#প্রেম_তুমি
#part :16
#Mishmi_muntaha_moon
আয়রার কথা শুনে জুহি বেগম বললেন
–তুই উনাকে চিনিস?
আয়রা আস্তে করে হেটে ওর মার পাশে দাঁড়িয়ে বলল
–উনি হলো অর্নিল ভাইয়ার ভাই অর্নব।
আয়রার কথা শুনে অর্নব মুচকি হেসে বলল
–তোমার আমাকে মনে আছে নাকি?
আয়রা ওর মার দিকে একপলক তাকিয়ে বলল
–জ্বী মনে আছে।কিন্তু আপনি এখানে কেনো এসেছেন?
–দেখো তুমি যা ভাবছো আমি তা-ই বলতে এসেছে।
অর্নবের কথা শুনে আয়রা আবারও ওর মা কে দেখে ভীতু কন্ঠে বলল
–দেখুন আমি ইচ্ছে করে উনাকে ব্যাথা দেই নি।অতুটুকু বিষয়ে কথা বলতে আপনি আমাদের বাড়িতে এসে পরলেন?
আয়রার কথা শুনে অর্নব ভ্রু কুচকে অবাক হয়ে বলল
–তুমি কিসের কথা বলছো?আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না!
অর্নবের কথা শুনে জুহি বেগম ও অবাক হয়ে বলল
–আয়ু তুই কাকে ব্যাথা দিয়েছিস কিসের কথা বলছিস?
আয়রা ভ্রু চুলকে মৃদু স্বরে বলল
–না আসলে,,, তা যাই হোক আপনি কেনো এসেছেন কোনো কথা ছিলো?
–হুম খুব ইম্পর্ট্যান্ট কথা ছিলো তোমার আর অর্নিলের বিষয়ে।
–
অর্নিল কে আসতে দেখে অর্পা বেগম চিন্তিত হয়ে ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
–তুই সেই সকালে বাড়ি থেকে বের হয়েছিস সারাদিনে একবারও না ফিরে এই রাতে বাড়ি ফিরলি? কোথায় ছিলি এতোক্ষণ?
অর্নিল ওর পকেটে হাত ঢুকিয়ে রুমের দিকে যেতে যেতে বলল
–মা আমি রাতে কিছু খাবো না।আমাকে একদম ডিসটার্ব করবে না প্লিজ।
অর্নিল ওর রুমে গিয়ে দরজা অফ করে দেয়।
অর্পা বেগম অর্নিলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।ইদানীং আস্তে আস্তে বদলে যাচ্ছে মনে হচ্ছে।কিছু একটা করতে হবে। অর্পা বেগম কিছু ভাবতে ভাবতে নিজের রুমে চলে গেলো।
অর্পা বেগমকে এমন চিন্তিত দেখে অর্নিলের বাবা উঠে বসে বলল
–কি হয়েছে এতো চিন্তিত দেখাচ্ছো কেনো?
–চিন্তিত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে তো চিন্তিত হতেই হয়।
–চিন্তিত হওয়ার মতো আবার কি হয়েছে?
–অর্নিল কে দেখছো না ছেলে টা কেমন হয়ে যাচ্ছে?
–কোথায় আমি তো কিছুই দেখছি না।
–দেখবে কিভাবে সারাদিন ঘরের ভিতরেই বসে থাকো ছেলেদের খবর রাখা ও তো দরকার নাকি?
–আম্মু,,,
অর্নিলের ডাক শুনে অর্পা বেগম তারাতারি হাসি মুখে এগিয়ে গিয়ে বলল
–হুম বল।
–শোনো আমি তোমাকে কিছু ইনফর্ম করতে এসেছি
–কি ইনফর্ম করতে এসেছিস?
–আমি কয়েকদিনের জন্য ময়মনসিংহ যাবো আন্টিদের বাড়িতে।তোমাদের কোনো প্রবলেম আছে?
–না অর্নি আমাদের কোনো সমস্যা নেই। তুই যা কয়েকদিন ওখানে থেকে আশেপাশে ঘুরে আস।
–আচ্ছা আমি আর পরশু যাবো।তুমি আন্টিকে ইনফর্ম করে দিও।
অর্নিল কথা শেষ করে রুমে চলে যায়।অর্নিল রুমে যেতেই অর্নিলের বাবা অর্পা বেগমের দিকে ব্র কুচকে তাকিয়ে বলল
–তুমি অর্নিল কে এতো সহজেই যেতে দিলে ব্যাপার কি?
অর্পা বেগম খাটে বসে বাইরে তাকিয়ে বলল
–ভালোই হলো কয়েকদিন ওখানে থেকে আসলে আগের মত হয়ে যাবে।
–
তুলি সকল কে খাবার সার্ভ করছে অর্পা বেগমের কথায় চোখ তুলে তাকায়।
–অর্নব কোথায় গেছে এখনো আসছে না কেনো?
–জানি না তো আমি কল ও করেছিলাম কিন্তু রিসিভ করে নি।
দরজায় কেউ নক করাতেই অর্পা বেগম বলল
–দেখো গিয়ে অর্নব এসেছে হয়তো।
তুলি তারাতারি গিয়ে গেট খুলতেই অর্নব কে দেখে মুচকি হাসলো। অর্নব ভিতরে ঢুকে হাত মুখ ধুয়ে খাবার খেতে বসে।
–কিরে এতোক্ষণ কোথায় ছিলি।
অর্পা বেগমের কথা শুনে অর্নব খেতে খেতে বলল
–একটা কাজ ছিলো তাই।
অর্নব খাবার খেয়ে উঠে রুমে চলে যায়।তুলি ও অর্নবের পিছে পিছে রুমে আসে।
–কি কাজের কথা বলছিলেন?
তুলির কন্ঠ শুনে অর্নব ফোন রেখে তুলির দিকে তাকায়।
–কেনো?
–এভাবেই বলুন না।
–আয়রাদের বাড়ি গিয়েছিলাম।
–অর্নব,,
অর্পা বেগম কে দেখে তুলি তারাতারি করে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। অর্পা বেগম তুলি কে এভাবে বেড়িয়ে যেতে দেখে ব্রু কুচকে বলল
–এই মেয়ে এভাবে চলে গেলো কেনো?
–বাদ দাও তুমি বলো কি বলবে।
–অর্নিল বলছিলো ও ময়মনসিংহ যেতে চাইছে আমিও হ্যা করে দিয়েছি ভালোই হবে তাই না।
অর্নব ওর মার কথা শুনে খাট থেকে লাফ দিয়ে উঠে বড় বড় চোখ করে বলল
–শিট তুমি হ্যা কেনো করলে।
অর্নব এভাবে বলায় অর্পা বেগম ব্রু উচিয়ে বলল
–কেনো কোনো ভুল কাজ করলাম নাকি?
–আমি আজ আয়রার সাথে কথা বলতে গিয়েছিলাম।
–
আয়রা ওর মার সামনে মাথা নিচু করে বসে আছে। জুহি বেগম স্বাভাবিক ভাবেই আয়রার দিকে তাকিয়ে বলল
–দেখ তুই ঠিক করিস নি এইসব।
–তুমি এইটা বলছো তোমার জন্যই তো করলাম।
–দেখ তুই যদি অর্নিল কে ভালোবেসে থাকিস এতে আমার কোনোই আপত্তি নেই।তুই খুশি তো আমরাও খুশি।আর তুই এতোদিন এতোকিছু হলো আমাকে কিছুই বললি না কেনো?
আয়রা চোখ তুলে ওর মার দিকে তাকিয়ে মনখারাপ করে বলল
–আমি বলতে চাইছিলাম কিন্তু,,,কিন্তু এখন এইসব বলার কোনো মানে নেই।বাবা নেই এই ফেমিলির বড় মেয়ে হিসেবে আমার কর্তব্য বাবার জায়গায় সব দায়িত্ব নেওয়া।
আয়রার কথা শুনে জুহি বেগম অবাক হয়ে বলল
–কে বলেছে?আহা তুই যে কি কথাবার্তা মাথায় নিয়ে ঘুরছিস আজ বুঝতে পারছি। শুন আমার কথা মন দিয়ে তোর বাবা সবসময় বলতেন উনি যদি কখনো চলে ও যায় আমাদের কোনো কিছুর অভাব হতে দিবে না।আর সত্যি ও তাই উনি যথেষ্ট সেভিংস রেখে গেছে আমার আর আয়শুর জন্য যথেষ্ট।
আয়রা ওর মার রুম থেকে উঠে ওর রুমে চলে যায়। অর্নব আসার পর থেকেই বিভিন্ন কথা ভেবে ভেবে মাথাটা ব্যথা হয়ে গেছে।
–
–কিরে আয়রা কে মানাতে পারিস নি বলে চলে যাচ্ছিস এখান থেকে?
অর্নবের কথা শুনে অর্নিল মোবাইল ছেড়ে হেসে উঠে বসে তারপর বলে
–হোয়াট ডু ইউ মিন বাই এখান থেকে চলে যাচ্ছিস?
অর্নব দরজা থেকে সরে এসে ইজিচেয়ার বসে।তারপর বলে
–আম্মু বললো তুই ময়মনসিংহ যেতে চাচ্ছিস।
অর্নিল শার্টের কলার ঠিক করতে করতে বলে
–সো হোয়াট আমি একেবারে ওখানে শিফট হচ্ছি নাকি?কয়েকদিনের জন্য যাচ্ছি।
অর্নব কিছু বলতে নিবে তার আগেই ফোনের রিং বেজে উঠে। স্ক্রিনে আয়রার মা লেখাটা ভেসে উঠতেই অর্নব তারাহুরো করে বলল
–আচ্ছা আমি একটু পর আসছি অপেক্ষা কর।
–
আয়রা ভার্সিটি তে ঢুকে দেখে অর্নিলের সব ফ্রেন্ড একসাথে বসে আছে ফারহা ও আছে কিন্তু মুখ গোমড়া করে বসে আছে।অর্নিল কে কোথাও না দেখে ঠোঁট কামড়ে ক্লাসে চলে যায়।
–
অর্নিল রুম থেকে বের হয়ে দেখে পুরো বাড়ি সাজানো হচ্ছে।অর্নব নিচে দাড়িয়েই সকল কে বলে দিচ্ছে কোন জায়গায় কি দরকার।অর্নিল ওখানে গিয়ে অর্নবের দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলে
–পুরো বাড়ি সাজাচ্ছিস কেনো?
অর্নিলের কথা শুনে অর্নব হচকচিয়ে গিয়ে তারাহুরো করে বলে
–তুই কাল চলে যাবি না তাই ফেরওয়েল পার্টি।
অর্নবের কথা শুনে অর্নিল অবাক হয়ে বলল
–আমি কি একবারে চলে যাচ্ছি?
অর্পা বেগম অর্নবের মাথায় চাটি দিয়ে মুচকি হেসে বলল
–আরেহ না ও তো মজা করছিলো। আসলে,, তুলির কিছু দূরসম্পর্কের আত্নীয় আসবে তাই।
অর্নিল কিছু না বলে কফি নিয়ে আবার রুমে চলে যায়।
চলবে,,