প্রেয়সীর ছোঁয়া ( পর্ব ১৪)

1
892

প্রেয়সীর ছোঁয়া ( পর্ব ১৪)
জামিয়া পারভীন তানি

আফরাকে কেবিনে নেওয়া হয় একদিন পর। আদনান ওর পাশে গিয়ে বসে। আফরার জ্ঞান ফিরলেও পুরোপুরি সুস্থ নয়, সেইজন্য ঘুমের ওষুধ দেওয়া হয়েছে। আফরার ঘুমন্ত নিস্পাপ মুখের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকে আদনান। আফরার কপালে নিজের মাথা ঠেকিয়ে ছোট বাচ্চাদের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে আদনান। পানি আফরার চোখে পড়ায় আফরা নড়ে উঠে। আদনান মাথা তুলতে দেখে আফরা চোখ মেলে তাকিয়ে আছে।

কিন্তু আফরার চোখের নিচে কালি পড়েছে, মনে হচ্ছে কতো দিনের রোগী।
“ কি দেখছো ওভাবে? ” ধীর গলায় বললো আফরা।
“ খুব কষ্ট পেয়েছো তাইনা! ভালো হয়ে যাবে তুমি দেখিও। ”
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/



এমন সময় নতুন কয়েকজন পুলিশ আসে। আদনান আফরার মাথার কাছে বেড়ের পাশে উঠে দাঁড়ায়। নতুন পুলিশ আফরাকে জিজ্ঞেস করে,

“ কি হয়েছিলো ম্যাম, বলবেন? ”
“ আদনান বাইরে যাবার পর আমি ব্যাগে থাকা ফল কাটছিলাম, কলিংবেলের শব্দে দরজা খুলতে গিয়ে দেখি এরিক দাঁড়িয়ে আছে। আমার কিছু বুঝে ওঠার আগে সে আমার নাকে রুমাল চেপে ধরে। নিজেকে সেভ করতে হাতের ছুরি মেরে দিই। এরপর আমার নিজের মাথা ঘুরে ওঠে। আর কিছুই মনে নেই আমার। ” খুব ক্ষীণ স্বরে আফরা কথাগুলো বলে।

“ ওই লোকের নাম এরিক?? তার মানে ওই ই সেই জানুয়ার! ” আদনান রেগে কথাগুলো বলে।

পুলিশ দের একজন বলে,
“ এরিক কে কিভাবে চিনতেন, মিসেস আফরা চৌধুরী! ”

“ এরিক আমার মামনির ফুপাতো ভাইয়ের ছেলে। তাই চিনতাম, সে অনেক ক্ষতি করেছে আমাদের।”

“ কি রকম ক্ষতি! ”

“ যখন আমরা ছোট ছিলাম, মানে আমরা জমজ বোন ছিলাম। ”

“ আপনার বোন কোথায়? ”

“ ওকে হত্যা করেছে। ”

“ কে? ”

“ বাংলাদেশে গিয়ে খুন হয়েছে, সেখানে এখনো খুনের তদন্ত চলছে। ”

“ তারপর! সব খুলে বলুন? ”

“ মাহিরা আর আমি এরিকের সাথে খেলতাম প্রায়ই। ফুপি প্রায়ই এরিক কে নিয়ে বাসায় আসতো! এভাবেই বড় হতে থাকলাম। কিন্তু মাহিরা ছিলো খুব ভদ্র আর আমি খুব রাগী জেদি। দেখে মনেই হতো না আমরা দুই বোন ছিলাম। তবে ওর কষ্ট লাগলে আমি অনুভব করতে পারতাম। আর আমি কষ্ট পেলে মাহিরা ও একই কষ্ট পেতো! আমরা একে অপরকে খুব স্বাভাবিক ভাবেই বুঝে যেতাম। বয়স বাড়তে থাকে, হরমোনের চেঞ্জ হয়, সাথে মানসিক অবস্থার ও। ”

আফরা থেমে গেলো কিছুক্ষণ, এরপর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,

“ আমি এরিক কে ভালোবেসে ফেলেছিলাম, খুব স্বপ্ন দেখতাম তাকে নিয়ে। ছোটো বয়সের রঙিন স্বপ্নে বিভোর ছিলাম। তখন ছিলাম ক্লাস টেনে। ভাবলাম এরিক কে পছন্দের কথা জানাবো! কিন্তু…”

আফরা আদনানের দিকে তাকালো, হয়তো বোঝার চেষ্টা করছে ছোট বয়সের প্রেমের কথা শুনে আদনান কি রকম রিয়েক্ট করে। আদনান আফরা কে ইশারায় বলতে বললো, আফরা আবার শুরু করে।

“ আমি এরিকের বাসায় যাই, বলার উদ্দেশ্যে। কিন্তু ওর রুমে গিয়ে দেখি শুধু মাহিরার ছবি। ”

“ ছবি গুলো মাহিরার বুঝলেন কিভাবে! আপনারা না জমজ? ”

“ জমজ হলে কি হবে? ড্রেস তো আলাদা পড়তাম। আর মাহিরার চোখে সব সময় লাজুক আভা থাকতো! আর আমার চোখেমুখে রাগী আভা! ”

“ ও আচ্ছা! এরপর.. ”

“ মাহিরার ছবি দেখে একটু অবাক হই, যাকে পছন্দ করি সে অন্য কাউকে পছন্দ করে এটা ভাবতেই পারছিলাম না। এরপর এরিকের খাতা বই সব কিছুতেই মাহিরার নাম দেখে কষ্ট বেড়ে যায় আমার। বাসায় এসে দরজা লাগিয়ে প্রচুর কাঁদি। বয়স ছোটো ছিলো, আবেগ বেশী ছিলো। পরে সব কিছু ভুলার চেষ্টা করি, এক তরফা প্রেম ছিলো বলে। ”
একদিন মাহিরা এসে খুব কান্না শুরু করে। মাহিরা কে আফরা জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে। কিন্তু মাহিরা কিছুতেই বলছিলো না। পরে আফরা মাহিরা কে জোর করে বলার জন্য। মাহিরা আফরার গলা জড়িয়ে ধরে বলে,

“ এরিক আমাকে প্রপোজ করেছে, কিন্তু তুই ই বল, ও তো আমার ভাই হয়। কিভাবে ওর প্রস্তাবে রাজি হবো? ”

“ তুই কি বলিস এসব! এরিক এতো নিচে নেমে গেছে? “

“ প্লিজ তুই কিছু বল ওকে, আমি ওর সাথে রিলেশন করতে চাইনা!”
মাহিরার চেহেরাটা লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। সে সত্যিই এরিক কে ভাই মনে করে। তখন আফরা মাহিরা কে বলে,
“ বিষয় টা তুই আমার উপর ছেড়ে দে। আমি এরিক কে সামলিয়ে নিবো বুঝলি। ”

“ কিভাবে? “

“ তুই খালি আমার সাথে থাকিস। তাহলেই সব ঠিক থাকবে। ”

“ তুই যা বলবি তাই হবে। ”

আফরা মনে মনে খুব খুশি হয়, অন্তত মাহিরা তো এরিক কে ভালোবাসে না! আরেকটা চান্স সে পাবে, সেটার সৎ ব্যবহার করতে পারবে ভেবে খুব খুশি হয়। কিন্তু আফরার জন্য কি বিপদ অপেক্ষা করছে সেটা বুঝতে পারেনি ছোট্ট আফরা।

চলবে…..

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

1 মন্তব্য

Leave a Reply to Saiful উত্তর বাতিল

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে