প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_৩০

0
2583

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_৩০
#Writer_Afnan_Lara
?
আবার না??উফ!
শুনো!!তোমাকে আমার আম্মু কোলে নিসিলো ওকে?সো সেই খাতিরে আমার সাথে একটু ঠিক হয়ে চলো
.
ওহ হ্যাঁ আরিফ আঙ্কেল বলেছিল আপনি নাকি আমাকে একবার কচু পাতা খাইয়েছিলেন,তাও কাঁচা,আপনার এত বড় সাহস!!আমার তখন বুঝাশুনার জ্ঞান ও হয়নি আর আপনি কিনা আমাকে কাঁচা কচু পাতা খাইয়ে দিছিলেন
.
ওয়েট ওয়েট!কচু পাতা,কাঁচা?
ওহহ আচ্ছা আচ্ছা এবার মনে পড়লো,তাহলে তুমি আমার সেই পাতানো বউ??যাকে আমি কচুপাতা রেঁধে খাওয়াই ছিলাম
.
রেঁধে না,কাঁচা
এক মিনিট বউ মানে?আমার তো কিছু মনে আসতেসে না
.
শান্ত দাঁত কেলিয়ে খাটের উপর গিয়ে বসলো
.
তাহলে তো তোমার সাথে আমার আগেই দেখা হয়েছিল even আমি তোমার সাথে যা যা করসি সব আমার মনে আছে
.
যা যা মানে?কি বলতে চান আপনি
.
থাক আহানা শুনলে তোমার খারাপ লাগবে,নাই বলি
.
ককককককি আপনি কি বলতে চান এসব!
.
হেহে!তোমার ৩বছর হওয়া পর্যন্ত আমরা মোহনগঞ্জেই ছিলাম
মা তোমাকে দেখতে আসত রোজ,সাথে আমিও আসতাম,তুমি তো আমার কোল থেকে নামতেই না,আমার একদম মনে ছিল না সেই পাতানো বোকা বউ আমার এখন কিনা ধানি লঙ্কা হয়ে গেছে
.
এই এসব কি বলতেসেন আপনি,আন্দাজে মিথ্যা হাবিজাবি বললেই আমি বিশ্বাস করে নিব?
.
তুমি এখন একটা কথা শুনলে লজ্জায় আর মুখ দেখাতে পারবে না আমাকে
.
কককককি?!!!
.
আগে এটা বলো তোমার কি কোনো বিএফ আছে?নাকি ছিল?
.
নেই?আমার মতো অনাথ মেয়েকে কে ভালোবাসবে?
.
তাহলে শুনো,তুমি আর আমি একদিন চড়ুই ভাতি খেলতেসিলাম,আমি চকলেট খাচ্ছিলাম তো তুমি ড্যাবড্যাব করে চেয়েছিলে বলে আমি তখন তোমাকেও একটুখানি দিসিলাম চকলেট
তুমি সারা গালে মেখেছিলে,আমার চকলেট শেষ হয়ে গেছিলো,আর তোমার দিকে চেয়ে দেখলাম তুমি একটুও খাওনি সব মুখে মাখাইসো,আমি তখন আমার জিভ দিয়ে….
.
এই!!!!আর একটা কথাও না,আপনি এত মিথ্যা কি করে বলতে পারেন,ছিঃ ছিঃ
.
শুনো না আমি তো তোমার গাল চুষতে গেসিলাম বাট তুমি তো তুমিই,তুমি ফিক করে হেসে দিয়ে গাল হেলিয়ে দুলিয়ে ফেললে আর আমার জিভ গিয়ে তোমার ঠোঁটে….
.
স্টপ ইট!!আপনার লজ্জা করে না এসব বলতে!!
.
আহানা এগিয়ে এসে শান্তর জ্যাকেট ধরে ঝাঁকিয়ে বললো বাচ্চা একটা মেয়ের সাথে এসব করলেন আপনি?
.
জিভ লেগেছিল আর কিছু না!
.
জিভ লাগাতে গেছেন কেন আপনি, অসভ্য কোথাকার!
.
আহানা ওড়না দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে উঠান দিকে চলে গেলো
শান্ত অবাক চোখে আহানার লজ্জা পাওয়া দেখছে,যা যা বললো সব সত্যি
অনেকগুলো বছর কেটে যাওয়ায় সব ভুলে গিয়েছিল সে,আহানা একদম ছোট থাকতে শান্ত আর তার পুরো পরিবার সিলেট চলে গিয়েছিল,পরে অনেকবছর পর ফেরত এসেছিল তারা তাও তখন মায়ের অসুখ নিয়েই প্রতিটা দিন কাটত,আহানাকে মনে থাকার কথা না ,মায়ের মৃত্যুর পর এসব একদমই মাথায় ছিল না তার,সেই ছোট্ট বউটা আমার কোথায় হারিয়ে গেলো আমি খোঁজই নিলাম না,এভাবে ফেরত আসবে ভাবতেই পারিনি
আহানা চোখ বন্ধ করে উঠানে দাঁড়িয়ে আছে,মনে করার চেষ্টা করতেসে
কিন্তু শান্ত নামক ছেলেটিকে এর আগে সে দেখেছে কিনা তার মনে নেই,থাকবে কি করে তখন যে সে ছোট্ট বাবু ছিল
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
শান্ত হেসে দিয়ে নোটস নিতে নিতে আহানার দিকে চেয়ে বললো যাই আমার পাতানো বউ,টাটা
.
আহানা রেগে গিয়ে শান্তকে ধাক্কা মেরে বাসা থেকে বের করে দিয়ে দরজা লাগিয়ে ফেললো
গা কেঁপে যাচ্ছে,এ কেমন অনুভূতি,সত্যি কি তাই ঘটেছিল,না এটা হতে পারে না
কিস তো করে নাই,হ্যাঁ করে নাই তাহলে ঠিক আছে নাকি করেছে,নাহ না এটা হতে পারে না,একবার জিজ্ঞেস করবো?না থাক লজ্জা করে,নাহ জিজ্ঞেস করার দরকার নাই,হুমমম
পরেরদিন সকাল সকাল আহানা মিষ্টিকে পড়াতে বের হলো,কাল সারারাত ঘুমাতে পারেনি সে,মাথায় শুধু এটা ঘুরেছে শান্ত আর কিছু করেনি তো,একটা ছবি দেখেছিল মীম আপুর ফোনে,সেখানে নায়িকার ছোটবেলার খেলার সাথী তার সাথে উল্টা পাল্টা কাজ করেছিল,না না এটা হতে পারে না

টিং টং
.
নওশাদ!!
.
টিং টং
.
উফ রিয়াজ??তোরা মরে গেছিস?তখন থেকে কলিংবেল বাজতেছে,,দরজা খুলতে পারোস না?আজব!
শান্ত উদম গায়ে ছিল,খাট থেকে থেকে জামা নিয়ে পরতে পরতে দরজার দিকে গেলো সে,দরজা খুলতেই ঝাটকা লাগার মত অবস্থা,আহানা দাঁড়িয়ে আছে সামনে
.
আহানা?আজ কি সূর্য উঠেছে?উঠলেও কোন দিক দিয়ে উঠেছে,সয়ং আহানা ইয়াসমিন আমার বাসার দরজায় নক করলো?
তা কি মনে করে?
.
আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে
.
হ্যাঁ বলো
.
আহানা পাশে তাকিয়ে দেখলো অন্য ফ্ল্যাটের বুয়া করিডোর পরিষ্কার করতেছে
এখানে না বলি?
.
আচ্ছা ভিতরে আসো
.
আহানা সাথে সাথে ভিতরে চলে গেলো
.
শান্ত পানির বোতল নিয়ে নিজের রুমের দিকে গেলো,আহানা এদিক ওদিক তাকিয়ে সেও গেলো
শান্ত ফ্লোর থেকে জামাকাপড় উঠাচ্ছে
আহানা ফ্লোরে মেয়েদের একটা জামা দেখতে পেলো,চোখ ইয়া বড় করে সেটাই দেখে যাচ্ছে সে,ছোট একটা পার্টি ড্রেস,আহানার গা কাঁপা শুরু হয়ে গেছে,এই লোকটা এত খারাপ!!
.
এই যে মিস আহানা এত ড্যাবড্যাব করে দেখার কিছু নেই,কাল আমি এখানে ছিলাম না,তোমার সো কলড বেস্টু রুপা আর নওশাদ মেবি আমার রুমে রুমডেট করসে
.
কিহহহহ!
.
চুপ,আস্তে,এত জোরে চেঁচাও কেন বলোতো,নওশাদ বেচারা কিছুক্ষন আগে ঘুমিয়েছে
.
আহানা ঢোক গিলে এদিক ওদিক দেখছে
.
রুপা কে খোঁজো?তাকে তো নওশাদ বাসায় পৌঁছে দিয়ে এসেছে ভোর ৪টায়
.
ওর মা বাবা!??
.
আরে রুপার মা বাবা রুপার দাদার বাড়ি গেছে এই সুযোগটাই রুপা নিসে বুঝছো,কি বলবে বলো,আমার ঘুম পাচ্ছে,কাল আমি আমার এক ফ্রেন্ডের বার্থডে পার্টিতে গেছিলাম,তাই বাসায় আসতে আসতে লেট হয়ে গেছিলো
.
আমি আসলে বলতে এসেছিলাম আপনি কি আমাকে
.
কি?
.
আমাকে কককককিসস করেছিলেন?
.
শান্ত হেসে দিয়ে পানি খেতে খেতে বেডের উপর গিয়ে বসলো
তারপর আহানার দিকে মুখ ফিরিয়ে বললো আরে আমি তখন জানতাম না এটাকে কিস বলে,আমি জাস্ট আমার চকলেট চেটে খেয়েছি,ব্যাস!
.
আহানা কাঁপা কাঁপা আওয়াজে বললো আর কিছু করেননি তো??
.
শান্ত হাসতেসে,হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে,তারপর পানির বোতল টেবিলে রেখে আহানার দিকে তাকালো
আহানার পিছনে ড্রেসিং টেবিল,সেটার আয়নায় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে আহানার পিঠে একটা কুচকুচে কালো তিল ঠিক জামার গলা যেখান দিয়ে শুরু সেখানে,আহানা নড়াচড়া করতেসে বলে সেটা একবার দেখা যাচ্ছে আরেকবার দেখা যাচ্ছে না
.
তোমার পিঠের উপরে জামার গলা বরাবর একটা তিল আছে রাইট?
.
কথাটা শুনে আহানা সিউর যে শান্ত সেই ছবির ছেলেটার মত কাজ করেছে
আহানার চোখ দিয়ে পানি টপটপ করে পড়তেছে
সে কাঁদতে কাঁদতে দেয়ালের সাথে লেগে গেলো
.
আপনি আমার সাথে এমনটা কেন করলেন,কি দোষ করেছিলাম
.
শান্ত একদমই প্রস্তুত ছিলো না এটার জন্যে,আহানা এভাবে কাঁদতেসে কেন,কথাগুলো সিরিয়াস নিয়ে নিলো নাকি!
শান্ত আহানার দিকে এগিয়ে গেলো
.
খবরদার আমার কাছে আসবেন না আপনি,আপনি খুব খারাপ!
.
আহানা থামো,আমি মজা করছিলাম,আমি তোমার সাথে কিছু করিনি
শান্ত এগিয়ে এসে আহানার হাত ধরলো
আমি মজা করসি,এটাকে সিরিয়াসলি নিও না প্লিস
.
আপনি তাহলে জানেন কি করে আমার পিঠে কোন জায়গায় তিল আছে
.
আমি মাত্র আয়নায় দেখলাম তাই বলসি,জাস্ট ফান আর কিছু না,আহানা কান্না থামাও
শান্ত হাত দিয়ে আহানার চোখ মুছে দিলো
আহানা এবার শান্তকে বিশ্বাস করলো,কান্না থামালো
শান্ত আহানার হাত ধরে খাটে বসিয়ে পানি এক গ্লাস এনে ওকে দিলো
আহানা ওড়না দিয়ে মুখ মুছে পানি খাচ্ছে
তারপর নিজেকে ঠিক করে উঠে দাঁড়াতেই শান্ত সিগারেট মুখে দিতে দিতে বললো আহানা সেটাকে কিস ও বলতে পারো!
আহানা চোখ বড় করে শান্তর দিকে তাকালো,শান্ত হাসতে হাসতে বারান্দার দিকে চলে গেছে
.
বেয়াদব একটা!!
.
বাসায় এসে আহানা গালে হাত দিয়ে ভাবতে লাগলো হুদাই কাল সারারাত এত চিন্তা করসি,আসলেই তো কিছু হয়নি,শুধু কিস!!বেয়াদব কোথাকার!!আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম
.
আহানা ভাত রেঁধে খেয়ে রেডি হয়ে বের হলো,আজ ভার্সিটি থেকে অফিসের দিকে যাবে
ভার্সিটিতে এসে ক্লাসরুমে ঢুকে বেঞ্চে বসতেই দেখলো রুপা মুখ লুকিয়ে কাঁদছে
.
কিরে রুপা কি হয়েছে তোর?কিরে?
.
আমি না একটা ভুল করে ফেলেছি
.
কি?
.
আমি নওশাদের সাথে রুমডেট করসি
.
জানি
.
কিহ!!কেমনে!
.
শান্ত ভাইয়া বলসে আমাকে
.
এ্যা?আস্তে আস্তে সবাই জেনে যাবে
.
নাহ শুধু আমি আর উনি জানি আর কেউ জানে না জানবেও না,রুমডেট তো নিজের ইচ্ছায় করেছিলি তাহলে এখন কাঁদতেছিস কেন?
.
না নিজের ইচ্ছায় না,আমি তো জাস্ট নওশাদের সাথে মিট করতে শান্ত ভাইয়ার বাসায় গিয়েছিলাম,সেখানে আমরা দুজনেই মদ খেয়ে উন্মাদ হয়ে গেছিলাম কি করসি তাই মনে নাই,পরে হুস আসতে সব মনে পড়লো,আমি এখন কি করবো রে আহানা,যদি প্রেগন্যান্ট হয়ে যাই??
.
আরে চিন্তা করিস না,নওশাদ ভাইয়া ভালো,তোকে চিট করবে না
.
সেটা জানি,কিন্তু ও তো কোনো চাকরি ও করে না,কি হবে কোথায় যাব!
.
এতসব ভাবিস না তো,কিছু হবে না(আমি মরি আমার জ্বালায়,নতুন আরেকটা ঝামেলা)
.
ক্লাস ছুটি হতেই আহানা অফিসে যাওয়ার জন্য রওনা হলো,শান্ত বাইক নিয়ে আহানার সামনে এসে ব্রেক করলো
.
কি মিস আহানা?? যাবেন নাকি একসাথে?
.
নো থ্যাংকস
.
ফাইন!
শান্ত অফিসের দিকে চলে গেলো,আহানা আস্তে আস্তে আসতেসে অফিসের দিকে
.
হ্যালো everyone,তোমরা মোট ২০জন employee,তাহলে আর একজন মিসিং কেন?
.
স্যার স্যার আসছি!
.
প্রথমদিনেই লেট?নেক্সট যেন এমন না হয়
.
শান্ত দাঁত কেলিয়ে বললো স্যার আমিও একই ভার্সিটি থেকেই এসেছি,ওকে বলসি বাইকে উঠতে ও উঠে নাই,এখন হেঁটে এসে দেরি করলো
.
আহানা?দেরি ইচ্ছে করে করলে এর শাস্তি তোমায় পেতে হবে,হয় রিকসায় নয় শান্তর সাথে আসবে ওকে?
.
ওকে
.
সবাই সবার কেবিন বুঝে নাও,নাম লিখা আছে,ফাইল রাখা আছে,কাজ শুরু করে দাও,কোনো প্রবলেম হলে রাফিকে ডাক দিবে,Alll the best
.
