#প্রেম
#পর্বঃ৭
#Tanisha Sultana
রাতে ডিনার করে বই পড়ছে মিষ্টি। বারবার ফোন বেজে যাচ্ছে কিন্তু তুলছে না। কারণ জীম ফোন করেছে
“এই ছেলেটা কেনো জ্বালাচ্ছে আমাকে? কি করেছি আমি? ধুর
এক বস্তা বিরক্তি নিয়ে বেলকনিতে যায় মিষ্টি। জীম বেলকানির রেলিংএর ওপর বসে ছিলো
” কি সমস্যা আপনার? কেনো বিরক্ত করছেন? কি চাই
“দেখো বিরক্ত করার একটা রিজন আছে
” তো বলেন
“এখনও সময় হয় নাই।
” থাকুন আপনি আপনার সময় নিয়ে। আমাকে বিরক্ত করবেন না
“যদি তুমি আমাকে আই লাভ ইউ বলো তাহলে বিরক্ত করবো না
” আপনার মনে হয় আমি আপনাকে বলবো
“নাহহহ এখন বলবে না
” শুধু এখনই না কখনোই বলবো না
“সেটা দেখা যাবে। এখন বলো কতোবার ফোন দিয়েছি রিসিভ করলে না কেনো??
” বই পড়ছিলাম। তাছাড়াও আপনার ফোন রিসিভ করার কোনো ইচ্ছে নাই
“আই নো। কিন্তু কি করবো বলো তুমি তো আমার (বুকের বা পাশে হাত দিয়ে) এখানে থাকো তাই ফোন না দিয়ে থাকতে পারি না
” ফালতু কথা বাদ দেন তো। আমি পড়তে বসবো
“ওই বইয়ের মধ্যে কি আছে বুঝতে পারি না
” ওই বইয়ের মধ্যে স্বপ্ন আছে সেটা আপনি বুঝবেন না
“যাও পড়তে বসো বাট
” কি
“আমি কল করবো
” আমার ডিস্টার্ব হবে
“জাস্ট কলটা রিসিভ করে তোমার পাশে রেখে দেবে
” কেনো?
“আমি তোমার পড়া শুনবো
” দেখুন
“এখন দেখার ইচ্ছে নাই
জীম রুমে চলে যায়। মিষ্টি ঠাস করে বেলকানির দরজা বন্ধ করে পড়তে বসে। জীম কল দেয় রিসিভ করে বালিশের নিচে রেখে দেয়।
পরেরদিন জীম খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠে। মিষ্টির বেলকনিতে উকি দেয় দরজা বন্ধ। মিষ্টিকে ফোন দেয় কিন্তু মিষ্টি রিসিভ করে না। জীম ভাবে হয়ত ঘুমচ্ছে।
আরও দুইঘন্টা জীম ফোন দেখে কাটিয়ে দেয়। সকাল নয়টা বাজে জীম আবার মিষ্টিকে ফোন দেয় এবার ফোন বন্ধ। জীমের খুব রাগ হয়।
একটা শার্ট নিয়ে হনহন করে মিষ্টির বাসায়। কিন্তু গিয়ে দেখে মিষ্টিদের বাসায় তালা ঝুলছে। জীমের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। একরাতের মধ্যে কোথায় উধাও হয়ে গেলো। জীমতো তেমন কিছু করে নাই তাহলে। কাল কল করেছিলাম এটা কি মিষ্টির বাবা মা জেনে গেছে তাই ওকে নিয়ে চলে গেছে। কিন্তু কোথায় গেছে? কি করে খুজবো?
জীম আর ভাবতে পারছে না। বুকের বা পাশে ব্যাথা করছে। সিগারেট মুখে দেয়। তারপর একটু একটু করে হেটে বাসায় যায়। জীমের মা আর ভাই জামাকাপড় গোছাচ্ছে। জীম মাথা নিচু করে কিছু একটা ভাবতে ভাবতে নিজের রুমে যায়। জীমের মা জীম দেখে দৌড়ে জীমের কাছে আসে
” কি হয়েছে তোর? এমন দেখাচ্ছে কেনো??
“কিছু হয় নাই।
” ওহহ শোন না তোর ফুপির মেয়ের বিয়ে আমরা সবাই কিন্তু যাচ্ছি। আমি তোরও জামাকাপড় গুছিয়ে রেখেছি।
জীমের হয়ত মায়ের কথা গুলো কানেই গেলো না। তাই চুপচাপ ওই ভাবেই বসে আছে। জীমের মা আরও কিছু বলে চলে যায়।
জীম পাগলের মতো মিষ্টিকে খোঁজে কিন্তু পায় না। হাল ছেড়ে নিজের বেলকনিতে বসে ধোঁয়া উড়াচ্ছে। তখন জীমের ফোনে ফোন আসে। মিষ্টি কল করেছে। জীম কল কেটে কল ব্যাক করে
“কোথায় চলে গেছো তুমি? কত খুঁজেছি তোমায় জানো তুমি? ফোন বন্ধ কেনো? পবলেম কি তোমার? যদি মনে করো পালিয়ে গেলে জীম তোমাকে ভুলে যাবে তাহলে তুমি ভুল ভাবছো। আমার শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে তোমার মুক্তি নেই বুঝেছো
” আরে আরে রিলাক্স। আমি পালিয়ে আসি নি। কাজিনের বিয়ে তাই দাদাবাড়ীতে এসেছি। কিছুদিন থাকবো এখানে। ফোনের চার্জ ছিলো না তাই বন্ধ ছিলো। এখন চার্জ দিয়ে জানিয়ে দিলাম
“ওকে বাই একটু পরে দেখা হচ্ছে
মিষ্টিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে জীম কল কেটে দেয়।
” একটু পরে দেখা হচ্ছে মানে কি? ও কি এখানে চলে আসবে না কি? কিন্তু ও জানবে কি করে আমাদের আসল বাড়ি কোথায়?
মিষ্টি এসব ভাবছিলো তখন মিষ্টির দুই কাজিন মায়া আর ছায়া চলে আসে। মায়ার বিয়ে
“কি রে এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো? তোর বই আর তোর মা তোকে ডাকছে (ছায়া)
” এমনি। মা ডেকেছে
“হ্যাঁ তোকে পড়তে বসতে বলছে (মায়া)
” ঠিক আছে যাচ্ছি।
মিষ্টি চলে যায়। মায়ের একগাদা বকা খেয়ে পারতে বসে। কাল গায়ে হলুদ আর পড়তে পারবে না। তাই কালকের পড়া আজকেই শেষ করতে হবে। মিষ্টি বইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু মনে মনে ভাবছে যদি সত্যি জীম চলে আসে তাহলে কিরবে। এসব ভাবছে এর মধ্যেই জীমের গলায় শ্বর শুনে মিষ্টি চমকে ওঠে। শিওর হওয়ার জন্য বসার ঘরে উকি দিয়ে দেখে সত্যি জীম। মিষ্টির কাকা কাকির সাথে কথা বলছে। শুরু জীম না ওর বাবা মা আর ভাইও আছে। মিষ্টির গলা শুকিয়ে যাচ্ছে এবার কি করবে ভাবছে।
এসব ভাবতে ভাবতে আবার তাকায় কিন্তু জীমকে দেখে না
“কি বেপার এখানেই তো ছিলো গেলো কোথায়?
এসব ভাবছে তখন কেউ মিষ্টির মুখ ধরে মিষ্টির রুমে নিয়ে যায় তারপর ছেড়ে দেয়। মিষ্টি বকা দেওয়ার জন্য তাকিয়ে দেখে জীম দরজা বন্ধ করছে। মিষ্টি কাপা কাপা গলায় বলে
” আআপনি দরজা বন্ধ কককরছেন কেনো?
জীম মিষ্টির কথার কোনো উওর না দিয়ে মিষ্টিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে
চলবে