প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_৬৪

0
2419

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_৬৪
#Writer_Afnan_Lara
?
আহানা হেসে দিয়ে পিছন থেকে দৌড়ে এসে শান্তর গলা জড়িয়ে ধরে উঁচু হয়ে গেলো
শান্ত আহানার হাত দুটো ধরে খিলখিল করে হাসতেসে
“ভাবলাম আহানা আমার কথাগুলো সিরিয়াস নিয়ে নিয়েছে কিন্তু না সে আমার মজা করে বলা কথা মজা হিসেবেই নিয়েছে!!!
“””যদি তুমি ভালোবাসো, ভালো করে ভেবে এসো,
খেলে ধরা কোনো খানে, রবে না,
আমি ছুঁয়ে দিলে পরে, অকালেই যাবে ঝরে,
গলে যাবে যে বরফ, গলে না.
আমি গলা বেচে খাবো, কানের আশেপাশে রবো,
ঠোঁটে ঠোঁটে রেখে কথা, হবে না.
কারো একদিন হবো, কারো একরাত হবো,
এর বেশি কারো রুচি, হবে না.
|| আমার এই বাজে স্বভাব, কোনোদিন যাবে না ||
.
যাওয়ার দরকার নেই,আমার এই বাজে স্বভাবআলা শান্তকেই চাই!!
.
তাই??
.
হুম
.
আচ্ছা চলো আশ্রমের বাচ্চাদের সাথে আজ নাস্তা করবো
.
ওকে
.
দুজনে মিলে আশ্রমে ঢুকে বাচ্চাদের রুমে আসতেই বাচ্চারা দৌড়ে এসে ওদের হাত পা ধরে দাঁড়িয়ে পড়লো,শান্ত হাঁটু গেড়ে বসে ওদের কয়েকজনের গাল টিপে দিলো তারপর ওদের পাশে বসলো
শান্ত এসেছে শুনে ম্যানেজার মিলে বাকি কর্মচারীরা ভালো নাস্তার ব্যবস্থা করলো,শান্ত বাচ্চাদের সাথে খেলতে খেলতে বললো সবার জন্য একই খাবারের ব্যবস্থা করতে
.
আরিফ আঙ্কেল খুশি হয়ে দরজার পাশে দাঁড়িয়ে আহানা আর শান্তকে দেখে যাচ্ছে
“আজ শান্তি মা থাকলে কতই না ভালো হতো,সবকিছুই আছে শুধু উনার কমতিটা রয়ে গেসে”
শান্ত একটা পুচকিকে উঁচু করে ধরে ঘুরাতে ঘুরাতে বললো”মা আছে!!!
মা এই ছোট ছোট বাচ্চাদের মাঝে আছে,এরা এখনও অবুঝ,এদের দ্বারা এখনও কোনো পাপ হয়নি,আমার মা এদের মাঝেই আছে,দেখুন না এদের মুখে হাসি আমার মায়ের হাসির মতন,আমি এদের দিকে তাকালেই আমার মাকে দেখতে পাই
আমার মায়ের দুটো প্রান ছিল,একটা আমি আর একটা এই আশ্রমের সবকয়টা অনাথ সন্তান,আমার মা এদের খুব ভালোবাসতো””
.
আহানা আশ্রমের বাইরের পিলারটা ধরে ডোবাটার দিকে তাকিয়ে আছে,হঠাৎ করে মাথার ভেতর টনটন শুরু হয়ে মাথার ভেতর জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে গেলো,অস্বস্তি লাগতেসে অনেক
(আপনাদের একটা কথা বলতে চাই,আপনারা অনেকেই বলতেসেন আহানা যেন তার মা বাবাকে খুঁজে পায়,কিন্তু বাস্তবে এমন হয় না,এটা সিনেমায় হয় যে হারিয়ে যাওয়া মা বাবা ফিরে আসে
বাস্তবে একবার হারালে আর পাওয়া যায় না,গল্পের থিম আমি বাস্তব থেকে নিয়েছি তাই কাল্পনিক কিছু যোগ করবো না,আশ্রমের অনাথেরা অনেকেই তাদের মা বাবা পায় তবে আসল না,যারা দত্তক নেয় তাদের পায়,আসল মা বাবাকে পায় না তারা,আহানাও পাবে না)

আহানা?
.
হুম
.
আসো নাস্তা করবা,তুমি আবার সেখানে গেসো??
.
আহানা শান্তর সামনে এসে ওর হাত ধরে বললো” একটা জিনিস চাইবো দিবেন?”
.
সব তোমার
.
এই ডোবাটা আমার নামে করে দিন
.
কি করবে?
.
আমি ডোবাটায় মাটি ফেলে ভর্তি করে একটা পার্ক তৈরি করবো এখানে,আশ্রমের বাচ্চাদের জন্য,তাদের খেলার জন্য আশ্রমে তেমন কোনো সুব্যবস্থা নেই
আর….
.
আর?
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
আর আবার কোনো মা বাবা তাদের অবৈধ সন্তানকে ফেলতে আসলে ডোবায় ফেলবে না,পার্কে ফেলে যাবে
সে বড় হলে কেউ তাকে বলতে পারবে না যে তোমাকে তো ডোবায় ফেলে গেসিলো,বলবে তোমাকে পার্কে রেখে গেছে
একটু হলেও তো সম্মান থাকবে তাই না?
.
শান্ত আহানার মাথা ধরে ওকে কাছে টেনে আনলো
“ঠিক আছে,আমি এখানে পার্ক বানিয়ে দিব”
.
ধন্যবাদ
.
আহানা আর শান্ত নাস্তা করে বের হতেই দেখলো নওশাদ আর রুপা এসেছে আশ্রমে
.
কিরে শান্ত রিসোর্টে কবে যাবি তোরা,আমার আর তর সইছে না
.
তোরা বললে আজ দুপুরে খেয়ে রওনা দিব,রিসোর্ট এখান থেকে ১০মিনিটের পথ
.
ভাইয়া আমি একটা কথা বলি,আমরা এখন তো সকালের নাস্তা করেছি,এখন গেলে কেমন হয়?
.
রুপা আজ তো বৌভাত
.
হুম তাই তো
.
আচ্ছা তাহলে আমরা বরং দুপুরেই যাব
.
৪জনে মিলে সেই সরু পথটা ধরে হাঁটতেসে,সামনে নওশাদ আর রুপা
পিছনে শান্ত আর আহানা,সরু পথটার দুপাশে বিরাট বিরাট ঝাউ গাছ,আর দুপাশে ধানের ক্ষেত
পথটা মাটির,আহানা পথের দিকে চেয়ে হাঁটতেসে,মাঝে মাঝে চুলগুলো কানে গুজে দিচ্ছে,আর শান্ত পকেটে হাত ঢুকিয়ে সেন্টার ফ্রেশ চিবাচ্ছে
নওশাদ জায়গাটা ভিডিও করায় ব্যস্ত,রুপা একটা পকেট মিররে আইব্রো ঠিক করছে হেঁটে হেঁটে
.
আহানা কাদায় পা দিতেই পা আটকে গেলো আর সে দুম করে পড়ে যেতে নিতেই শান্ত ধরে ফেললো ওকে
আহানা মুখ তুলে চেয়ে দেখলো শান্ত আরেকদিকে তাকিয়ে আছে
আহানা হেসে ওর হাত জড়িয়ে ধরে আবার হাঁটা ধরলো
বাসায় এসেই দেখলো অনেক মেহমান এসে গেসে
তাড়াতাড়ি করে আহানা শাড়ীর আঁচল নিয়ে মাথায় ঘোমটা দিয়ে নিলো
সবাই আহানার থুতনি ধরে টেনে বলতেসে বাহ কি সুন্দর
আহানা দাঁত কেলিয়ে তাকিয়ে আছে ফুফু আর বাকিদের দিকে
.
আহানা?ওমা কি সুন্দর কোমড়ের বিছা দিয়েছো তুমি
আমি তো একদমই খেয়াল করিনি,অনেক সুন্দর এটা
.
তাই না ফুফু??কি কিউট তাই না?
.
তুই এত লাফাস কেন,ওহহহ আচ্ছা,তাহলে এটা তুই দিয়েছিস?
.
জি!!আর কে দিবে??
.
বাহ পছন্দ তো মাশাল্লাহহহ?
.
বউ ও,কোমড়ের বিছাও?

বৌভাতের অনুষ্ঠানটা জমজমাট হয়েছে,,নওশাদ,রিয়াজ আর সূর্যের কারণে,ওরা লুঙ্গী ডান্স দিয়েছে তার উপর ঘোড়ার গাড়ী করে ১কিলোমিটার ঘুরেছে তাদের ইচ্ছা পূরন হলো অবশেষে
৩টা বেজে গেসে,নওশাদ রুপা আর শান্ত আহানা বাবা আর পরিবারের সবাইকে বিদায় জানিয়ে বেরিয়ে পড়লো রিসোর্টের উদ্দেশ্যে
রিকসায় বসে আহানা বাইরের ঝাউগাছ গুলো দেখছে
আর শান্ত গালে হাত দিয়ে আহানাকেই দেখে যাচ্ছে শুধু
হঠাৎ ডাক্তারের কথা মাথায় আসতেই তাকে কল করলো সে
ওমা তার দেখি ফোনই নট রিচেবল বলতেসে,আজব তো!
.
১০/১২মিনিটের মধ্যেই ওরা রিসোর্টে পৌঁছে গেলো,দোতলা দালানের রিসোর্টটা,,কমলা রঙের দালান,পাশ দিয়ে একটা বট গাছ অনেক উঁচুতে উঠে গেসে,আহানা দোতলার বারান্দাটার দিকে চেয়ে আছে,কারণ সেই বারান্দায় দাঁড়ালে অনায়াসেই বটগাছটা ছোঁয়া যাবে,,আহানা মনে মনে ভাবছে কিরকম লাগবে তখন
শান্ত আহানার তাকানো দেখে উপরের তলার চাবিটাই নিলো ম্যানেজার থেকে
নওশাদ রুপাও দোতলায় তবে তারা বাম পাশের ইউনিটে,সেখান দিয়ে সবুজ ঘাসে ঘেরা মাঠের মতন জায়গা দেখা যায়,রুপা বটগাছটা খেয়াল করেনি করলে পাগল হয়ে যেতে ডান পাশের ইউনিটের জন্য
শান্ত আর আহানা রুমে ঢুকলো দোতলায় এসে
রুমটায় ঢুকে আহানা কোনোদিক না তাকিয়েই বারান্দায় চলে আসলো,মাথা উপরে তুলে বটগাছটার শেষ সীমানা পর্যন্ত দেখতেসে সে
গাছটায় সিঁড়ির মত ডিজাইন করা মনে হচ্ছে
আহানা হাত দিয়ে জায়গাটা চেপে দেখলো উঠা যাবে কিনা
মজবুত দেখে হেসে শান্তকে ডাকতে যাবে তার আগেই শান্ত এক লাফে বারান্দা থেকে গাছে উঠে গেলো
আহানা ভয় পেয়ে মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
.
আরে ভয় পাও কেন,আসো তুমিও আসো,আমার হাত ধরো
.
না আমার ভয় করে
.
আমি আছি না?
.
আহানা হেসে শান্তর হাত ধরলো,শান্ত এক টানে ওকেও গাছের উপর নিয়ে আসলো,একজনের দাঁড়ানোর জায়গা আছে আর সেটাতে শান্ত দাঁড়িয়ে আছে আর আহানা তার গায়ে ভর দিয়ে কোনোরকম দাঁড়িয়েছে
.
আহানা দেখো সাপ!!
.
সাপের কথা শুনে আহানা চিৎকার করে শান্তকে চেপে ধরলো
.
হিহি
.
হাসতেসেন কেন,তার মানে মিথ্যা?
.
হুমম?
.
আহানা শান্তকে ধরে কয়েকটা কিল বসিয়ে দিলো
.
কেউ দরজায় নক করতেসে মনে হয়,চলো বারান্দায় নেমে যাই
শান্ত আহানার হাত ধরে ওকে নামিয়ে তারপর নিজে নামলো,গিয়ে দরজা খুলতেই দেখলো নওশাদ দাঁড়িয়ে আছে
পরনে হাফ প্যান্ট, টিশার্ট, চোখে চশমা,পায়ে স্যান্ডেল, একটা ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে
ও আবার হাতে একটা ফুটবল ও আছে
.
কিরে নওশাদ?কি হইসে তোর??এরকম শুটকি মাছের মত ব্যাকা হয়ে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?শরীর খারাপ নাকি তোর?
.
ধুর হারামি!!খেলতে যাবো চল,তোকে ডাকতে আসলাম তাই
.
খেলবো?কই?
.
আরে রিসোর্টের চারপাশে খোলা জায়গা আছে,আমি আর তুই ফুটবল খেলবো সেখানে
.
গোলকিপার কে হবে?
.
আমাদের বউরা আছে না
.
তোর মাথা গেসে?আহানা অসুস্থ,, ও এত দৌড়াদৌড়ি পারবে না
.
তাহলে বল কি খেলবি
.
ভাইয়া আমি বলি?
.
হুম বলো
.
কানামাছি খেলবো
.
রুপা এসে বললো হ্যাঁ এটা বেস্ট হবে
.
ব্যস সবাই মিলে রিসোর্ট থেকে বেরিয়ে আসলো খোলা মাঠে
আহানা তার একটা ওড়না নিয়ে এসেছে সাথে করে
.
শান্ত সেন্টার ফ্রেশ চিবাতে চিবাতে বললো “তা আগে চোখ বাঁধবে কে?”
.
নওশাদ বললো”” সবাই দাঁড়াও গোল হয়ে,, আমি বের করতেসি””
.
অপু,১০,২০,৩০.৪০.৫০.৬০.৭০.৮০.৯০.১০০!
হাহা,,রুপা তুমি চোখ বাঁধবা
.
ধুরু!!
.
রুপাকে আহানা চোখ বেঁধে দিলো,চরকার মত ঘুরতেসে সে,নওশাদ ওকে চিমটি কেটে কেটে পালাচ্ছে বারবার
অবশেষে রুপা শান্তর হাত ধরে বললো “এটা নওশাদ”
তারপর চোখ থেকে ওড়না খুলে দেখলো শান্ত দাঁত কেলিয়ে তাকিয়ে আছে আর নওশাদ রাগে ফুলতেসে
.
“তুমি আমাকে চিনলে না??”কথাটা বলে নওশাদ এক দৌড়ানি দিলো রুপাকে,দৌড়াতে দৌড়াতে দুজনে হাঁপিয়ে গেলো
তারপর কিলাকিলি করে আবার ফেরত আসলো
এবার চোখ বাঁধবে নওশাদ
রুপা আহানার হাত নিয়ে নওশাদকে ধরিয়ে দেওয়ার আগেই নওশাদ রুপার হাত ধরলো
রুপা তো লজ্জায় শেষ
.
না এইটা রুপা না,রুপার হাত এত খসখসে না,আমার রুপার হাত নরম
নওশাদ এবার আহানার হাত ধরে হেসে বললো “এই তো আমার রুপা☺”
.
তোমার মাথা,বেয়াদব,অসভ্য!!
.
নওশাদ জিভে কামড় দিয়ে এক দৌড় দিলো
.
এই তোরা কি শুধু মারামারি করবি?এখনও তো আমরাই চোখ বাঁধলাম না
.
এবার শান্ত বাঁধলো
.
রুপা আহানাকে অনেক দূরে নিয়ে দাঁড় করিয়ে রেখেছে তারপর নওশাদ এর হাত নিয়ে শান্তর হাতে ধরিয়ে দিলো
শান্ত দাঁত বের করে বললো “এই হাতের আর গরিলার হাতের কোনো তফাৎ নাই,এইটা তো মাস্ট নওশাদের হাত
.
কি বললি তুই?তোর চোখ বাঁধাই থাক,যতক্ষন না আহানাকে চিনতে পারিস!!
.
এবার রুপা নিজের হাত ঘষে মেজে শান্তর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো
.
শান্ত রুপাকে টাচ ও করলো না,শুধু মুচকি হেসে বললো “রুপা সরো”
.
রুপা এবার আহানাকে দাঁড় করিয়ে আহানার পিছন দিয়ে নিজের হাত এগিয়ে এনে শান্তর হাতের সামনে নিলো
শান্ত রুপার হাত ধরলো না,সে তার হাত এগিয়ে নিয়ে আহানার ঠোঁট স্পর্শ করলো,আঙ্গুল দিয়ে ঠোঁটটা এলিয়ে দিয়ে হেসে বললো “এইটা আহানা”
.
ভাইয়া কেমনে বুঝলেন?কেউ কেউ তো হাত ধরেও চিনে না আর আপনি কিনা ঠোঁট ধরে চিনতে পারলেন?
.
আহানা ঠোঁটে লিপস্টিক দেয়নি তাই চিনেছি আমি,, ওর শ্বাস নিশ্বাস সব কিছুর সাথে পরিচিত আমি
.
ওহ!!আচ্ছা,নওশাদ দেখে কিছু শিখো
.
হুহহহ!!শান্ত চল এই পুকুরে মাছ ধরবো
.
চল!!
.
আর আমরা?
.
তোমরা তাকায় তাকায় দেখো
.
শান্ত আর নওশাদ পুকুরের মালিকের সাথে কথা বলে জাল নিয়ে এসে হাজির
রুপা পিক তুলতেসে কারণ শান্ত আর নওশাদ লুঙ্গি পরে সেটা পেঁচিয়ে উদম গায়ে পুকুরে নেমেছে
আহানা মুখে হাত দিয়ে আরেকদিকে ফিরে দাঁড়িয়ে আছে
প্রচন্ডভাবে লজ্জা করছে তার,এর আগে সে শান্তকে এমন বেশে দেখেনি,আর শান্তকে উদম গায়ে দেখলে তার নিজেরই গায়ে কাঁটা দেয় শুধু
কিছুক্ষন বাদে আহানা চোখ বড় করে সামনে তাকালো,তার সামনে একটা ইয়া বড় রুই মাছ ঝুলতেসে,শান্ত ঝুলিয়ে ধরে রেখেছে
.
দেখসো?তোমার জামাই মাছ ধরায় কত এক্সপার্ট ?
.
নওশাদ ভাইয়া কি ধরছে?
.
হেহে?আমি তো শান্তর থেকে এক কদম এগিয়ে,আমি একটা রুই মাছ আর একটা….
.
কার জামাই দেখতে হবে না??রুপার জামাই নওশাদ তো বেশি মাছ ধরবেই হুহহহহ?
.
পুরো কথা তো শুনো রুপা!!আমি একটা রুই মাছ আর একটা তেলাপিয়া মাছের বাবু ধরসি?
.
কথাটা শুনে রুপা রেগে নওশাদের চুল টেনে দিলো
.
আরে এমন করো কেন,এটা ভাজি করতে অনেক মজা লাগবে
.
শান্ত আর আহানা হাসতে হাসতে রিসোর্টের দিকে যাচ্ছে
রিসোর্টের রান্নাঘরে গিয়ে যিনি রান্না করেন তার হাতে মাছগুলো দিয়ে তারা যে যার রুমে ফিরে আসলো
শান্ত গোসল করতে গেসে
আহানা শাড়ীটা পাল্টিয়ে একটা থ্রি পিস পরে নিলো,আবার বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো সে
.
বিকাল হয়ে গেসে,৫টা বাজে মনে হয়,আহানা বারান্দার থেকে উঠে বটগাছটায় পা দুলিয়ে বসলো,বেশ লাগতেসে,চা হলে আরও বেশ হতো
.
পা দুলিয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে সে,দূর দূরান্তে কোনো বাড়িঘর নেই,বিরাট এক সবুজ মাঠের মাঝখানে রিসোর্টটা আর রিসোর্টের পিছনে একটা খাল বয়ে গেসে,পাশে এই বটগাছটা আর সামনে এক কাতারে ১কিলোমিটার জায়গা জুড়ে কলাগাছ লাগানো,জায়গাটা বেশ সুন্দর,ঠাণ্ডা নিরিবিলি তাই হয়ত রিসোর্টটার নামও “নিরিবিলি”
শান্ত গোসল করে এসে দেখলো আহানা পা দুলিয়ে বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে
কিছুক্ষণের জন্য শান্তর মনে হলো এই বুঝি আহানাকে হারিয়ে ফেললো সে
দৌড়ে এসে আহানার কোমড় জড়িয়ে ওকে উপর থেকে নামিয়ে নিলো সে
.
আরে আরে কি হইসে??
.
কি হইসে মানে?তুমি এত রিস্ক নিয়ে উঠে বসতে গেসো কেন?তাও পা দুলিয়ে,মাথা কি গেসে তোমার??বলদা গার্ডেন একটা
.
কথাটা গুলো বলে শান্ত চুল মুছতে মুছতে ল্যান্ডলাইনে কল করে বললো দুকাপ চা আর বিসকিট পাঠাতে
.
আহানা গাল ফুলিয়ে বিছানায় বসে আছে
.
কি?হাড্ডি ভাঙ্গলে ভালো লাগতো তোমার?
.
পড়ি নাই তো,জায়গাটা সেফ,আর আমি এক হাত দিয়ে গাছ ধরেও রাখসিলাম
.
শান্ত হাতে থাকা তোয়ালে আহানার গায়ে ছুঁড়ে মেরে গিয়ে ঠাস করে বারান্দার দরজা লাগিয়ে ফেললো
আহানা তোয়ালে মুখ থেকে সরিয়ে অসহায়ের মত তাকিয়ে আছে,মনে হয় এখনই বুঝি কেঁদে দিবে
.
তারপর শান্ত রুমের পর্দা টেনে দিলো,পুরো রুম কিঞ্চিত অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে গেছে
আহানা এখনও বোকার মত চেয়ে আছে শান্তর মুখের দিকে
শান্ত এগিয়ে এসে হঠাৎ আচমকা আহানার ঠোঁটটা ৫সেকেন্ড ছুঁয়ে ওকে ছেড়ে পাশ থেকে তোয়ালে নিয়ে আয়নার সামনে চলে গেলো
আহানা ভূত দেখার মত ভয় পেয়ে থ মেরে বসে আছে
হুট করে শান্ত কিস করে বসবে তা একদমই ভাবেনি সে
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে