প্রেম পর্ব-০৩

0
1893

#প্রেম
#পর্বঃ৩
#Tanisha Sultana

“মিষ্টি দুধটা খেয়ে নাও

মায়ের ডাকে ফোনের দিক থেকে মায়ের কষ্ট দিকে তাকায় মিষ্টি।

” তোমাকে বই পড়তে বলেছি আর তুমি ফোন দেখছো। ফাঁকিবাজ হয়ে গেছো তুমি। আরেকবার ফোন হাতে দেখলে তোমার ফোনটা আমি ভেঙে ফেলবো

“মা দেখো

” কোনো এক্সকিউজ শুনতে চাই না।

“কে যেনো ভুলভাল মেসেজ দিচ্ছে

” কই দেখি

মিষ্টি মাকে দেখায়।

“ফোন থেকে সিম খুলে ফেলো। সামনে তোমার এক্সাম তাই মন দিয়ে পড়াশোনা করো। কে কি মেসেজ দিচ্ছে এসব নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে সময় নষ্ট করবে না। তোমার শুধু একটাই চিন্তা থাকবে সেটা হলো পড়ালেখা করা অনেক বড় হওয়া আর বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরন করা ওকে

” হুম

“এবার দুধটা খেয়ে পড়তে বসো। আর একটু পর পর চুল গুলো নাড়াচাড়া করবো

মিষ্টির মা চলে যায়। মিষ্টি এবার দোলনায় বসে পড়ছে।

” ওই ফুলটুসি

মিষ্টি তাকিয়ে দেখে জীম ওখানেই দাঁড়িয়ে আছে আর মিষ্টিকে ডাকছে। মিষ্টি না শুনার ভান ধরে বইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। মিষ্টি তাকাচ্ছে না দেখে জীম লাফ দিয়ে মিষ্টির ছাঁদে চলে আসে। মিষ্টির পাশে দোলনায় বসতে গেলেই মিষ্টি উঠে পড়ে

“কি সমস্যা আপনার?

” তোমার কি সমস্যা

“আমি কি করছি?

” সারাক্ষণ এতো কি বই নিয়ে বসে থাকো। বই রাখো আমার দিকে তাকাও

“ধুর যান তো এখান থেকে

জীম বুকের বা পাশে হাত দেয়

” এমন করে জান বলো না গো এখানে লাগে

“ইডিয়েট

মিষ্টি বই হাতে নিয়ে যেতে নেয়। জীম মিষ্টি চুল গুলো হাত নিয়ে মুখের সামনে নেয়। মাতাল করা স্মেইল পাচ্ছে। মিষ্টির চুলে জীম হারিয়ে যাচ্ছে। মিষ্টি জোরে জীমকে একটা ধাক্কা মারে। জীম তাল সামলাতে না পেরে দোলনায় বসে পড়ে।

“এরকম হিরোগিরি দেখিয়ে আফরা ইবনাত মিষ্টিকে ইমপ্রেস করতে পারবেন না। আপনার মতো বখাটে ছেলের চান্স নেই। সো পিছু ছেড়ে দিলে আপনারই ভালো হবে।

মিষ্টি চলে যায়।

” তোমার মতো মেয়েকে ইমপ্রেস করবো আমি
জীম একটু হাসে।

মিষ্টি বই নিয়ে নিজের রুমে আসে। প্রচন্ড গরম তাই ফ্যান চালাতে যায়। কিন্তু ফ্যান চলছে না

“মা আমার রুমের ফ্যানটা খারাপ হয়ে গেছে

মিষ্টি চিৎকার করে মাকে বলে। তারপর একটা চেয়ারে নিয়ে বেলকনিতে যায়। মিষ্টি সামনের বাড়িটার দিকে তাকায়। ওই বাড়ির বেলকানির দরজা খোলা বলে পুরো রুমটা দেখা যাচ্ছে। অগোছালো রুমটা।

” কি অগোছালো রুমটা। মনে হয় কোনো হাতি থাকে রুমে। কি অবস্থা করে রেখেছে।
নিজে নিজে কথা গুলো বলে

“ওই ফুলটুসি

হঠ্যাৎ করে এই ডাকটা শুনে মিষ্টি চমকে ওঠে। পেছনে তাকিয়ে দেখে মিষ্টির রুমে জীম দাঁড়িয়ে আছে

” আপনি আমার রুমে কেনো এসেছেন

“#প্রেম করতে

” মানে
জীম পরির বিছানায় বসে পড়ে।

“তোমার মাই তো আমাকWrit এসেছে

” মা মা

মিষ্টির মা রান্না করছিলো তাই হাতে খুন্তি নিয়েই ছুটে আসে

“কি হয়েছে

জীম মিষ্টির মায়ের কাছে গিয়ে বলে

” দেখুন না আন্টি আপনার মেয়ে আমাকে ফ্যান দেখতে দিচ্ছে না

“আজব মানুষ তো আপনি

” মিষ্টি চুপ করো। ওকে ফ্যান দেখতে দাও

জীম খাটের ওপর মুড়া নিয়ে ফ্যান দেখতে থাকে। মিষ্টি মায়ের কাছে গিয়ে বলে

“মা ওনাকে কেনো এনেছো?

” আমি আনি নি। তোমার চিৎকার শুনে ও নিজেই এসেছে।

“তুমি এলাও করলে

” বললো ফ্যান সারতে পারবে তাই আর আপত্তি করি নি।

“যা খুশি করো

মিষ্টি রাগ করে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। মিষ্টির মা জীমকে জিজ্ঞেস করে

” তুমি কি করো স্টাডি না কি জব

“স্টাডি

কোন কলেজ

” জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের

“ওহহ গুড। মিষ্টিকেও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশন করাবো যদি সব ঠিক থাকে। তা তুমি কোন ইয়ার

” অনার্স ফাইনাল ইয়ার

“ওহহ কাল থেকেই তো তোমাদের এক্সাম শুরু তারপরি তো

” সরি আন্টি আমি থার্ড ইয়ার ফাইনালে উঠব

মিষ্টির এবার সন্দেহ হয়। ভ্রু কুচকে বলে

“আপনি কোন ইয়ারে পড়েন আপনি সেটাই ঠিক করে বলতে পারছেন না

” হয়ে গেছে

“কিহহ

” ফ্যান ঠিক হয়ে গেছে।

বলেই জীম দৌড়ে বেরিয়ে যায়। মিষ্টিদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নেয়

“অল্পের জন্য বেঁচে গেছি। যেভাবে প্রশ্ন করছিলো আর একটু হলে প্রশ্নের নিচে পড়েই মরে যেতাম।

” মা এটা কি হলো ছেলেটা ওভাবে পালালো কেনো??

“কি জানি

মিষ্টির মা রান্না ঘরে চলে যায়। মিষ্টি পড়তে বসে।

প্রতিদিন ফজরের আজানের সময় ঘুম থেকে ওঠাটা মিষ্টির প্রতিদিনকার রুটিন। ঘুম থেকে উঠে ওজু করে নামাজ পড়ে বই পড়তে বসে। নয়টার সময় বই পড়া শেষ করে কলেজের জন্য তৈরি হয়ে খেয়ে দেয়ে কলেজে জন্য বেরিয়ে পড়ে।

সকালে গোছল করেছে বলে চুল ছেড়েই যায় মিষ্টি। কলেজের গেটের কাছে আসতেই দেখে জীম মুখে সিগারেট দিয়ে বাইকের ওপর বসে বাইকের আয়নায় নিজেকে দেখছে। মিষ্টি ওদিকে পাত্তা না দিয়ে ক্লাসের দিকে হাটা শুরু করে

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে