প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_৩৩
#Writer_Afnan_Lara
?
আহানা চায়ের কাপ হাতে নিয়ে শান্তর দিকে ব্রু কুঁচকে চেয়ে রইলো
.
শান্ত বাইকে হেলান দিয়ে আহানার দিকে তাকিয়ে বললো ববি আমাকে খুব জ্বালাচ্ছে,জাস্ট এমনি ফ্রেন্ডলি কথা বললাম আর ও তো আমাকে প্রোপোজই করে বসলো
.
আহানা ফিক করে হেসে দিলো কথাটা শুনে
তাহলে বিয়ে করে নেন
.
আহানা?তোমার মাথা ঠিক আছে? ওরে বিয়ে করলে আমার জীবন যৌবন সব যাবে
.
তাহলে কি করতে চান?
.
তুমি প্লিস হেল্প করো,ওর থেকে আমাকে বাঁচাও
.
আমার ঠ্যাকা পড়ে নাই
.
পড়সে আমার কথা না শুনলে মাঝপথে তোমাকে রেখে চলে যাবো আমি
.
আহানা চোখ বড় করে বললো ঠিক আছে ঠিক আছে
দেখি কি করা যায়,কিন্তু এখানে আপনার ও দোষ আছে
.
আমি কি করলাম?
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
আপনি ওর সাথে সাথে তাল মিলান,ওকে কাছে আসতে দেন সবসময়,লাই দিয়ে দিয়ে মাথায় তুলেছেন,এখন নামাতেও পারতেসেন না
.
আমি তোমাকে জ্বালানোর জন্য!
.
মানে?আমাকে জ্বালানোর জন্য??আমি জ্বলবো কেন?
.
নাহ কিছু না,চা খাওয়া শেষ?
.
হুম
.
দাও কাপ দাও,আমি রেখে আসি
.
শান্ত কাপ নিয়ে দোকানদারকে দিয়ে ফেরত এসে বাইকে বসে স্টার্ট দিতেই একটা ছেলে বলে উঠলো অল দ্যা বেস্ট ভাইয়া
শান্ত মুচকি হেসে চলে গেলো
.
আচ্ছা আপনাকে ওরা অল দ্যা বেস্ট বললো কেন?
.
এমনি তুমি বুঝবে না
.
একটা কথা বলেন,তখন বেবিকে নিয়ে কই গেছিলেন?
.
ববি আমাকে বললো ও ওর বাবা মায়ের বিবাহবার্ষিকীতে কি যেন গিফট করবে,আমি যেন চুজ করে দিই,আমি অনেক মানা করেছি তাও জোর করে নিয়ে গেছে
.
??
.
হাতে ব্যাথা করে?
.
নাহ
.
গুড
.
আপনার?
.
শান্ত হেসে দিয়ে বললো নাহ তখনও করেনি এখন তো করেই না
.
আপনার বাবার বাসায় কে কে আছে?
.
বাবা,সৎ মা,সৎ বোন আর সুপার সৎ ভাই
.
সুপার সৎ ভাই মানে?
.
আমার এখন যে মা আছে উনার আগের সংসারের ছেলে
.
হাহা,তাই বুঝি সে সুপার সৎ ভাই?
.
হ্যাঁ
.
আপনার ভাগ্য ভালো,এক মা গেছে আরেক মা এসেছে
.
শান্ত কথাটা শুনে বাইক থামিয়ে ফেললো
.
আহানা ভয় পেয়ে ঢোক গিলে চুপ করে আছে
.
যে মা গেছে তার মতন কেউ হতে পারবে না,পারার চেষ্টাও করে না
.
ওহ,সরি জিজ্ঞেস করার জন্য
.
তোমাকে আর কি বলবো,আমার তাও সৎ আছে তোমার তো সেটাও নেই
.
আহানা চুপ করে থেকে সামনের দিকে তাকালো
.
শান্ত হুঠাৎ করে আবারও বাইক থামিয়ে নিলো
.
কি হয়েছে?
.
আইসক্রিম খাবে?
.
মাত্রই তো চা খেলাম
.
তো কি হয়েছে,আমি তো চা দিয়ে সিগারেট ও খাই
.
আহানা শান্তর কথায় হেসে দিলো
দুজনে আইসক্রিমের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে
শান্ত ভিতরে আইসক্রিম কিনতে গেছে
Za n Zee এর কোণ কিনলো,চকলেট ফ্লেভারের
আহানার দিকে তাকিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পা পিছলিয়ে দুম করে নিচে পড়ে গেলো শান্ত
আহানা ধরে ফেললো কোনোরকম করে,এতবড় ছেলেকে কি আর একটা মেয়ে ধরতে পারে
আহানা পিছিয়ে গেলো তাও একরকম করে ধরলো ওকে
শান্ত তার আইসক্রিমটা খুলে ফেলছিলো বলে আইসক্রিমটা অনেকখানি আহানার মুখে লেগে গেছিলো
আহানা ওড়না নিয়ে মুছতেসে শান্তর দিকে ব্রু কুঁচকে চেয়ে
.
শান্ত হেসে দিয়ে বললো ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেলো আমার,যেদিন তুমি তোমার সারা মুখে চকলেট মেখেছিলা
.
আহানা লজ্জা পেয়ে আরেকদিকে ফিরে গেলো
.
অবশ্য কেউ চাইলে সেটা ফেরত দিতে পারে
.
হুহ,আপনার এলিনা আর বেবিতে হয় না এবার আমার পিছে লাগছেন?
.
এক মিনিট!তোমার প্রতি আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই,ওকে?
.
হুহ
.
আইসক্রিম খাওয়া শেষে আবার বাইকে এসে বসলো দুজনে,বাসায় ফিরে আহানা ভাবতে থাকলো আজকের শান্তর সাথে আগের দিনের শান্তর অনেক তফাৎ ছিল
.
শান্ত বারান্দায় বসে সিগারেট হাতে নিয়ে ব্যস্ত নগরী দেখতেসে,আজ যদি এলিনার হাতে সিগারেটের ছ্যাঁকা লাগতো সে পুরো বাংলাদেশ উল্টো করে ফেলতো চিৎকার করে
শান্ত কিসব ভেবে সিগারেট নিয়ে নিজের হাতে লাগিয়ে ধরলো
আমিও আহানার মত হয়ে গেলাম নাকি
হাত পুড়লো চিৎকার করলাম না,জাস্ট ব্রুটা কুঁচকেছে ব্যাথায়
শান্ত ফ্রিজ থেকে আইস কিউব নিয়ে হাতে লাগিয়ে বসে ভাবতে লাগলো অবশ্য আমি ব্যাথা পেলে চেঁচাই না
আগে জানতাম মেয়েরা চেঁচায়,কিন্তু আহানা সেটা ভুল প্রমান করলো আজ
রুমের বাইরে থেকে ফিসফিস শুনা যাচ্ছে,শান্ত কান খাড়া করে শুনার চেষ্টা করলো
.
হ্যাঁ বিশ্বাস কর,সে প্রেমে পড়েছে
.
তুই এমন করে আমাকে বিশ্বাস করাতে চাস কেন,আমিও তো জানি ও প্রেমে পড়সে,আমি স্বাক্ষী
.
নওশাদ তোর কাছে প্রুভ আছে?
.
রিয়াজ কি বলিস তুই,নিজের চোখে দেখছি আহানাকে নিয়ে বাইকে করে ঘুরতেসে
.
ওকে চল রুমের ভিতর আজ ওর একদিন কি আমাদের যতদিন লাগে
.
দুজনে পা টিপে টিপে রুমের ভিতরে ঢুকতেই দেখেলো শান্ত কোমড়ে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
.
তোরা যদি এখন বলিস আমি প্রেম করি তাও আহানার সাথে এটা ডাহা মিছা কথা
.
তুই আমাদের মিথ্যাবাদী প্রমান করাতে চাস?তাহলে বাইকে করে ওকে নিয়ে ঘুরানোর মানে টা কি?
.
রাত করে একা একটা মেয়েকে একা একা বাসায় আসতে দিই কি করে?তোরা হলে কি করতি?
.
ফাইন,তুই এখন আহানাকে ফোন করবি,লাউড স্পিকার দিবি,আহানা কি বলে আমরা শুনবো
.
তোরা আমাকে বিশ্বাস করোস না?নওশাদ??তুই আমার পিছে লাগছোস কেন?
.
তুই কল দিবি কিনা বল
.
ফাইন,নে কল দিলাম
.
লাউড স্পিকার দে
.
হ্যালো আহানা!
.
কি?
.
আমার নোটগুলো কমপ্লিট করসো?
.
এত বার জিগাইয়া মাথা খান কেন?প্রতিদিন তো আসার সময় নোট কমপ্লিট করেই আনি,অসহ্য!
.
শান্তর কান মনে হয় ফেটে গেছে,আহানা এত চেঁচায় বললো কথাগুলো
নওশাদ আর রিয়াজ ফোনে কান লাগিয়ে ছিল,তাদের ও মনে হয় কানের পর্দা ফেটে গেছে
.
ওকে বাই,এত গন্ডারের মত চিল্লাইতে হবে না আর!
.
কিহহহ আমি গন্ডার?তাহলে আপনি পেঙ্গুইন,সোজা হয়ে ঢুলি ঢুলি হাঁটেন?
.
কি বললে?আমি পেঙ্গুইনের মত হাঁটি?তাহলে তুমিও হরিণের মত লাফায় লাফায় হাঁটো
.
আপনি তো ভাল্লুকের মত গাপুসগুপুস করে খান
.
এই তোরা থাম,উফ মাথা খাবে আমাদের দুজনের তোরা দুজন মিলে,ফোন কাট
.
শান্ত বিরক্তি নিয়ে ফোন রেখে দিলো
এবার বিশ্বাস হইসে তো যে আমরা প্রেম করতেসি না?
.
হ্যাঁ বিশ্বাস হইসে সাথে এটাও বুঝলাম তোদের জীবনে প্রেম হবে না,আজীবন আচারে পাঁচফোড়ন দিতেই থাকবি তোরা,আচার টেস্ট করা আর হবে না
.
শান্ত মুখ বাঁকিয়ে বিছানায় গিয়ে বসলো
.
আহানা ফোন রেখে জামায় সাবান দিতে দিতে ভাবতে লাগলো শান্ত কি ঝগড়া করার জন্য নক করেছিল নাকি,কে জানে,এই লোকটা কখন কি করে তা বোঝা দায়
.
পরেরদিন সকালে আহানা হেঁটে যাচ্ছে সাথে কেঁদে যাচ্ছে,চোখের পানি মুছতে গিয়ে ওড়না ভিজে শেষ,কাঁদতে কাঁদতে নাক গোলাপি রঙ হয়ে গেছে
ভয়ে ভয়ে শান্তর বাসার সামনে এসে দেখলো তার বাসার দরজা বন্ধ,ঢোক গিলে মিষ্টিকে পড়াতে চলে গেলো
প্রতিদিনকার মত পড়ানো শেষে বেরিয়ে দেখলো শান্ত দরজা খুলে বাইরে এসে দাঁড়িয়ে আছে
আমার নোটস কমপ্লিট করসো?
.
আসলে!
.
কি?
.
আমি আসলে!
কথা বলতে গিয়ে আহানা কেঁদেই দিলো
.
শান্ত চমকে এগিয়ে এসে বললো কি হয়েছে আহানা?
কেউ তোমাকে কিছু বলছে??
.
আমাকে মাফ করে দিয়েন আমি আসলে
.
কান্না থামাও
.
শান্ত যখন দেখলো আহানাকে সামলানো যাচ্ছে না সে বাচ্চাদের মতো কেঁদেই চলেছে শেষে ওর হাত ধরে বাসায় নিয়ে গেলো,সোফায় বসিয়ে পানি এক গ্লাস এনে দিলো ওর হাতে
আহানা পানি খেয়ে কিছুক্ষন চুপ করে কথা বলা শুরু করলো
.
আমি আপনার নোটস কমপ্লিট করতেছিলাম,নোট রেখে জামাকাপড় ধুইছি,এক বালতি সাবানের পানি ছিল রুমে,আমি টেবিল মুছতে গিয়ে ভুলে হাতের সাথে লেগে নোটটা বালতির ভিতরে পড়ে গেছিলো ,তাও তমাল ভাইয়ারটা?
.
শান্ত চোখ বড় করে ফেললো আহানার কথা শুনে,আহানা আবারও কান্না শুরু করে দিলো ভয়ে,এতদিন বড় বড় কথা বলতো আর আজ নিজেকে বিড়াল মনে হচ্ছে
.
শান্ত হাসবে নাকি কাঁদবে সেটা বুঝতেসে না,শেষে নিজেও এক গ্লাস পানি খেলো,তমালের ঐ নোটবুকটাই এতদিনের সব কপি ছিল,পানিতে ধুয়ে সব শেষ,তমাল ওর মুখের উপর কিছু বলবে না বাট এটাতে তমালের অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে,শান্ত ভাবনায় পড়ে গেলো সে কি করবে
.
আচ্ছা কান্না থামাও,আমি এক কাজ করবো,আমার কাছে সব নোটস আছে,তুমি অর্ধেক নাও আর আমি অর্ধেক,তারপর আমরা ২দিনেই আগের সব নোটস তুলে ফেলবো নিউ নোট খাতায়,আমি নওশাদ আর রিয়াজের ও হেল্প নিব,তাহলে ২দিনেই হবে যাবে
.
আহানার মনে হলো কাঁধ থেকে বোঝা হালকা হয়ে গেছে খুশি হয়ে লাফিয়ে উঠলো সে
.
শান্ত ব্রু কুঁচকে বললো খুব তো বড় বড় কথা বলতে,আর এখন??সব সাবান দিয়ে ধুয়ে দিলে!
.
?
.
যাও বাসায়,পরেরটা পরে দেখা যাবে,আমি তমালকে সামলিয়ে নিব
.
আহানা বাসায় ফিরে ১০টা পর্যন্ত নোট কিছুটা লিখে নিলো,তাও ভয় কাটলো না
না জানি তমাল ভাইয়া কি বলবে আমাকে!!
ভয়ে ভয়ে ভার্সিটির দিকে রওনা হলো আহানা
ক্লাসে বসে কিছু নোটস লিখলো
.
কিরে আহানা?এটা কিসের নোটস লিখতেছিস??এটা তো আমাদের ক্লাসের মনে হচ্ছে না
.
এটা মাস্টার্স ফাইনাল ইয়ারের
.
কিহহহহহ!তুই মাস্টার্স ফাইনাল ইয়ারের নোট লিখস কেন,তোর শরীর ঠিক আছে তো?
.
হুম,এটা আমার চাকরি,শান্ত ভাইয়া দিসে?
.
ওহ হো,ভিতরে ভিতরে টেম্ফু চালাও?আর আমরা ধরলে কও হরতাল
.
চুপ,যা এখান থেকে,শয়তান!
.
আহানা ব্রেক টাইমে ক্যামপাসে এসে শান্তকে খুঁজতেসে এদিক ওদিক তাকিয়ে
হঠাৎ কেউ পিছন থেকে ডাক দিলো
আহানা বুঝতে পারলো এটা তমালের কন্ঠ
ভয়ে পিছন ফিরে তাকালো
.
সরি ভাইয়া আসলে আমি
.
কিছু বলতে হবে না,শান্ত আমাকে বলেছে,তুমি নাকি বাচ্চাদের মত কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছিলে?তখন নাকি তোমাকে নাককাঁদুনি লাগতেছিলো,তাই নাকি?
আমি তোমাকে এটা বলতে আসলাম যে কেঁদো না,ইটস ওকে
.
আহানা রেগে বললো আমি বাচ্চাদের মত কাঁদতেসিলাম?আমি নাককাঁদুনি??শান্ত ভাইয়া কই?
.
ও মনে হয় বটতলায়
.
আহানা হনহনিয়ে সেদিকে গেলো
গান শুনা যাচ্ছে বটতলা থেকে
.
♪♪♪কথা হবে দেখা হবে, প্রেমে প্রেমে মেলা হবে,
কাছে আসা আসি, আর হবে না.
চোখে চোখে কথা হবে, ঠোঁটে ঠোঁটে নাড়া দেবে,
ভালবাসা-বাসি, আর হবে না.
শত রাত জাগা হবে, থালে ভাত জমা রবে,
খাওয়া দাওয়া, কিছু মজা হবে না.
হুট করে ফিরে এসে, লুট করে নিয়ে যাবে,
এই মন ভেঙে যাবে, জানো না.
|| আমার এই বাজে স্বভাব, কোনোদিন যাবেনা ||
.
আহানা এগিয়ে এসে শান্তর সামনে দাঁড়ালো
শান্ত গান অফ করে দাঁত কেলিয়ে চেয়ে আছে ওর দিকে
.
এই আমি নাককাঁদুনি?
.
হ্যাঁ,যেভাবে কাঁদতেসিলে সেটাই মনে হচ্ছিলো
.
তাহলে শুনে রাখুন আপনি আস্ত একটা জলহস্তী!!
আহানা কথাটা বলে চলে গেলো
.
হ্যাঁ রে শান্ত তোরে এত বড় কথা বলে গেলো তোর কোনো রিয়েকশান নাই কেন?
.
শান্ত জ্যাকেট ঠিক করে সানগ্লাস পরে নিয়ে আহানার পিছন পিছন এগিয়ে গেলো
.
আহানা দাঁড়াও
.
কি?
.
আমি জলহস্তী হলে তুমি কি জানো?তুমি জলহস্তিনী!!!
শান্ত ভেঁংচি কেটে চলে গেলো
.
