পড়ে গেলো। গালে তার পাঁচ আঙুল স্পষ্ট ফুটে ওঠলো।
ইমন হেনার বাবার দিকে তাকিয়ে বললো- মেয়েকে ঠিক ভাবে মানুষ করতে পারেননি । দুইটা চড় দিলেন হাত দিয়ে না কি দিয়ে বুঝতে পারলাম না  মাড়তে হলে এইভাবে মারবেন।
হেনার বাবার মুখটা চুপসে গেলো।
ইমন হেনার উদ্দেশ্য বললো- এই মেয়ে বয়স কতো তোমার। হেনা ওঠে দাঁড়ালো কান্না মিশ্রিত গলায় বললো আঠারো। বাহ বেশ বুদ্ধিমান মেয়ে বয়সের সাথে বুদ্ধি টাও বেশ তবে কি জানো পাকা না কাচাই রয়ে গেছে।
তবে তোমার প্ল্যান টা কিন্তু জোস ছিলো। আমি আগেই জানতাম এতো বড় কাজ মুসকানের একার পক্ষে করা সম্ভব নয় । মানুষের যখন পতন আসে তখন সে নিজের বুদ্ধির থেকে পরের বুদ্ধি তে বেশী চলে মুসকানেরও ঠিক একি অবস্থা হয়েছে।
আর কি বললে মুসকানের জন্য মান সম্মান
নষ্ট হয়েছে??  না মান সম্মান তো তোমার জন্য নষ্ট হয়েছে। তোমাকে আর কি শাস্তি দিবো বলো হাটুর বয়সি মেয়ে হয়ে তুমি আমার সাথে খেলতো এসেছো। তোমার ঘটে যদি বুদ্ধি থাকতো তুমি আমার বিশ্বস্ত বডিগার্ড এর বোন এর কাছে ফোন দিয়ে নিজের কুকীর্তির কথা বলতে না। যা করেছো করেছো যা ক্ষতি হওয়ার আমাদের পরিবারের আর মুসকানের হয়েছে । তুমি একটা মেয়ে বাচ্চা মেয়ে তোমাকে আর কিছু বলতে চাই না শুধু মুসকানের আশে পাশে যেনো তোমায় না দেখি। মেয়ে বলে ছেড়ে দিলাম তোমায়। হেনার বাবা মা  ভয়ে  ঢোক গিললেন।

আপনি মুসকান কে তবুও মেনে নিবেন?
তাহলে আমার কি হবে বলেই ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে ওঠলো হেনা।
ইমন বাঁকা হেসে বললো – চিন্তা করো না বড় হও তোমার পাএ আমি জেগাড় করে দিবো।
আমার বউ হওয়ার বয়স বা ভাগ্য কোনটাই তোমার হয়নি আর হবেও না।

হয়েছে মুসকান আর আমি তো একি বয়সি।
এই চুপ কর তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে। ( হেনার বাবা)

ইমন আবারো বাঁকা হেসে বললো – তুমি মুসকান নও। এটা সব সময় মাথায় রেখো। আর হ্যাঁ মুসকান হওয়ার চেষ্টা ও করো না । এই পৃথিবীতে মুসকান এক পিস ই রয়েছে আর মুসকানের ইমন ও এক পিস ই রয়েছে।

মেয়ে কে সামলে রাখবেন। আপনার সম্মান আপনার মেয়ের সম্মানের কথা ভেবে ছেড়ে দিলাম। মেয়ে টার ভালো চিকিৎসা নিবেন এই বয়সেই এমন হলে ভবিষ্যতে বিপদে পড়বেন। হেনার বাবার উদ্দেশ্য কথা গুলো বলে বেরিয়ে গেলো ইমন।

হেনা তার কাজে ফেইল করে গেলো । তার প্রথম প্রেম শুরু হওয়ার আগেই ভেঙে গেলো। খুব শখড পেলো গালে হাত দিয়েই কাঁদতে লাগলো।
কাঁদিস না মা তোর জন্য অনেক ভালো ছেলে আসবে দেখিস। (হেনার মা)
হেনার বাবা বিরক্তি মুখ করে চলে গেলো মা মেয়ের সামনে থেকে।

রাত দশটায় বাড়ি ফিরলো ইমন। আলেয়ার কাছে মুসকানের খবড় শুনে মুসকানের রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লো  । কারন তার রুমে মুসকান রয়েছে ।
ইরাবতী ছেলের কাছে এসে বললো- বাবা খাবি না??
না মা ভালো লাগছেনা শুয়ে পড়ো গিয়ে।
ছেলের মুখ থেকে সিগারেটের গন্ধ পেয়ে ইরাবতী বললো-
তুই সিগারেট খেয়েছিস। তুই তো সিগারেট খাস না।

ইমন বাঁকা হেসে ওঠে বোসলো। জীবন কি এক নিয়মে চলে মা??  আমরা যেভাবে জীবন সাজাতে চাই সেভাবে কি চলে??  চলে না তো মা, আমার জীবনটাও তো সেরকমই সব নিয়ম ভেঙে গেছে।

ইরাবতী ইমনের মাথায় হাত রেখে বললো – তুই চিন্তা করিস না। তোর বাবা ডিভোর্স পেপার রেডি করবে কালই ওকিলের সাথে কথা বলবে।
আর তোর জন্য আমি মেয়ে দেখা শুরু করবো অনেক ভালো মেয়ে এনে দিবো বাবা। মুসকান তোকে স্বামী হিসেবে চায় না আর ও যা করেছে এতে তোর বাবা, চাচারাও আর ওকে তোর বউ হিসেবে মানবে না তোর দাদু ও না। এর থেকে ভালো তোদের ডিভোর্স হয়ে যাক। জীবনটাকে অন্যভাবে নতুন করে শুরু কর……..

চলবে………..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে