#প্রেম
#পর্বঃ৮
#Tanisha Sultana
“জানো কতো টেনশনে ছিলাম। কোথায় কোথায় খুঁজেছি তোমায়?
” সরি। আসলে
“তোমাকে ছাড়া আমার চলবে না। খুব করে চাই তোমায়
” ছাড়ুন আমায়
জীম মিষ্টিকে ছেড়ে দেয়। মিষ্টি দুরে গিয়ে দাঁড়ায়।
“আপনি এখানে
” তোমার কাকিমা আমার ফুপি
“কিহহহহ
” হুম।
মিষ্টির হাত ধরে
“আমাকে ফোন দিয়েছিলে কেনো?
মিষ্টি মাথা নিচু করে বলে
” আসলে আমি ভেবেছিলাম আপনি খুঁজবেন তাই
“আমি খুজলে তোমার কি? তুমি তো আমাকে মিছ করো না
” আসলে
“আসলে
” মানে
“মানে
জীম মিষ্টির দিকে তাকিয়ে উওরের অপেক্ষা করছে। মিষ্টি নিজে নিজে ভাবছে
” তাই তো আমি কেনো ওনাকে ফোন দিলাম? কেনো ওনার কথা ভাবি? বাই এনি চান্স আমি কি ওনার প্রেমে পড়ে গেলাম। ধুর ধুর কি ভাবছি
জীম মিষ্টির সামনে হাত নারিয়ে বলে
“হেলো কই গেলে
” ডু ইউ লাভ মি
মিষ্টির প্রশ্নে জীম হকচকিয়ে যায়
“মানে
” বুঝতে পারছেন না
“নাহহ
” কেনো আমাকে বিরক্ত করেন, কেয়ার করেন, খুঁজেন কেনো? নিশ্চয় কোনো কারণ আছে? সেই কারণটা কি? ভালোবাসেন আমার সাথে প্রেম করতে চান এই জন্য পিছে ঘুরেন না কি অন্য কিছু
“ছোট মাথায় এতো প্রশ্ন ঢুকলো কি করে?
” এন্সার কিন্তু পাই নি
এমন সময় মিষ্টির দরজায় কড়া নারে। মিষ্টি ভয় পেয়ে যায়।
“নিশ্চয় বাবা না হয় মা এসেছে এখন কি হবে?
” রিলাক্স
“আরে রাখেন আপনার রিলাক্স। আপনাকে আর আমাকে এক ঘরে দেখলে বাবা আমাকে মেরে ফেলবে
” আরে আমি বেলকানি দিয়ে চলে যাচ্ছি
“হুম তারাতাড়ি যান
জীম বেলকানি দিয়ে লাফিয়ে চলে যায়। মিষ্টি দরজা খুলে দেয়। মিষ্টির মা এসেছে খাওয়ার জন্য ডাকতে।
সবাই এক সাথে ডিনার করে যে যার রুমে চলে যায়।
অনেক রাত ওবদি বই পড়ার ফলে একটু দেরিতে মিষ্টির ঘুম ভাঙে। চোখ খুলে দেকে জীম এক দৃষ্টিতে মিষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে। মিষ্টি এক লাফে উঠে বসে। এলোমেলো চুল, চোখ দুটো ফোলা ফোলা। এরকম এলোমেলো ভাবে মিষ্টিকে দেখে জীম নতুন করে মিষ্টি #প্রেমে পড়ে যায়।
মিষ্টি ওড়না খুজছে। মিষ্টির ওড়নার ওপর জীম বসেছে।
” এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?
“তোমাকে দেখছি?
” আগে দেখেন নাই
“দেখছি বাট এভাবে প্রথম দেখলাম
” উঠুন
“কেনো
” প্লিজ
জীম উঠে দাঁড়ায়। মিষ্টি ওড়না গায়ে জড়িয়ে নেয়।
“দেখুন এভাবে যখন তখন আমার রুমে আসবেন না
” কেনো?
“আমার পছন্দ নাহ
” ঠিক আছে
তারাতড়ি ফ্রেশ হয়ে নিচে এসো।
জীম চলে যায়। মিষ্টি ফ্রেশ হয়ে রুমে বসে আছে। ছায়া আসে
“মিষ্টি চল পার্লারর যাবো
” কেনো?
“কেনো আবার সাজতে। আপুর শশুর বাড়ি যাবো হলুদ দিতে
” বাবা আমাকে যেতে দেবে না
“কাকায় তো রাজি হয়ে গেছে
” সত্যি
“হুম
” পাঁচ মিনিট বসো আমি আসছি।
মিষ্টি যেতে গিয়েও থেমেযায়।
“কি হলো মিষ্টি
“আমার কোনো শাড়ি নেই
” কে বলেছে আমার সোনাটার শাড়ি নেই।
মিষ্টি সামনে তাকিয়ে দেখে মিষ্টির মা হাতে একটা হলুদ শাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
“মা
” তোমার শাড়ি। এবার যাও
“লাভ ইউ মা
মাকে জড়িয়ে ধরে বলে মিষ্টি
” লাভ ইউ টু সোনা।
মিষ্টি মায়া আর ছায়া সাজছে। পার্লার থেকে বিউটি শেয়ান আনা হয়েছে।
সবার সাজ মোটামুটি কমপ্লিট। মিষ্টি লাল পেরে হলুদ শাড়ি সাথে মেচিং ব্লাউজ চোখে মোটা করে কাজল ঠোঁটে লাল টকটকে গাড়ো লিপস্টিক চুল গুলো খোপা করে ফুলের গাজরা আর কাচা ফুলের গহনা। দারুণ লাগছে মিষ্টিকে। সবার নজর মিষ্টির দিকে।
সকালের পারে মিষ্টি আর জীমকে দেখে নি। ছেলের বাড়ি থেকে হলুদ দিতে চলে এসেছে। মিষ্টি মিষ্টির বাবা মা ভাইয়ের সাথে ছবি তুলছে।৷
“আপি ওদিকে চলো
” কেনো রে?
“তাজ ও দিকে কেনো যাবে (বাবা)
” গেলে কি হবে
“যাবে না মিষ্টি। তুমি যাও (মা)
” আপি যাবে।
তাজ হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় মিষ্টিকে।
“তাজ কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস আমাকে
” আর একটু
তাজ মিষ্টিকে টেনে ছাঁদে নিয়ে আসে।
“এখানে কেনো আনলি
কে শোনে কার কথা তাজ দৌড়ে চলে যায়। ছাঁদে লাইট জ্বলছে। ছাঁদটাও সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।
” যাক এসেছি যখন কয়েকটা ছবি তুলি
“আমি কি হেল্প করবো ছবি তুলতে
হঠাৎ কারো কতা শুনে মিষ্টি চমকে ওঠে
চলবে
#প্রেম
#পর্বঃ৯
#Tanisha Sultana
“আপনি
” কেনো তুমি কি অন্য কাউকে আশা করেছিলে না কি?
“না মানে
“তোমার আগে পিছে অন্য কেউ থাকবে না। শুধু আমি থাকবো বুঝছো
মিষ্টির দিকে ঝুকে বলে জীম। মিষ্টি কাচুমাচু হয়ে বলে
” হুম
জীম একটু সরে দাঁড়ায়।
“তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে
” হুম
“কি হুম
” কিছু না। এখানে আপনি
“আমি তোমাকে এখানে আনতে বলেছি তাজকে
” কিন্তু কেনো?
“বারে আমার জানটা এতো সুন্দর করে সেজেছে আর আমি দেখবো না
” ওকান থেকেও তো দেখা যেতো
“নিজের নিজিস কেউ দুর থেকে দেখে না কি
” আমি যাই
মিষ্টি যাওয়ার জন্য পা বারাতে জীম মিষ্টিকে টেনক নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। তারপর মিষ্টির কানে ফিসফিস করে বলে
“আমি না চাইলে তুমি কখনোই আমার থেকে দুরে যেতে পারবে না।
আমি চাইও না আপনার থেকে দুরে যেতে। আপনার সাথে থাকতে চাই। শুধু একবার বলুন ভালোবাসি একবার
মনে বলে মিষ্টি। মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না
” ওই ফুলটুসি কিছু বলো
“ছেড়ে দিন প্লিজ
” আমার কাছে থাকতে ভালো লাগে না
“নাহ
জীম মিষ্টিকে ছেড়ে দেয়। অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়
” যাও
মিষ্টি ছাঁদের দরজার কাছে এসে পেছন ঘুরে বলে
“প্রপোজ না করে প্রেম করাটা ঠিক না। আগে সুন্দর করে প্রপোজ করুন তারপর চুটিয়ে প্রেম করবো
বলেই মিষ্টি চলে যায়। জীম বুঝার চেষ্টা করছে মিষ্টি কি বললো
” ওহহহ এই বেপার প্রপোজ করতে হবে। ঠিক আছে
সবাই মিলে ছেলের বাড়িতে যাচ্ছে। সবাই বলতে মেয়েরা। সবাই গাড়িতে বসে পড়েছে। গাড়ি ছাড়বও তখন জীন এসে বলে ও যাবে। জীমের মা জীমকে যেতে বারন করে কিন্তু জীম যাবেই। গাড়িতে মিষ্টির পাশে বসে জীম। গাড়ি চলতে শুরু করে। যে যার মতো গল্পে ব্যস্ত।
“আপনি আসলেন কেনো?
” তুৃমি না বললে প্রপোজ করতে।
“তো আপনি এখানে প্রপোজ করবেন না কি
” তুমি বললে করবো
“পাগল
” তোমার জন্য
মিষ্টি কিছু না বলে বাইরের দিকে তাকায়। জীম পাশে বসায় খুব ভালো লাগছে মিষ্টির। এখানেই যদি সময়টা থেমে যেতো কতো ভালো হতো। জীম মিষ্টির হাত ধরে। মিষ্টি কিছু বলতে যাবে তার আগেই জীম বলে
“একদম কোনো কথা বলবে না। কেউ বুঝতে পারলে সমস্যা হবে
মিষ্টি আর কিছু বলে না। শুধু একটু পরপর জীমের দিকে তাকায় আর মুচকি হাসে। জীম বেপারটা খেয়াল করলেও কিছু বলে না।
ছেলের বাড়ির সামনে গাড়ি থামে। একএক করে সবাই নামছে। মিষ্টি জীম আর ছায়া পেছনে বসেছিলো তাই ওরা সবার পারে নামে।
ছায়া আর মিষ্টি হাত ধরে হাটছে। জীম আর আকাশ (মিষ্টির কাজিন) ওদের পিছনে যাচ্ছে।
সবাই বসে আছে। মায়ার দেবর আসে ওদের সাথে পরিচয় করতে। ছায়াকে চেনে। কিন্তু মিষ্টিকে আজ প্রথম দেখছে। কৃশ মিষ্টির পাশে একটা চেয়ার টেনে বসে। জীম মিষ্টির সামনে বসেছে।
” বিয়ান ও কে? ছায়াকে জিজ্ঞেস করে কৃশ
“আমার ছোট কাকার মেয়ে মিষ্টি
” তাহলে তো মিষ্টিও আমার বিয়ান। হেলো বিয়ান আমি কৃশ আপনার দুলাভাইয়ের ছোট ভাই।
কৃশ হাত এগিয়ে দেয়। মিষ্টি কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। জীম মিষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে। জীম ভেবেছে মিষ্টি হাত ধরবে না। কিন্তু মিষ্টি কৃশের হাত ধরে হাসি মুখে বলে
“হাই
“এতো কিউট করে হেসো না প্লিজ আমি পাগল হয়ে যাবো
” হাতটা ছাড়ুন প্লিজ
কৃশ হাত ছেড়ে বলে
“ওহহ সরি। আসলে হাতটা এতো সুন্দর যে ছাড়তেই ইচ্ছে হয় না।
” আই নো আমি অনেক কিউট সুইট বিউটিফুল বাট দুঃখের বিষয় এতো কিউট মেয়েটা সিঙ্গেল
মিষ্টির কথা শুনে জীমের মাথায় রক্ত চড়ে যায়। অচেনা অজানা একটা ছেলের সাথে কিভাবে কথা বলছে। হাত ধরছে।
মিষ্টি জীমের দিকে একবার তাকায়
“এবার আর সিঙ্গেল থাকবা না
” কেনো ফ্রীতে বফ পাওয়া যাচ্ছে না কি
“হ্যাঁ যাচ্ছে তো।৷ আমার সাথে চল আমি দিচ্ছি
দাঁতে দাঁত চেপে বলে জীম। ছাড়া কৃশ আর আকাশ তাকিয়ে আছে। জীম মিষ্টির হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়। একটা ফাঁকা জায়গায় এনে হাত ছাড়ে। শক্ত করে হাত ধরার ফলে মিষ্টির হাতে ব্যাথা করছে।
” এখানে আনলেন কেনো? কি সুন্দর গল্প করছিলাম
“কয়ডা লাগে তোর
” কয়ডা লাগে মানে কি? একটাও তো নাই। আমি তো সিঙ্গেল ই
“তাহলে আমি কি তোর কাকা লাগি
” কাকা না লাগলেও বফ তো আর লাগেন না। আপনি কি প্রপোজ করছেন
কথাটা শেষ করে তাকিয়ে দেখে জীম হাটু গেরে বসে মিষ্টির দিকে একটা রিং ধরে আছে
“আমি জানি না ভালোবাসা কি? ভালোবাসা কথা দেওয়া এগুলোতে আমি বিশ্বাসি না। আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। এটাকে তুমি ভালোবাসা বলতে পারো বা মোহ বলতে পারো। যে কোনো মুল্যে তোমাকে আমার চাই। আমি সিগারেট খাই মদ খাই নেশা করি। পড়ালেখাটা ঠিক মতো করি না। কাজ করি না। বাবার পয়সায় খায়। বাবা আমাকে পছন্দ করে না। আমি জানি তুমিও আমাকে পছন্দ করো না। বাট আই নিড ইউ। ভালো বাসতে বলবো না। কিন্তু আমাকে ছেড়ে যোও না। থাকতে পারবো না তোমার ছাড়া। আমি তোমার প্রতি আসক্ত।
মিষ্টি হাত এগিয়ে দেয়। জীম রিংটা পরিয়ে দেয়। মিষ্টি জীমকে দাঁড় করায়
” আমি সত্যি আপনাকে পছন্দ করি না। তবুও আপনার সাথে থাকতে চাই। আপনার বাজে দিক গুলোকে ভালোবেসে ভালো করতে চাই। অন্য সব নেশাকে দুরে করে শুধু আমার নেশায় আসক্ত করতে চাই। থাকতে চাই আপনার সাথে।
মিষ্টি জড়িয়ে ধরে জীমকে
চলবে