আহানা ভাবতেসে জলহস্তী শুনেছি,জলহস্তিনী শুনি নি
.
কিরে আহানা তোরে পুরো ক্যামপাসে খুঁজলাম আর তুই এখানে?কি ভাবস এত?
.
আচ্ছা জলহস্তিনী মানে কি?
.
হাহা,এটাও জানস না?
রুপা চকলেটের প্যাকেট খুলতে খুলতে বললো জলহস্তীর ওয়াইফকে জলহস্তিনী বলে?
.
আহানা চোখ বড় করে তাকালো বটতলার দিকে
.
আহানার রাগী লুক দেখে শান্ত মুচকি হেসে সবার সাথে গানে মন দিলো
.
♪♪♪♪ভুলভাল ভালবাসি, কান্নায় কাছে আসি,
ঘৃণা হয়ে চলে যাই, থাকি না.
কথা বলি একাএকা, সেধে এসে খেয়ে ছ্যাঁকা,
কেনো গাল দাও আবার, বুঝি না.♪♪♪♪
.
আহানা হাত নাড়িয়ে বললো আপনার বউ হতে আমার ভয়েই গেছে,উগান্ডার বউ হয়ে উগান্ডিনি হতে চাই না আমি
.
রুপা চকলেট মুখে দিয়ে বললো কিরে আহানা? উগান্ডার বউ বুঝি উগান্ডিনি হয়
.
হুম?মিলাই নিলাম আর কি
.
ভার্সিটিতে ছুটি হতেই আহানা হাঁটা শুরু করে দিলো জলদি অফিসে তাড়াতাড়ি পৌঁছানোর জন্য,অনেকদূর এসে হাঁপিয়ে গেলো,আর হাঁটতে পারতেসে না সে
শান্ত বাইক নিয়ে পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো,পথে দেখলো আহানা থেমে আছে,কোমড়ে হাত দিয়ে হাঁপাচ্ছে
.
কি হলো আহানা ম্যাডাম?কম বয়সে কোমড়ে ব্যাথা শুরু হয়ে গেলো নাকি আপনার?
.
চুপ!জোরে জোরে হেঁটে আসায় হাঁপিয়ে গেছি
.
আমার জন্য ওয়েট করতে পারো না?
.
কেন ওয়েট করবো?আপনার তো কত কাজ থাকে
.
কি মিন করতেসো এটা বলে?আমি তোমার লেখা নোট তমালকে দিতে গেছিলাম তাই লেট হইসে আর কিছু না
.
হুহ!
.
নাও উঠো বাইকে,এখান থেকে অফিস দূরে আছে
.
আহানা শান্তর পাশে উঠে বসলো
.
কাঁধ ধরার জন্য কি আপনার কাছে এপ্লিকেশন এপ্লাই করতে হবে?
.
ধরতেসি ধরতেসি!ওড়না ঠিক করতেসিলাম
.
ফাইন
.
অফিসে আসতেই বেবি শান্তর হাত ধরে দূরে নিয়ে গেলো,এমন ভাবে কথা বলছে যেন ওর বিএফ
.
শান্ত কাঁচুমাচু করতে করতে আহানার দিকে চেয়ে হেল্প চাইলো ইশারা করে
.
আহানা দুষ্টুমি করে নিজের কাজে মন দিলো,এমন ভাব করলো যেন শান্তকে সে দেখতেই পেলো না
.
ববি ঠিক হয়ে দাঁড়াও
.
কেন?আমার ছোঁয়া কি তোমার ভাল্লাগতেছে না?
.
না আসলে এমন করিও না,আমরা তো কলিগ ছাড়া কিছুই না তাই না?
.
কাম অন শান্ত,কাউকে ভয় পাচ্ছো?নাকি রিলেশনে যেতে ভয় পাচ্ছো?কোনটা?
.
শান্ত বারবার আহানার দিকে তাকাচ্ছে আহানা হেসে হেসে কম্পিউটারে কাজ করছে,শান্তকে এমন অসহায় দেখে এত ভালো লাগতেসে বলে বুঝানোর মত না,হিহিহি
.
শান্ত বেবিকে সরিয়ে এগিয়ে আসলো আহানার দিকে
এই আহানা তোমাকে ডাকতেসি শুনো না?
.
ওহহ তাই?ডাকতেছিলেন বুঝি?
.
আহানা আজ তোমার মাথার চুল একটাও তোমার মাথায় থাকবে না বলে দিচ্ছি
.
ইহহহ রে আমি ভয় পাই গেসি?
চলবে♥