প্রেয়সীর ছোঁয়া ( পর্ব ১৭)

0
903

প্রেয়সীর ছোঁয়া ( পর্ব ১৭)
জামিয়া পারভীন তানি

আফরা বারবার এরিকের ফোন অফ পাচ্ছে। নিজের ফোন অফ করে অন্যের নাম্বার দিয়ে ট্রাই করছিলো বারবার। মানসিক অশান্তি আর সহ্য করতে না পেরে নিজের ফোন অন করে। সাথে সাথে অনেক গুলো মেসেজ চলে আসে। অডিও ভয়েস ও আসে কয়েকটা।

আফরা আগে মেসেজ গুলো দেখে, মাহিরার মেসেজ সব গুলো।

“ ফোন অন কর, আম্মু হসপিটালে। ”
“ প্লিজ এরিকের ফাঁদে পড়িস না। ও একটা শয়তান, তোর ক্ষতি করবে বাজে হোটেলে নিয়ে।”

এই মেসেজ গুলো পড়ে আফরার টেনশন আরোও বেড়ে যায়। তাড়াতাড়ি করে মাহিরার দেওয়া ঠিকানায় আফরা রওনা দেয়। এক ঘন্টার মধ্যে আফরা হসপিটালে ছুটে আসে কিন্তু ততক্ষণে যা হবার হয়ে গেছে। ওর আম্মু ওদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছে।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/



আফরা গিয়ে দেখে হসপিটালে ওর আম্মুর লাশের পাশে ওর বোন কাঁদছে। আর ওর বাবা মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। আফরা ধীর পায়ে এগিয়ে যেতেই ওর বাবার নজরে পড়ে। মেহরাব চৌধুরী এগিয়ে এসে আফরার দুই গালে দুইটা চড় মেরে দেয়। এরপর বলে,
“ তোর জন্য আমি আমার ভালোবাসা কে হারিয়েছি। তুই বেরিয়ে যা আমার চোখের সামনে থেকে।”
“ আব্বু!”
“ তোর বাপ তোর কাছে মৃত! তোকে আমি ত্যাজ্য করলাম!”
“ আমাকে মারো কাটো, যা খুশি করো! কিন্তু আম্মুকে একবার দেখতে দাও। ”
“ তুই আমার মেয়ে না বলে আমার স্ত্রীর ও মেয়ে তুই নস। ”
“ আম্মুউউউউউ”

মাহিরা ওর মায়ের কাছ থেকে উঠে এসে বলে,
“ তুই আম্মুকে মেরে ফেলেছিস! সত্যিই তুই কি আমার বোন হতে পারিস?”
“ মাহিইইইইই”

মাহিরা চলে আসে আফরার কাছ থেকে। এরপর আফরা মেঝেতে বসে কাঁদতে থাকে। মাহিরা আবারো এগিয়ে আসে।
“ যার জন্য এতো কিছু করেছিস সে তোর সাথে জঘন্য খেলা খেলেছে তা কি তুই জানিস?”

আফরা তাও বসে কাঁদতে থাকে। তখন মাহিরা এরিকের সাথে রেকর্ড ভয়েস শুনায়। এতে আফরা আরোও ছোট বাচ্চার মতো কাঁদতে শুরু করে।

ততক্ষণে মাহিরার মায়ের রিলিজ হয়ে যায়। আর মাহিরা কে ওর বাবা টানতে টানতে নিয়ে আসে। আফরা একই জায়গায় অনেক্ষণ বসে থাকে।

এরপর কিছুটা শান্ত হয়ে এরিক কে ফোন দেয় আবারোও। সাথে সাথে এরিক বলে উঠে,
“ তুই কি ভেবেছিস আজ পালিয়ে গেছিস বলে তুই বেঁচে যাবি! তোর লাইফ ধ্বংস করেই ছাড়বো। সাথে তোর বোন কেও রেপ করবো। ”

“ তোর সাহস থাকলে তুই সামনে এসে কথা বল। সব কিছু রেকর্ড করা আছে। পুলিশের কাছে দেওয়ার অপেক্ষা মাত্র। ”

“ কি ভেবেছিস কি তুই? তোর কাছে বোকা বনেছি বলে বারবার বোকা বানাবি তুই আমাকে! তুই কিছু করার আগেই তোর বোন কে কব্জা করবো। ”

আফরা ফোন কেটে দিয়ে তাড়াতাড়ি করে হসপিটালের পুলিশের কাছে ডিটেইলস বলে। আর রেকর্ড টা শুনায়। এরপর মাহিরা কে ফোন দেয় আফরা। মাহিরা রিসিভ করতেই আফরা বলে,

“ তুই পালিয়ে যা মাহি, এরিক তোর ক্ষতি করবে। ”
“ আর কি করবে বল! ”
“ প্লিজ মাহি তুই থানায় চলে যা। আমি ওখানে ই থাকবো। ”
“ থানায় কেনো? ”
“ ওটাই তোর জন্য সেফ হবে। ”

এদিকে মাহিরার বাবা বুঝতে পারছেনা কেনো মাহিরা কে থানায় যেতে বলেছে আফরা। মেহরাব চৌধুরী বারবার নিষেধ করেছে যেনো থানায় না যায়। কিন্তু মাহিরা ভয়ে পার্শ্ববর্তী থানায় গিয়ে বসে থাকে।
মাহফুজা চৌধুরীর মানে মাহিরার মেয়ের লাশ দাফন হবার পর বাসায় ভিড় কমার সাথে সাথে কিছু অস্ত্রধারী মেহরাব চৌধুরীর বাসায় তান্ডব চালায়। মাহিরা কে খুঁজতে এসেছিস তারা , না পেয়ে সব কিছু নষ্ট করে রেখে গেছে। এমনকি মেহরাব চৌধুরী কেও আঘাত করে রেখে গেছে।

এতো সব কিছুর জন্য মেহরাব চৌধুরীর মনে ক্ষোভের জন্ম হয়। সব দোষ আফরার, ও এমন ভুল না করলে ওদের সাজানো সংসার নষ্ট হয়ে যেতো না।

আফরার কথা মতো বাসায় কিছু পুলিশ এসে মেহরাব চৌধুরী কে হসপিটাল এ প্রাথমিক চিকিৎসা করায়। যা শুধু মাহিরা জানে। এরপর আফরা মাহিরা কে বলে,

“ তোরা বাংলাদেশ চলে যা। ”
“ আর তুই! ”
“ সময় হলে যাবো রে। ”
“ এরিক তোর যদি ক্ষতি করে? ”

এমন সময় এক পুলিশ অফিসার এসে বলে,
“ আর ক্ষতি হবেনা , এরিক কে গ্রেফতার করা হয়েছে। ”

আফরা তখন মাহিরা কে বলে,
“ আব্বু আম্মুকে অনেক ভালোবাসতো। সেই দুর্বিষহ স্মৃতি ভোলাতে তোর যাওয়া উচিৎ মাহি। ”
“ তোকে ছাড়া কিভাবে যাই বল। ”
“ দেখ মাহিরা, আমার ভুলে আম্মু কে হারিয়েছি, শেষ দেখাও দেখতে পাইনি। আমি চাইনা যে আমার জন্য আব্বুর ক্ষতি হোক। আমি নিজেকে সেফ রাখতে জানি। বাট আব্বুর ক্ষতি হতে দিস না তুই। এখন থেকে আব্বুর সব দায়িত্ব তোর। কথা দে তুই দেখে রাখবি। ”

“ হুমম। ”

১০ দিনের মধ্যে সব ব্যবস্থা করে মাহিরা আর ওর বাবা বাংলাদেশ চলে আসে।

“ আর নাইট হোটেলে তোমার কেউ কোনো ক্ষতি করেনি তাই বলছো তুমি? ”

আফরার সব কথা শেয়ার শেষে আদনান এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে।

চলবে……

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে