প্রেমের হাতেখড়ি পর্ব-৫+৬+৭

0
2343

#প্রেমের_হাতেখড়ি
#পর্ব:৫
#ফাতেমা_জান্নাত (লেখনীতে)

—তাহলে আপনি এমপি পদে দাঁড়াবেন -ই??

রাফসান মির্জার কথায় প্রণয় তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে,

—জি ইনশাল্লাহ দাঁড়াবো।বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।

প্রণয়ের এতো শান্ত কথা রাফসান মির্জার পছন্দ হয়নি।তাই তীব্র বিরক্ত নিয়ে স্বগতোক্তি করে বলে,

—ঠিক আছে বেস্ট অফ লাক। দেখা যাক আপনি জিতেন কিনা?

—জি ইনশাল্লাহ।

বলেই প্রণয় হেসে দেয়।রাফসান মির্জা চেয়ার ছেড়ে উঠে বেরিয়ে যায়।যাওয়ার সময় কেবিনের দরজাটা ঠা’স করে বন্ধ করে যায়।যেন সব রা’গ দরজার উপর দিয়ে গেছে।

প্রণয় সেই দিকে তাকিয়ে হেসে দেয়।রাফসান মির্জা আজকে পার্টি অফিসে এসেছে প্রণয় কে বলতে যাতে নির্বাচনে না দাঁড়ায়। কিন্তু প্রণয় সম্পূর্ণ বিরোধিতা করে বলেছে সে নির্বাচনে দাঁড়াবে।

প্রণয়ের কেবিনের বাইরে দাঁড়িয়ে রিফাত নক করে বলে,

—প্রণয় ভাই আসবো?

প্রণয় সেই দিকে তাকিয়ে হেসে বলে,

—আয়।

প্রণয়ের অনুমতি পেয়ে রিফাত,সজীব,সুজন ভিতরে ঢুকে।তিনজনে এসেই সামনে দাঁড়ায়। সুজন কিছু একটা বলতে চাইছে।প্রণয় বুঝতে পেরে অভ’য় দিয়ে বলে,

—সুজন কিছু বলবি?

প্রণয় থেকে অভ’য় পেয়ে সুজন বলে,

—প্রণয় ভাই আমাদের দলের জামিল এর লা’শ পাওয়া গেছে।

প্রণয় চেয়ারে মাথা এলিয়ে চোখ বন্ধ করে ছিলো। সুজন এর কথা শুনে ছট করে চোখ খুলে সেই দিকে তাকিয়ে বলে,

—মানে?জামিল এর লা’শ পাওয়া গেছে মানে কি?কোথায় পাওয়া গেছে ওর লা’শ?

—গতকাল আমাদের পার্টি অফিসের পিছনে।

—তোরা আমাকে আজকে কেন বলছিস? গতকাল কেন বলিসনি?

প্রণয়ের কথায় সজীব বলে উঠে,

—ভাই আপনাকে ফোন দিয়েছিলাম যখন জামিল এর লা’শ পেয়েছিলাম।কিন্তু আপনার ফোন বন্ধ ছিলো।

—ওহ! আমি ল্যাপটপে একটা মিটিং ছিলাম তখন।তাই ফোন বন্ধ ছিলো। লা’শ টা দেখেছে কে আগে?

রিফাত ছলছল চোখে বলে উঠে,

—টোকাই ময়লা কুড়াতে এসে দেখে চি’ৎকার করে উঠে তখন আমাদের একজন গার্ড আর দারোয়ান গিয়ে দেখে জামিল এর লা’শ একটা সাদা পলিথিন এ পেছিয়ে ফেলে রেখেছে।ওকে খুব বিভৎস ভাবে মে’রেছে প্রণয় ভাই।ওর চেহারা টা পর্যন্ত বুঝা যাওয়া যাচ্ছিলো না ঠিক মতো।ওর ঠোঁটসহ সারা মুখে ব্লে’ড দিয়ে কা’টা হয়েছিলো। মাথায় রডের আ’ঘাত ছিলো অনেক।হাতের প্রতিটা আঙুল এর হাড্ডি ভে’ঙে দিয়েছিলো।

রিফাত আরো কিছু বলার আগেই ফুঁপিয়ে উঠে।জামিল ছিলো তার সব থেকে কাছের বন্ধুর মতো একজন। দুই জনে সবসময় একসাথে থাকতো।ছেলেটার পরিবারে কেউ নেই।একাই ছিলো। শেষে এখন নিজেও চলে গেলো দুনিয়া থেকে।

প্রণয় উঠে এসে রিফাত কে জড়িয়ে ধরে।প্রণয় জানে রিফাত আর জামিল দুই জনে বন্ধু ছিলো।আর সেই বন্ধু চলে যাওয়াতে কষ্ট হওয়াটা স্বাভাবিক। প্রণয় রিফাত কে চেয়ারে বসিয়ে পানি এগিয়ে দিয়ে বলে,

—খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা কর জামিলকে কে বা কারা মে’রেছে?

সজীব বলে উঠে,

—ভাই আমার ধারণা রাফসান মির্জার লোক জামিল কে মে’রেছে।

—হয়তো। তবে নিজের ধারণার উপর ভিত্তি করেই প্রমাণ ছাড়া কিছু বলা যাবে না সজীব। জামিল কে কে বা কারা মে’রেছে এবং কেনো মে’রেছে?তার প্রমাণ আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।তবে খুবই সাবধানতার সাথে।এই কথাগুলো যাতে আমাদের চারজন এর বাইরে কেউ জানতে না পারে।

—জি ভাই।

সুজন এর কথার বিপরীতে প্রণয় তাদের জিজ্ঞেস করে,

—জামিল এর জানাজা, দাফন হয়েছে?

রিফাত নিজেকে ধাতস্থ করে বলে,

—না ভাই।আজ বাদ যোহরে জামিল এর জানাজার নামাজ। তারপরেই দাফন।

—আচ্ছা।ঠিক আছে।তোরা গিয়ে ওর জানাজা দাফন কাজের ব্যবস্থা কর।আমি একটু পরেই আসছি।

ওরা তিনজন বেরিয়ে যেতেই প্রণয় আবার চেয়ারে মাথা এলিয়ে দেয়।বার বার মাথায় আসছে হয়তো জামিল কিছু একটা জানতে পেরেছে কারো ব্যাপারে।হয়তো তো সে সেটা জানতে পেরেই জামিল কে পথ থেকে সরিয়ে দিয়েছে।কিন্তু কি?

🌸🌸

—এই শিশি চল আজ ফুচকা খাবো।

প্রান্তিক এর মুখে নিজের নামের বিকৃতি শুনে ইশি ধুম করে প্রান্তিক এর পিঠে একটা কি’ল বসিয়ে দিলো।ব্য’থা পেয়ে প্রান্তিক চোখ কুঁচকে পিঠে এক হাত দিয়ে আরেক হাতে ইশির চুল টেনে দিয়ে বলে,

—ইশির বাচ্চা শিশি।তোর এই হাতুড়ি মার্কা হাড্ডি দিয়ে একদম আমাকে মা’রবি না।কি খেয়ে হাড্ডি গুলো এমন লোহার বানাইচত?

ইশি প্রান্তিক এর হাত থেকে নিজের চুল ছাড়িয়ে প্রান্তিক এর চুল টেনে ধরে বলে,

—আমার নাম ইশি।তুই শিশি কেন বলছ যতদিন যতবার শিশি বলবে।ততদিন মা’র খাবি আমার হাতে।

জান্নাত এদের দুই জনের চুল চুলাচুলি দেখে অ’বাক। একটা মেয়ে ছেলে কিনা চুল নিয়ে টানাটানি করে?দুইটা মেয়ে হলেও তো মানা যেতো।

জান্নাত চি’ৎকার করে উঠে বলে,

—থামবি তোরা?কি শুরু করেছিস এসব?সতীনে সতীনে বোধহয় এত ঝ’গড়া করে না।তোরা যেই পরিমাণ ঝ’গড়া করছ।ভার্সিটি তে পড়ছ অথচ এখনো ঝ’গড়া করছ বাচ্চাদের মতো।

ইশি জান্নাতের দিকে তাকিয়ে বলে,

—প্রান্তিক এর বাচ্চা আমাকে শিশি কেন বলে?ওকে কয়দিন বলছি আমার নাম ইশি।

—ওই!আমার কোনো বাচ্চা কাচ্চা নেই।আমি পিউর সিংগেল।

প্রান্তিক এর কথায় ইশি মুখ বেঁকিয়ে প্রান্তিক এর কথা ভেঙিয়ে বলে,

—পিউর সিংগেল হুহ!

প্রান্তিক আরো কিছু বলবে তার আগেই জান্নাত বলে উঠে,

—ঠিক আছে তোরা দুই জন ঝ’গড়া কর।আমি যাই।একদম আমার সাথে আসবি না দুই জনে।

বলেই জান্নাত হাঁটতে শুরু করে।প্রান্তিক আর ইশি দুইজনে দুই জনের দিকে চোখ গরম করে তাকিয়েই জান্নাতের পিছন পিছন দৌড়াতে শুরু করে।জান্নত দুই জনের দিকে তাকিয়ে হেসে দেয়।

🌸🌸

ফুচকা স্টল এর সামনে দাঁড়িয়ে আছে জান্নাত, ইশি,প্রান্তিক। তিনজনে তিন প্লেট ফুচকা অর্ডার দিয়ে তিনটা চেয়ারে বসে আছে ফুচকা আসার অপেক্ষায়। হঠাৎ জান্নাতের ব্যাগের ভিতরে ফোন বেজে উঠতেই ফোন নিয়ে উঠে একপাশে এসে দাঁড়িয়ে কথা বলে।

কথা বলা শেষ করে ফোন ব্যাগে ঢুকাবে তার আগেই দেখে তার সামনে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে।জান্নাত ছেলেটার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকায়।ছেলেটা ও নির্লিপ্ত চাহনিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে।জান্নাত এবার নিজ থেকেই বলে উঠে,

—কিছু বলবেন?

ছেলেটার থেকে কোনো উত্তর ফেলো না।এবার একটু জোরেই জান্নাত বলে,

—কিহ? কিছু বলবেন?

ছেলেটা এবার মুখে কিঞ্চিত হাসি ঝুলিয়ে বলে,

—তোমাকে খুব চেনা চেনা লাগছিলো। কিন্তু ঠিক মনে করতে পারছিলাম না।তাই কাছে আসা পরিচিত হওয়ার জন্য।

জান্নাত আলতো হেসে বলে,

—গোলাকার পৃথিবীতে কোনো মানুষের সাথে বার বার রাস্তায় বা অলি গলিতে দেখা হওয়াটা খুব বেশি অস্বাভাবিক না।তা আপনার যাদের কেই চেনা চেনা লাগে তাদের সবার সাথেই কি পরিচিত হতে কি কাছে যান?

লোকটা জান্নাতের কথায় থতমত খেয়ে যায়।মেয়েটা শান্ত কথায় তাকে অপমান করলো না তো?লোকটা জান্নাতের কথার বিপরীতে বলে উঠে,

—নাহ তা না।আসলে তোমাকে একটু…

লোকটা পুরো কথাটা শেষ করার আগেই জান্নাত বলে উঠে,

—খুব বেশি পরিচিত মানুষরা ও প্রথম দেখাতে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করে।আর সেখানে আপনার কাছে আমাকে চেনা চেনা লাগছে।কিন্তু আপনি আমাকে ‘তুমি ‘ করে সম্বোধন করছেন। বিষয় টা দৃষ্টিকটু না?

বলেই জান্নাত চুপ করে নিজের ফোনের দিকে তাকায়।লোকটা জান্নাতের দিকে ডান হাত এগিয়ে দিয়ে বলে,

—সরি!বাই দ্যা ওয়ে আমি রাফসান মির্জা।

জান্নাত এবার লোকটার দিকে একবার তাকায়।শুধু ছোট্ট করে “ও আচ্ছা” বলেই সেখান থেকে প্রান্তিক আর ইশির কাছে চলে আসে।

রাফসান মির্জা এখনো থম মে’রে দাঁড়িয়ে আছে।আর ভাবছে মেয়েটা কি তাকে অপমান করলো।খুবই শান্ত কথায় অপমান করে গেলো মেয়েটা তাকে।

🌸🌸

জান্নাতের বেলকনিতে বসে বসে জুরাইন কান্না করছে আর টিস্যু দিয়ে চোখ মুছছে।তার একটাই কষ্ট আজ আবার পাখি তাকে ভাই বলেছে।পাখি কেন তাকে ভাই বলবে এই কষ্টে তার চোখ ফেটে কান্না আসছে বার বার।জান্নাত বার কয়েক জিজ্ঞেস করে গেছে কেন কান্না করছে কিন্তু জুরাইন স্বীকার করেনি।নিজের ঘরে মায়ের কারণে শান্তিমত কাঁদতে পারবে না বিধায় বোনের ঘরে বেলকনিতে বসে কান্না করছে।

জান্নাত এক দৃষ্টিতে ভাইয়ের কান্না দেখে যাচ্ছে।এবার মুখ খুলতে বাধ্য হলো।

—তোর কি হয়েছে বলবি?গত এক ঘন্টা থেকে ফ্যাচফ্যাচ করে যাচ্ছিস। যার মধ্যে ১৫ মিনিট চোখ থেকে পানি পড়েছি কিনা সন্দেহ। বাকি সময় গুলো তো এমনেই কান্নার ভাব করে ফ্যাচফ্যাচ করে যাচ্ছিস আর টিস্যু দিয়ে চোখ মুচ্ছিস।টিস্যু তো ভিজেই না পানিতে। উল্টা টিস্যু নষ্ট করছিস।

বোনের কথায় তীব্র রে’গে গিয়ে জুরাইন বলে উঠে,

—এই আপু একদম আমার কান্না কে অপমান করবি না।পানি না আসলে আমার কি দোষ?আমি তো কাদঁতে চাইছি কিন্তু চোখ থেকে পানি আসছে না,না আসলে আমি কি করবো?

—তো কান্না করার কারণ টা কি?সেটা তো বলবি?

—একদম আমাকে বিরক্ত করবি না।যা তো এখান থেকে।শান্তি মত কান্না করতে দে একটু। থাক তুই যাওয়া লাগবে না।আমিই যাচ্ছি। কোথাও একটু শান্তিতে কাদঁতে পারিনা।

বলেই গটগট করে জুরাইন বেলকনি থেকে চলে গেলো। জান্নাত এখনো অ’বাক হয়ে চেয়ে আছে ভাইয়ের যাওয়ার দিকে।সে কি এমন বললো যে জুরাইন এমন করলো?আর ও কাঁদছে ও বা কেন?

—মিস.জান্নাত এভাবে চেয়ে আছেন কেন ওই দিকে?

প্রণয়ের কথা কানে আসতেই জান্নাত পাশের বেলকনির দিকে তাকিয়ে দেখে প্রণয় তার দিকেই তাকিয়ে আছে।জান্নাত সম্বিৎ ফিরে এসে সুধাল,

—নাহ কিছুনা। ভাবছিলাম আরকি

—তা কি ভাবছিলেন?

—বলা প্রয়োজন?

—আপনি বললে অপ্রয়োজন ও প্রয়োজন।

কথাটা প্রণয় বিড়বিড় করে বলে।যা জান্নাতের কর্ণকুহরে এসে পৌছায় নি তাই জান্নাত বলে উঠে,

—কিছু বলেছিলেন?

প্রণয় আনমনেই বলে উঠে,

—এত তাড়াতাড়ি কি সব বলা যায়?

প্রণয়ের কথায় জান্নাত কিছুটা অ’বাক হয়।তাই একটু ভ্রু কুঁচকে বলে,

—মানে?

প্রণয় সম্বিৎ ফিরে আসে জান্নাতের কথায়।বুঝতে পেরে যায় আনমনে কি বলে ফেলেছিলো। তাই পরিস্থিতি সামলাতে একটু গলা খাকাড়ি দিয়ে বলে,

—নাহ কিছু না।সব মানে বুঝার বয়স এখনো আপনার হয়নি।

বলেই প্রণয় নিজের ঘরের দিকে চলে যায়।জান্নাত থম মে’রে দাঁড়িয়ে আছে।এসবের মানে কি সে সেটাই বুঝতে পারছে না।কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করলেই কেন সবাই বলে তার এখনো বয়স হয়নি?তাহলে বয়স হবে টা কবে?দশ বছরের জুরাইন ও তাকে বলে সব বুঝার বয়স হয়নি এখনো তার।আর আজ প্রণয় ও বললো।

চলবে ইনশাল্লাহ✨🖤

#প্রেমের_হাতেখড়ি
#পর্ব:০৬+০৭
#ফাতেমা_জান্নাত (লেখনীতে)

প্রণয়,রিফাত,সজীব,সুজন আর তাদের সাথে কিছু গার্ড নিয়ে তারা একটা গ্রামে গিয়েছে।মূলত এই গ্রামে আসার কারণ জনগণের সমস্যা গুলো জেনে নেওয়া।গ্রামটা ঘনবসতি পূর্ণ। চারদিকে ময়লা আবর্জনার উটকো গন্ধ ভেসে আসছে নাসারন্ধ্রে।

প্রণয় সহ সবাই গাড়ি থেকে নেমেই মুখে মাক্স পরে নেয়।আস্তে আস্তে বসতির ভিতরের দিকে হাঁটতে থাকে তারা।পথে যার সাথেই দেখা হয় তার সাথে হাসি খুশি ভাবে কুশল বিনিময় করে প্রণয়।

একটা জরা জির্ণ ঘরের সামনে এসে প্রণয় সহ সবাই স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে যায়।ঘরটার ভিতর থেকে একটা মেয়ে মানুষের কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে।ঘরের সব গুলো দরজা জানালা বন্ধ।ঘরের ভিতর যে কোনো মানুষের অস্তিত্ব আছে তা বুঝা দায়।তবে কান্নার আওয়াজ যেহেতু আসছে।মানুষ তো আছেই।

প্রণয় দুইবার করে করাঘা’ত করে দরজায়। । কিন্তু কেউ এসে দরজা খুলে না।শেষে প্রণয় আবার দরজায় করাঘা’ত করে সুধাল,

—আসসালামু আলাইকুম। কেউ আছেন?দরজা টা একটু খুলুন। আমি শাহরিয়ার প্রণয়। আপনাদের কোনো সমস্যা থাকলে বলুন আমায়।আমি ইনশাল্লাহ চেষ্টা করবো সমাধান করার।

তারপরে ও কোনো রেসপন্স পাওয়া যায়নি ভিতর থেকে।সজীব প্রণয়ের দিকে তাকিয়ে স্বগতোক্তি করে,

—প্রণয় ভাই দরজাটা কি ভাঙবো? আমার তো মনে হয় ঘরের ভিতর কোনো ঘাপলা আছে।

সজীবের কথার বিপরীতে প্রণয় বলে,

—আমার মনে হয় উনাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে।আর হয়তো আমাদের ভ’য় পেয়ে দরজা খুলছে না।আমি আরেকটু কথা বলি।

বলেই প্রণয় অতি নরম স্বরে আবার ডেকে উঠে বলে,

—দেখুন আমরা খারাপ কেউ না।আপনাদের ছেলে বা ভাইয়ের মতো। দরজাটা খুলুন। আপনাদের সমস্যা টা আমাকে খুলে বলুন।

কিছুক্ষণ পরেই খট করে একটা শব্দ হয়ে দরজাটা খুলে যায়।প্রণয়,রিফাত,সজীব,সুজন চারজনে দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে আনুমানিক পঞ্চাশ বছরের একজন মহিলা কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে দাঁড়িয়ে আছে।

প্রণয় মহিলাটার দিকে একবার তাকায়। মহিলা টার চোখে পানি চিকচিক করছে।হয়তো এতক্ষণ মহিলা টিই কান্না করেছিলো। প্রণয় এর ভাবনার ছেদ ঘটে মহিলা টির কথায়।

—আপনারা কে?চিনলাম না তো আপনাদের। আর এত দরজা ধা’ক্কায় চিল্লা চিল্লি করছিলেন কেন?কি চাই এখানে?এখানে কেউ থাকে না?

মহিলা টার কথা শুনে চারজনেই তব্দা খেয়ে তাকিয়ে আছে।এই মহিলা এত প্রশ্ন একবারে কি করে করতে পারে।

রিফাতের বরাবরই র’ক্ত গরম।অল্পতেই তার মাথা গরম হয়ে যায়।আর এখানে এই মহিলার একসাথে এত প্রশ্ন শুনে র’ক্ত যেন গরম লাভার ন্যায় টগবগ করতে শুরু করেছে।

রিফাত রে’গে মহিলাটা কে কিছু বলতে যাবে তার আগেই প্রণয় রিফাতের হাত চেপে ধরে তার দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় শান্ত হতে বলে।

প্রণয়ের কথা আর রিফাত ফেলতে পারেনা দম খিঁচে নিজেকে শান্ত রাখার অদম্য ইচ্ছা পোষণ করার যাচ্ছে।প্রণয় মহিলা টির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে মাক্সের আড়ালে।কিন্তু সেটা তার দুই চোখের রেখাই ফুটে উঠে।

—আমি শাহরিয়ার প্রণয়। এবার নির্বাচনে এমপি পদবী তে দাঁড়ানো সদস্য।আপনাদের বসতিতে এসেছিলাম খোঁজ নিতে কি কি সমস্যা আছে।আপনাদের এখান দিয়ে যাওয়ার সময় ঘরের ভিতর থেকে কান্নার আওয়াজ শুনে দাঁড়িয়ে গেলাম।কোনো সমস্যা হচ্ছে কি আপনাদের? থাকলে আমাকে বলতে পারেন। আমি আপনার ছেলের মতো।এমপি আমি হই বা না হই।দরকার হলে পার্সোনাল ভাবে আমি আপনাদের সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করবো।

প্রণয় এর সাবলীল কথায় হয়তো মহিলাটার মন বিগলিত হলো।মহিলা টার নেত্রপ্রদাহ আবার ও জলকণায় ভিজে গেলো। প্রণয় সেই দিকে তাকিয়ে বলে,

—আহা!আপনি কাঁদছেন কেন?দেখুন আপনি না বললে তো আমি সমস্যা টা বুঝতে পারবো না।আপনি নির্ভ’য়ে বলতে পারেন।

প্রণয়ের কথায় মহিলাটা এবার ও নিরুত্তর।তবে দরজা থেকে সরে দাঁড়িয়ে প্রণয় দের ইশরা করলো ঘরে আসার জন্য।প্রণয় কিছুটা অ’বাক হলেও সেটাকে চেপে রেখে চারদিকে একবার চোখ ভুলিয়ে নিয়ে রিফাত,সজীব,সুজন কে নিয়ে ঘরে ঢুকে। সজীব আর সুজনের মনে চলছে অজানা ভ’য়।না জানি এটা আবার মহিলা টার কোনো ফাঁদ নয়তো। কিন্তু প্রণয়ের এভাবে নির্ভ’য়ে ঘরে প্রবেশ করাতে তারা ও আর দ্বিরুক্ত না করে প্রবেশ করে।

সবাই ঘরে ঢুকতেই মহিলাটা দরজার বাইরে মাথা টা বের করে চারদিকে ভালো করে চোখ ঘুরিয়ে দেখে কেউ কিছু দেখেছে কিনা?চোখে কাউকে দেখতে না পেয়ে মহিলা টি অতি সন্তর্পণে দরজাটা বন্ধ করে দেয়।

প্রণয় মহিলা টির দিকে উৎসুক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে।মহিলা টি কোনো বাক্যব্যয় না করে একটা তালা বদ্ধ করা রুমের দিকে এগিয়ে যায়।চাবি দিয়ে রুমের দরজা খুলে সেই রুমের ভিতরে প্রবেশ করে।

প্রণয়রা ও মহিলার পিছন পিছন রুমের ভিতরে যায়।রুমের আলো জ্বা’লাতেই প্রণয়রা চার দিকে চোখ ভুলায়।ছোট্ট একটা পড়ার টেবিল।টেবিলের উপরেই মাষ্টার্স এর কিছু বই।সাথে চাকরির প্রস্তুতি মূলক বই ও আছে।প্রণয় পড়ার টেবিলের কাছে যেতেই দেখে একটা ছবি,একটা মেয়ের ছবি ফ্রেম ছাড়া।

প্রণয় টেবিলের পাশ থেকে পিছন ঘুরে তাকাতেই চোখ পড়ে বিছানায়। একটা মেয়ে শুয়ে আছে।গায়ে একটা কাঁথা জড়ানো। প্রণয় অ’বাক হয়।আশ্চর্য চিত্তে ভাবে,তারা রুমে ঢুকেছে হাটছে টুকটাক কথা ও বলছে।অথচ মেয়েটার ঘুম ভাঙেনি।পরোক্ষণেই আবার প্রণয় ভেবে নেয়।হয়তো মেয়েটার ঘুম ভারী। কিন্তু মহিলাটা তাদের এই রুমে আনার কারণ কি?

মহিলাটা পাশের রুম থেকে দুইটা চেয়ার আর দুইটা মোড়া নিয়ে আসে।নিজে গিয়ে শুয়ে থাকা মেয়েটার মাথার পাশে বসে।প্রণয় আর রিফাত চেয়ারে বসে,সজীব সুজন মোড়ায় বসে।

প্রণয় মহিলা টার দিকে তাকিয়ে বলে,

—আন্টি আমাদের এই রুমে আনার কারণ? উনার তো ঘুমার সমস্যা হবে।আমরা পাশের রুমে গিয়ে নাহয় কথা বলি।

প্রণয়ের কথায় মহিলাটি চোখের পানির মুছে বলে,

—বাবা,আমার মেয়েটা যে স্বাভাবিক নেই।ও আর কোনো দিন স্বাভাবিক হবে কিনা জানিনা।

মহিলা টার কথায় প্রণয়দের চারজনের-ই পিলে চমকে উঠে।স্বাভাবিক নেই মানে।এবার তারা চারজনেই মেয়েটার দিকে ভালো করে তাকায়।তাকিয়েই তারা অষ্টম আশ্চর্যে পৌছে যায়।

এতক্ষণ মেয়েটার দিকে ভালো করে নজর না দেওয়া তে বুঝতে পারেনি।এখন একটু ভালো করে চেহারার দিকে তাকাতেই দেখে,মেয়েটার মুখে গলায় অসংখ্য আছড়ের দাগ।ফর্সা চেহারায় যেগুলো স্পষ্ট ফুটে আছে।যেন কোনো জ’ন্তু জানো’য়ার মেয়েটা কে আক্র’মণ করেছে।

প্রণয় এবার মহিলাটির দিকে তাকিয়ে বলে,

—উনার এই অবস্থা কি করে হলো?

—গণ ধর্ষ’ণ করা হয়েছে আমার মেয়েকে।

এই কথাটা বলেই মহিলাটা ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে।প্রণয় চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে মেয়েটার নাকের সামনে দুটো আঙুল দিয়ে দেখে যে মেয়েটার নিশ্বাস চলছে।তারমানে বেচেঁ আছে।প্রণয় গলায় এবং হাতে ও পার্লস রেট চেক করে।

প্রণয় গলা খাঁকাড়ি দিয়ে চেয়ারে বসে মহিলাটার দিকে প্রশ্ন ছু’ড়ে দেয়,

—আন্টি আপনার মেয়েকে আপনারা পেলেন কোথায়? আর উনার নিশ্বাস তো চলছে।কিন্তু চোখ খোলা নেয় কেন?

প্রণয়ের কথায় মহিলাটি এবার বড় করে দুটো তপ্ত নিশ্বাস ত্যাগ করে প্রণয়ের দিকে তাকিয়ে বলে,

—আমার মেয়ের নাম লাবণ্য।আমার পরিবারে আমি আর আমার মেয়েই। মেয়ের টিউশন এর টাকা দিয়ে সংসার আর তার পড়াশুনার খরচ চলে।আমিও মানুষের বাড়িতে কাজ করি সুযোগ পেলে।মেয়েটা এবার মাষ্টার্স এ পড়ে।বাইরে থেকে বাড়ি আসতে আসতে প্রতিদিন লাবণ্যের বিকেল হয়ে যায়।কিন্তু দুই দিন আগে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পরেও লাবণ্য বাড়ি ফিরে না আসায় আমি একটু চিন্তায় পড়ে যায়।তবে নিজের মনকে বুঝ দিই হয়তো আজকে টিউশনে বেশি সময় নিয়ে পড়াইতেছে।ফোন দিছি ফোন বন্ধ।ওর একটা ছাত্রীর মায়ের নাম্বার ছিলো আমার কাছে।উনার কাছে ফোন দিয়ে জানতে পারি লাবণ্য নাকি তার বাসায় যায়নি পড়াতে।আমি এবার একটু বেশিই চিন্তায় পড়ে যাই।এশার নামাজের সময় হয়ে আসছিলো মেয়েটা এখনো বাসায় আসেনি।পাশের ঘরে রহিমা ভাবি কে নিয়ে বের হই লাবণ্য কে খুঁজতে। কলপাড়ে গেলেই দেখি একটা গাড়ি দরজা খুলে কিছু একটা ফেলে দিয়েই আবার দ্রুত চলে যায় গাড়ি চালিয়ে। আমি আর রহিমা ভাবি ফেলে দেওয়া জিনিসটার কাছে যেয়ে দেখি ওটা আর কিছুনা। ওটা আমার লাবণ্য। বিধ্বস্ত অবস্থায় বস্ত্রহীন আমার মেয়েটার নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে।

মহিলাটা কিয়তক্ষন থেমে থেকে আবার বলতে শুরু করে,

—আমি আর রহিমা ভাবি তাড়াতাড়ি করে দুইজনের গায়ের উড়না দিয়ে ওর শরীর ঢেকে ঘরে নিয়ে আসি।বার বার ডাকার পর মেয়েটা একটু চোখ খুলে শুধু অস্পষ্ট স্বরে “বি/ভি” বলেই জ্ঞান হারায়।আর কথা বলেনি।অস্পষ্ট ভাবে ওই টুকু কথা বলার কারণে বুঝিনি “বি” বলেছে নাকি “ভি” বলেছে।ওই রাতেই ডাক্তার ডাকি সবার অগোচরে। ডাক্তার দেখে বলে,আমার মেয়েটা কে গণ ধর্ষ’ণ করেছে।এবং ধর্ষ’ণ এর পরে হাই ডোজের ড্রা’গ দেওয়া হয়েছে লাবণ্য কে।যার ফলে লাবণ্য কোমায় চলে গেছে।আমার মেয়েটা কে নিয়ে জরাজীর্ণ বাড়িতেই পড়ে থাকি লোকমুখের কথার ভ’য়ে ঘর থেকে বের হইনা।বাপের বাড়িতে ভাইদের সাথে সম্পত্তি নিয়ে ঝ’গড়া করায় বের করে দিছে ভাগ না দিয়ে।বছর দুয়েক আগেই স্বামী মা’রা গেছে।একমাত্র মেয়ে ছিলো আমার সম্বল। সেই মেয়েটা কেও নর পশু’রা খুবলে শেষ করে দিলো।

বলেই মহিলাটা কান্না করতে থাকে।প্রণয় দের চোখে জ্বল’ছে।হয়তো কান্নারা অনুমতি চাইছি নেত্রপ্রদাহে উপস্থিত হওয়ার জন্য।

🌸🌸

—আম্মু আমি আর কতবার বলবো আমার এখন বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে নেই।বিশেষ করে যারা মেয়েকে দেখতে এসে পরীক্ষার পয়েন্ট জিজ্ঞেস করে তাদের বাড়িতে তো বিয়ে করে যাওয়ার কোনো ইচ্ছাই নেই আমার।

বলেই জান্নাত ছাদে চলে যায়।রাহেলা মেয়ের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নিশ্বাস ফেলে।এই মেয়েকে বুঝানোর কর্ম উনার না বুঝে গেছেন।গত মাসে পাশের বাসার পাখির মা একটা প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলো জান্নাতের জন্য।ছেলের ফ্যামিলি উনার রিলেটিভ। ছেলেদের বাড়ি থেকে দেখতে এসে জান্নাত কে পরীক্ষার পয়েন্ট জিজ্ঞেস করেছে।এটা নিয়ে জান্নাতের বিরোধিতা।তাইতো রাহেলা বিয়ের কথা বললেই জান্নাত কথায় কথায় এটা বলে।

..🌸🌸

ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে জান্নাত। চারদিকের উত্তপ্ত রৌদ্রেরঝাঁজ। যেন রোদের তেজে পৃথিবী টাকে ঝ’লসে দিবে।দক্ষিণ থেকে বাতাস এসে গায়ে দোলা দেয়।এই খা খা রৌদ্দুরে এমন বাতাস ও যেন শরীরের জন্য তৃপ্তি সহিত।

হঠাৎ গাড়ির আওয়াজে জান্নাত ছাদ থেকে নিচের দিকে তাকায়।একটা কালো গাড়ি যাচ্ছে। গাড়ি টাকে চিনতে জান্নাতের বেগ পেতে হয়নি তার।জান্নাতের ভাষ্যমতে এটা মিষ্টার ভালোবাসার গাড়ি।গাড়িটার থেকে চোখ তুলে শূর্ণ্য দৃষ্টি ফেলে সুদূরে তাকিয়ে থাকে

—এই ভর দুপুরে ছাদে দাঁড়িয়ে কি রৌদ্রসেবন করছেন?

প্রণয়ের কণ্ঠ কানে আসতেই জান্নাত দেখে শুভ্র পাঞ্জাবী,চোখে রিমলেস চশমা,মুখের কালো মাক্সটা খুলতে খুলতে কথা বলছে পাশের ছাদে দাঁড়িয়ে থাকা প্রণয় নামের যুবকটি।জান্নাত একটু ভালো করে পরখ করে যুবকটি কে।গরমে ঘেমে নেয়ে শুভ্র রাঙা পাঞ্জাবী টা শরীরের সাথে লেপ্টে আছে।এলোমেলো চুল গুলো দুই হাত দিয়ে ঠিক করে প্রয়াস চালাচ্ছে যুবকটি। মুখের মধ্যে মুক্তোর মতো ঘামে চিক চিক করছে।সেই চিক চিক করা ঘাম গুলো টিস্যু পেপারে মুছে নেয় যুবকটি।

প্রণয় ভ্রুকুঞ্চন করে জান্নাত কে সুধাল,

—এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?এমনি আমি মানুষ টা কালাচাঁদ। আপনারা মেয়েরা এভাবে তাকিয়ে থাকলে তো মানিকচাঁদ হবোই না উল্টা আরো ব্ল্যাক মুন এ পরিণত হবো।

প্রণয়ের কথায় জান্নাত প্রথমে অ’বাক হয়।কিছুক্ষণ বিচলিত থাকে।পর মুহূর্তে যখন প্রণয়ের মুখোচ্চরিত ” কালাচাঁদ আর ব্ল্যাক মুন” শব্দটা শুনে বুঝে আসে দুইটাই এক শব্দ।শুধু বাংলা আর ইংরেজি তফাৎ। তখন-ই জান্নাত ফিক করে হেসে দেয়।

প্রণয়ের জান্নাতের হাসিতে যতটা না মুগ্ধ হচ্ছে তার চেয়ে বেশি তার চক্ষুদ্বয় গিয়ে আটকায় সেই লালচে কালো তিল টার মাঝে।রোদের আলোয় তিলটা টা যেনো আরেকটু সৌন্দর্যময় হয়ে গেছে।জান্নাত এখনো হেসে যাচ্ছে।আর প্রণয় তার দিকে চেয়ে আছে।

সে সময় প্রণয় গাড়ি থেকে নেমে ছাদে দাঁড়ানো রৌদ্রময়ী কন্যার দিকে চোখ পড়তেই বাসায় না ঢুকে সরাসরি ছাদে চলে এসেছে একটু কথা বলার অদম্য ইচ্ছার জোরে।

জান্নাত হাসতে হাসতে হঠাৎ প্রণয়ের দিকে চোখ পড়ে।প্রণয় তার দিকেই মোহনীয় দৃষ্টিতে চেয়ে আছে দেখে জান্নাত হাসি থামিয়ে ফেলে।লজ্জা পেয়ে যায় সে।প্রণয়ের সাথে আর কোনো কথা না বলে দ্রুত হেটে ছাদ থেকে চলে যায় সে।

প্রণয় জান্নাতের লজ্জা পেয়ে চলে যাওয়া দেখে হেসে ফেলে। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে আকাশের সূর্যি মামা টা ও শুভ্র মেঘের আড়ালে লুকিয়ে পড়েছে।যেন সূর্যটা ও লজ্জা পেয়ে লুকিয়েছে মেঘের আড়ালে। প্রণয় আরেকবার পাশের বাসার ছাদের দরজার দিকে তাকিয়ে আবার পিটপিট করে আকাশে তাকিয়ে আওড়ায়,

—‘‘আমার তাকানো তে রৌদ্রময়ী কন্যা লজ্জা পেয়েছে।তুমি কেন লজ্জা পেয়েছো সূর্যি মামা ’’?

চলবে ইনশাল্লাহ✨🖤

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে