প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_৬২
#Writer_Afnan_Lara
?
সকাল ১১টা বাজে,,মেহমানে ভর্তি পুরো বাড়ি,আর কেউ আসা বাকি নেই কারণ সবাইকে বলা হইসে ৯টায় চলে আসতে যেখানে এখন ১১টা বেজে গেছে তাই আর কেউ আসবে না,আসার বাকিও নেই,সবাই দখল করে নিয়েছে যার যার সিট
শান্ত সানগ্লাস পরে স্টেজে বসে আছে,নওশাদ ঝুলে /শুয়ে/উল্টে শান্তর ছবি তোলায় ব্যস্ত
আর রুপা একবার এক ফুল নিয়ে তার মাথায়,কোমড়ে,কানে গুজতেসে
আহানা ড্রয়িং রুমে রোবটের মতো বসে আছে,ওর ডান পাশে শান্তর ফুফু ছোটজন আর বাম পাশে ওর নানু
তারা একবার এক প্রশ্ন করতেসে,তবে কেউ কোনো নেগেটিভ মন্তব্য করেনি কারণ আহানা সয়ং শান্তির পছন্দ করা মেয়ে,তাই কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না
কিন্তু বিয়ে বাড়ি বলে কথা একজন না একজন তো কটু কথা বলবেই আর তাই হলো
রেনুর মা এসে আহানার পাশে বসে মুখ ফুটে বলেই দিলেন কটু কথা
আর তা হলো “শুনসো তোমরা??মাইয়ার নাকি জন্মের ঠিক নাই,অনাথ?
অনাথ মাইয়ারা তো সব অবৈধ হয়”
.
আহানা মুখ তুলে উনার দিকে তাকিয়ে আবার ফ্লোরে দিকে চোখ নামিয়ে নিলো,এই কথা সে আরও শুনেছে
এই বাড়িতে এসে এত হাসি আনন্দের মাঝে সে আসলেই ভুলে গেসিলো সব এখন মনে পড়লো আবার,সমাজ আপনাকে আপনার অতীত মনে করিয়ে দিতে কখনও পিছু পা হবে না,আপনার মরনের সময় ও না,এটাই হয়ে আসছে,পরেও হবে
সমাজ কে বদলানোর ক্ষমতা নেই কারও
.
মিতু শরবতের ট্রে নিয়ে সামনে এসে ওর নানুর হাতে শরবত এক গ্লাস দিয়ে বললো”” মা তোমাকে ডাকে যাও সেদিকে যাও
তোমার কি এতো??এসব শান্ত ভাইয়া বুঝে নিবে
তুমি এসব বললে তার মা বাবা ফিরে এসে তোমাকে সালাম করবে না,মেয়ের হবু জামাইয়ের সৎ মায়ের মা হিসেবে তোমাকে কানাকড়ি ও দিবে না
তাহলে তোমার এত কিসের কথা,যাও ভিতরের রুমে গিয়ে আরাম করো,তোমার না বাতের ব্যাথা??বাতের ব্যাথার জন্য নাকি জগ থেকে পানি ঢেলেও খেতে পারো না তাহলে এত কথা আসে কই থেকে??””
আহানা মুচকি হেসে মিতুর দিকে তাকিয়ে আছে
মিতু ট্রেটা নিয়ে যেতে যেতে বললো “তোমারে আমি পছন্দ করি না, আবার ঘৃনাও করি না,তুমি আমার ভাইয়ার বউ বলে ব্যস এইটুকু,আর কিছু না হুহহহ”
♣
কিরে ভাই নওশাদ?আমার বউ কোথায়??কতক্ষণ হলো দেখি না তারে
.
ঢং!!রুপা গেসে আনতে
.
রুপা আহানাকে স্টেজে নিয়ে আনলো,আহানা শান্তর পাশে বসে শান্তর দিকে তাকিয়ে হেসে দিয়ে তারপর সামনের দিকে তাকালো,সামনে সবাই চেয়ার নিয়ে বসে ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে
.
শান্ত সবার দিকে তাকিয়ে হাসিমুখ নিয়ে বললো”কেঁদেছিলে কেন?কেউ কিছু বলছে নাকি?”
.
আহানা অবাক হয়ে শান্তর দিকে তাকালো””শান্ত জানে কি করে যে আমি কেঁদেছিলাম”
.
মিতু স্টেজে উঠে শান্তর পাঞ্জাবির পকেটে একটা গাঁদা ফুল আর গোলাপ সেফটিপিন দিয়ে লাগাতে লাগাতে বললো “”ভাইয়া!! ভাবীকে নানু কথা শুনাইসিলো আমিও কম না আমিও শুনাই দিসি তারে””
শান্ত হা করে মিতুর দিকে তাকিয়ে আছে,মিতুর হলো টা কি!!!
যে মেয়েটা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে জীবনে কথা বলতো না আর সে কিনা এখন আমার সাথে বোনের মত মিশে গেসে যেমনটা আমি এতটা বছর ধরে চেয়েছিলাম”
শান্ত ছলছল চোখে মিতুর দিকে তাকিয়ে আছে
মিতু শান্তর চুলগুলো ঠিক করে দিয়ে চলো যেতে যেতে বললো “খাতির এমনি এমনি করতেসি না,বড় টেডিবিয়ার একটা কিনে দিতে হবে হুমমম!””
.
ওকে ডান!!!
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
আহানা শান্তর হাসি দেখে নিজেও খুব খুশি হলো
শান্ত আহানার দিকে না তাকিয়ে ওর হাতটা ধরে বললো “”জানো আমাদের বিয়েটা আমাকে এক এক করে কত খুশি দিচ্ছে??
.
হুম
.
আই এম সো হ্যাপি,ইচ্ছে করছে তোমাকে ধরে…
.
আহানা চোখ বড় করে কোমড়ে হাত দিয়ে শান্তর দিকে তাকিয়ে রইলো
শান্ত আহানার কোমড়ে হালকা করে চিমটি দিয়ে সোজা হয়ে বসে গাল ফুলিয়ে বললো “তোমার এই কাগজ কাল রাতে আমি ইঁদুর ভাড়া করে কাটাবো মনে রেখো তুমি!!
.
আহানা হাসতেসে শান্তর কথা শুনে
আত্নীয় স্বজন সবাই এক এক করে হলুদ লাগিয়ে দিচ্ছে আহানা আর শান্তকে
বিকাল সাড়ে ৫টা বেজে গেসে,শান্ত কোমড়ে হাত দিয়ে বাঁকা হয়ে হাঁটতেসে,সকালে যে বসছে আর সারাদিন গিয়ে এখন উঠলো
কোমড় ব্যাথা হয়ে গেসে তার
“ভাবসি বাবা তার ১৪গুষ্টিকে ইনবাইট করেছে কিন্তু এখন তো মনে হচ্ছে ২০গুষ্টিকেই দাওয়াত করেছে,তার উপর একজন একজন করে গায়ে হলুদ লাগিয়েছে আমার
মাগো মা!!১জন করে করে যদি ৯৮৭জন হলুদ লাগায় তাহলে কত ঘন্টা লাগে??””
.
হিসাব করিস না আমি বলতেসি,গোটা একদিন লাগে?
.
নওশাদ তুই হাসতেসিস??উফ!! আমি শেষ
শান্ত নিজের রুমে এসে দরজা লাগিয়ে বাথরুমে গেলো গোসল করতে
.
একি দরজা লক কেন,কে ভিতরে??
.
আমি!
.
তুমি?তুমি না তখন নিচে ছিলে এখন এখানে এলে কি করে,বাহির হও আমি ফ্রেশ হবো
.
আমি গোসল করে নিসি এবার বের হবো,আপনি সরুন
.
কেন সরবো?
.
সরতে বলসি সরুন,ঐদিকে ফিরে দাঁড়ান
.
শান্ত উপায় না পেয়ে আরেকদিকে ফিরে দাঁড়ালো
আহানা তোয়ালে পরে বেরিয়ে বিছানা থেকে শাড়ীটা নিয়ে বললো যান এবার
.
শান্ত বাথরুমে ঢুকতে ঢুকতে বললো “”আয়না কিন্তু আমার সামনে ছিল””
.
কিহহহহ!
.
আহানা আয়নার দিকে তাকিয়ে থ মেরে বিছানায় বসে গেলো,ইস কি লজ্জা!?
.
শান্ত গোসল করে বেরিয়ে দেখলো আহানা নেই
সুযোগ পেয়ে বিছানায় লম্বা হয়ে শুয়ে পড়লো সে
অনেক খাটা খাটনি গেসে আর হাঁটা চলা কোনোমতেই সম্ভব না
হুদাই বিয়ের কাগজে সাইন করার জন্য মানুষ এত বড় বড় অনুষ্ঠান কেন করে কে জানে,সেই যার বিয়ে সে ক্লান্ত হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়তে হয়
লাভ হলো কি?আমার এখন বর হিসেবে নাচানাচি করার সময় আর এখন কিনা আমি ক্লান্ত হয়ে চিটপটাং হয়ে গেসি
.
আহানা দৌড়ে রুমে ঢুকলো,শান্ত সবেমাত্র একটু ঘুমে বিভোর হচ্ছিলো আহানার আসার আওয়াজে জেগে লাফ দিয়ে উঠে বসলো সে
আহানা এদিক ওদিক সব জায়গায় কি যেন খুঁজতেসে
.
কি হইসে?কি খুঁজো?
.
আরে আমার সেই কাগজটা,গোসল করার কোমড় থেকে নিয়ে এখানে রাখসিলাম,এখন পাচ্ছি না
.
শান্ত চাদর মুড়ি দিয়ে আবার শুয়ে পড়লো, ফালতু এই কাগজ নিয়ে কত ঝামেলা যে ক্রিয়েট হচ্ছে!!
অবশেষে আহানা কাগজটা খুঁজে পেলো,খাটের নিচে ছিল,কাগজটা কোমড়ে ঢুকিয়ে বের হয়ে গেলো রুম থেকে
.
সন্ধ্যা হয়ে গেসে সবাই এবার লেগে গেছে বিয়ের আয়োজনে
.
আহানা সোফায় বসে আছে রুপার সাথে
রুপা ওকে বিয়ের ছবি দেখাচ্ছে
আর শান্ত মরার মত ঘুমাচ্ছে তার রুমে
মিতু ফুল কতগুলো নিয়ে খেলতেসে,,ফুফু,রেনু মা আর খালা মিলে শাড়ী গহনা সব রেডি করতেসে
বাবা বাবুর্চির সাথে বাইরে দাঁড়িয়ে কথা বলতেসেন
.
রুপা দাঁত কেলিয়ে বললো কিরে??কি খবর তোর??
.
আহামা ব্রু কুঁচকে বললো “”তোর পাশেই বসে আছি দেখতে পাস না কেমন আছি??আবার জিগানোর কি আছে??”
.
হিহি,প্রশ্নের উত্তর অন্যটা আছে??তুমি বুঝে নাও
.
আহানা মুখ বাঁকিয়ে রান্নাঘরে গিয়ে সবার জন্য চা বানাতে লেগে পড়লো
হঠাৎ রান্নাঘরের কারোর উপস্থিতি টের পেলো সে
ভাবলো খালা বা ফুফু হবে কিন্তু তার কোমড়ে হাত লাগতেই আহানা চুলার পাশের থেকে খুন্তি নিয়ে দুম করে এক বাড়ি দিয়ে দিলো কারন তার ধারনা হলো শান্ত তো হবে না,কারণ সে ঘুমাচ্ছে,সায়ন হতে পারে বলেই আহানা খুন্তি দিয়ে এক বাড়ি দিয়ে দিলো
.
আউচচচচ!
.
আহানা চোখ বড় করে চেয়ে আছে, শান্ত হাত ধরে ঝাঁকাচ্ছে ব্যাথায়
.
আহানা এগিয়ে এসে ওর হাত ধরে বললো “সরি আমি বুঝতে পারিনি আপনি,আমি ভাবসি…”
.
কথা বলতে বলতে আহানা শান্তর হাত মুছতেসে বারবার
.
ওকে কুল ডাউন,কিছু হয়নি,ব্যাথা বেশি পাইনি
.
আহানা মুখ গোমড়া করে তাকিয়ে আছে শান্তর দিকে
শান্ত মুচকি হেসে ওর গাল টিপে দিয়ে বিসকিট একটা নিয়ে চলে গেলো
আহানা চা বানাতে বানাতে ভাবলো শান্ত ও তো হতে পারে এটা ভাবলাম না কেন!ধুর ধুর!!
♣
চা খাওয়া শেষ করে আহানা আর শান্ত ছাদে এসে বসে আছে আকাশের তারার দিকে চেয়ে,তারাগুলো গুনার কম্পিটিশন করতেসে দুজনে,আকাশকে দুভাগ করে এই পাশের তারা শান্ত গুনতেসে আর ওপাশের গুলো আহানা
১০মিনিট বাদে শান্ত আহানাকে জিজ্ঞেস করলো কতগুলো গুনলে??
.
পারতেসি না,শুধু এলোমেলো হয়ে যায় হিসাব,এক কাতারে থাকলে গুনা যেতো কিন্তু এগুলো তো সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে,আচ্ছা আপনি কতগুলো গুনলেন?
.
২হাজার ১০৯টা
.
বললেই হলো??আপনি এত সিউর দিয়ে কি করে বলতে পারলেন?
.
আরে আমি যদি বলি ১০হাজার ১টা আছে কার সাধ্য আছে এসে গুনার?আমাকে ভুল প্রমান করতে গিয়ে সে তার জীবনের অর্ধেক সময় নষ্ট কেন করতে যাবে তাও তারা গুনার জন্য??
.
তাও তে কথা
.
হুম তাই আন্দাজে ঢিল মারি দিসি?
.
আপনি পারেন ও বটে!!
.
ওকে চলো অনেক রাত হয়েছে ঘুমাবো,কাল সকাল সকাল আবার বিয়ের কাজ শুরু হয়ে যাবে
শান্ত আহানার হাত ধরে রুমে ফিরে আসলো,আহানা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করে আছে,বাইরের এক মিষ্টি বাতাস এসে গায়ে লাগতেসে
শান্ত এগিয়ে আসা ধরতেই দরজায় কে যেন নক করলো
এই অসময়ে কে আসলো আবার??
শান্ত দরজা খুলতেই দেখলো নওশাদ দাঁত কেলিয়ে চেয়ে আছে,ওর হাতে বালিশ ও আছে
.
কিরে তুই এখানে কেন?রুপা কি তোরে বের করে দিয়েছে নাকি?
.
না,আঙ্কেলের অর্ডার বিয়ের আগের দিন তোরা একসাথে থাকতে পারবি না,যদিও আগে বিয়ে হয়েছে তাও এটা মানতে হবে,আহানাকে বল রুপার সাথে গিয়ে ঘুমাতে
.
নওশাদ গিয়ে শান্তর বিছানায় শুয়ে পড়লো
আহানা মুচকি হেসে তার নিজের বালিশ নিয়ে চলে গেলো
শান্ত ওর পিছন পিছন করিডোর পর্যন্ত চলে এসেছে
আহানার হাত ধরে দাঁড়িয়ে পড়লো সে
আহানা ব্রু কুঁচকে বললো কি হলো??
.
যাচ্ছো?
.
হুম
.
আচ্ছা যাও
শান্ত এগিয়ে এসে আহানার কপালে চুমু দিয়ে চলে গেলো
.
আহানা কপালে হাত রেখে হেসে রুপার পাশে এসে শুয়ে পড়েছে
পরেরদিন সকালটা ছিল খুব খুবই মধুর!!কোথা থেকে কোয়েল পাখি এসে ডাকতেসে, ঠিক জানালার পাশের একটা মেহগনি গাছে বসে
আহান চোখ খুলেই হেসে দিলো,আশা করি যেন আজ দিনটা ভালো যায়,কিন্তু না,,বিছানা থেকে উঠে ফ্লোরে পা রাখতেই আহানার মনে হলো তার শরীরের সমস্ত শক্তি গায়েব
শরীর ভেঙ্গে আসতেসে,সারারাত ঘুমানোর পরও মনে হয় শরীরে ক্লান্তিতে ভরা
মাথা ঘুরাচ্ছে,,ঠিক তেমন লাগতেসে যেমন রক্ত দেওয়ার আগে লাগতো
অনেক কষ্টে উঠে মুখটা ধুয়ে রুম থেকে বেরিয়ে বাসার নিচে চলে আসলো সে,সিঁড়ি বেয়ে নামতে গিয়ে মনে হলো এই বুঝি পড়ে যাবো
শেষ সিঁড়িতে পা রেখে স্লিপ খেয়ে পড়েই যাচ্ছিলো সে,সাথে সাথে সিঁড়ির রেলিং ধরে নিজেকে সামলে নিলো আহানা
ফুফু এগিয়ে এসে আহানার মাথায় হাত রেখে বললেন”” কি হয়েছে?? শরীর খারাপ নাকি তোমার?””
.
না ফুফু,ঠিক আছি,এমনি একটু ক্লান্তি লাগতেসে, আর কিছু না,ঠিক হয়ে যাবে
.
এক এক করে বাসার সবার কাজের গতি আর ভাব দুটোই বদলে যাচ্ছে,আহানা সেই কখন থেকে রুপার রুমে বসে আছে,রুপা আর শান্তর কিছু কাজিন মিলে আহানাকে সাজাচ্ছে
আহানা সকাল থেকে একটিবারের জন্যও শান্তকে দেখেনি
শান্তকে তার চাচাতো ভাইরা আর নওশাদ মিলে সাজিয়ে ফেলেছে,রিয়াজ আর সূর্য এসে গেসে সাথে শান্তর শপিং ব্যাগ গুলো ও নিয়ে এসেছে
শান্ত মায়ের জন্য আনা শাড়ী আর চুড়ি নিয়ে আশ্রমের দিকে চললো
আহানা রেডি হয়ে বেরিয়ে সোজা শান্তর রুমে এসে দেখলো শান্ত নেই,শুধু ২টো ছেলে দাঁড়িয়ে ফোনে ছবি দেখাচ্ছে একজন আরেকজনকে
শান্তকে না দেখতে পেয়ে মন খারাপ করে আবার রুপার রুমে চলে আসলো আহানা
মনে হয় কতবছর ধরে ওকে দেখা হয় না,ভালো লাগতেসে না কিছুই
.
শান্ত মায়ের কবরে এসে দেখলো কবর পরিষ্কার করা,ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলো আহানা পরিষ্কার করেছে কাল
মায়ের কবরের পাশে এসে বসলো সে,প্যাকেট গুলো একপাশে রেখে কিছুক্ষন চেয়ে রইলো
.
মা জানো এগুলা আমি আমার প্রথম বেতনের টাকা দিয়ে কিনেছি,সবার আগে আমি তোমার জন্য উপহার কিনেছি মা,তোমার পছন্দ হয়েছে তো??
আজ তো আমার বিয়ে,তোমার পছন্দ করা আহানার সাথেই,তুমি তো অনেক খুশি তাই না?আমিও খুশি,যাকে ভালোবেসেছি তাকেই নিজের করে নিতে পারবো আজ,তাও তোমার কারণে হয়েছে তুমি তো ঠিক করে গেসিলে আহানাকে তাই না?
আহানা কেমন মেয়ে তা তো তুমি জানো আর তাই তাকে আমার করে দিয়ে গেসো
আমি তোমাকে ভালোবাসি আর তুমিও আমাকে,আর দেখো আমার এত সুখের সময় তুমিই নেই,অথচ এই সুখটার পিছনে সম্পূর্ন তোমার হাত,তোমার ক্রেডিট,একবার এসে দেখে যেও মা,তোমার ছেলের সামনেও আসিও,তোমার ছেলে তোমাকে একবার দেখতে চায় মা
কথাগুলো বলে শান্ত উঠে চলে আসলো,উকিল এসে গেসেন কাগজপত্র নিয়ে
আহানার মা বাবার নামের জায়গায় সালেহা বেগম এবং তার স্বামীর নাম দেওয়া হয়েছে
শান্ত সোফায় বসে আছে,ওর চারপাশে বাবা,নওশাদ,সায়ন আর শান্তর কাজিনরা
শান্ত পেপারে সাইন করে দিয়েছে,এবার পেপারটা গেছে আহানার কাছে
আহানা বড় করে একটা নিশ্বাস ফেলে সাইন করে দিলো
অবশেষে বিবাহ সম্পূর্ন♥
আহানা এখনও শান্তকে দেখেনি,শান্ত ও আহানাকে দেখেনি
আহানার মন খারাপ এই ভেবে যে সে শান্তকে সারাদিনে এখনও দেখতে পারেনি,আর তার উপর শরীর ও ভালো লাগতেসে না
শান্তর মন খারাপ এই দিনে তার মা তার কাছে নেই,মাকে খুব মনে পড়তেসে আজ
মেহমানরা সব এক এক করে রুমে এসে আহানাকে দেখে চলে যাচ্ছেন
আহানাকে আজ লাল একটা বেনারসি পরানো হয়েছে,সাথে নেটের ঘোমটা,গয়না গাটি তো আছেই,হাত ভর্তি চুড়ি
আর শান্ত লাল পাঞ্জাবির উপর গোল্ডেন কালারের কোটি পরেছে
বিকাল হতেই মেহমান কমে আসলো
আহানাকে শান্তর রুমে এনে বসিয়েছে রুপা ,বাসর সাজানো হয়ছে এই কিছুক্ষন আগেই
রুপা,নওশাদ মিলে সাজিয়েছে
পুরো গোলাপ দিয়ে সাজানো,শান্তর পছন্দমত
আহানার সেদিকে খেয়াল নেই,বারবার শুধু দরজার দিকেই তাকাচ্ছে সে
অপেক্ষা করতে করতে শুয়ে পড়লো আহানা
এদিকে শান্ত নড়তেও পারতেসে না তাকে তার বাবার চাচা ঝাপটে ধরে সোফায় বসিয়ে রেখেছে,দুনিয়ার সব অতীতের কথা বলে যাচ্ছেন তিনি
মুক্তিযুদ্ধে কি কি করেছিলেন সেগুলা বলতেসেন
নওশাদ দুবার এসে শান্তকে ছুটাতে চেয়েছিল এখন উল্টা নওশাদ ও ফেঁসে গেসে,দুহাত দিয়ে এপাশে শান্তকে আর ওপাশে নওশাদকে ধরে তিনি বক্তৃতা দিচ্ছেন
চলবে♥