প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_২৭

0
2415

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_২৭
#Writer_Afnan_Lara
?
তো দেখোনি তো এখন দেখে নাও,হুহ!!
কথাটা বলে শান্ত সামনের দিকে হাঁটা ধরলো
আহানা মুখ বাঁকিয়ে আরেক দিকে ফিরে হেঁটে চলে গেলো
.
শান্ত এদিকে আয় খাবার অর্ডার দিসি,এসে গেছে
.
আসতেসি ওয়েট
.
আহানা কই?
.
মহারানী ঐদিকে গেছে
.
যা নিয়ে আয়,ডাক দিসি শুনে না মনে হয় অনেকদূর চলে গেছে
.
আমি?ইমপসিবল,ও ঠিক করে কোনো কথাই বলতে পারে না
আমি হাত নাড়লেও বললে ওর সমস্যা,তাহলে ভাব কতটা পাগল হলে এমন করতে পারে
.
হইসে যা নিয়ে আয় না
.
শান্ত আবার সেদিকে গেলো
আহানা রোডের কিনারায় বসে বন ছিঁড়তেসে আর দূরে থাকা একটা কদমফুল গাছের দিকে চেয়ে আছে
.
এই যে মহারানী আসুন,রুপা নওশাদ ডাকতেসে আপনাকে
.
?বেয়াদব
.
মহারাণী বলায় বেয়াদব বললে,তাহলে তুমিও বেয়াদব!?
শান্ত চলে গেলো রাগ করে
আহানা ভেংচি কেটে সেও পিছন পিছন গেলো
ব্রু কুঁচকে শান্তর দিকে চেয়ে পিছে পিছে আসতেসে সে
এত এত এত বাতাস যে আহানা সহ উড়ে যাবে এমন অবস্থা
আহানা শান্তর দিকে চেয়ে হাঁটতেসিলো হঠাৎ এক বাতাসেই ওর গায়ের ওড়না উধাও
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
আরেহহহ!
.
শান্ত থেমে গিয়ে পিছন ফিরে তাকালো
আহানা শান্তকে ওর দিকে তাকাতে দেখে তাড়াতাড়ি চুল টেনে সামনে নিয়ে আসলো
.
হাহাহাহা,ধর্মের কল বাতাসে নড়ে
.
আহানা দাঁতে দাঁত চেপে বনের ভেতর চলে গেলো ওড়নার জন্য
.
শান্ত দাঁত কেলিয়ে মজা করে বললো আহানা?সুন্দরবনের একটা বাঘ চলে এসেছে মনে হয়,হলুদ হলুদ দেখা যাচ্ছে
আহানা ভয় পেয়ে সামনে তাকালো,সত্যি তো হলুদ কালারের কি যেন দেখা যাচ্ছে,আশেপাশের জঙ্গল দেখে হয়ত এখানে চলে এসেছে
আহানা চিৎকার করে ওড়না নিয়ে এক দৌড় মারলো,শান্তর পিছনে এসে ওর জ্যাকেট ধরে দাঁড়িয়ে পড়লো সে
.
আসলে ওটা ছিল কাকতাড়ুয়া,নিচে টমেটো গাছ অনেকগুলো বনের ভেতর,পাখি নষ্ট করতে পারে বলেই তাই হয়ত কৃষক কাকতাড়ুয়াটা বসিয়েছিল কিন্তু এত বাতাসের জোরে সেটা পড়ে গেছে তাই কিছুটা বাঘ বাঘ লাগতেসে,লাগারই কথা,কাকতাড়ুয়ার পরনে বাংলালিংক সিম কোম্পানির জামা,ডোরাকাটা
.
ভয়ে আহানার কলিজা কাঁপতেসে
শান্ত হেসে দিয়ে বললো তোমাকে বোকা বানানো ২মিনিটের ব্যাপার আমার কাছে বুঝলা!
.
মানে??
.
ওটা কাকতাড়ুয়া ?
.