আহানা তার কেবিনে বসে খুব খুশি হলো,কি সুন্দর তার ছোট্ট কেবিন,আহানা মুচকি হেসে পাশে তাকাতেই মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেলো তার
শান্ত দাঁত কেলিয়ে টাই ঠিক করতেছে
.
আপনি আমার পাশে?
.
হুম তো??তোমার কি,আমি রাফিরে বলসি আমাকে এই কেবিন দিতে,এসির হাওয়া আসে ঠিকমত
.
আহানা ফাইল খুলে দেখতেসে
.
হাই!!হ্যান্ডসাম!!
.
হাই ববি!
.
ববি না বেবি
.
ওহ আচ্ছা,বেবি,কি খবর??
.
আই এম ফাইন মিঃশান্ত!!ইউ লুক সো কিউট!!
.
ওহ থ্যাংক ইউ
.
আহানা বিরক্তি নিয়ে তাকালো সেদিকে,এই মেয়ে এবার শান্তর গলা জড়িয়ে থাকবে অলওয়েজ,এই ছেলেটার মাঝে কি আছে যে সুন্দর সুন্দর মেয়েরা চিপকুর মত লেগে থাকে
.
শান্ত আহানার দিকে তাকিয়ে টাই ঢিলা করে কয়েকটা বোতাম খুলে ফেললো শার্টের তারপর বেবির সাথে কথা বলা শুরু করে দিলো
বেবি হেলেদুলে শান্তর চেয়ারে গা এলিয়ে দাঁড়িয়ে শান্তর সাথে কথা বলে যাচ্ছে,আহানা ফাইল একটা কমপ্লিট করে ফেলেছে ততক্ষণে
সেটা নিয়ে উঠে গেলো রাফিকে দিতে
শান্ত আহানার দিকে চেয়ে আছে,বেবি শান্তর মুখে হাত দিয়ে নিজের দিকে ফিরালো
.
ওদিকে কি দেখো শান্ত,আমাকে দেখো না
.
ববি এখন যাও,আমার কাজ আছে
.
ববি না বেবি
.
হুম বেবি
.
বাই!!

ভেরি গুড আহানা,প্রথমদিনেই খুব ভালো কাজ করেছো,আশা করি এমন করেই কাজে মন দিবে
.
রাফি স্যার একট কথা বলার ছিলো
.
হ্যাঁ বলো
.
স্যার আমার কেবিনটা যদি চেঞ্জ করে দিতেন তাহলে খুশি হতাম
.
না সেটা করা যাবে না,তা হলে সবাই বলবে তাদের টাও চেঞ্জ করতে
.
ওহ,ঠিক আছে
আহানা মুখ গোমড়া করে আবার কেবিনে এসে বসলো
.
শান্ত ফাইল রেডি করে সেও দেখাতে চলে গেলো
.
আহানা চুপচাপ আরেকটা ফাইল দেখতেসে
শান্ত ফিরে এসে পাশে বসে ঢুলতেসে আর চুইংগাম খাচ্ছে
.
উফ এরকম কেবিন নাড়তেসেন কেন??আমার ডিস্টার্ব হচ্ছে
.
তাই?তাহলে তো আরও জোরে নাড়াতে হয়
.
আপনার কি সমস্যা!!
.
তুমি
.
মানে
.
কিছু না,নিজের কাজ করো এত ফটরফটর করো কেন
.
আপনি নাড়ানো অফ দিবেন নাকি আমি রাফি স্যারকে ডাক দিব
.
ডাকো না মানা করসি আমি?অফিস থেকে বের হলে কিভাবে ঠিকমত বাসায় ফিরো সেটাও আমি দেখে নিব
.
আহানা ব্রু নাড়িয়ে নিজের কাজে মন দিলো,থ্রেট ছাড়া আর কিছু দিতে পারে না বেয়াদবটা
.
