বইছে আবার চৈতি হাওয়া
৩৮.
– ভাবি নিচে পুলিশ আইছে
মীরা ধরমর করে বিছানার উপর উঠে বসলো। কিছুক্ষণ হতবুদ্ধি হয়ে চেয়ে রইল রোজিনার দিকে। রোজিনাকে দেখে একটু ও ভীত বা চিন্তিত মনে হচ্ছে না। মিরা আবারও জিজ্ঞেস করল
– কে এসেছে?
– পুলিশ
– কেন?
– ওই যে ভাইজানের অফিসের ওই ঝামেলাটার জন্য। আপনি একটু নিচে যেয়ে কথা বলেন না।
– বাসায় আর কেউ নেই?
– না, খালুজান কোর্টে গেছে, আপামণি ভার্সিটিতে আর ভাইজানরে ফোন দিছিলাম ধরতেছে না।
– আচ্ছা তুমি যাও আমি রেডি হয়ে আসছি।
মিরা ঝটপট হাত মুখ ধুয়ে রাতের পোশাক পাল্টে তৈরি হয়ে নিচে নেমে এলো। মিরা ভেবেছিল হয়তো অনেকেই এসেছে কিন্তু মাত্র একজনকেই দেখা যাচ্ছে। মধ্যবয়সী ভদ্রলোক বেশ সহজ ভঙ্গিতেই বসে আছেন। মিরাকে নামতে দেখে উঠে দাঁড়ালেন। মীরা ভীত চোখে তাকিয়ে রইল। বোধহয় সেটা বুঝতে পেরেই বললেন
– সেরকম কিছু না, রুটিন ফলোআপ। কোন আপডেট আছে কিনা জানতে এলাম।
– ঠিক কি বিষয়ে?
– আপনি কি আশিক সাহেবের ওয়াইফ?
– জী
– আচ্ছা আপনাদের তো মাত্রই বিয়ে হয়েছে তাই না?
– জী
– সরি এ সময় এসে আপনাকে বিরক্ত করলাম
– না ঠিক আছে কিন্তু ব্যাপারটা কি?
– তেমন কিছু না। সেদিন যারা অফিসে ঝামেলা করেছিল তাদের মধ্যে কয়েকজনকে আইডেন্টিফাই করা গেছে। আগের দিন ক্যাম্পাসে আশিক সাহেবের যার সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল এরা তাদেরই দলের লোক।
মিরা বোকার মত তাকিয়ে রইল। ভদ্রলোক কথা বলেই যাচ্ছেন। মীরার মনে হচ্ছে কথাগুলো বাতাসে ভেসে ভেসে ওর আশেপাশে দিয়ে কোথাও চলে যাচ্ছে। হাওয়ায় শব্দগুলো ভাসছে, ছুটে যাচ্ছে এদিক-ওদিক। ঘরের মধ্যে বেলুনের মতো ভেসে বেড়াচ্ছে কিন্তু ওর মাথার ভিতরে কিছুই ঢুকছে না। যে লোকগুলো সেদিন অফিসে এসে এরকম ব্যবহার করে গেছে তাদের সঙ্গে সেদিন টিএসসি ওই ঘটনার ছেলে গুলোর সম্পর্ক আছে? কিন্তু ওকে তো বলা হয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা।
– আপনি তো সেদিন অফিসে ছিলেন তাই না?
– জী?
– না মানে, বলতে চাইছি যে, সেদিন ধানমন্ডি অফিসে যে ঘটনাটা ঘটলো, মানে সকালবেলা যে মেয়েটা সেখানে আটকা পড়েছিল সেটা তো আপনি?
– জী
– আর ক্যাম্পাসে আশিক সাহেবের সঙ্গে যে ছেলেগুলোর মারামারি হয়েছিল সেটাও বোধহয় একটা মেয়েকে কেন্দ্র করেই তাই না?
– আপনি কবেকার কথা বলছেন?
– ১৭ই জানুয়ারি
মীরার মনে হল ওর সমস্ত শরীরের অবশ হয়ে আসছে। তার মানে যে ছেলেগুলোকে আশিক সেদিন টিএসসি তে মেরেছিল তারাই প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে সেদিন এই কাজটা করেছে? অথচ রাসেল বলেছিল আশিক নিজেই ছেলেগুলোকে পাঠিয়েছে, যাতে মিরার একটা স্ক্যান্ডাল হয় , আর ও আশিককে বিয়ে করতে বাধ্য হয়।
ভদ্রলোক মীরার বিবস অবস্থা দেখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন। তারপর হঠাৎ করে বললেন
– ও মাই গড! টিএসসিতে সেই ঘটনাটা আপনাকে নিয়েই ছিল? নাও ইট মেক মোর সেন্স। সেদিন আপনিই তো ছিলেন টিএসসিতে। তাই না?
মীরার চোখে পানি এসে গেছে ও কোনমতে মাথা নিচু করে বলল
– জি আমিই ছিলাম
– তাই তো বলি আমি এতবার করে জিজ্ঞেস করার পরও আশিক সাহেব আপনার নাম বললেন না কেন? উনি আপনাকে এসব ঝামেলায় জড়াতে চাননি। যাক! আমাদের জন্য এখন ভালো হয়েছে। আগে জানলে আমি ছবিগুলো নিয়ে আসতাম। আপনি আমাদের আইডেন্টিফিকেশনে অনেক বড় হেল্প করতে পারবেন।
রোজিনা চা দিয়ে গেছে। মীরাকে কিছু বলতে হলো না, ভদ্রলোক নিজে থেকেই চা নিলেন। কোনোরকম লৌকিকতা করলেন না। মীরার ফোন বাজছে।মীরা চোখ তুলে ভদ্রলোকের দিকে তাকালে। ভদ্রলোক বিস্কিট মুখে তুলতে তুলতে বললেন
– ইটস ওকে। টেক ইট।
মীরা ফোন নিয়ে উঠে গেল। টুম্পা ফোন করেছে। ধরতেই হরবর করে বলল
-কালকে এগারোটার সময় হলে চলে আসিস। পড়াশোনার বারোটা বেজে আছে। সোমবারে পরীক্ষার ডেট দিয়েছে। রাখছি। রায়না কে ফোন করতে হবে।
মীরাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে টুম্পা ফোন রেখে দিলো। মীরা ফোন রাখতে গিয়ে দেখল একটা মেসেজ এসেছে। আশ্চর্য! আশিক মেসেজ করেছে? গ্রুপ থেকে মেসেজ এসেছে অনুষ্ঠানের আগে লাস্ট টিম মিটিং, আর্জেন্টলি সবাইকে এগারোটার সময় ধানমন্ডির অফিসে আসতে বলা হয়েছে।
৩৯.
আশিক অনেকক্ষণ ধরে একটা কবিতা লেখার চেষ্টা করছে, কিছুতেই মন মত হচ্ছে না; বারবার কাগজগুলো দলা পাকিয়ে ছুঁড়ে দিচ্ছে। পুরো অফিস ঘর দলা পাকানো কাগজে ভরে আছে। মাথা ব্যথা করছে। চা খাওয়া দরকার, কিন্তু উঠে বানাতে ইচ্ছা করছে না। সকাল থেকে খাওয়াও হয়নি কিছু। আশিক আবারো দু লাইন লিখলো
“ কৃষ্ণচূড়ায় রং লেগেছে, জারুল ফোটার দিন
আমার কেন দিন কাটে না রাত্রি নিদ্রাহীন”
লেখা শেষ করে বিরক্ত হয়ে কাগজটা ছিড়ে দলা পাকিয়ে দরজার দিকে ছুড়ে দিল। কাগজটা বোধ হয় কারো পায়ের কাছে গিয়ে পড়েছে। চোখ তুলে আশিক চমকে গেল। মিরা আজকে শাড়ি পড়ে এসেছে? হালকা বেগুনি রংয়ের শাড়িতে সাদা পাড়। ওকে দেখতে বৃষ্টিস্নাত জারুল ফুলের মতই লাগছে। আশিক একটু অবাক হয়ে বলল
– তুমি এখানে?
– মেসেজ দিয়েছিলেন এগারোটার সময় মিটিং
আশিক আনমনা হয়ে বলল
– তোমার নামটা এখনো গ্রুপে রয়ে গেছে?
মীরার মুখ অপমানে লাল হয়ে গেল। কোনমতে বলল
– কেন আমি কি এখন আর গ্রুপ মেম্বার নই?
– না সেটা না। আসলে তোমার কাজ শেষ তো, তুমি না আসলেও চলত
– চলে যেতে বলছেন?
– তুমি চাইলে চলে যেতে পারো
রাগে অভিমানে মিরার চোখে জল এসে গেল। ও উল্টোদিকে ফিরে একটু থমকে গেল। মারুফ ভাই উঠে আসছেন। মীরা থামলো না, পাশ কাটিয়ে নেমে গেল। মারুফ ঘরে ঢুকে আশ্চর্য হয়ে বলল
– তোদের মধ্যে কোন ঝামেলা হয়েছে নাকি?
– নাতো, ঝামেলা হবে কেন?
– না, মিরা কাদছিল তো তাই
আশিক চমকে উঠে বলল
– মিরা কাদছিল? তারপর আর কোন কথা না বলে তরতর করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেল।
সামনের দরজাটা হাট করে খোলা। মীরাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। আশিক গেটের বাইরে বের হয়ে এদিক ওদিক তাকাল। কোথাও মীরাকে দেখা যাচ্ছে না।
মীরা সিঁড়ির পেছনের একতলার বারান্দায় দাঁড়িয়েছিল। ওখান থেকেই দেখল আশিক নেমে এদিক ওদিক কাউকে খুঁজছে। মীরা ইচ্ছা করেই বেরিয়ে এল না। ও সিড়ির পেছনে থাকায় আশিক ওকে দেখতে পায়নি।
মীরা দূর থেকেই দেখল আশিক দরজা ধরে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে, তারপর দরজার পাশের দেয়ালে একটা ঘুসি মেরে বলল
শিট
মীরা ঠিক করল আজকে রাতেও যদি আশিক বাড়ি না ফেরে তাহলে ও হলে চলে যাবে।
চলবে……….
বইছে আবার চৈতি হাওয়া
৪০.
রাগে ভয়ে রাসেলের হাত কামড়াতে ইচ্ছে করছে। যখন থেকে মোবাইলে দেখেছে এগারোটার সময় মিটিং তখন থেকে ওর ঘুম উধাও হয়ে গেছে। ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। আশিক যদি জানতে পারে ও কি করেছে তাহলে ওকে জ্যান্ত পুঁতে ফেলবে।
টিএসসিতে যে ছেলেটাকে আশিক মেরেছিল তার নাম তৌহিদ। রাসেল ওকে আগে থেকেই চিনতো। ওর কাছ থেকে দুই একবার মাল নিয়েছে। বেশ বড় ঘরের ছেলে। ওর বাবা মন্ত্রি ফন্ত্রি কিছু একটা হবে। সেদিন আশিক হুট করে ছেলেটাকে মেরে বসবে ও ভাবতে পারেনি। এই ঘটনার কদিন পর ছেলেটা দলবল নিয়ে ওর সঙ্গে আবার দেখা করতে এসেছিল।রাসেল ভয় পেয়েছিল কিন্তু সেরকম কিছু ঘটেনি। বরং ওকে নিয়ে গিয়ে বেশ দামী দোকানে বসিয়ে বিদেশি মাল খাইয়েছে। অনেকক্ষণ গল্প টল্প করেছে। ওদের কাছ থেকেই রাসেল জানতে পেরেছে যে আশিকের বাবার কারণে ওর গায়ে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। আশিকের বাবা অনেক ঘাঘু লোক। পুলিশের চেয়েও উকিল বেশি ডেঞ্জারাস। পুলিশ তো জেলে ভরে রাখবে, যেখান থেকে চাইলে বের হওয়া যায় কিন্তু উকিল তো একেবারে ফাঁসিতে ঝুলানোর ব্যবস্থা করে ছাড়বে। তাই ওরা একটা সুযোগ খুঁজছে আশিককে জব্দ করার, যাতে সাপ ও মরে লাঠিও না ভাঙ্গে। রাসেল বোঝানোর চেষ্টা করেছিল, সে রকম যেন কিছু না করে। হাজার হোক আশিক ওর ছোটবেলার বন্ধু। কিন্তু সেদিন যখন মিরার কারনে আশিক ওর কলারে হাত দিল মাথাটা স্রেফ আউলা হয়ে গেল। তাই সেদিন রাতে যখন সুযোগটা এলো তার শতভাগ সদ্ব্যবহার করে ফেললো রাসেল। বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে তৌহিদকে জানালো যে ওরা দুজন আটকা পড়েছে তৌহিদ একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বলেছিল সাবাস!
বুদ্ধি করে পরদিন সকালবেলা শুভকে ফোন করতে ভুলেনি রাসেল। পরের দিন সকালে যখন ফোন দিল তখন শুভ ঘুমে অচেতন। রাসেল ফোন করে বলেছিল
– তুই ঘুমা শালার পো আর তোর ডার্লিং অন্য লোকের লগে ফুর্তি করুক
– মানে কি বলছিস এসব?
– তুই জানিস মীরা কই?
– না, কই?
– আশিকের অফিসে। রাতে ওখানেই ছিল।
– তুই শিওর?
– ওভার সিওর। আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। আশিক আমাকে নিজে বলছে, আর তাছাড়া আজকে তো নতুন না। এর আগে ওরা একসঙ্গে থাকছে। আমিতো তোরে আগের দিনও সাবধান করছিলাম।
– আশিক এটা করতে পারলো?
– আশিক তো ফেরেস্তা না। সাইজা গুইজা যায় বইসা থাকে ওর অফিসে।
– তাই বলে অফিসে?
– আশিক অফিসে সোফা-কাম বেড ফালাইছে, এমনি এমনি নাকি?
– ডিসগাস্টিং
রাসেল মনে মনে হেসেছিল। ছাগলের বাচ্চাটা টোপ গিলেছে। পড়ালেখাতেই খালি ভালো, মাথার ভেতর গরুর গোবর।
দুদিন ফুরফুরে মেজাজে ছিল রাসেল। তারপর একদিন দুপুর বেলা ফোন করে মারুফ জানিয়েছে যে আশিক আর মীরার বিয়ে। সব প্ল্যান ভেস্তে গেল। তবুও রাসেল শেষ চেষ্টাটা করল। সেদিন রাতেই মিরাকে ফোন করে বলল যে পুরোটাই আশিকের প্ল্যান করা। আশিক আগে থেকেই মিরাকে চাইতো, তাই সেদিন সুযোগ পেয়ে ওকে ফোন করে বলেছে যেন না আসে। মীরার কাছে অনেকবার করে ক্ষমাও চাইলো। বলল সেদিন ও আসলে হয়তো এত বড় অঘটনটা ঘটতো না। মীরা প্রথমে বিশ্বাস করতে চায়নি, পরে রাসেল বলেছিল একটা কথা তুমি ভেবে দেখো অত সকালে ওই মানুষগুলো কি করে জানবে যে তোমরা ওখানে আটকা পড়েছ? যদি না আশিক ওই মানুষগুলিকে খবর দিয়ে আনিয়েছে।
সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। রাসেল খোঁজ নিয়েছে আশিক অফিসেই থাকছে। এখন মিটিং এর সময় যদি লাইলী-মজনু একসঙ্গে হয়ে যায় আর ওর হাঁড়িটা হাটে ভেঙ্গে যায় তাহলে আশিক ওকে আস্ত রাখবে না।
রাসেলের দায়িত্ব ছিল সুবেনীরগুলি তৈরি করা। এখন প্রিন্টিং এর কাজ চলছে প্রেসে। রাসেল প্রেস এ ফোন করে বলল কাজ বন্ধ করে রাখতে। তারপর আশিককে ফোন করে জানালো যে সে অসুস্থ আসতে পারছে না আর প্রেসে কি একটা ঝামেলা হয়েছে সুবেনীর বের হতে সময় লাগবে।
প্রথমে ভেবেছিল আশিক হয়তো রাগারাগি করবে কিন্তু আশিক খুব আনমনা হয়ে ছিল। শুধু বলল ও দেখবে। রাসেল সস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। যাক এ যাত্রা বাঁচা গেল।
৪১.
আশিকের মন মেজাজ প্রচন্ড খারাপ হয়ে আছে। মীরা ঐভাবে চলে যাওয়ার পর অনেকবার ওকে ফোন করেছে, কিন্তু ওর ফোন বন্ধ। বাড়িতে ফোন করে জেনেছে ও ফেরেনি। ভেবেছিলো ঘন্টাখানেক পর আবার ফোন করবে। কিন্তু সেটা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। রাসেল ফোন করে জানিয়েছে প্রেসের কাজ আটকে গেছে। ও নিজেই অসুস্থ আর কারো উপর দায়িত্ব দিয়ে ভরসা করা যাচ্ছে না। মারুফ আর সুমনকে অন্যান্য কাজ বুঝিয়ে দিয়ে বাধ্য হয়ে ও নিজেই প্রেসে চলে গেল। ওখানে যাবার পর আরেক দফা মেজাজ খারাপ হলো। প্রেসের লোকেরা জানালো আশিক নাকি ওদের কাজ বন্ধ রাখতে বলেছে। বেশ কিছুক্ষণ উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডার পর আবরো কাজ শুরু হল, ততক্ষণে বিকেল গড়িয়ে গেছে এবং আকাশের অবস্থা যথেষ্টই খারাপ। প্রেসের লোকজন কাজ বন্ধ করে বাড়ি ফিরে যেতে চাইছে। ওদের ধরে বেঁধে অনুরোধ করে কাজ শেষ করতে করতে রাত প্রায় শেষ হয়ে গেল।
শেষ রাতের দিকে আবারো বৃষ্টি শুরু হল। আশিক আর বৃষ্টি থামার জন্য অপেক্ষা করল না। কাল মিরা ঐভাবে চলে যাওয়ার পর থেকে খুব খারাপ লাগছে। আশিক ঠিক করে রেখেছিল দুপুরে বাড়ি যাবে। ও জানে মীরা বিকেল নাগাদ ফিরে আসে। ভেবেছিল আজ বাড়িতেই থাকবে। সেটা আর হলো না।
বৃষ্টি মাথায় করেই আশিক বেরিয়ে পড়ল। পুরো রাস্তা ফাঁকা, একটা রিক্সা পর্যন্ত নেই। আশিক হেঁটেই রওনা দিল। বৃষ্টি থামার কোন লক্ষণ নেই। একেবারে মুষলধারে বৃষ্টিও না আবার ইলসে গুড়িও নয়, কেমন একটানা মন খারাপ করা বৃষ্টি। আকাশ অন্ধকার হয়ে আছে।
গা ভর্তি জ্বর নিয়ে যখন বাড়ি ফিরল ততক্ষণে নয়টা বেজে গেছে। বাড়ি ফিরে জানতে পারলো মিরা এইমাত্র বেরিয়ে গেছে । আশিক একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উপরে নিজের ঘরে চলে গেল। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর উঠছে। আশিক পোশাক পাল্টে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লো। খিদে পেয়েছে কিন্তু কিছু খেতে ইচ্ছা করছে না। আশিক চোখ বন্ধ করে আপন মনেই বলল
“ গা পোড়ানি জ্বর নয়
তবুও বিস্বাদ মুখ
আমাকে পেয়ে বসেছে
তোমাকে দেখতে চাওয়ার দীর্ঘ অসুখ”
চলবে……..