আহানা রেগে শান্তর চুল টেনে দিয়ে চলে গেলো ওখান থেকে
শান্ত থ হয়ে আহানার চলে যাওয়া দেখছে,এই মেয়েটা মাঝে মাঝে এমন এমন কাজ করে আমি কিছু বলার বা করার হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি,আমার চুলই টেনে দিলো শেষমেষ?
রাগ না হয়ে ভালো লাগা কাজ করতেসে কেন,আমার তো রাগ হওয়ার কথা
শান্ত এগিয়ে গিয়ে আহানার হাত টেনে ধরলো
.
এই মেয়ে!
.
কি?
.
তুমি আমার চুল টানছো কেন?
.
আপনি আমাকে বাঘের ভয় দেখিয়েছেন তাই,আরও টানবো নাকি?
.
চুপ!
শান্ত আহানার কান টেনে ধরলো
.
আহহ ছাড়ুন আমার লাগতেসে ছাড়ুন
.
আর আমার চুল টানবা তুমি?
.
না না টানব না,ছাড়ুন
.
শান্ত আহানার কান ছেড়ে দিয়ে নওশাদের কাছে চলে গেলো
আহানা কান ডলতে ডলতে আসতেসে
.
কিরে শান্ত এমন বিশ্বজয়ের হাসি দিচ্ছিস কেন??
.
মানুষের কান টানতে জাস্ট জোস লাগে
.
রুপা কানে হাত দিয়ে বসে গেলো, নওশাদ এগিয়ে গেলো টানার জন্য
.
না প্লিস নওশাদ শয়তানি করবা না,শান্ত ভাইয়া!!এসব কি শিখান ওরে
.
হাহা,আরে যাই বলো শান্তর মত রাগ আমার নাই,আই লাভ ইউ সো মাচ রুপু
.
লাভ ইউ টু!!
.
খাওয়া দাওয়া করে রুপা আর আহানা রিকসায় করে আবার ফিরে গেলো,আহানা গেলো টিউশনির দিকে আর শান্ত,নওশাদ বাসায় ফিরে গেলো
আহানা বাসায় ফেরার সময় একটা ফেরিওয়ালার কাছে একটা আয়না দেখলো
এদিক ওদিক তাকিয়ে সেটা হাতে নিলো,খুব সুন্দর এটা
.
দাম কত?
.
৫০টাকা
.
ওহ,৫০টাকা তো বেশি,না থাক
আহানা আয়নাটা রেখে হেঁটে চলে আসলো বাসায়
রান্না করতে করতে আয়নাটার কথা ভাবতে লাগলো সে
আজ পর্যন্ত শখ করে কত কি পছন্দ হয়েছিল তার কোনো কিছুই কেনা হয়নি,আজকের আয়নাটা খুব পছন্দ হয়েছে,আমার কাছে ৫০টাকা ছিল,শান্তর দেওয়া,কিন্তু ওগুলা দিয়ে মাস চালাতে হবে তাই কিনি নাই,এভাবে আর তো জীবন চলে না,একটা চাকরির জন্য এপ্লাই করবো,১০হাজার বেতন হলে আমার ভালো মতই জীবন কেটে যাবে
এসব ভাবতে ভাবতে আহানা খাওয়া শেষ করে নিলো,সব গুছিয়ে রেখে বই নিয়ে বসলো,পড়তে পড়তেই ঘুমিয়ে গেলো সে
সকাল সকাল নামাজ পড়ে রেডি হয়ে আবারও হাঁটা ধরলো,একটা পিলারে পোস্টার দেখে থেমে গেলো সে
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি,একটা খাতা বের করে নাম্বার আর ঠিকানা লিখে নিলো,ব্যাস সময় করে একদিন গিয়ে দেখে আসবো,লাস্ট ডেট ২৩তারিখ
মিষ্টিদের বাসায় ঢুকার সময় নজর পড়লো শান্তর উপর,বারান্দায় দাঁড়িয়ে গুন্ডাদের মত চেয়ে আছে ওর দিকে
যাক বাবা বাঁচলাম তাহলে আজ লিফটে জ্বালাবে না আমাকে
আহানা ৫তলায় এসে মিষ্টিদের বাসায় চলে গেলো চুপচাপ,তাহলে কালকের কথা মাথায় ঢুকেছে,আমি যে বলছিলাম কম কথা বলতে আমার সাথে?
পড়ানো শেষ করে বের হয়ে এদিক ওদিক চেয়ে আহানা ভাবতে লাগলো সামান্য আমার কথায় এত গুরুত্ব দিবে??আজ ডিস্টার্ব করতেই আসলো না,Strange!হুমমমমম
আহানা শান্তর বাসার দরজার দিকে তাকাতে তাকাতে চলে যাচ্ছে গিয়ে একজনের বুকের সাথে ধাক্কা লেগে গেলো তার
চোখ বড় করে চেয়ে দেখলো শান্ত একটা ভাব নিয়ে চেয়ে আছে ওর দিকে
আহানা শান্তর থেকে একটু দূরে সরে দাঁড়ালো
.
আআআআপনি!
.
হুম,চলো
.
কোথায়?
.
আমার বেডরুমে
শান্ত আহানার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে
.
এই এই আপনার মাথা ঠিক আছে তো,হাত ছাড়ুন বলতেসি,বাঁচাও বাঁচাও কে আছো
.
শান্ত আহানার মুখ চেপে টেনে বাসার ভিতর নিয়ে গেলো
.
এই মেয়ে তোমাকে একদিন বলসি না তোমার প্রতি আমার interest নেই তাহলে এরকম করো কেন,এত চিল্লাও কেন?
.
interest না থাকলে আমাকে এখন এখানে আনার মানে টা কি?
.
শুনো,আমি তোমাকে ২হাজার টাকা দিসি রাইট?
.
তো?টিউশনির টাকা পেলে ফেরত দিব সেটা
.
শুনো আমি ঐ টাকা নিব না,তাহলে বলো কি করবে
.
কি করবো জোর করে আবার দিয়ে যাব
.
নো,তুমি এমনটা করলে তোমাকে আমি লিফটে আটকায় রাখবো গোটা ২ঘন্টা
.
তো আপনি কি চান!!!
.
আমি চাই তুমি রোজ সকালবেলা আমার জন্য নাস্তা বানাও
.
ইহহহহ মগেরমুলুক পাইসে,ইমপসিবল,আমার খেয়ে কাজ নাই আমি আপনাকে রেঁধে খাওয়াবো,আমি কি বুয়া নাকি
.
আমি তো বলিনি তুমি বুয়া,আচ্ছা রান্না করতে না পারলে আমাকে এই মূহুর্তে ২হাজার টাকা ফেরত দাও
.
আপনি খুব খারাপ একটা লোক,টাকা দিয়েছিলেন এসব করার জন্য??
.
নাহ,তোমার তো উচিত নিজ থেকে আমাকে রেঁধে খাওয়ানোর,আমি তোমাকে টাকা দিয়ে হেল্প করেছিলাম
.
আপনার তো বাসায় বুয়া আছেই তাহলে আমি কেন রাঁধবো?
.
৪দিন রাঁধবা বেশি না,শুধু সকালে,বুয়া সিক ?নাহলে আমার কাজ নাই তোমাকে জোর করার
.
তো আমি নাহয় সকালে রেঁধে দিব,বাকি বেলা?
.
হোটেলে খাব,অর্ডার করবো
.
তাহলে সকালের টাও অর্ডার করে নেন,আমি আপনাকে আপনার টাকা কাল ফেরত দিব রুপার থেকে নিয়ে
.
শান্ত এবার খুব রেগে গেছে,সামান্য সকালের রান্না দিয়ে এত কথার পেঁচ লাগাতে হবে সে জানত না
আহানার হাত ধরে টেনে কাছে নিয়ে এসে বললো কি সমস্যা তোমার??
রেঁধে দিলে মরে যাবে তুমি??
.
না মরবো না,কিন্তু আপনার আর আরও কয়েকটা ছেলের সাথে এক বাসায় থেকে রান্না করবো না আমি কখনও
এখন হাত ছাড়ুন আমার,বাসায় ফিরতে হবে আমাকে
.
ছাড়বো না বাসায় গিয়ে দেখাও তো
.
বাঁচাও বাঁচাও
.
শান্ত আহানার হাত ধরে টেনে সোফায় দুম করে ফেললো
.
চেঁচাও!আরও জোরে
.
শান্ত তার শার্টে হাত দিতেই আহানা চোখ ইয়া বড় করে সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পড়লো
.
আআআআপপনি বলছিলেন না আমার প্রতি আপনার interest নেই,তাহলে এখন এসব কি?
.
ঠিক বলসো,interest নেই,আমার গরম লাগছে তাই জামা খুলতেসি,তুমি কি যেন বলতেসিলা?
.
আহানা দাঁতে দাঁত চেপে দরজা খুলতে যেতেই শান্ত ওর সামনে এসে দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো
.
বুয়া নেই তো ভাঁড়া বুয়া আনেন না,আমার পিছে লাগছেন কেন
.
শান্ত রেগে আহানার কাঁধ চেপে ধরে ঝাঁকিয়ে বললো তোমার রান্না আমার ভালো লাগে,আমি তোমার হাতের রান্নাই খাব,বুঝেছো?
.
আহানা চুপ করে থেকে বললো ঠিক আছে,আজ সকাল শুধু,কাল আমি আপনার টাকা ফেরত দিয়ে দিব,হাত ছাড়ুন এখন
শান্ত হাত ছেড়ে দিলো আহানার
আহানা রান্নাঘরে গিয়ে রান্না করতেসে
আর শান্ত একটা বল নিয়ে দেয়ালে মারতেছে,সেটা ব্যাক করে ওর কাছেই ফিরে আসতেসে আবার
এই মেয়েটা এত এত এটিটিউড নিয়ে ঘুমায় কি করে,আমি শাহরিয়ার শান্ত ওকে চান্স দিতে চাইলে সবসময় ফেলে দেয়,এত সাহস!!
আর আমিও কম না আমি ওকে পাত্তা কেন দিচ্ছি,হুম বেশি পাত্তা দেওয়ায় এমন করতেসে,ভাবসি টাকা দেওয়ার ভয়ে রেঁধে দিবে কিন্তু না এগেইন এটিটিউড,আমারই দোষ প্রথম যেদিন চড় মেরেছিল সেদিনই বুঝা উচিত ছিল যে এ কোন টাইপের মেয়ে,এর হাসবেন্ড যে হবে তার জীবন ত্যানাত্যানা করে দিবে
আহানা রান্না শেষ করে হাত ধুয়ে পিছন ফিরতেই দেখলো শান্ত মুখ ফুলিয়ে ওর দিকে চেয়ে আছে
.
রান্না শেষ
.
গুড
শান্ত আহানার হাত টেনে নিয়ে চলে গেলো তারপর দরজা খুলে বাসা থেকে বের করে দিলো,ওর ব্যাগটা ওর হাতে দিতে দিতে বললো নাও তোমার ব্যাগ আর বের হও এখান থেকে,তোমার টাকা লাগবে না আমার,তোমার ভাব তোমার কাছেই রাখো
.
আহানা হা করে শান্তর মুখের দিকে চেয়ে আছে,কি বলছে ছেলেটা,এত সুন্দর করে নাস্তা বানাই দিলাম একটা থ্যাংকস তো দিলোই না উল্টো আমাকে বাসা থেকে বের করে দিলো
জানেন আপনি খুব খারাপ একটা লোক,খুব খারাপ!
আহানা শান্তকে বকতে বকতে চলে গেলো
.
শান্ত ঠাস করে দরজা লাগিয়ে রান্নাঘরে চলে গেলো
রুটি, ভাজি আর ডিম অমলেট বানিয়ে রেখে গেছে আহানা
শান্ত মুচকি হেসে এক প্লেটে রুটি ভাজি আর ডিম নিয়ে ডাইনিং এ গেলো,আহানাকে ইচ্ছে করে রাগ দেখিয়েছে যাতে ও এটিটিউড কম দেখাতে পারে
তৃপ্তি করে নাস্তা করতেসে সে,নওশাদ আর রিয়াজ ব্রাশ নিয়ে শান্তর পিছনে এসে শান্তর হাবভাব লক্ষ করছে
.
ছেলেটার হলোটা কি??এমন করছে কেন
যে ছেলে সকাল ১১টা ছাড়া ঘুম থেকে উঠতো না সে ভোর ৬টায় উঠে!
আবার যে ছেলে চিকেন ছাড়া সকালের নাস্তা করতো না সে জাস্ট রুটি আর ডিম,ভাজি দিয়ে নাস্তা করছে
.
রিয়াজ একটা চিমটি দে তো,আমি কি স্বপ্ন দেখতেসি নাকি!!
.
আউচচচচচ,এত জোরে চিমটি দিলি কেন
.
চিমটি তো চিমটিই হয় নওশাদ!
.
কিরে তোরা এমন দল বেঁধে এখানে দাঁড়িয়ে কি করিস??
.
নাহ কিছু না,সূর্যের চারপাশে গ্রহের ঘুরাফিরা দেখি এই আর কি,তুই এটা বল বুয়া তো সিক তাহলে এত রান্না করলো কে?
.
আ,,,,
.
কে?
.
মিষ্টির আম্মু দিয়ে গেছে
.
ওহহ

কতটা বেয়াদব হলে এমন কাজ করতে পারে মানুষ,আমার রাজি হওয়াই ঠিক হয়নি,শুধু শুধু সময় নষ্ট আমার!
আহানা ভাত রেঁধে আলু ভেজে সেটা দিয়ে খেলো,তারপর চুল আঁচড়িয়ে বেরিয়ে পড়লো ভার্সিটির উদ্দেশ্যে,কাল তো শুক্রবার,টিউশনি আছে ভার্সিটি নাই,শান্তি
শান্তি বলতে গিয়ে মনে হলো ঐ অশান্তের কথা,এখন থেকে ওরে অশান্ত ডাকবো,হুমমমম!!
ভার্সিটিতে এসে আহানা দেখলো শান্ত তমালের সাথে কি নিয়ে হাসাহাসি করতেসে ওকে দেখে হাসি থামিয়ে সানগ্লাসটা পরে আরেকদিকে ফিরে বসলো
.
ছেলেটা এত স্বার্থপর!!?আবার ভাব ও দেখাচ্ছে আমাকে
.
আহানা রেগেমেগে ক্লাসে গিয়ে ধুপ করে বেঞ্চে বসে পড়লো,রুপা ফোনে কথা বলতে বলতে আসতেসে এদিকে
আহানা ওর হাত ধরে ওকে বসিয়ে বললো ২হাজার টাকা দিতে পারবি আমাকে??আমার খুব দরকার
.
আচ্ছা,নে আমার কাছে এখনই আছে,জামা কিনার জন্য আনছিলাম,জামা পরেও কিনতে পারবো,তুই এখন রাখ এটা
আহানা টাকা নিয়ে সোজা হেঁটে গেলো শান্তর কাছে
.
নিন আপনার টাকা,এরপর থেকে আমাকে কোনোদিন টাকা দিয়ে সাহায্য করতে আসবেন না,এটাকে সাহায্য বলে না,আপনি যেটা করেছেন সেটা আপনারই ফায়দার জন্য করেছেন তা আজ প্রমান হয়ে গেছে,সো নিন,আর কখনও আমার সাথে লাগতে আসবেন না,বুঝছেন মিঃ অশান্ত?
আহানা টাকা গুলো শান্তর হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে গেলো
শান্ত টাকা মুঠো করে ফেলে দিলো নিচে,রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে,এই মেয়েটা এত এত ভাব কাকে দেখায়,আমাকে কি চিনে না!!
.
শান্ত ভাই আর কত সহ্য করবা??দেখলে না ডেইলি তোমাকে ইনসাল্ট করে তারপরেও তুমি চুপ করে আছো কি জন্যে সেটাই মাথায় ঢুকে না
.
শান্ত বাইকে বসে চলে গেলো ভার্সিটি থেকে
.
এর আবার কি হলো,করতে বললাম আহানার টাইট
আর সে চলে গেলো বিনা ফাইটেই??আজব তো
.
তুই থাম তো রিয়াজ,শান্ত ওর ভালো নিজে বুঝে,জাস্ট নিজেকে কনট্রোল করতে চলে গেছে সে,মুড ঠিক হলে আবার আসবে
.
ভার্সিটি তাড়াতাড়ি ছুটি দিয়ে দিলো,আহানা রুপাকে বাই বলে কৃষ্ণচূড়া গাছটার নিচে এসে কয়েকটা ফুল কুড়ালো তারপর বসে বসে মালা বানালো সেগুলো দিয়ে
নিজের মত করে মাথায় হাতে ফুলের ornaments বানিয়ে লাগালো,এসব শান্তি নিয়ে করার একটাই কারণ সেটা হলো আহানা শান্তকে ভার্সিটি থেকে চলে যেতে দেখেছে তাই আরামসে সে সময় কাটাচ্ছে একা একা
টিউশনি ৩টা থেকে,এখন বাজে ১টা,তাই মন মত কাজ করে যাচ্ছে সে,আজ আর শয়তানটা জ্বালাতেও আসবে না,আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে
আহানা গাছ ধরে চরকার মত ঘুরে যাচ্ছে,মাথার উপর লাল ফুল তার সাথে সবুজ পাতা,পাখির কলরব,কি শান্তিটাই লাগতেসে বলে বুঝানো যাবে না,ছোটবেলায় ফিরে গিয়েছি মনে হচ্ছে
আহানা ঘুরতে ঘুরতে কারোর পা দেখে থেমে গেলো,এতক্ষণ ঘুরতে ঘুরতে মাথা ঘুরাচ্ছে তার,মাথা ধরে ঠিক করে দাঁড়িয়ে পা থেকে চোখ তুলে মাথার দিকে তাকালো,শান্ত দাঁড়িয়ে আছে হাতে হকিস্টিক নিয়ে
আহানা মাথা ধরে দাঁড়াতে পারছে না,ভূতে ধরছিল বলে বাচ্চাদের মত গাছ ধরে এতক্ষণ ঘুরছিল,এখন ঠিকমত দাঁড়াতেও পারছে না সে,ধুপ করে নিচে মাটিতে বসে গেলো
শান্ত এগিয়ে এসে ওর সামনে দাঁড়ালো
আহানা মাথা ধরে ওর দিকে চেয়ে বললো কি?আপনি?এখানে কেন?
.
শান্ত হকিস্টিকটা আহানার হাতের সাথে লাগিয়ে বললো কাউকে হসপিটালে ভর্তি করাতে এসেছি
.
আহানা ঢোক গিলে একটু পিছিয়ে গেলো,তারপর কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো আমি কি করসি?আপনিই তো টাকা ফেরত চেয়েছিলেন!!
.
শান্ত হকি স্টিকটা দিয়ে একটু চাপ দিলো আহানার হাতে
আহানা হাত সরিয়ে এদিক ওদিক তাকালো,জনমানবশূন্য এরিয়া,হওয়ারই কথা,ভার্সিটি তো ছুটি হয়ে গেছে
.
আহানা একটু পিছিয়ে গেলো
শান্ত নিচু হয়ে আহানার সামনে ওর মুখ নিয়ে স্টিকটা দিয়ে আহানার মাথার থেকে ফুলের ক্রাউনটা ফেলে দিতে দিতে ফিসফিসিয়ে বললো মেরে ভূত বানাই দিব,কেউ জানতেও পারবে না
.
আহানা চোখ তুলে তাকিয়ে বললো সরি,আপনাকে আমি সকালে রেঁধে দিব সত্যি
.
লাগবে না
.
তাহলে কি লাগবে?
.
তোমার ভাঙ্গা হাড্ডি
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে