#প্রেম
#পর্বঃ১২
#Tanisha Sultana
মিষ্টির ফোন বেজে যাচ্ছে। রিসিভ করার সাহস পাচ্ছে না। ফোনটা রিসিভ করতে যাবে তখন মিষ্টির ডাকে। মিষ্টি ফোনটা রেখে মায়ের কাছে চলে যায়।
রাত দশটা মিষ্টি রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দেয় জীমকে ফোন দেবে বলে। দরজা বন্ধ করে পেছনে তাকিয়ে দেখে জীম চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে মিষ্টির বিছানায়।
“আপনি এখানে
জীম লাভ দিয়ে উঠে মিষ্টিকে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে মিষ্টির গলা চেপে ধরে
” খুব বার বেরেছিস তুই তাই না। আমার ফোন রিসিভ করিস না ফোন ওয়েটিং পায়। কি ভেবেছিস তুই আমাকে ধোকা দিবি। জানে মেরে দেবো তোকে
মিষ্টি শ্বাস নিতে পারছে না। গলাটা ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। মিষ্টির চোখ বড় হয়ে গেছে। জীম মিষ্টির গলা ছেড়ে দেয়। মিষ্টি গলা ধরে কাশতে থাকে। জীম একটু ভয় পেয়ে যায়।
মিষ্টি একটু ঠিক হয়
“কার সাথে কথা বলছিলি?
জীম স্বাভাবিক ভাবে জিজ্ঞেস করে।
মিষ্টি বিছানায় বসে তুতলিয়ে বলে
” কককৃশশ ফোন দিছিলো
জীমের রাগটা এবার মাথায় চেপে বসে। চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে। কান দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে। মিষ্টির গাল চেপে ধরে বলে
“খুব ভালো লাগে না কৃশ কে? খুব ভালো লাগে? প্রেম করবি? হাত ধরে হাটবি তাই না
মিষ্টি জীমের গালে আলতো করে হাত দিয়ে বলে
” জীম সে রকম কিছু না
জীম মিষ্টির হাতটা ঝারি দিয়ে সরিয়ে বলে
“তাহলে কি রকম? এবার বলবে আমি বুঝবো না। সত্যি আমি বুঝি না আর বুঝতে চাই ও না। শুধু তুই বুঝে নে। তুি আমার #প্রেম আর আমি আমার প্রেমকে কাউকে দেবো না। বুঝলি
চিৎকার করে বলে জীম। মিষ্টির চোখ দিয়ে পানি পরছে। মাথা নিচু করে কাঁদছে মিষ্টি। জীম মিষ্টির পাশে বসে চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করে। রাগ কিছুটা কমলে মিষ্টির মাথাটা জীম ওর বুকের ওপর চেপে নেয়
” প্লিজ মিষ্টি কেঁদো না। তোমাকে হার্ড করতে চাি নি বাট আমি কি করবো বলো রাগটা কন্ট্রোল করতে পারি না। তুমি কেনো কৃশের ফোন রিসিভ করলে?
মিষ্টি কান্না থামায়। চোখ মুছে জীমের দিকে তাকিয়ে বলে
“রাগটা কমান জীম। আপনার এই রাগটাই একদিন আপনাকে আমার থেকে দুরে করে দেবে। হারিয়ে ফেলবেন আমায়
জীম মিষ্টিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে
” তোমাকে আমার থেকে কেউ আলাদা করতে পারবে না। কেউ না
দুজনই চুপ।
“জীম এবার যান প্লিজ। মা বাবা চলে আসবে
জীম মিষ্টির কপালে চুমু দেয়
” ঠিক আছে। সকালে দেখা হচ্ছে।
জীম বেলকানি দিয়ে লাফিয়ে চলে যায়। মিষ্টি জীমের যাওয়ার দিকে কিছুখন তাকিয়ে বেলকনির দরজা বন্ধ করে পড়তে বসে।
পাঁচটার সময় মিষ্টির বাবা মিষ্টিকে ডেকে তোলে মিষ্টি উঠে ওজু করে জীমকে ফোন দেয়। পাঁচবার রিং হওয়ার পরে জীম ফোন রিসিভ করে ঘুমঘুম কন্ঠে বলে
“হুম বলো
” ঘুম থেকে উঠুন। ওজু করে নামাজ পরুন
“কাল থেকে পরবো। আজ ঘুমায় প্লিজ
” ঠিক আছে তাহলে কালকে দেখা করবো আজ না করলাম প্লিজ
জীম লাভ দিয়ে উঠে বসে
“ঠিক আছে পরছি
” গুড বয়। লাভ ইউ
“টু
” কি টু
“লাভ ইউ টু
” গুড। বাই
মিষ্টি ফোন রেখে নামাজ পড়ে।
রিকশার জন্য দাঁড়িয়ে আছে মিষ্টি। জীম মিষ্টির সামনে বাইক থামায়।
“ওঠো
” না
“জোর করতে ইচ্ছে করছে না।
” হেলমেট দেন
জীম মিষ্টিকে হেলমেট পরিয়ে দেয়।তারপর মিষ্টি উঠে বসে।পেছন থেকে জীমকে জড়িয়ে ধরে বসে মিষ্টি
“এভাবে ধরো না প্লিজ এক্সিডেন্ট করবো তো
” কেনো
“তুমি এমন ভাবে ধরলে তো আমি অন্য জগতে চলে যাচ্ছি
মিষ্টি জীমের পিঠে একটা থাপ্পড় মারে
” পাগল
“তোমার জন্য
জীম মিষ্টিকে নিয়ে রেজিস্ট্রি অফিসে আসে। মিষ্টি বাইক থেকে নেমে অবাক হয়ে যায়
” জীম আমরা এখানে আসলাম কেনো?
“বিয়ে করবো তাই
” কিহহহহ
“হুম চলো
” জীম আপনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে
“তোমার জন্য আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আমি পাগল হয়ে গেছি
চিৎকার করে বলে জীম। মিষ্টির চোখ দিয়ে পানি পরছে। মিষ্টির মাথা কাজ করছে না। কি করবে ভেবে পাচ্ছে না।
” ভেতরে চলো
মিষ্টি কান্না করতে করতে বলে
“জীম প্লিজ বাবা মাকে আমি ঠকাতে পারবো না। তাছাড়া আমাদের তো বিয়ের বয়সও হয় নাই
” তোমার কান্নায় আমি ভুলছি না। চলো
জীম মিষ্টির হাত ধরে ভেতরে নিয়ে যায়। ভেতরে গিয়ে আরো অবাক হয় জীম। কারণ ওখানে ছায়া তিথি আকাশ আর জীমের দুটো ফ্রেন্ড।
“ভাই এতো দেরি হলো যে (ছায়া)
” তোমার বোনের জন্য
মিষ্টি কান্না করেই যাচ্ছে। উকিল রেজিস্ট্রি পেপার রেডি করছে।মিষ্টি চোখের পানি মুছে বলে
“আমি বিয়েটা করবো বাট আমার একটা কন্ডিশন আছে
” বলে ফেলো
“তোমাকে প্রমিজ করতে হবে আমাদের বিয়ের কথাটা কেউ জানবে না। যেদিন সবাই জেনে যাবো সেদিন আমি সুইসাইড করবো।
” তাহলে বিয়েটা করছি কেনো
“আপনি জব না পাওয়া পর্যন্ত। বিয়েটা করছেন আপনার জেদের জন্য।
” ঠিক আছে রাজি
মিষ্টির চোখের পানি বাধ মানছে না। #প্রেম মিষ্টিকে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে আসলো। বাবাকে ঠকাচ্ছে মিষ্টি। ফিউচারে কি হবে কিছুই মিষ্টির জানা নেই। হয়ত এর থেকেও খারাপ কিছু হবে। জীম অলরেডি রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করে দিয়েছে। এখন মিষ্টির পালা।
কলম হাতে বসে আছে মিষ্টি। এই একটা সাইন ওর জীবনটা পাল্টে দেবে। বাবা মায়ের থেকে ওকে আলাদা করে দেবে। জীম তো কথায় কথায় বকা দেয় রাগ করে কষ্ট দেয়। হয়ত আজকের পর থেকে আরও কষ্ট দেবে।
“মিষ্টি সাইন করো।
জীমের কথায় মিষ্টির হুশ ফেরে। কাঁপা কাঁপা হাতে সাইন করে দেয়। সাইন করে জোরে কান্না শুরু দেয়। তখন মিষ্টির বাবা ফোন দেয়।
মিষ্টি বাইরে এসে চোখের পানি মুছে পানি খেয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে ফোনটা রিসিভ করে
” হেলো
“সোনা তুৃমি কলেজে যাও নি
” আসলে বাবা আজ দুই বেল হয়েছে। তাই তিথিদের বাসায় এসেছি। কোচিং করে বাসায় যাবো। কেনো কিছু হয়েছে
“কিছু হয় নি। সকালে কলেজে আসার সময় তোমাকে দেখি নি তাই তোমার কলেজের ওখান দিয়ে যাচ্ছিলাম তাই ভাবলাম তোমাকে একটু দেখে যায়। কিন্তু তোমার ক্লাসে গিয়ে দেখলাম কেু নেই তাই আর কি
” ঠিক আছে আমি কলেজে আসছি
“আসতে হবে না। সাবধানে বাসায় যাবে ওকে
” ওকে বাবা
“লাভ ইউ মামনি
“লাভ ইউ টু
ফোন কেটে মিষ্টি আবার হুহু করে কেঁদে ফেলে। বাবা আমাকে এতো ভালোবাসে আর আমি তাকে ঠকালাম। আমি পাপ করে ফেলেছি।
জীম মিষ্টিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে মিষ্টির কাঁধে থুনতি রেখে বলে
” আমার বউটা একরু বেশিই ভাবছে। সে কি জানে না তার কান্না আমার সয্য হয় না।প্লিজ কান্না থামাও সব ঠিক হয়ে যাবে।
মিষ্টি জীমকে জড়িয়ে ধরে। জীম মিষ্টির মাথায় হাত বুলায়।
আজ আর মিষ্টির কোচিং করা হয় না। সারাদিন জীমের পাশে মন মরা হয়ে বসে ছিলো
চলবে