আউচচচ!এটা কি
আহানার গায়ে একটা কাগজের দলা এসে পড়লো,নিচ থেকে তুলে খুলে দেখলো লিপ্সটিক লাগানো চুমু?
আহানা চোখ কপালে তুলে সামনে তাকিয়ে দেখলো বেবি ইশারা করতেসে এটা শান্তকে দিতে
.
উফ কি ঝামেলা,এই নেন ধরেন
.
কি এটা?
.
শান্ত খুলে দেখলো এটা “?”
চোখ বড় করে আহানার দিকে চেয়ে বললো তুমি আমাকে কিস পাঠালে?
.
আজব তো আমি আপনাকে কিস পাঠাতে যাব কেন,এটা আপনার বেবি পাঠিয়েছে,ঐ যে!
আর আমি তো লিপ্সটিক লাগাই না আপনার এটা কেন মনে হলো যে আমি দিসি?আমার আর কাজ নাই?
.
শান্ত বিরক্তি নিয়ে বেবির দিকে তাকালো,বেবি ওর দিকে ফ্লাইং কিস পাঠাচ্ছে,একদিনেই এত বাপরে বাপ!!
.
শান্ত কাগজটা নিচে ফেলে দিয়ে নিজের কাজে মন দিলো
আহানা মিটমিট করে হাসতেসে,যাক আমাকে খুব জ্বালান তাই না,এবার এই বেবি আপনাকে জ্বালাবে,হুহ!
.
বিকাল ৪টায় ব্রেক টাইম,সবাই অফিসের ক্যানটিনে চলে গেছে
আহানা একা বসে ফাইল দেখতেছে,টাকা নেই খাবার ও নেই,আর আমি তো এসময়ে কিছু খাই না,সমস্যা নেই,এই ফাঁকে কাজ করে ফেলি
.
শান্ত মাথা ধরে বসে আছে আর বেবি বকবক করেই যাচ্ছে,এই মেয়েটা এত জোঁক কেন,এর বকবক থেকে তো আহানার বকবক ভালো লাগে,আহানার সাথে ঝগড়া করতে ভালো লাগে
আর এ মেয়েটা কবে আই লাইনার কিনসে কোথা থেকে কিনছে,কোন ব্র্যান্ডের কিনছে সেটা নিয়েই আছে,আল্লাহ বাঁচাও আমাকে!
.
আচ্ছা ববি আমি আসতেসি আমার একটা কাজ করা বাকি
.
ববি না বেবি,কি কাজ শুনি?
.
বেবির কথার উত্তর না দিয়েই শান্ত ক্যানটিন থেকে পালিয়ে আসলো কেবিনের দিকে
শুধু আহানা আছে কেবিনে,বসে বসে কম্পিউটার নিয়ে কিসব করছে আর এদিক ওদিক তাকিয়ে কাকে যেন খুঁজছে
.
কি হলো মিস আহানা?আমাকে খুঁজছেন?
.
না?
.
তাহলে এদিক ওদিক তাকিয়ে কি দেখতেসো আর কম্পিউটার কি করসো,ইয়া আল্লাহ!!কি করসো এটা তুমি??ভাইরাস ধরসে কম্পিউটারে
শান্ত আহানার কাছে এসে কম্পিউটার ঠিক করার চেষ্টা করছে
.
আহানা ভয়ে শেষ,জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে
.
শান্ত হাসতে হাসতে টাইপ করছে,আহানা ম্যাডাম ভাইরাস পেলেন কই?
.
আপনি সরুন বলতেসি
.
ওমা আমি হেল্প করতে আসছি আর তুমি আমাকে সরতে বলছো?
.
আপনি আমার এত কাছে ঝুঁকে কাজ করতেসেন কেন,আমি সরতেসি দাঁড়ান
.
তুমিও না!!
শান্ত চেয়ারে বসে ভাইরাস দূর করার কাজ করে যাচ্ছে
আহানা ভয়ে শেষ,কম্পিউটার চালাতে এতটা দক্ষ না সে
ভুলে কি থেকে কি টিপ দিয়ে দিসে এখন না জানি কি হয়ে যাবে!
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে