ফিরে এসো ভালবাসা অন্তিম পর্ব

2
1913

#ফিরে এসো ভালবাসা❤
#লেখিকাঃ নাবিলা আহমেদ রোজ
#অন্তিম পর্ব

ঠিক হলো আগামীকাল রং খেলা হবে। পরেরদিন মেহেন্দি হবে, তারপর দিন গায়ে হলুদ। এবং চতুর্থ দিন বিয়ে মোট ৪দিন। সবাই তো সেই লেভেলের খুশী। সবাই মিলে ডিসাইড করলো। সন্ধ্যায় গিয়ে সাদা ড্রেস কিনে আনবে। কারণ রং খেলার জন্য এটাই ভাল। নানুমনি সবাইকে রেস্ট নিতে পাঠালো। কারণ সন্ধ্যায় আবার তারা শপিং মলে যাবে। সবাই তাই রুমে চলে এলো। রোজ রুমে এসে ওড়না থেকে পিন খুললো। এরপর ওয়াসরুমে যেতে গেলেই হুট করে শুভ্র এসে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। রোজ হঠাৎ এমন হওয়ায় একটু অবাক হলো। তবে নিজেও শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে বললো।”

—-” শুভ্র কি হলো?”

শুভ্র রোজকে জড়িয়ে ধরেই বললো,

—-” জানিনা ব্যাস তোমাকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে হলো। আর কেন জানিনা আমার কিছু একটা ঠিক লাগছে না রেড রোজ।”

রোজ শুভ্রর বুকে থেকেই বললো,

—-” মানে?”

এবার শুভ্র রোজকে বেডে বসিয়ে বললো।”

—-“ডক্টর কিন্তুু কিছু একটা বলতে চেয়েছিলো,

রোজ ভাবতে, ভাবতে বললো।”

—-” হ্যা তখনি রাহি গুলি চালিয়ে দিলো,

শুভ্র কপাল কুঁচকে বললো।”

—-” কি এমন বলতে চেয়েছিলো? বাট যাইহোক হয়তো রাহির প্রবলেম হতো। তাই ও বেচারাকে বলতে না দিয়ে মেরে ফেললো,

রোজ ভ্রু কুঁচকে বললো।”

—-” রাহিতো জেলেই যাচ্ছিলো। আর কি প্রবলেম হতো ওর?”

শুভ্র রোজকে আর ভাবতে দিলো না। রোজের কপালে চুমু দিয়ে বললো,

—-” তুমি ফ্রেশ হয়ে রেস্ট করো। আর পারলে একটু ঘুমিয়ে নিও। এই কয়েকদিন তো ঘুমাতেও পারোনি।”

রোজ বাচ্চাদের মতো বললো,

—-” এসব থাক না শুভ্র। অতীত মনে করতে চাই না।”

শুভ্র হালকা হেসে বললো,

—-” ওকে আর বলবো না।”

বলে শুভ্র রুমের বাইরে এলো। আর নিজের রুমে যেতে, যেতে বললো,

—-” এমন অদ্ভুত লাগছে কেন আমার? কেমন ভয়, ভয় লাগছে মনে হচ্ছে। কিন্তুু কেন?”

সন্ধ্যায় সবাই রেডি হয়ে শপিং মলে এসেছে। সবাই সাদা থ্রি পিচ কিনেছে। শুভ্র রোজকে সাদা চুরিদার কিনে দিয়েছে। ছেলেরা সাদা পাঞ্জাবী নিয়েছে। সবাই কেনাকাটা শেষ করে বাড়ি গেলো। রাতে রোজের আবার মাথা ব্যথা করতে লাগলো। রোজ একটা মেডিসিন খেয়ে ঘুমিয়ে গেলো। সকাল থেকে সবাই হৈ চৈ করছে আজকে রং খেলা। রোজ গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলো। আজকে আর আয়নার সামনে গেলো না। যদি যেতো তাহলে হয়তো কিছু দেখতে পেতো। ঘুমঘুম চোখেই মুখে পানি দিলো। পানিটা হালকা লাল রং ধারণ করেছে। রোজ সেটা খেয়াল করলো না। ও গিয়ে সাদা চুরিদারটা পড়ে নিলো। ঠোটে হালকা লিপস্টিক দিলো। এরমাঝে শুভ্র রোজের রুমে এসে বললো।”

—-” গুড মর্নিং রেড রোজ,

রোজ মুচকি হেসে বললো।”

—-” গুড মর্নিং,

শুভ্র রোজের কাছে এসে দাড়ালো। রোজ তখন চুল আচড়াচ্ছিলো। শুভ্র এসে চিরুনিটা হাতে নিলো। রোজ আয়নার ভেতরে শুভ্রকে দেখছে। শুভ্র রোজের চুল আচড়াতে, আচড়াতে বললো,

—-” নিচে যাচ্ছো যাও। কিন্তুু আমার আগে যেন কেউ তোমাকে আবির না লাগায়।”

রোজ হেসে দিয়ে বললো,

—-” ওকে মিস্টার।”

শুভ্র রোজের চুল একটা ঝুটি করে দিয়ে বললো,

—-” চুলে আবির লাগতে পারে। পরে ওটা পরিষ্কার করতে ঝামেলা হবে। তাই এরকম ঝুটি করা থাক। এতে বেশী লাগবে না ওকে?”

রোজ শুভ্রর গলা জড়িয়ে ধরে বললো।”

—-” ওকে স্যার,

শুভ্র রোজের গাল টেনে বললো।”

—-” চলুন ম্যাডাম,

এরপর দুজনে নিচে গেলো। এক একটা মাটির প্লেটে নানান কালার আবির রাখা। শুভ্র রোজকে দাড় করিয়ে আবির আনতে গেলো। এদিকে রিক, ঈশান, ঝিনুক এলো রোজকে আবির লাগাতে। রোজ ওদের বাধা দিয়ে বললো।”

—-” আগে শুভ্র আবির লাগাবে তারপর তোরা,

রিক মুখ দিয়ে সিটি বাজিয়ে বললো।”

—-” ও কি ভালবাসা,

রোজ লজ্জা পেয়ে বললো।”

—-” রিক ভাইয়া এটা কিন্তুু ঠিক না,

ঈশান দাত কেলিয়ে বললো।”

—-” আমাদের রোজ লজ্জা পাচ্ছে,

এরমাঝে হাজির হলো নিরব। রোজ নিরবকে দেখে খুশি হয়ে বললো।”

—-” নিরব তুমি?”

নিরব হেসে বললো,

—-” ইয়েস চলে এলাম। আর আমি সবটা শুনেছি ভাইয়া বলেছে।”

শুভ্র হাতে আবির নিয়ে এসে। রোজকে টেনে আরেকপাশে নিয়ে এলো। এরপর রোজের দু গালে আলতো করে আবির মাখিয়ে দিলো। রোজ সাথে, সাথে চোখ বন্ধ করে ফেললো। আবির মাখানো শেষে রোজ বললো,

—-” এবার আমি মাখাবো। কিন্তুু আমার কাছে তো আবির নেই।”

শুভ্র দুষ্টু হাসি দিয়ে বললো,

—-” আছে তো।”

রোজ ভ্রু কুঁচকে তাকালো। তার আগেই শুভ্র রোজের কোমর টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে ফেললো। রোজ চোখ বড়, বড় করে তাকিয়ে আছে। শুভ্র নিজের গাল রোজের গালের সাথে মেশালো। রোজ শুভ্রর কলার খামচে ধরে আছে। শুভ্র রোজের গালে নিজের গাল স্লাইড করতে লাগলো। রোজের গালের আবির শুভ্রর গালেও লেগে গেলো। শুভ্র বাঁকা হাসি দিয়ে বললো,

—-” বলেছিলাম না আছে?”

রোজ চোখ খুলে ভীষণ লজ্জা পেলো। শুভ্রকে ছাড়িয়ে দৌড়ে চলে গেলো। এরপর সবাই মিলে রং খেলতে লাগলো। রং খেলা শেষ হলো দুপুর ১টায়। সবাই গিয়ে গোসল করে নিলো।”

পরেরদিন, আজকে মেহেন্দি। এবারও ছেলেদের মেহেন্দিতে থাকতে দিতে চায়নি। তবে এবার ছেলেরা বেশ ক্ষেপে গিয়েছে। তারা সাফ, সাফ জানিয়ে দিয়েছে। তাদের যদি থাকতে দেয়া না হয়। তাহলে তারা সোজা বাড়ি চলে যাবে। মেয়েরা আর কিছু বলেনি। যদি সত্যি চলে যায় তখন? সন্ধ্যায় রোজকে শুভ্র সাজাচ্ছে। পার্লার থেকে মেয়েদের আনতে চেয়েছিলো। কিন্তুু শুভ্র বলেছে ও সাজাবে ওর রেড রোজকে। রোজ শুভ্রর কাজে অবাক হচ্ছে। কারন শুভ্র অদ্ভুত আচরণ করছে। রোজকে সবসময় চোখে, চোখে রাখছে। রোজকে নিজের হাতে খাইয়ে দিচ্ছে। রোজ অবাক হয়ে বললো,

—-” শুভ্র তোমার কি হয়েছে বলো তো?”

________________

শুভ্র রোজের চুল বাধতে, বাধতে বললো।”

—-” কেন? আমার আবার কি হবে?”

রোজ ভ্রু কুঁচকে বললো,

—-” তুমি এমন অদ্ভুত আচরণ করছো? আগে তো কখনো এমন করোনি।”

শুভ্র নিজেই মনে, মনে বললো,

—-” আসলেই তো আমি এমন করছি কেন?”

রোজ আর শুভ্রকে ডাকাতে ওরা নিচে চলে গেলো। শুভ্র নিজের হাতে রোজকে মেহেন্দি পড়িয়ে দিয়েছে। রোজের হাতের মেহেন্দিতে শুভ্রর নাম লিখে দিয়েছে। রোজ মুচকি হেসে সব দেখছে। সবাই ওদের এমন ভালবাসা দেখে নিশ্চিন্ত হলো। অনেক আনন্দর মাঝেই মেহেন্দি শেষ হলো।”

আজকে রোজ আর শুভ্রর গায়ে হলুদ। এদিকে রোজের মাথাটা গতকাল থেকে বেশীই ব্যথা করছে। রোজ ভাবলো বিয়ের ঝামেলাটা গেলে শুভ্রকে নিয়েই ডক্টরের কাছে যাবে। তাই এখন আর কাউকে কিছু বললো না। রোজ আর শুভ্রর গায়ে হলুদ একসাথেই হবে। তাই সন্ধ্যা হতেই দুজনকে রেডি করতে নিয়ে গেলো। রোজকে হলুদ লেহেঙ্গা পড়িয়েছে। সাথে সব কাচা ফুলের গয়না। ঠোটে লাল লিপস্টিক, চোখে মোটা করে আইলানার দিয়েছে। রোজকে সাজিয়ে নিচে নিয়ে গেলো। শুভ্র আগে থেকেই স্টেজে বসে আছে। রোজকে দেখে শুভ্র হা করে তাকিয়ে আছে। এদিকে রোজও শুভ্রকে হা করেই দেখছে। শুভ্র হলুদ একটা পাঞ্জাবী পড়া। পাঞ্জাবীটায় স্টোনের কাজ করা। সাথে কালো জিন্স প্যান্ট। চুলগুলো স্পাইক করে রেখেছে। হাতে ব্রান্ডের ঘড়ি ঘায়েল করা লুক। রোজকে নিয়ে শুভ্রর পাশে বসালো। সবাই একসাথে বললো,

—-” ওয়াও মেড ফর ইচ অদার।”

শুভ্র রোজের কানে ফিসফিস করে বললো,

—-” লুকিং সো হট।”

রোজ চোখ বড়, বড় করে তাকিয়ে বললো,

—-” অসভ্য।”

শুভ্র ফিক করে হেসে দিলো। এরপর সবাই এসে হলুদ লাগালো। হলুদ লাগানো শেষে রিক স্টেজে গিয়ে বললো,

—-” এটেনশন গাইস। এখন আমাদের গান গেয়ে শোনাবে। আমাদের সুইট কাপল রোজ এন্ড শুভ্র।”

রোজ আর শুভ্র একসাথে বললো,

—-” হোয়াট?”

সবাই ইয়েস বলে উঠলো। দুজনেই মুখ বাঁকিয়ে বললো।”

—-” ওকে গাইছি,

দুজনে মিলে ঠিক করলো কি গান গাইবে?”

প্রথমে শুভ্র গাইলো।”

🎶ধীগি, ধীগি জ্বালা বুকের মাঝে এ প্রেমের ফাগুনে🎶
🎶গলে যায় মন মোমের মত হৃদয়ের আগুনে🎶

এবার রোজ মুচকি হেসে গাইলো,

🎶ধীগি, ধীগি জ্বালা বুকের মাঝে এ প্রেমের ফাগুনে🎶
🎶গলে যায় মন মোমের মত হৃদয়ের আগুনে🎶

এবার শুভ্র রোজের হাত ধরে গাইলো।”

🎶মনে যন্ত্রণা প্রেমে সান্ত্বনা তবু আশা কি থামে🎶
🎶কিছু স্বপ্ন যে পেলো রং খুজে আজ তোমারই নামে🎶
🎶প্রেম আমার ও প্রেম আমার🎶
🎶প্রেম আমার এ প্রেম আমার🎶২

দুজন দুজনের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। এবার রোজ অন্যদিকে তাকিয়ে গাইলো,

🎶এই আগুন পেলো যে ছোঁয়া🎶
🎶পোড়ে মন ওঠেনা ধোয়া🎶

এবার শুভ্র গাইলো।”

🎶এই আগুন পেলো যে ছোঁয়া🎶
🎶পোড়ে মন ওঠেনা ধোয়া🎶

রোজ শুভ্রর গালে হাত রেখে গাইলো,

🎶নীল অন্ধকার প্রেম বারেবার এই বুকে ঢেউ তোলে🎶

শুভ্র রোজের হাতের উপর নিজের হাত রেখে গাইলো।”

🎶বাধ ভাঙা সুখ, লাজে রাঙা মুখ তোলে স্বপ্নেরই কোনে🎶
🎶প্রেম আমার ও প্রেম আমার🎶
🎶প্রেম আমার এ প্রেম আমার🎶

এভাবে ওরা পুরো গানটা গাইলো। গানের শেষে সবাই হাততালি দিলো। শুভ্র নিজের ফোন থেকে গান চালালো। রোজ হা করে থেকে বললো,

—-” এটা কি হলো?”

শুভ্র দাত কেলিয়ে বললো।”

—-” রেকর্ড করেছি,

রোজ গাল ফুলিয়ে বললো।”

—-” এত পচা ভয়েস আমার। এটা ডিলিট করো বলছি,

শুভ্র মুখ বাঁকিয়ে বললো।”

—-” না এটা আমি রেখে দেবো,

রোজ ভেংচি কেটে বললো।”

—-” কেন?”

শুভ্র মুচকি হেসে বললো,

—-” বিয়ের পর যখন আমি অফিসে যাবো। তখন তোমাকে মিস করলে এটা শুনবো।”

বলে শুভ্র গানটা চালালো। আর শুনেই চমকে গেলো। লাস্টে শুভ্র একা যেই কলি গেয়েছে সেটা রেকর্ড হয়েছে,

🎶হো, হা, আয়ায়া, হো, হা, আয়ায়া🎶
🎶কোন ভুলে তুমি শুলে বলো এই ফুলসজ্জায়🎶
🎶স্বপ্নের লাশ কাঁধে নিয়ে ওরা কেন চলে যায়🎶২

🎶জীবন পথে চলতে শেখায় ওই হাতেরি ছোঁয়ায়🎶
🎶আজ ভাঙা বুক, খোজে হাসি মুখ দেখি জ্বলে সেই চিতায়🎶
🎶প্রেম আমার ও প্রেম আমার🎶
🎶প্রেম আমার এ প্রেম আমার🎶

শুভ্রর মুখ কালো হয়ে গেলো। রোজ শুভ্রর মুখে হাত দিয়ে বললো।”

—-” কি হলো?”

শুভ্র মুখ কালো করেই বললো,

—-” এটা ডিলিট করে দেবো।”

রোজ ছো মেরে মোবাইল নিয়ে বললো,

—-” না এটা আমি রাখবো। আর তোমার কাছেও থাকবে।”

বলে রোজ ফোন নিয়ে চলে গেলো। রাত ৪টা শুভ্র ধপ করে উঠে বসলো। পুরো শরীর ঘেমে একাকার হয়ে গিয়েছে। শুভ্র বেড সাইড থেকে পানি নিয়ে ঢকঢক করে খেয়ে ফেললো। এরপর বেড থেকে নেমে রোজের রুমে গেলো। রোজ দরজা ঠেলে রেখে ঘুমিয়েছে। শুভ্র রোজের সামনে বসে পড়লো। রোজ গভীর ঘুমে আছে। রোজের কপালে কয়েকটা চুল এসে পড়েছে। শুভ্র ফু দিয়ে সরিয়ে দিলো। ঘুমের ভেতরেই রোজ নড়ে উঠলো। পরে আবার ঘুমিয়ে রইলো। শুভ্রর দুচোখ ভর্তি পানি। রোজের কপালে চুমু দিয়ে চলে গেলো। দরজার কাছে এসে আবার তাকিয়ে মনে, মনে বললো,

—-” জানিনা এমন স্বপ্ন কেন দেখলাম। তবে আমি তোমাকে ছাড়া নিঃস্ব হয়ে যাবো। একেবারে শেষ হয়ে যাবো রেড রোজ।”

শুভ্র ঘুমের মাঝেই দেখে। একটা অন্ধকার জায়গায় রোজ দাড়িয়ে আছে। রোজ শুভ্রকে ডাকছে। শুভ্র রোজের কাছে পৌছানোর আগেই। অন্ধকারেই রোজ হারিয়ে গেলো। এটা দেখেই শুভ্র ধপ করে উঠে বসে,

গা ভর্তি গয়না আর লেহেঙ্গা পড়ে বসে আছে রোজ। আজকে ওদের বিয়ে। রোজকে বউ সাজানো হয়ে গিয়েছে। রোজ সকালে শুভ্রকে টেপ রেকর্ডার দিয়েছে। ওটা দেখে শুভ্র ভ্রু কুঁচকে বলে।”

—-” এটা কি?”

রোজ মুচকি হেসে বললো,

—-” শুনে দেখো।”

শুভ্র শুনে দেখে ওই গানটা। শুভ্র মুখ ছোট করে বললো,

—-” আমি এটা নেবো না।”

রোজ গাল ফুলিয়ে বললো,

—-” কেনো?”

শুভ্র ছলছল চোখে বললো।”

—-” জানিনা কেন? বাট এটা শুনলে মনে হয় তুমি নেই,

রোজ হেসে বললো।”

—-” কামঅন শুভ্র, আই এম অলওয়েজ উইথ ইউ। এটা তোমার কাছে রাখবে ব্যাস,

শুভ্র আপত্তি থাকার পরেও নিলো। এদিকে বিয়ের সময় হয়ে যাওয়ায় রোজকে নিচে নিয়ে গেলো। স্টেজে শুভ্র বসে আছে বর বেশে। লাল আর গোল্ডেন কালার শেরওয়ানি পড়া। মাথায় গোল্ডেন কালার পাগড়ী। হাতে গোল্ডেন কালার ব্রান্ডের ঘড়ি। ডার্ক রেড ঠোটের কোনে হাসি ঝুলিয়ে রেখেছে। রোজকে নিয়ে শুভ্রর পাশে বসালো। শুভ্র ঠোটে হাসি ঝুলিয়ে রাখলেও ভেতরটা আনচান করছে খুব। রোজ একটু অবাক হলো শুভ্রকে দেখে। শুভ্রর মা আর ওর মামীরা শুভ্রদের বাড়ি চলে গিয়েছে। কারণ নতুন বউ বরনের ব্যবস্থা করতে হবে তো। একটুপর কাজী এলো বিয়ে পড়াতে। ভালভাবেই ওদের বিয়েটা সম্পূর্ণ হলো। এবার বিদায়ের পালা রোজের বুক ফেটে কান্না আসছে। এদিকে মাথার ব্যথা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। যাওয়ার সময় রোজ হাউ মাউ করে কান্না করছে। বেশী কান্না করেছে রোদকে জড়িয়ে ধরে। রোজকে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলো। শুভ্র রোজের হাত শক্ত করে ধরে বললো।”

—-” রোজ প্লিজ ডোন্ট ক্রাই। আমি কালই তোমাকে ওই বাড়িতে নিয়ে যাবো,

___________________

রোজ শুভ্রর কাধে মাথা দিয়ে রইলো। আসলে ও নিজেও কাঁদতে চাইছে না। মাথা মনে হচ্ছে ব্যথায় ছিড়েই যাবে। আজকে মেডিসিনও নেয়নি বিয়ের ঝামেলায় মনেই ছিলো না। শুভ্রদের বাড়ির সামনে গিয়ে গাড়ি থামালো। শুভ্র রোজকে কোলে নিয়ে দরজার সামনে গিয়ে দাড় করালো। রোজ কোনরকম দাড়িয়ে আছে। বরন শেষে ভেতরে যেতে রোজ পা বাড়ালো। তখনি মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো। সাথে, সাথে নাকমুখ দিয়ে গলগল করে রক্ত পড়তে লাগলো। সবাই শকড হয়ে তাকিয়ে আছে। রোজ মুখের সামনে থেকে হাতটা এনে থমকে গেলো। রোজের হাত রক্তে লাল হয়ে গিয়েছে। এদিকে শুভ্র স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। শুভ্রর আর বুঝতে বাকী নেই ডক্টর কি বলতে চেয়েছিলো। এরমাঝে রোজ মাথায় হাত দিয়ে চিৎকার করতে লাগলো। হঠাৎ পরিবেশ থমথমে হয়ে গেলো। শুভ্র রোজকে কোলে নিয়ে গাড়ির দিকে গেলো। মাথার পাগড়ীটা একটানে ফেলে দিলো। রোজকে গাড়িতে বসিয়ে নিজে ড্রাইভিং সিটে বসলো। একহাতে রোজকে ধরে রেখেছে শক্ত করে। আরেকহাতে ড্রাইভ করছে। সবাই শুভ্রর পিছনের গাড়িতে এলো। হসপিটালে গিয়ে পাগলের মতো শুভ্র ডক্টরকে ডাকতে লাগলো। ডক্টর এসে তাড়াতাড়ি রোজকে আইসিইউতে নিয়ে গেলো। শুভ্র কাঁদতে, কাঁদতে নিচে বসে পড়লো। রোদরাও চলে এসেছে রোদ এসে বললো।”

—-” শুভ্র কি হয়েছে?”

শুভ্র কাঁদতে, কাঁদতে বললো,

—-” রোদ রোজের ব্রেইন ক্যান্সার। আর ডক্টর এটাই বলতে চেয়েছিলো। আমার বুঝতে বাকী নেই রাহি কেন ডক্টরকে মারলো? এতদিন ডক্টর আমাকে যা বলেছিলো। আসলে সেই সব রোজের হয়েছে। আর ওই রিপোর্ট রোজের ছিলো। ডক্টর ওই রিপোর্ট আমার বলে চালিয়েছিলো।”

রোদ সহ সবাই থমকে গেলো। রোজের মা কাঁদতে, কাঁদতে বললো,

—-” আমার রোজের কিছু হলে।”

তারআগে শুভ্র বললো,

—-” না আমার রেড রোজের কিছু হবে না। ওর কিছু হতে পারে না কিছু না।”

এরমাঝে ডক্টর বেরিয়ে এলো। শুভ্র দৌড়ে ডক্টরের কাছে গিয়ে বললো,

—-” ডক্টর আমার রোজ কেমন আছে?”

ডক্টর সবার দিকে তাকিয়ে বললো।”

—-” আপনারা এটা কি করেছেন? আপনারা জানতেন না ওনার ব্রেইন ক্যান্সার? আর উনি লাস্ট স্টেজে আছে। আমাদের হাতে আর কিছুই করার নেই,

শুভ্র ডক্টরের পা জড়িয়ে ধরে বললো।”

—-” ডক্টর আমি আপনার পায়ে পড়ছি। প্লিজ ওই মেয়েটাকে ঠিক করে দিন। ওইযে মেয়েটা আইসিইউতে আছে ও আমার প্রান ভোমরা। আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না ডক্টর। ডক্টর ও আমার শরীরের আত্মা। আর আত্মা যদি শরীরে না থাকে তাহলে সে শরীর কি করে থাকবে ডক্টর? আমি আপনার কাছে রিকোয়েস্ট করছি ওকে বাঁচিয়ে দিন,

ডক্টর বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। শুভ্রকে উঠিয়ে বললো।”

—-” শুধুমাএ তোমার জন্য আমি আবারো চেষ্টা করবো,

ডক্টর আবার ভেতরে গেলো। শুভ্র বিরবির করে শুধু একটা কথাই বলছে।”

—-” আল্লাহ রোজকে ঠিক করে দাও,

এদিকে রোজের অক্সিজেন রক্তে লাল হচ্ছে বারবার। আর ওর অবস্থাও খারাপের দিকে যাচ্ছে। ডক্টররা হাজার চেষ্টা করেও কিছু করতে পারলো না। ডক্টর ৩০মিনিট পর আবার বেরিয়ে এলো। শুভ্র আবার ওনার কাছে গেলো। ডক্টর মুখ কালো করে বললো।”

—-” পেশেন্ট শুভ্রকে খুজছে,

শুভ্র দৌড়ে ভেতরে গেলো। আর গিয়ে রোজকে দেখে থমকে গেলো। রোজের মুখে অক্সিজেন লাগানো। যেটা রক্তে লাল হয়ে গিয়েছে। চোখ মুখের অবস্থাই পাল্টে গিয়েছে। শুভ্র গিয়ে রোজের পাশে দাড়ালো। রোজ শুভ্রকে দেখে অক্সিজেনটা খুলে ফেললো। শুভ্র উত্তেজিত হয়ে বললো।”

—-” রেড রোজ কি করছো?”

রোজ হালকা হেসে বললো,

—-” এটা থাকলে আমি কথা বলতে পারবো না।”

শুভ্র মুখে মিথ্যে হাসি ফুটিয়ে বললো,

—-” তুমি সুস্থ হয়ে বাড়ি চলো। এরপর আমরা অনেক কথা বলবো।”

রোজ মলিন হেসে বললো,

—-” আমি জানি আমার সময় শেষ।”

শুভ্র রোজের মুখে হাত দিয়ে বললো,

—-” এসব তুমি কি বলছো? এসব কথা একদম বলবে না। তুমি ঠিক হয়ে যাবে তোমার কিছু হবে না।”

রোজ বড় শ্বাস টেনে বললো,

—-” অনেক ইচ্ছে ছিলো। তোমার সাথে একটা ছোট্ট সংসার করার। প্রতিদিন সকালে তোমার ঘুম ভাঙাবো। এরপর তোমার অফিসের সব গুছিয়ে রাখবো। তোমার জন্য ব্রেকফাস্ট করবো। এরপর যখন তুমি অফিসে যাবে। আমার কপালে চুমু দিয়ে যাবে। আমি তোমাকে ফোন করে বলবো। আমার জন্য আইসক্রিম নিয়ে এসো। এরপর তোমার জন্য অপেক্ষা করবো। তুমি দেরী করে বাড়িতে আসলে আমি গাল ফুলিয়ে থাকবো। তুমি চুমু দিয়ে আমার রাগ ভাঙাবে। আমি শক্ত করে তোমাকে জড়িয়ে ধরবো। আমাদের বেবি হবে ওদের নাম রাখবো অভ্র আর শুভ্রতা। কিন্তুু আমার স্বপ্ন পূরণ হলো না। উল্টো তোমাকে বিয়ে করে তোমার জীবনটা নষ্ট করে দিলাম। আমাকে ক্ষমা করে দিও শুভ্র।”

শুভ্র এক ধমক দিয়ে বললো,

—-” তোমাকে বলেছি না? তোমার কিছু হবে না বুঝেছো?”

রোজ স্লান হেসে বললো।”

—-” আমাকে জড়িয়ে ধরবে শুভ্র?”

শুভ্র বেডে বসে শক্ত করে রোজকে জড়িয়ে ধরলো। রোজও শক্ত করে শুভ্রর বুকে লেপ্টে থেকে বললো,

—-” অনেক শান্তি লাগছে জানো? এই বুকে সারাজীবন থাকতে চেয়েছিলাম। ইচ্ছে করছে না এই বুক থেকে সরতে। ইচ্ছে করছে না তোমাকে ছেড়ে যেতে। কিন্তুু কি করবো বলো? নিয়তি যে আমাদের একসাথে থাকতে দিলো না। আমাদের একসাথে পথ চলা এই পর্যন্তই ছিলো।”

শুভ্র রোজকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো,

—-” চুপ একদম তোমার কিছু হবে না। আমি তোমাকে বিদেশে নিয়ে যাবো।”

এদিকে রোজ জোড়ে শ্বাস নিতে শুরু করলো। শুভ্র হতভম্ব হয়ে গেলো মাথা কাজ করছে না ওর। রোজ শুভ্রর শেরওয়ানী শক্ত করে ধরে রেখেছে। একসময় বড় একটা শ্বাস নিয়ে চুপ হয়ে গেলো। হাতের মুঠোটাও আলগা হয়ে হাত ছেড়ে দিলো। শুভ্রর হাত, পা অবশ হয়ে আসছে। কাঁপা, কাঁপা হাতে রোজকে সামনে আনলো। রোজ চোখদুটো বন্ধ করে আছে। চোখের কার্নিশ বেয়ে পানি পড়ছে। শুভ্র কাঁপা গলায় বললো,

—-” রররেড রোরোরোজ।”

রোজের কোন সারা না পেয়ে চিৎকার করে ডক্টরকে ডাকলো। ডক্টরের সাথে সবাই চলে এলো। ডক্টর রোজের পালস চেক করে নিজেই চমকে গেলো। একবার রোজকে দেখছে আরেকবার শুভ্রকে। কিন্তুু সত্যিটা ওনার বলতে হবে। তাই নিজেকে শক্ত রেখে বললো,

—-” আই এম সরি, সি ইজ নো মোর।”

রোজের মা সাথে, সাথে সেন্সলেস হয়ে গেলো। রোদ হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। মুহূর্তেই কান্নার রোল পড়ে গেলো। এদিকে ডক্টর শুভ্রকে দেখে অবাক হচ্ছে। শুভ্র চুপচাপ দাড়িয়ে আছে। একদৃষ্টিতে রোজের দিকে তাকিয়ে আছে। শুভ্র যেন মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। শুভ্রর চোখের পলকও পড়ছে না। শুভ্রকে দেখে মনে হচ্ছে কোন পাথর। রিক এগিয়ে এসে শুভ্রকে ধাক্কা দিয়ে বললো,

—–” শুভ্র তুই কাঁদছিস না কেন? শুভ্র রোজ মারা গিয়েছে তুই কাঁদ।”

শুভ্র রিককে চর মেরে বললো,

—-” চুপ ওর কিছু হয়নি বুঝেছিস?”

শুভ্র রোজকে ঝাকিয়ে বললো।”

—-” রোজ অনেক হয়েছে মজা এবার ওঠো। দেখো সবাই কাঁদছে এটা কিন্তুু ঠিক না ওঠো,

রোজ তবুও উঠছে না দেখে শুভ্র এবার চিৎকার করে বললো।”

—-” এই রেড রোজ প্লিজ ওঠো। এমন করো না প্লিজ ওঠো। আমি তোমাকে এভাবে দেখতে পারছি না ওঠো। আরে এই বেইমান ওঠ প্লিজ। তুই না বলেছিলি? আমাকে কখনো ছেড়ে যাবি না। তুই না বলেছিলি? অলওয়েজ আমার সাথে থাকবি। তাহলে এভাবে পড়ে আছিস কেন? এই ওঠ না রে প্লিজ ওঠ। আমি মরে যাবো তোকে ছাড়া। আমার সাথে এমন করিস না তুই। আমার কলিজাটা ছিড়ে যাচ্ছে ওঠ,

শুভ্রর চিৎকারে সবাই জমা হয়ে গিয়েছে। আর এমন দৃশ্য দেখে সবার চোখে পানি চলে এসেছে। হঠাৎ করে শুভ্র হাসতে, হাসতে বললো।”

—-” বেইমান, ধোকাবাজ এভাবে চলে যেতে চাইছিস? আরে যখন আমাকে একা করে চলেই যাবি। তাহলে আমাকে ভালবাসলি কেন? আমাকেই বা তোকে ভালবাসতে বাধ্য করলি কেন? আমি তোর পায়ে পড়ি রেড রোজ ওঠ। ফিরে আয় প্লিজ ফিরে আয়। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে রোজ। আমার শ্বাস আটকে আসছে। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে প্লিজ ফিরে এসো,

শুভ্র চিৎকার করে বসে বললো।”

—-” আমার কথা কি তুমি শুনছো না? সত্যি তুমি আমাকে একা করে চলে গেলে? একবার ফিরে এসো রোজ। #ফিরে_এসো_ভালবাসা,

সবার চোখে পানি। ডক্টর বললো রোজকে বাড়ি নিয়ে যেতে। এদিকে শুভ্রকে কোনভাবে সামলানো যাচ্ছেনা। শুভ্র এক মুহূর্তের জন্যও রোজকে ছাড়ছে না। শুভ্রকে রিক আর ঈশান ধরে রেখেছে। রোদের অবস্থাও খারাপ। রোজের মা এখনো সেন্সলেস। কারো অবস্থাই ভাল না। বাড়ি নিয়ে এসেছে রোজকে গোসল করানো হয়ে গিয়েছে। শুভ্র পাগলের মতো ছটফট করছে। না পেরে শুভ্রকে ডক্টর ডেকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে দিলো। ঘুমানোর আগে শুভ্র একটা কথাই বললো।”

—-” তোমরা ওকে নিয়ো না। আমাকে একা করে দিয়ো না,

রোজকে জানাজা দিয়ে কবর দেয়া হয়ে গিয়েছে। শুভ্রর ঘুম ভাঙলো পরেরদিন সকালে। ঘুম ভাঙার পর থেকেই শুভ্র পাগলের মতো করছে। একবার রোজ বলে কাঁদছে আবার আসছে। আর কারো বুঝতে বাকী নেই শুভ্র পাগল হয়ে গিয়েছে।”

____৩বছর পর____

মানসিক হসপিটালের ২০১নাম্বার কেবিন থেকে গান ভেসে আসছে,

🎶কোন ভুলে তুমি শুলে বলো এই ফুলসজ্জায়🎶
🎶স্বপ্নের লাশ কাঁধে নিয়ে ওরা কেন চলে যায়🎶

কেবিনের ভেতর থেকে একটা ছেলের ফুপিয়ে কান্না শোনা যাচ্ছে। আবার কতক্ষণ পর, পর হেসে উঠছে। কেবিনের বাইরে ডক্টরের কাছে দাড়ানো রোদ, তনয়া, রিক, নিরব আর ঈশান। ওদের চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। কারন কেবিনের ছেলেটা আর কেউ না স্বয়ং শুভ্র। শুভ্রকে এখন আর চেনার উপায় নেই। চোখমুখের কোন হাল নেই। চোখের নিচে কালো দাগ। দাড়ি, চুল বড়, বড় হয়ে গিয়েছে। সেই চাঁদের মতো উজ্জল ছেলেটা এখন কালো মেঘের আড়ালে ঢেকে গিয়েছে। গায়ে বিয়ের সেই শেরওয়ানি। আজকের দিনে এই শেরওয়ানি ওকে না পড়ালে ও ক্ষেপে যায়। কারন ৩বছর আগে আজকের দিনেই ওদের বিয়ে হয়েছিলো। আর আজকের দিনেই ওর রেড রোজ ওকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলো। শুভ্র নিজের চুল টানতে, টানতে বললো।”

—-” তুমি পচা তুমি আমাকে একা ফেলে চলে গিয়েছো,

বলে বাচ্চাদের মতো কাঁদতে লাগলো। একটুপর আবার হেসে বললো।”

—-” না তুমি কোথাও যাওনি। তুমি এখানে আমার সাথেই আছো,

এবার চিৎকার করে কেঁদে বললো।”

—-” তুমি কেন চলে গেলে? আমাকেও তোমার কাছে নিয়ে যাও। আমি বাঁচতে চাই না আমি মরতে চাই। আমি তোমার কাছে আসতে চাই। কিন্তুু ওরা আমাকে তোমার কাছে আসতে দেয় না। তুমি আমার কাছে এসো। প্লিজ #ফিরে এসো ভালবাসা,

শুভ্রর এরকম আর্তনাদে মানসিক হসপিটালের ডক্টরসহ পাগলদেরও হৃদয় কেঁপে ওঠে। আর এটা গত ৩বছর ধরেই হয়ে আসছে। শুভ্র কখনো হাসে আবার কখনো কাঁদে। যখন ও কাঁদে ওর কান্নায় সবাই কাঁদতে বাধ্য হয়। এটাই হয়তো ওদের নিয়তি ছিলো। তাই দুজনে এক হয়েও আলাদা হয়ে গেলো। একজন কবরে আরেকজন মানসিক হসপিটালে।”

#সমাপ্ত…

“এখন অনেকে বলবেন আমি এমন কেন করলাম? দেখুন গল্পের নাম দেখে অনেকেই এন্ডিং বুঝতে পেরেছিলো। এখন হয়তো এটাও বলবেন। যে গল্পটা চাইলে অন্যভাবেও শেষ করা যেতো। আমি জানি আমি চাইলেই অন্যভাবে শেষ করতে পারতাম। কিন্তুু সব গল্পের এন্ডিং কিন্তুু হ্যাপি হয় না। আর সব ভালবাসাও সুখের হয় না। আমি নিজেও লেখতে গিয়ে বারবার লেখা বন্ধ করেছি। আমারও অনেক খারাপ লাগছে। বারবার মনে হচ্ছে শুভ্র ক্যারেক্টারের সবকিছু আমার চোখের সামনে ভাসছে। আশা করি কোন বাজে কমেন্ট আসবে না ধন্যবাদ”

2 মন্তব্য

  1. Story ta khub khub valo….😊💟
    Jani sob❣ valobasa purnota pai 💔na ….but
    Story ta khub 😔emotional…..
    😔😔😔😢😭😢😔😔😔…….
    Try korle hoy to onno rokom hote parto story tar ending ta❤🤍❤ …….
    Aii story pore khub kosto 😔hocca amar…….😣
    Valo thakuk sobar Bhalobasha 🖤🖤🤍🖤🖤…..

    R🙏🙏 sorry aii comments korar jonno……ame aii story pore bujhte parci na….J ki comments korbo ….😕😕😕

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে