part_6
#Writer_Farzana
আসলে অপেক্ষা আর কষ্টের প্রহরগুলি খুব slowly যায়। প্রত্যেকটা second একেক টা দিন মনে হয়। বহুকষ্ট সয়ে অতিকষ্টের এই ৪ টা মাস পার করলাম। এই ৪ টা মাসে ফাল্গুনের ফুলের কোনও খোঁজই আমি জানিনা ?। আমার important project গুলিতে মন বসানো খুবই জরুরী ছিল। কিন্তু কিভাবে বসাবো মন.. মনতো রেখে এসেছি ফাল্গুনের ফুলের কাছে। কাল ওর result বের হয়েছে। কিন্তু নেছারকে সাহস করে আর call করে ওঠা হয়নি। না জানি কি মনে করে। কিন্তু আর পারছিনা, অপেক্ষা আর কষ্টের প্রহরগুলি যেন বেড়েই চলেছে। এদিকে বাবাও বিয়ের জন্যে খুব চাপ দিচ্ছে। নাহ, আজ নেছারকে call করেই ফেলবো। শুধু call-ই করবো না, বরং সাহস করে সবকিছু বলেই ফেলবো। যা মনে করে করুক। এক্ষনি call করবো, হ্যা এক্ষনি।
ফোনটা হাতে নিয়ে একবার নেছারের number টা বের করছি, আবার কেটে দিচ্ছি। এভাবে ১০ মি: চলে গেল। নাহ call করতেই হবে। নাহলে দেখা যাবে, সময়ের মত সময় চলে যাচ্ছে- ওদিকে ফাল্গুনের ফুলের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আর এদিকে আমি বুড়ো হয়ে আফসোস করছি- ইস সাহস করে যদি সেদিন বলেই ফেলতাম, তাহলে আজ life টাই অন্যরকম হতো। আজ আর আমার একা থাকতে হতো না। না, না, আমি দেবদাস হতে চাইনা। উফ্, আর ভাবতে পারছি না । Call টা করেই ফেলি। কিন্তু এখনতো রাত ১১:৩০ বাজে। নেছার ঘুমিয়ে পড়েনি তো ?। ঘুমিয়ে পড়েছে তো কি হয়েছে। উঠবে, উঠে কথা বলবে আমার সাথে। এখন যদি friend কাজে না আসে, তাহলে তো friendship day-র কোন মূল্যই থাকেনা। আবার ফোনটা হাতে নিলাম, call দিলাম। রিং হচ্ছে- আর আমার heartbeat টা পণ্যের দামের মতো দ্রুত গতিতে বেড়েই চলেছে। নেছার call টা receive করলো না। মনে মনে বললাম, বাঁচলাম। আবার মনে হলো-এই বাঁচা কি বাঁচা নাকি, এর থেকে মরে যাওয়াই তো ভালো। আবার call করলাম, receive করলো এবার।-
Samir: হ্যালো..
Nesar: হ্যালো, কে?
Samir: এই কয়দিনে নিজের আপন বন্ধুকে ভূলে গেলি?!
Nesar: না রে। হ্যা বল, এতো busy মানুষ হঠাৎ কি মনে করে call করলো?
তারপর নেছারকে সব details বললাম। ওদের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার কথাও বললাম। আমার কথা শুনে নেছার বিনা প্রশ্নে হ্যা বলে দিলো। ফোন রাখার পর মনে হলো, ওর কথাটা কেমন ঘুম জড়ানো ছিল না?। আবার আমাকে কোনও প্রশ্নও করলো না। কেমন যেন সন্দেহ হচ্ছে। ধ্যাত, শুধু শুধু tension করছি। ওর কাছে মনে হয় ব্যাপারটা স্বাভাবিক। এমন পছন্দ করে বিয়ে তো কতো মানুষই করে। এতো দিন তো অনেক tension-ই করলাম। রাতও অনেক হয়েছে, তাই মাথাটা tension free করে ঘুমিয়ে গেলাম।
সকাল ৮:০০ টা, ফোনের শব্দে ঘুম ভাঙলো। Mobile screen এ নেছারের নাম। কাল রাতে যা বলেছি ওকে তার জন্যে এখন খুব লজ্জা করছে। লজ্জারই বা কি আছে, যা সত্যি তাই বলেছি। আর মানুষও তো বিয়ে করে। আমি না হয় friend এর student কে নিয়ে করতে চেয়েছি, এতে দোষের কি? এসব ভাবতে ভাবতে ফোনটা receive করলাম।-
Samir: হ্যালো..
Nesar: Samir, কেমন আছিস?
Samir: ভালো, তুই ??
Nesar: আমিও ?।
Samir: খালাম্মা ভালো আছে?
Nesar: হুম। জানিস কাল রাতে আমি একটা মজার সপ্ন দেখেছি ?।
Samir: তা কি সপ্ন দেখলি? ( আমার বিয়ের topic বাদ দিয়ে উনি আছেন উনার সপ্নের topic নিয়ে। এদিকে tension- এ আমার জান যায় যায় অবস্থা। ধ্যাত, ভালো লাগছে না।)
Nesar: সপ্নে দেখলাম যে, তুই আমাকে ফোন করে ফাল্গুনীর সাথে তোর বিয়ের কথা বলছিস ?।
Samir: তুই আমার সাথে ফাজলামি করিস ??
Nesar: না দোস্ত, সত্যি বলছি। সত্যি আমি এই সপ্ন দেখেছি।
Samir: ওই শালা, আমি তোকে কাল রাতে সত্যি call করেছিলাম। Call list এ দেখ।
Nesar: তুই call দিলেও বিয়ের কথা তো আর বলিসনি, তাইনা?
Samir: নাহ, এখন বলবো কেন? বিয়ের কথা তো বলবো কবরে যাওয়ার পর, এতো তাড়া কিসের ??
Nesar: ও তাহলে বলেছিস। কিন্তু ফাল্গুনীর কথা তো আর বলিসনি?
Samir: দেখ, আমার কিন্তু ভীষণ রাগ হচ্ছে ?।
Nesar: রাগ করিসনা দোস্ত। আসলে ঘুমের মধ্যে শুনেছি তো। আবার বলনা দোস্ত Plz ?…
Samir: আর বলতে পারবো না।
Nesar: Plz.. দোস্ত…
Samir: এতো কথা তো বলতে পারবো না ভাই.. তুই সোজা ফাল্গুনীদের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাবি, ব্যাস..
Nesar: হুম.. কিন্তু…
Samir: কোন কিন্তু নয়। দেখ নেছার অনেক কষ্ট সহ্য করেছি, আর পারছিনা। ওর বাবা ওকে ডাক্তার বানাতে চায় তো। ঠিক আছে, আমি পড়াবো ওকে। এখন তো আর কোন problem থাকার কথা নয়।
Nesar: না কথা সেটা না। কথা হচ্ছে- রাজি হবে তো ফাল্গুনীর বাবা ?।
Samir: সেটা তোর দায়িত্ব। আমার জন্যে এটুকু করতে পারবি না?
Nesar: তুই আমার জন্যে বেড়াতে পারিস, আড্ডা দিতে পারিস, blue কালারেে shirt পড়তে পারিস, আর আমি তোর জন্যে এইটুকু করতে পারবো না.. বল?
Samir: চুপ করবি ☺। তোকে যে দায়িত্ব দিয়েছি, তুই সেই দিকে ফোকাস কর।
Nesar: হুম,তা তো বুঝলাম। তোকে বললাম ফাল্গুনীকে একটু extra take care করতে। আর তুই শালা , একেবারে বিয়ে ?।
Samir: আরে, বিয়ে না করলে কিভাবে extra take care করবো বল? তাই এই সিদ্ধান্ত ?…
Nesar: কিন্তু ফাল্গুনী কি রাজি হবে?
Samir: তুই শুধু ওর বাবা মা কে রাজি করা। আর ওকে রাজি করানোর দায়িত্ব আমার ।
Nesar: কিন্তু কিভাবে?
Samir: (সেটা তো আমিও জানি না) তা তোকে বলবো কেন, top secret…
Nesar: হ্যা হ্যা, এখন তো top secret ই হবে।
Samir: তুই আজ বিকালেই প্রস্তাব নিয়ে যাবি।
Nesar: কিন্তু, আজ যাওয়া কি ঠিক হবে। গত পরশু ওর result বের হয়েছে, A- পেয়েছে। লতা বললো, এটা নিয়ে ওদের বাড়িতে ওর আব্বু আম্মু ওর সাথে নাকি খুব রাগারাগি করছে। তাই দোস্ত বলি কি আজ ওদের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে না নিয়েই যাওয়াই ভালো।
Samir: কি বললি, A- পেয়েছে। আমার তো ভীষণ খুশি লাগছে। দাড়া আমি আজই ১০ কেজি মিষ্টি বিলাবো?
।
Nesar: এই result শুনেই এতো খুশি। পছন্দ করিস সেজন্যে নাকি?
Samir: ও যদি ফেল করতো রে দোস্ত, তাহলে আমি ২০ কেজি মিষ্টি বিলাতাম।
Nesar: মানে কি? এটা কেমন কথা?
Samir: শোন..ছেলেরা যখন result খারাপ করে তখন তাদের বাবা মা তাদেরকে কাজে লাগিয়ে দেবে এই বলে হুমকি দেয়। আর মেয়েরা যখন result খারাপ করে তখন বাবা মা কি বলে হুমকি দেয় জানিস?
Nesar: না, কি বলে?
Samir: বলে যে.. Result খারাপ করেছিস বিয়ে দিয়ে দেবো। তোকে আর পড়াবো না। ফাল্গুনীর বাবা মাও নিশ্চয় ওকে এমন কথাই বলছে। So, আমার রাস্তা clean & clear..
Nesar: হুম, তাহলে আমি বিকালেই প্রস্তাব নিয়ে যাচ্ছি। প্রস্তাব দেয়ার পর যদি ওর বাবা মা আমাকে মারতে আসে তাহলে কিন্তু আমি বলবো, আংকেল-আন্টি দাড়ান। একটু wait করেন, এই বুদ্ধিটা আমার না আমার বন্ধুর। তাই ও আসুক, তারপরে মারবেন। এটা বলেই কিন্তু আমি দৌড় দেব।
Samir: চুপ করবি, কিচ্ছু হবে না।
Nesar: হ্যা, কিচ্ছু হবে না সে তো আমি জানিই। ফাল্গুনীর বাবা কি আর এখন ওকে বিয়ে দেবে নাকি?।
Samir: তুই বড্ড বেশী কথা বলিস। কিচ্ছু হবেনা মানে তোর কিচ্ছু হবে না।
Nesar: ও…
Samir: আর শোন, ওর বাবা মা রাজি হলে বলিস- সামনের সপ্তাহে আমি আর বাবা দেখতে যাবো।
Nesar: OK..(হ্যা, মনে মনে মন কলা খা)
Samir: আর শোন..
Nesar: বের হওয়ার আগে call করবো এই তো..
Samir: হুম। আর আমার হবু শ্বশুড় বাড়ি বলে কথা, মিষ্টি নিয়ে যাবি ১০ কেজি।
Nesar: ফাল্গুনীর বাবা যদি মনে করে উনার মেয়ে A- পেয়েছে, তাই মশকরা করতে মিষ্টি নিয়ে এসেছি। তখন কি হবে ?। দোস্ত তুই আয় না, একসাথে যাবো। ফাল্গুনীর বাবা মা যে রাগী ?।
Samir: বুঝেছি, এ জনমে আর আমার বিয়ে করা হবে না ?।
Nesar: তোর বিয়ের জন্যে কি তুই তোর একমাত্র আপন বন্ধুকে বলি দিতে চাস?
Samir: থাক তোর আর যেতে হবে না । পরে আমি যদি দেবদাস হয়ে যাই না, তখন কিন্তু কিছু বলতে পারবি না ।
Nesar: ঠিক আছে। আমি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাব।
Samir: এই না হলে দোস্ত ?।
Nesar: কিন্তু দোস্ত একটু ছাড় দেয়া যায় না। মানে, যে মেয়ে টাকে দেখতে গিয়েছিলাম ওইটাকে বিয়ে করা যায় না ??
Samir: চুপ শালা। এতোক্ষণ তোকে না বলে যদি ফাল্গুনীর বাবা মার কাছে এই request করতাম, তাহলেও তো তারা রাজি হয়ে যেতো। তুই আসলে বন্ধু নামের কলঙ্ক ?।
Nesar: Plz দোস্ত, একটু ভেবে দেখ না। Decision টা change করা যায় কিনা।
Samir: আব্বু..আব্বু…. বিষ নিয়ে আসো তো, খাব ( জোরে জোরে চিৎকার করে ডাকলাম, যদিও আব্বু বাসায় নেই)।
Nesar: এই না না। আমি বিকালেই যাব। আর ফাল্গুনী দের বাড়িতেই যাব, বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে। তুই কিন্তু আমাকে emotionally blackmail করলি।
Samir: কথা কম। বের হওয়ার আগে call দিস। রাখলাম bye….
Nesar: Bye….