#প্রেম_তুমি
#part:4
#Mishmi_muntaha_moon
শর্তের কথা শুনে আয়রার গলা শুকিয়ে গেলো।আর রিমু তো এক পায়ে রাজি।অর্নিল শর্তের কথা বলার সাথে সাথে রিমু বলল
–হ্যা হ্যা রাজি।
অর্নিল রিমুর কথা শুনে আয়রার দিকে তাকিয়ে বলল
–আর উনি?
রিমু আয়রাকে কনুই দিয়ে ধাক্কা দিয়ে বলল।
–আয়রা হ্যা বল।
আয়রা রিমুর দিকে তাকিয়ে ব্রু কুচকে আবার অর্নিলের দিকে তাকালো।তারপর বলল
–কেমন শর্ত।বলুন আগে।
–এখন বলব না সময় আসলে আপনাআপনি জেনে যাবে এখন বলো রাজি কি না?
রিমু আয়রার কানের কাছে গিয়ে ফিশফিশিয়ে বলল
–দেখ রাজি হয়ে যা।অর্নিল ভাইয়া খুব ভালো উনি খারাপ বা উলটা পালটা কিছু করতে বলবে না।আর তোর ক্যাফে যাওয়ার টাইমও অভার হয়ে যাচ্ছে কিন্তু।তারাতারি হ্যা বলে দে।
রিমুর কথাগুলো আয়রা ভাবলো কিছুক্ষন ঠিকই বলছে।আবার ২:১৫ বেজে গেছে অলরেডি।আয়রা কিছুক্ষন ভেবে মুখ গোমড়া করে বলল
–আচ্ছা আমি মানবো আপনার শর্ত।
আয়রার কথা শুনে অর্নিল বাকা হেসে বলল।
–গুড।রোহান ওদের এসাইনমেন্ট গুলোতে কি হেল্প লাগবে দেখ।
আয়রা আর রিমুর এসাইনমেন্ট ফিনিশ হতেই ওরা চলে গেলো।
অর্নিল গিটার হাতে নিয়ে টেবিলে বসা থেকে লাফ দিয়ে নেমে বলল
–আচ্ছা আমি চললাম।
অর্নিলের কথা শুনে ফারহা রেগে অর্নিলের সামনে এসে বলল।
–অর্নিল তুমি এতোক্ষন ওদের জন্যই বসে ছিলে?আর কিসের শর্ত।
ফারহার কথায় অর্নিল হাতে থাকা ঘড়ি দেখে ব্রু কুচকে বিরক্ত নিয়ে বলল।
–ফারহা তোকে আমি আগেও বলেছি আমার লাইফে ইন্টার্ফের একদমই করবি না।ইউ আর নট মাই গার্লফ্রেন্ড। আর আমার সময় নেই। বায় অল।
অর্নিল চুল ঠিক করতে করতে চলে যায়।
–
আয়রা কলেজ থেকে সোজা ক্যাফে তে চলে যায়।ক্যাফে তে গিয়ে প্রথমই রিমুর মামার সাথে দেখা করে খুব ভালো মানুষ রিমুর মামা।
আয়রা উনার থেকে কাজের বাপারে সব জেনে কাজ করতে লাগে।
৮ বাজে,,,আয়রা কাজ শেষ করে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পরে বাড়িতে যাওয়ার জন্য।রাতের অন্ধকারে রাস্তাগুলো পুরো ভিন্ন লাগছে।ক্যাফে থেকে বেশি দূর না রিমুদের বাড়ি।তাই আয়রা আশেপাশে তাকাতে তাকাতে হাটতে লাগলো।অর্ধেক যাওয়ার পর সামনে ফারহাকে দেখে মাথা নিচু করে সাইড কেটে যেতে নেই কিন্তু ফারহা পিছন থেকে হাত টেনে ধরায় থেমে যায়।ফারহা এক ভ্রু তুলে কিছুটা সন্দেহীন গলায় বলল
–ইউ ইডিয়ট গার্ল!তুমি এখানে কি করছো তাও আবার এতো রাতে।
–জ্বী আপু আমি একটা কাজে এসেছিলাম আপনার না জানলে ও চলবে।
–রাইট তুমি কেনো ওখানে এসেছো তা জানার কোনোই ইচ্ছেই আমার নেই।কিন্ত একটা ওয়ার্নিং দেওয়ার ছিলো।এখানে পেয়ে গেলাম ভালোই হলো।ভার্সিটিতে তো অর্নিলের জন্য কিছু বলতে পারবো না বাট এখানে অর্নিল নেই।
ফারহার কথা শুনে আয়রা ব্রু কুচকে ফারহার দিকে তাকালো।ফারহা আবারও থ্রেট দিয়ে বলতে লাগলো।
–লিসেন তোমাকে যেনো অর্নিলের আশেপাশেও না দেখি অর্নিলের থেকে দূরে থাকবে বুঝলে।নোনসেন্স কোথাকার এসেছে আমার অর্নিলকে ছিনিয়ে নিতে।নিজকে দেখেছো আয়নায়।অর্নিলের দিকে নজর দিতে এসেছে।
ফারহার কথায় আয়রা হাল্কা রাগ দেখিয়ে বলল
–দেখুন আপনি সিনিয়র বলে যা নয় তা বলতে পারেন না।আর আমি কেনো অর্নিল ভাইয়ার দিকে নজর দিবো।আপনি আমাকে না বলে উনাকে বলুন না এই সব।
–বেশি কথা বলবে না আমি যা বলছি তাই করবে তুমি বুঝলে।
আয়রা নিজের হাত টা ফারহার হাত থেকে ছাড়িয়ে বলল
–আপনি না বললেও আমি উনার থেকে দূরেই থাকতাম।আপনার মত চিপকিয়ে থাকার শখ নেই আমার।
বলেই আয়রা দ্রুত পায়ে চলে গেলো।আয়রাকে চলে যেতে দেখে ফারহা রাগ নিয়ে বলল।
–ইডিয়ট!!আমাকে কথা শুনিয়ে চলে গেলো।
–
অর্নিল আর অর্নবের কথা বলার মাঝে রুমে অর্নিলের মা অর্পা বেগম ঢুকলেন।তারপর ওদের দুজনের উদ্দেশ্যে বললেন।
–কি কথা হচ্ছে?
অর্পা বেগমের কথা শুনে অর্নব বলল
–কিছু না মা।বস আমাদের সাথে।
অর্পা বেগম ওদের সামনে একটা চেয়ার টেনে বসল।অর্নিল হাতে থাকা মোবাইল পাশে রেখে অর্পা বেগমকে বললেন।
–কিছু বলতে এসেছো?
–কেনো এভাবে আসতে পারি না।
–নাহ অর্নব আর আমি কথা বললে তো তুমি আসো না তাই বললাম
অর্পা বেগমকে চুপ করে বসে থাকতে অর্নব আর অর্নিল একে ওপরের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ইশারা করল তারপর আবার অর্পা বেগমের দিকে তাকালো।অর্পা বেগম কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলতে লাগলো।
–তোদের মামা ফোন করেছিলো কালকে।
অর্পা বেগমের কথা শুনে অর্নব ব্রু কুচকে বলল।
–তো?
অর্নবের কথা শুনে অর্পা বেগম বিরক্ত নিয়ে বলল
–চুপ কর কথার মাঝে কথা বলবি না।
অর্পা বেগমে্র ধমক শুনে অর্নব ঠোঁট বাকা করে বলল
–আচ্ছা বলো তুমি।
অর্পা বেগম মুচকি হেসে আবারও বলতে লাগলেন
–তোর মামা কালকে ফোন করেছিলেন।উনি বললেন উনার মেয়ে আছে না তুলি।
অর্পা বেগমের কথার মাঝে আবারও অর্নিল গালে হাত রেখে বলল।
–হ্যা আছে তো।তারপর।
অর্পা বেগম রেগে অর্নিলের দিকে তাকাতেই অর্নিল সিরিয়াস হয়ে বসল।অর্পা বেগম আবার বলতে লাগলেন।
–তুলির বিয়ের ব্যাপারে কিছু কথা বললেন।তুলি কে খুব ভালো লাগে।খুব মিষ্টি মেয়েটা।
অর্পা বেগমের কথা শুনে অর্নব অবাক হয়ে বলল
–কিহ।ওই পুচকিটার বিয়ের কথা বলছিলো।ও তো খুব ছোট তাই না?
–আরে নাহ ও এইবার সেকেন্ড ইয়ারে পরছে।আর পুরো কথা শুন আমি তোর মামাকে বলেছি তুলির বিয়ে আমি আমার বড় ছেলের সাথে করাতে চাই।উনিও রাজি।
অর্পা বেগমের কথা শুনে অর্নব যেনো আকাশ থেকে পড়ল।অর্নিল মুখ চেপে হাসি বন্ধ করে বলল।
–ওয়াও।তুলি আর অর্নব কে খুব মানাবে।মেড ফর ইচ আদার টাইপ।
অর্নিলের কথা শুনে অর্নব অগ্নিদৃষ্টিতে অর্নিলের দিকে তাকালো তারপর অর্পা বেগমকে বলতে লাগলো।
–মা তুমি এগুলো কি উলটা পালটা কথা বলছো বলো তো।আমি ওই তুলি কে কেনো বিয়ে করতে যাবো।আর আমি তো এখন ছোট বিয়ের বয়স হয়েছে নাকি?
অর্নবের কথায় অর্পা বেগম অবাক হয়ে বললেন
–তুই এখন ছোট?বুড়া হয়ে যাচ্ছিস আর বলিস ছোট আর কয়েক বছর পার হলে তোকে তো কোনো মেয়েই বিয়ে করবে না।আমি আর একটাও কথা শুনতে চাই না তুলি আমার ঘরের বড় বউ হবে বুঝলি।
অর্পা বেগম নিজের কথা শেষ করে চলে গেলেন।অর্পা বেগম যেতেই অর্নিল জোরে জোরে হাসতে লাগলো আর বলল
–ওয়াও তুলি এখন থেকে তুলি ভাবি।
বলে আবারও হাসতে লাগলো।অর্নব অর্নিলের হাসি দেখে পিঠে একটা ঘুষি দিলো।তারপর বলল
–আর তুই কি বললি মার সামনে মেড ফর ইচ আদার।
বলে আরেকটা ঘুষি দিলো অর্নিলের পিঠে।
–
আয়রা ক্লান্ত হয়ে বাড়িতে পৌছাতেই রিমু মা জিজ্ঞাস করল
–আয়রা সব ঠিকঠাক ছিলো?
রিমুর মার প্রশ্নে আয়রা মিষ্টি হেসে জবাব দেয়
–জ্বী আন্টি সব ঠিকঠাক ছিলো।
–আচ্ছা তুমি তাহলে ফ্রেশ হয়ে একটু রেস্ট নাও গিয়ে তারপর ডিনার করব।
আয়রা রুমে গিয়ে দেখলো রিমু বসে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছে আয়রাকে দেখে হেডফোন খুলে রেখে আয়রার দিকে তাকিয়ে বলল
–এসেছিস তুই?কেমন ছিলো সব?
আয়রা মৃদু কন্ঠে বলল
–হুম ভালো ছিলো।
আয়রা কাধ থেকে ব্যাগ রেখে ওয়াশরুম গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এলো।রিমু খাটের এক কোনায় বসে আয়রার দিকে তাকিয়ে আছে।আয়রা রিমুকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলল
–কি?এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?
রিমু আয়রার কথায় মাথা দুপাশে নাড়ালো।আয়রা রিমুকে ফোন নিয়ে বসতে দেখে বলল
–আমার খুব মাথা ব্যাথা করছে।আমি ঘুমাচ্ছি খাবো না।ডাকিস না।
আয়রা বলে ঘুমিয়ে পরল।খাবারও আর খাওয়া হলো না।
–
সকাল হতেই রিমু আর আয়রা কলেজে গেলো।কলজে ঢুকতেই দেখলো অর্নিল দাঁড়িয়ে গেটের দিকেই তাকিয়ে আছে আর ওর সামনে একটা মেয়ে হাটু গেড়ে বসে আছে হয়তো প্রপোজ করছে।রিমু এটা দেখে চিল্লিয়ে বলে উঠলো।
–আমার প্রিন্স চার্মিংকে এই কোন মেয়েটক প্রপোজ করছে।
আয়রক রিমুকে হায়ামিয়ে দিয়ে বলল
–চুপ করে চল এখান থেকে।
অর্নিল গেট দিয়ে আয়রাকে দেখতে পেয়েই বাকা হাসি দিলো।সামনে বসে থাকা মেয়েটাকে বলল।
–সরি আমার গার্লফ্রেন্ড আছে।
অর্নিল আবারও বলতে নিবে তার আগেই ফারহা এসে মেয়েটাকে উঠিয়ে বলল।
–লিসেন আমি হলাম অর্নিলের গার্লফ্রেন্ড।
ফারহাকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে অর্নিল গিয়ে আয়রার হাত ধরে টেনে সবার মাঝে নিয়ে গেলো।
আয়রা অর্নিলকে এমন কাজ করতে দেখে বড় বড় চোখ করে অর্নিলের দিকে তাকায়।
অর্নিল আয়রাকে সবার সামনে নিয়ে মুচকি হেসে বলে।
–মিট মাই গার্লফ্রেন্ড আয়রা।
চলবে,,,
(ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবে সবাই)