ফিরে এসো ভালবাসা পর্ব-০৪

0
1499

#ফিরে এসো ভালবাসা❤
#লেখিকাঃ নাবিলা আহমেদ রোজ
#পর্ব- ৪

রোজকে এভাবে দেখে শুভ্রর বুকে মোচর দিয়ে উঠলো। শুভ্র নিজেই মনে, মনে বললো।”

—-” আমার রোজকে এভাবে দেখে কষ্ট হচ্ছে কেন? তাহলে কি নিরব ঠিক বলেছিলো। আই এম ইন লাভ উইথ রোজ?”

এখন ভাবছেন নিরব এটা কখন বললো? রেস্টুরেন্টের ঘটনার ৪দিন পর নিরব আর শুভ্র ছাদে বসে আছে। হঠাৎ করেই শুভ্র বলে ওঠে,

—-” এই রোজ ভার্সিটিতে কেন আসে না?”

নিরব স্পিড খাচ্ছিলো। শুভ্রর কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে বললো।”

—-” কেন রোজকে দিয়ে কি করবি?”

শুভ্র আমতা, আমতা করে বললো,

—-” ওকে দিয়ে আমি কি করবো?”

নিরব মুচকি হেসে বললো।”

—-” আচ্ছা ভাইয়া একটা কথা বল,

শুভ্র স্পিড খেতে, খেতে বললো।”

—-” কি কথা?”

নিরব একটু চুপ থেকে বললো,

—-” আমার কথাটা মন দিয়ে শোন। এরপর তুইও ভাববি ওকে?”

শুভ্র মাথা নাড়লো।”

—-” রাহিকে কখনো কাঁদতে দেখলে তোর খারাপ লাগেনি। কিন্তুু রোজকে তুই নিজেই কাঁদাতি। তবুও ওকে কাঁদতে দেখে তোর খারাপ লাগতো। রাহিকে কাঁদতে দেখলে তোর রাগ নয়তো বিরক্ত লাগতো। রাহিকে কোন ছেলের সাথে কথা বলতে দেখলে তোর রাগ লাগতো না। তুই জেলাসও ফিল করতি না কখনো না। কিন্তুু রোজকে আমার সাথে কথা বলতে দেখলেও রাগ করতি। ইনফ্যাক্ট জেলাসও ফিল করতি। সেদিন তুই চোখ বন্ধ করেও রোজকে দেখেছিলি। এসব তুই আমাকে বলেছিস। এসবের মানে কি জানিস?”

শুভ্র আনমনে বললো,

—-” কি?”

নিরব হালকা হেসে বললো।”

—-” তুই কোনদিন রাহিকে ভালবাসিসনি। যদি ভালবাসতি ও তোর লাইফে এখন নেই। ওর জন্য তোর কষ্ট হতো তুই কাঁদতি। কিন্তুু তুই একফোটাও কাঁদিসনি বরং চিল মুডে আছিস। আর প্রতিদিন ভার্সিটিতে রোজকে খুজিস। দ্যাটস মিন ইউ আর ইন লাভ উইথ রোজ,

শুভ্র চমকে বললো।”

—-” হোয়াট?”

নিরব হাসতে, হাসতে বললো,

—-” ইয়েস ভাইয়া।”

শুভ্র ভ্রু কুঁচকে বললো,

—-” না এমন কিছু না।”

নিরব মুখ বাঁকিয়ে বললো,

—-” এমনটাই ওকে?”

বলে নিরব ছাদ থেকে নেমে চলে গেলো। আর শুভ্র বসে নিরবের বলা কথা নিয়ে ভাবতে লাগলো।”

—-” আমি রোজকে ভালবাসি? না এটা কি করে হতে পারে? রাহিকে হয়তো আমি ভালবাসিনি। কিন্তুু তাই বলে রোজকে আমি ভালবাসি না। কিন্তুু এটাও ঠিক রোজের জন্য আমার খারাপ লাগতো। ওকে কোন ছেলেদের সাথে কথা বলতে দেখলে আমার রাগ লাগে খুব। তাই বলে এটা ভালবাসা? হয়তো ও আমার কাজিন তাই,

শুভ্রও ছাদ থেকে নেমে চলে গেলো।”

____এখন____

শুভ্র রোজকে দেখে দৌড়ে রোজের কাছে গেলো। শুভ্রকে এভাবে আসতে দেখে রোজ হচকচিয়ে গেলো। কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো। এরপর শুভ্রকে পাশ কাটিয়ে ক্লাসের দিকে পা বাড়ালো। শুভ্র অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। যখন মাথায় এলো রোজকে সরি বলতে হবে তখন বললো,

—-” রোজ শোন।”

রোজ তবুও হেটে যাচ্ছে। শুভ্র দৌড়ে রোজের সামনে গিয়ে বললো,

—-” রোজ প্লিজ লিসেন টু মি।”

রোজ অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বললো,

—-” আমার ক্লাস আছে শুভ্র ভাই। এভাবে আমার সামনে এসে না দাড়ালে আমি খুশি হবো। আই হোপ বুঝতে পেরেছেন আমি কি বলেছি।”

বলে হনহন করে চলে গেলো। শুভ্র হা করে তাকিয়ে আছে। নিরব এসে শুভ্রর কাধে হাত দিয়ে বললো,

—-” কি ভাইয়া শুনলো না তোর কথা?”

শুভ্র অসহায় ফেস করে বললো।”

—-” না চলে গেলো,

নিরবও তাল মিলিয়ে বললো।”

—-” সো স্যাড তোর কত কষ্ট হচ্ছে তাই না?”

শুভ্র আনমনেই বলে দিলো,

—-” অনেক কষ্ট হচ্ছে রে।”

বলে চোখ বড়, বড় করে তাকালো। নিরব মুখ টিপে হেসে যাচ্ছে। শুভ্র কথা ঘোরাতে মিনমিন করে বললো,

—-” তোর ক্লাস নেই? যা ক্লাসে যা ফাজিল।”

বলে নিজেও ক্লাসে চলে গেলো। ওরা সবাই অনার্সের স্টুডেন্ট। রোজ অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে। নিরব অনার্স থার্ড ইয়ারে। আর শুভ্র এবার ফাইনাল ইয়ারে। যে যার ক্লাস করছে। কিন্তুু শুভ্রর ক্লাসে একটুও মন নেই। শুভ্র সবসময় ক্লাসে মন দেয়। আর ভার্সিটির টপার হয়। শুভ্রর ক্লাসে মন নেই দেখে স্যার বললো,

—-” শুভ্র এনিথিং রং?”

শুভ্র দাড়িয়ে বললো।”

—-” একচুয়েলি স্যার,

স্যার মুচকি হেসে বললো।”

—-” কোন প্রবলেম হলে তুমি যেতে পারো,

শুভ্র হালকা হেসে বললো।”

—-” থ্যাংক ইউ স্যার,

বলে শুভ্র ক্লাস থেকে বেরিয়ে এলো। এসে ভার্সিটির পিছনে চলে গেলো। এখানে এসে শুভ্র অবাক হলো। রোজও পুকুর পাড়ে বসে আছে। পানির মাঝে ঢিল ছুড়ছে। আর কতক্ষণ পর, পর চোখ মুচছে। শুভ্রর মনে হচ্ছে কেউ ওর কলিজায় আঘাত করছে। শুভ্র নিজেই এসবে অবাক হচ্ছে। শুভ্র রোজের কাছে যেতে গিয়েও থেমে গেলো। ভাবলো ওকে একটু একা থাকতে দেয়া উচিত। তাই শুভ্র দুরেই দাড়িয়ে রইলো।”

____________________

রোজ বেশ কিছুক্ষণ বসে অশ্রু বিসর্জন দিলো। এরপর উঠে ওখান থেকে চলে গেলো। শুভ্র চুপচাপ ওখানে দাড়িয়ে রইলো,

—-” রোজকে আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি। কি এমন করেছিলো ও? শুধু আমাকে ভালই তো বেসেছিলো। তার জন্য ওকে আমি দিনের পর দিন ইনসাল্ট করেছি। আর ও আমাকে কিছু বলেওনি। যেই মেয়েকে একটা ধমক দিলে ক্ষেপে যায়। তাকে আমি নানাভাবে কথা শুনিয়েছি। এমনকি ওর গায়ে হাতও তুলেছি। তবুও আমাকে কখনো কিছু বলেনি। কেন যে এমন করলাম আমি? কোন মুখে ক্ষমা চাইবো ওর কাছে আমি? আর ও কি আমাকে ক্ষমা করবে?”

শুভ্র মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইলো। নিরব শুভ্রকে খুজতে, খুজতে এখানে চলে এলো। এসে শুভ্রর বলা সব কথাই শুনলো।”

—-” তুই মানিস বা না মানিস। সত্যি এটাই যে তুই রোজকে ভালবেসে ফেলেছিস,

শুভ্র চমকে পিছনে তাকালো।”

—-” ইয়েস ভাইয়া তুই এক কাজ কর। তুই নিজে ঠান্ডা মাথায় বসে ভাবিস। দেখবি তোর উত্তর তুই পেয়ে গিয়েছিস,

শুভ্র চুপচাপ উঠে চলে গেলো। নিরব শুভ্রর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বললো।”

—-” তুই বুঝবি তুইও রোজকে ভালবাসিস,

রাত ১২টা ব্যালকনিতে দাড়িয়ে আছে রোজ। চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে।”

🎶তুই ফেলে এসেছিস কারে মন মন রে আমার🎶
🎶তাই জনম গেলো শান্তি পেলি না রে মন মন রে আমার🎶
🎶তুই ফেলে এসেছিস কারে মন মন রে আমার🎶

চোখের পানি মুছে নিয়ে আবার গাইলো,

🎶যে পথ দিয়ে চলে এলি সে পথ এখন ভুলে গেলি রে🎶
🎶কেমন করে ফিরবি তাহার দ্বারে মন মন রে আমার🎶

🎶তুই ফেলে এসেছিস কারে মন মন রে আমার🎶

রোজ কাঁদতে, কাঁদতে নিচে বসে পড়লো। আর ডুব দিলো অতীতে। রোজ আর শুভ্র আগে খুব ভাল ফ্রেন্ড ছিলো। তবে শুভ্র রোজকে সবসময় ফ্রেন্ডই ভাবতো। কিন্তুু রোজ মনে, মনে শুভ্রকে ভালবাসতো। ১দিন শুভ্রকে ও বলে যে ও শুভ্রকে ভালবাসে। এটা শুনে শুভ্র রেগে রোজকে থাপ্পর মেরে দেয়। রোজ গালে হাত দিয়ে অবাক হয়ে বলে।”

—-” তুমি আমাকে মারলে শুভ্র ভাই?”

শুভ্র রেগে বললো,

—-” মারবো না তো কি করবো? তুই কি বুঝিস ভালবাসার? পিচ্চি একটা মেয়ে।”

রোজ কাঁদতে, কাঁদতে বললো,

—-” আমি সত্যি তোমাকে ভালবাসি।”

শুভ্র দাতে, দাত চেপে বললো,

—-” জাস্ট সাট আপ রোজ। তোর মাথাটা খারাপ হয়ে গিয়েছে। আজকের পর আর আমার সাথে কথা বলবি না। তাহলে এই ভালবাসার ভুত তোর মাথা থেকে নেমে যাবে।”

রোজ শুভ্রর হাত ধরে বলে ওঠে,

—-” তোমার সাথে কথা না বলে কি করে থাকবো?”

শুভ্র প্রচুর রেগে হাত ছাড়িয়ে বলে।”

—-” আমি যা বললাম মাথায় রাখবি,

এটা বলে শুভ্র ওখান থেকে চলে যায়। তারপর থেকে রোজের সাথে আর কথা বলেনি। রোজের সাথে খারাপ বিহেভ করতো। কথাগুলো মনে করে রোজ কাঁদতে লাগলো।”

—-” কেন সেদিন এমন করেছিলে শুভ্র? তোমাকে এতটা ভালবেসেছিলাম তাই? সব মেনে নিতাম কিন্তুু তুমি আমাকে নষ্টা কি করে বললে? একবারও বুক কাঁপলো না এটা বলতে? একবারও কষ্ট হলো না এটা বলতে? একবারও বাধলো না তোমার?”

রোজ ফুপিয়ে কাঁদতে লাগলো। এদিকে শুভ্রও ব্যালকনিতে দাড়িয়ে আছে। নিরবের বলা কথাগুলো নিয়ে গভীরভাবে ভাবছে। শুভ্র আজকে আবারও চোখ বন্ধ করলো। চোখ বন্ধ করতেই রোজের হাসিমাখা মুখটাই আগে ভেসে এলো। রোজের বাচ্চামো, রোজের ছোট, ছোট পাগলামি। রোজের কান্নাভেজা মুখ সব। চোখ বন্ধ করেই শুভ্র হেসে বলে উঠলো,

—-” আমার রেড রোজ।”

চমকে শুভ্র চোখ খুললো অবাক হয়ে বললো,

—-” আমার রেড রোজ? এটা কি বললাম আমি? ও আমার রেড রোজ?”

শুভ্র হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরলো। কতক্ষণ থম মেরে থেকে চেঁচিয়ে বলে উঠলো।”

—-” ইয়েস ও আমার, আমার রেড রোজ। আই লাভ হার, আই লাভ ইউ রোজ,

শুভ্রর চোখেও পানি টলটল করছে। শুভ্র এইরাতেই রোজকে ফোন করলো। রোজও যেহেতু জেগে আছে। রোজ আনমনেই ফোন রিসিভ করলো।”

—-” হ্যালো,

রোজের হ্যালো বলা শুনেই শুভ্রর মুখ কালো হয়ে গেলো। কারন শুভ্রর বুঝতে দেরী হলো না যে রোজ কাঁদছে। শুভ্র উত্তেজিত হয়ে বললো।”

—-” রোজ তুই কাঁদছিস কেন?”

এবার রোজ ফোনের স্কিনে তাকালো। শুভ্রর নাম্বার দেখে অবাক হয়ে বললো,

—-” আপনি কেন ফোন করেছেন? তাও আবার এত রাতে?”

শুভ্র উত্তর না দিয়ে বললো।”

—-” তারআগে বল তুই কাঁদছিলি কেন?”

রোজ একটু রেগে বললো,

—-” সেটা আপনাকে কেন বলবো?”

শুভ্র মুচকি হেসে বললো।”

—-” আমার জানার অধিকার আছে তাই,

রোজ অবাক হয়ে বললো।”

—-” অধিকার মানে? কিসের অধিকার?”

শুভ্র একটু চুপ থেকে বললো,

—-” ভালবাসার অধিকার।”

এবার রোজ শকড হয়ে বললো,

—-” এসব কি বলছেন আপনি?”

শুভ্র হেসে বললো।”

—-” আমি তোকে ভালবাসি সেই অধিকার,

রোজ হা করে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে। শুভ্র এসব কি বললো? ওর মাথায় ঢুকছে না। রোজ নিজেকে সামলে বললো।”

—-” আপনি কি মজা করছেন?”

শুভ্র ভ্রু কুঁচকে বললো,

—-” না আমি সত্যি বলছি। আমি তোকে ভালবাসি।”

রোজ চট করে ফোনটা কেটে দিলো। দুজনেই থম মেরে বসে রইলো। যদিও দুজন দুই জায়গায় আছে,

___________________

পরেরদিন শুভ্র বসে রোজের জন্য ওয়েট করছে। তখনি রাহি কোথাথেকে এসে শুভ্রকে ধরলো। শুভ্র রেগে রাহিকে ছাড়িয়ে বললো।”

—-” হোয়াট দ্যা হেল?”

রাহি নেকামি করে বললো,

—-” বেবি আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও।”

শুভ্র তাচ্ছিল্য হেসে বললো,

—-” আরে কি বলছো? আমি তোমার কাজে খুব খুশি হয়েছি। কারন তুমি সেদিন ওমন না করলে। আমি বুঝতেই পারতাম না। যে আমি তোমাকে কোনদিন ভালবাসিনি।”

রাহি অবাক হয়ে বললো,

—-” মানে?”

শুভ্র মুচকি হেসে বললো।”

—-” আমি রোজকে ভালবাসি,

রাহি তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বললো।”

—-” এসব কি বলছো তুমি? তারমানে তুমি আমাকে ইউজ করেছো?”

শুভ্র ঠাটিয়ে রাহির গালে এক থাপ্পর মেরে বললো,

—-” তোর মতো মেয়েকে ইউজও করা যায় না। আর আমি তোকে ইউজ করেছি কিভাবে? আমি কি তোর সাথে রুম ডেট করেছি? আরে তোকে কোনদিন সেভাবে টাচও করিনি। আজকের পর আর কোনদিন আমার সামনে আসবি না।”

রাহি রেগে চলে গেলো। একটুপরই রোজ এলো। রোজকে দেখেই শুভ্রর মুখে হাসি ফুটে উঠলো। শুভ্র দৌড়ে রোজের কাছে গেলো। রোজ বিরক্তিকর ফেস করে বললো,

—-” কি সমস্যা আপনার?”

শুভ্র কিছু না বলেই বললো।”

—-” আই লাভ ইউ,

শুভ্রর মুখে এভাবে সামনাসামনি আই লাভ ইউ শুনে। রোজের হার্ট বিট বেড়ে গেলো। রোজ নিজেকে সামলে পাশ কাটিয়ে যেতে গেলেই শুভ্র বলে উঠলো।”

—-” রেড রোজ,

ওমনি রোজের পা থেমে গেলো। পুরো ৩বছর পর শুভ্র রোজকে রেড রোজ বললো। রোজের কাছে মনে হচ্ছে। এই ৩বছর যেই আগুনে শুভ্র ওকে পুড়িয়েছে। আজ শুভ্র নিজেই সেই আগুন নিভিয়ে। রোজকে একেবারে শীতল করে দিলো। রোজ আস্তে, আস্তে শুভ্রর দিকে ঘুরলো। শুভ্র রোজের সামনে বসে পড়লো। রোজ এবং বাকীরা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।”

—-” আই লাভ ইউ রেড রোজ। আই ওয়ান্ট ইউ ইন মাই লাইফ। বিকজ আই ক্যান আন্ডারস্ট্যান্ড। মাই লাইফ আর নাথিং উইথআউট ইউ। এন্ড আই কান্ট লিভ ইউ। আই জাস্ট কান্ট লিভ উইথআউট ইউ। প্লিজ ফরগিভ মি এন্ড এক্সেপ্ট মি,

রোজ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চলে গেলো। শুভ্র ওভাবেই বসে মনে, মনে বললো।”

—-” আমি জানি তুই এখনো আমাকে ভালবাসিস। কিন্তুু তুই আমার উপর অভিমান করে আছিস। তোর অভিমান আমি ভাঙবো না। কারন অভিমান ভাঙা যায় না। রাগ ভাঙা গেলেও অভিমান ভাঙা যায় না। তবে তুই আবার বলবি যে তুই আমাকে ভালবাসিস। আর তখন তোর অভিমান এমনিই সরে যাবে,

শুভ্র উঠে বসে রইলো। এভাবে ১০দিন কেটে গিয়েছে। শুভ্র প্রতিদিন রোজকে প্রপোজ করে। আর রোজ কিছু না বলেই চলে যায়। আজকেও তার ব্যতিক্রম হলো না। আজকেও শুভ্র এক তোরা গোলাপ ফুল নিয়ে হাটুগেড়ে বসে পড়লো। রোজ আজকে ইচ্ছে করেই বললো।”

—-” এখন আমি যদি আপনাকে থাপ্পর মারি?”

শুভ্র অবাক হলেও বললো,

—-” আমি তোমার তুমি চাইলে আমার সাথে যা ইচ্ছে করতে পারো।”

রোজ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। পরে হনহন করে চলে গেলো। শুভ্রর ভাল লাগছে না এই রোজকে দেখতে। কারন রোজ আগের মতো হাসে না। কারো সাথে তেমন কথা বলে না। শুভ্র ভাবলো রোজকে আগের মতো করতে হবে। ওকে আগের মতো হাসতে হবে। শুভ্র রাত ১১টায় রোজকে ফোন করলো। রোজ ফোন রিসিভ করলো না। শুভ্র ম্যাসেজ করলো যেটাতে লেখা,

—-” ৫মিনিটের মধ্যে নিচে না এলে। আমি কিন্তুু উপরে চলে আসবো।”

রোজ লাফ দিয়ে উঠে বসলো। ওড়নাটা গায়ে জড়িয়ে রুম থেকে বেরিয়ে এলো। ভাল করে দেখলো ড্রয়িংরুমে কেউ নেই। রোজ রেগে নিচে এসেই বললো,

—-” কি হয়েছে আপনার? এমন কেন করছেন আপনি?”

শুভ্র রোজের হাত ধরে বললো।”

—-” আমি সত্যি তোমাকে ভালবাসি। প্লিজ আমাকে বিশ্বাস করো,

রোজ হাত ছাড়িয়ে বললো।”

—-” আমাদের মাঝে দূরত্ব এসে গিয়েছে। তাই আপনি আমাকে ভালবাসলেও ভুলে যান,

শুভ্র হ্যাচকা টানে রোজকে কাছে এনে বললো।”

—-” আমাদের মাঝে দূরত্বটা অনেক দুরের হতে পারে। একে অপরের কাছ থেকে দেখা একদমই হয়না আমাদের। তাই বলে আমি তো আর তোমাকে ভুলে যেতে পারিনা। তোমাকে ভুলে যাওয়া মানে আমার অস্তিত্বকে বিসর্জন দেয়া। বেঁচে থেকেও নিঃশ্বাস নিতে না পারা। তোমাকে আমি ভালবেসেছি দূরত্ব জেনেও ভালবাসি। শুধু তোমাকেই মন থেকে চাই আমি। আমার চাওয়াটা তো আর মিথ্যে নয়। আমি অন্যায় করেছি আমাকে শাস্তি দাও রেড রোজ। বাট তোমাকে ভুলে যেতে বলো না। কারন নিজের অস্তিত্বকে কেউ ভুলতে পারে না। যেদিন থেকে বুঝেছি আমি তোমাকে ভালবাসি। সেদিন থেকে তোমার সাথে আমি এমনভাবে মিশে গিয়েছি। যেভাবে একটা শরীরের সাথে আত্মা মিশে থাকে। আর শরীর থেকে আত্মা কোনদিনই আলাদা হয় না। আমি মনে প্রানে বিশ্বাস করি আমরা এক হবো হবোই,

বলে শুভ্র রোজকে ছেড়ে দিলো। শুভ্রর চোখ ছলছল করছে। নাকের ডগা লাল হয়ে গিয়েছে। রোজের কাছে শুভ্রকে এখন কিউটের ডিব্বা লাগছে। যদিও শুভ্র অলওয়েজই কিউট লাগে দেখতে। রোজ মনে, মনে বললো।”

—-” আমি জানি তুমিও আমাকে ভালবাসো। তোমার চোখে স্পষ্ট সেটা ফুটে উঠেছে। কিন্তুু এত সহজে আমি তোমাকে ক্ষমা করবো না,

রোজ বাড়ির ভেতরে চলে এলো। আর শুভ্র সেখানে ঠায় দাড়িয়ে আছে। এরমাঝেই হঠাৎ বৃষ্টি চলে এলো। এতক্ষণ আকাশে মেঘ থম মেরেছিলো। এখন সে বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে পড়ছে।”

#চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে