প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_২৯

0
2559

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_২৯
#Writer_Afnan_Lara
?
আহানা বাসায় ফিরে বিছানার চাদর,বালিশের কভার,সব ধুয়ে দিলো,কালকে পরার জামাটাও ধুয়ে দিলো
তারপর ঘর মুছলো,সব শেষ করে গেলো রান্না করতে,আজ শুক্রবার তাই সব কাজ সারতেছে সে
একটু পড়ে,ভাত খেয়ে ঘুমিয়ে গেলো,আবার দুপুর ২টায় উঠে রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লো পিউদের বাসার উদ্দেশ্যে,উফ আকাশকে তো আর পড়াতে পারবো না,সবসময় আমার কাজে দখল দিয়ে ১২টা বাজিয়ে দেয়,বেয়াদব একটা
আহানা শান্তকে বকতে বকতে পিউদের বাসার দিকে যাচ্ছে হঠাৎ সামনে শান্ত বাইক এনে থামালো
আহানা ব্রু কুঁচকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই শান্ত নোটবুক ২টা ওর হাতে ধরিয়ে দিলো
.
নাও,আজ থেকে তোমার চাকরি শুরু,এই নোটগুলো আরেকটা নোটখাতায় তুলে দিবে,পরের মাসের এই দিনে আমি তোমাকে ৩হাজার টাকা দিবো,বাই
হেলমেট পরে শান্ত বাইক নিয়ে চলে গেলো,আহানাকে কিছু বলতেই দিলো না
.
আহানা হা করে চেয়ে আছে,থাক বকতেও পারবো না,এটাও তো কাজ,নোট উঠানো তো আর সহজ কোনো কথা না,উফ কি ঝামেলা
আহানা পিউকে পড়িয়ে বের হয়ে হেঁটে ফিরছে বাসার দিকে
তখন ৪টা ১০কি ১৫বাজে মনে হয়
যে পথ দিয়ে আহানা যাচ্ছে সেখানে ফুচকাআলা,ঝালমুড়ি আলা সব,মানুষ খেয়ে যাচ্ছে,শুক্রবার বলে কথা,ছুটির দিন,এই দিনেই মানুষ ঘুরতে বের হয় বেশি,ঢাকার মানুষ তো আরও আগে বের হয়
কাপল আছে কেউ,কেউবা পরিবার নিয়ে এসেছে,আবার অনেকেই দল বেঁধে এসেছে,সম্ভবত বন্ধুবান্ধব হবে তারা
গান গাইছে,আড্ডা দিচ্ছে হাসিঠাট্টা করছে,বেশ কিউট একটা পরিবেশ
.
আহানা সবাইকে দেখতে দেখতে হেঁটে যাচ্ছে,পাশে কারোর উপস্থিতি টের পেয়ে থেমে গেলো সে,পাশে ফিরতেই দেখলো শান্ত হাতে ঝালমুড়ি নিয়ে খাচ্ছে,এমন ভাবে খাচ্ছে যেন পাশে আহানা তার জানা নেই
আহানা ব্রু কুঁচকে হাঁটা ধরলো,ওমা শান্ত ও পাশে পাশে আসতেসে
.
সূর্য তুই ক্যাফে আয় আমি সেখানে আসতেসি,তমালকেও নিয়ে আসিস,নওশাদ আসতে পারবে না ও ঘুমাচ্ছে
.
আহানা হাঁটার গতি বাড়িয়ে চলে যাচ্ছে
.
এক মিনিট দাঁড়াও আহানা
.
কি?
.
শান্ত ফোনে কথা বলতে বলতে ওর হাতের বারতি ঝালমুড়িটা আহানার হাতে দিতে দিতে বললো রাখো আমি কথা বলে আসতেসি
.
আমি কেন রাখব আজব!!আরে আরে কই যান আপনি?
.
শান্ত পূর্ব দিকে চলে গেলো ফোনে কথা বলতে বলতে
আহানা ঝালমুড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,৫মিনিট হইসে এখনও আসতেসে না
আহানা এদিক ওদিক তাকাচ্ছে হাতে ঝালমুড়ি নিয়ে,হঠাৎ সামনে একটা বাইক এসে থামলো
শান্ত হেলমেটের গ্লাস উঠিয়ে আহানার দিকে তাকিয়ে হেসে বললো আমার লেট হচ্ছে বাই
বাইক উধাও!!সাথে শান্ত ও
.
ওমা গেলো কই,ঝালমুড়ি কি করবো আমি,আজব লোক!!
.
আহানা ঝালমুড়ির দিকে চেয়ে থেকে কোনো উপায় না পেয়ে খেতে খেতে হাঁটা শুরু করলো,এই লোকটা এমন কেন,সকালে এতগুলো কথা শুনাইলাম তাও আবার সেই আমাকে জ্বালাতে চলে আসলো
আহানা বাসায় ফিরে উঠান থেকে সব জামাকাপড় নিয়ে আসলো রুমে
আরে কাল তো ২৩ তারিখ,চাকরিটার interview দিতে যাবো,কে জানে কি হবে,এইচএসসির সার্টিফিকেট দিয়ে কি আর ভালো চাকরি পাওয়া যায়!
শুক্রবার কেটে গেলো,পরেরদিন শনিবার,সকাল সকাল সব কাজ সেরে আহানা মিষ্টিদের বাসায় গেলো,আজ শান্ত কোথাও নেই
হুহ একদম ঠিক হয়েছে উনার থেকে যত দূরে থাকবো ততই ভালো
মিষ্টিকে পড়িয়ে বাসা থেকে চলে যাওয়ার সময় আহানা বার বার পিছন ফিরে তাকিয়েছে,এতদিন ধরে জ্বালাতো
আর এখন জ্বালাচ্ছে না বলে কেমন যেন লাগছে তার কাছে
আহানা বাসায় ফিরে পানি খেয়ে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো interview দিতে
সকাল ৮টা ৩০মিনিটে interview আজ
ব্যাপারটা বুঝলাম না ঠিক,এত সকাল সকাল কেন সেটাই মাথায় ঢুকছে না
.
এই যে ভাইয়া এটা কি এস.পি কোম্পানি?
.
জি,আপনি কি ইন্টার্ভিউ দিতে এসেছেন?
.
হুম
.
তাহলে ৩য় তলায় যান
.
ওকে ধন্যবাদ
.
আহানা ৩য় তলায় আসলো
আল্লাহ গো এত ভিড়,আমি তো টিকবো না মনে হয়,ছেলে যতগুলো মেয়ে ততগুলো,আর আমি ভাবসিলাম অল্প কয়েকটা হবে,এদের সাথে টিকা অসম্ভব
.
একজন লোক আসলেন,এসে সবার মাঝখানে দাঁড়ালেন,দেখতে ভদ্র টাইপ তবে এই অফিসের বস মনে হয় না,নরমাল মনে হয়,নরমাল শার্ট পরা
উনি বললেন সার্টিফিকেট অনুযায়ী সবাই আলাদা হয়ে যেতে
আমি এইচএসসির দলে দাঁড়ালাম,কয়েকটা মেয়ে এসেছে
এত সেজেছে মাগো মা,সাজারই কথা,কর্মচারী তো আর আমার মত ক্ষেতরে নিবে না,আমি তো চেয়েও সাজতে পারিনি,কিছু নাই সাজার
.
তাও ওড়না জামা টেনেটুনে ঠিক করে নিলো আহানা
আয়রন করার উপায় নাই,বাসায় আয়রন করার মেশিন নেই,কাল জামাকাপড় ধুয়ে শুকিয়ে ভাঁজ করে বালিশের তলায় রেখে দিয়েছিলাম তাই দেখে মনে হচ্ছে আয়রন করা,হিহি গরীবের আয়রন মেশিন হলো বালিশ
.
শুনেন সবাই ২জন ২জন করে যাবেন,ভাগ্য হলে ২জনই সিলেক্ট হবেন,ভাগ্য ভালো না হলে ১জন হবেন,আবার দুজনের একজন ও না হতে পারেন
স্যার খুব রাগী,ঠিক করে কথা বলবেন,আমি লিস্ট দেখে ডাকবো এক এক করে যাবেন আপনারা,ঠিক আছে??সবার আগে রুশা রহমান আর টুম্পা চৌধুরী আসেন
.
আহানা বসে বসে আল্লাহকে ডাকতেসে,১০হাজার বেতন হলে বেশ ভালো যাবে তার,আল্লাহ যেন টিকে যাই আমি
এর আগেও আহানা ইন্টারভিউ দিয়েছিল অনেক চাকরির আশায় কিন্তু একটাতেও সফল হয়নি,তাই এখন ভয় করছে,ক্লাস ৯এ থাকতে আমাদের স্কুলের একজন বাংলা ম্যাডাম ছিলেন,ফেরদৌসি ম্যাডাম,উনি আমাকে বলেছেন ইন্টারভিউ কোনো বড় কিছু না,তবে এটাকে বড় ভাবতে হবে,ভয় থাকলে টিকবে না কোনোমতেই
ভয় এক পাশে রেখে আত্নবিশ্বাস নিয়ে কথা বললে জিতা ৯৯% সিউর
তাই আজ আমি আমার আত্নবিশ্বাস জারি রাখবো,ইনশাল্লাহ আমি সফল হবো
.
১২/১৩জনকে ডাকার পর এবার আহানাকে ডাকলো,সাথে যাকে ডাকলো তার নাম শুনে আহানার চোখ কপালে,শাহরিয়ার শান্ত!!!!কিহহহ ও এখানে কি করে
আহানা চারিদিকে তাকাতে তাকাতে ভিতরে চলে গেলো,কিন্তু শান্তকে দেখলো না
.
শান্ত দৌড়ে আসলো কারন আজ তার আসতে আসতে দেরি হয়ে গেছে,ঘুম থেকে উঠতে পারেনি
আহানা ভিতরে এসে চেয়ারে বসলো,শান্ত ও এসে চেয়ারে বসতে গিয়ে আহানাকে দেখে সে চমকে উঠলো
.
আহানা ব্রু কুঁচকে ওর থেকে চোখ সরিয়ে বসের দিকে তাকালো
.
হাই আই এম জাকির হোসেন,নাইস টু মিট ইউ!
তো বেশি কথা না বাড়াই আরও অনেকজন ওয়েটিংয়ে আছে আপনারা আপনাদের সার্টিফিকেট এবং ম্যানেজিং স্কিল প্রুভের পেপার দিন আমাকে
.
আহানা আর শান্ত একসাথে দিলো,উনি সার্টিফিকেট দেখতেসে
শান্ত আর আহানা একজন আরেকজনকে দেখতেসে মনে মনে একজন আরেকজনকে গিলে খাচ্ছে
.
Why do you want to be a part of our business Mr.Santo? (তুমি কেন আমাদের ব্যবসার অংশ হতে চাও?)
.
Because I’m a good candidate for this job and I’m
Sure I will be able to handle all the work
(কারণ আমি জানি আমি এই চাকরির জন্য একজন ভালো কর্ম প্রার্থী এবং আমি নিশ্চিত আমি সব কাজ সামলাতে পারবো)
.
And what about you Ms. Ahana?
.
আমার চাকরিটা প্রয়োজন
.
ইংরেজীতে কথা বলুন
.
সরি স্যার,আমি ইংরেজীতে নিখুঁত না
.
ওকে সমস্যা না,আপনি বলুন আপনার চাকরিটা কেন প্রয়োজন?দেশে আরও এমন অনেক চাকরি আছে যেটা আপনি করতে পারবেন আপনার প্রয়োজন মিটানোর জন্য তাহলে এই চাকরিটাই কেন?
.
এই ব্যাবসার মূল উপাদান হচ্ছে বিল্ডিং তৈরির নকশা নিয়ে,আর আমার সেই সম্পর্কে ধারনা আছে বলেই আমি শত চাকরির মাঝে এটা বেছে নিয়েছি,আশা করি আমি নির্ভুল ভাবে কাজটা করতে পারবো
.
ওকে দ্যাটস গুড,আই এম ইমপ্রেসড
শান্ত মুচকি হেসে বসের দিকে চেয়ে আছে,শুধু বস না শান্তরও আহানার কথাটা ভালো লেগেছে,আহানার এই জোস কথায় সে পাক্কা আজকে টিকে যাবে
.
তোহহ মিঃ শান্ত এবং মিস আহানা আপনাদের দুজনের কথাই আমার বেশ লেগেছে,কংগ্রেচুলেশনস!আপনারা দুজনেই সিলেক্টেড
.
থ্যাংক ইউ সো মাচ স্যার
.
আমার পি.এ মিঃ রাফি তোমাদের বেতনের সম্পর্কে সবটা জানিয়ে দিবে,সো ফর নাও গুড বাই
.
শান্ত পকেটে হাত ঢুকিয়ে রাফির কাছে চলে গেলো
আহানা খুশিতে আটকানা হয়ে দিশেহারা হয়ে গেছে মাথা ধরে নিজেকে সামলিয়ে শান্তর পিছে পিছে গেলো
.
তো শুনুন আপনারা,মাসে একদিন ও ছুটি নাই,পুরা মাস চাকরি থাকবে,দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত,মাঝে মাঝে ওভারটাইম ও হবে
মিঃ শান্ত আপনার বেতন ২৫হাজার,আর মিস আহানা আপনার বেতন ১০হাজার,কাল থেকে জয়েন করবেন,আল্লাহ হাফেজ
কথাটা বলে উনি চলে গেলেন
.
আহানা চোখ বড় করে বললো আমার এত কম কেন,আজব তো,আমি কি দোষ করসি
.
মিস আহানা আপনি এখনও পিচ্চি মাইয়া,একে তো ইংরেজী পারেন না,আরেক তো অনার্সের ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট,১০হাজার দিবে এটাতেই আমি শকড!!বাই দ্যা ওয়ে হিংসা হয়?আমার মতো হতে চাও তাহলে মাস্টার্স পর্যন্ত পড়ে তার পর আসো বুঝছো বাবু?
.
আমি বাবু না ওকে?
আর আপনার না বাবার লাখ লাখ টাকা,তো আপনি ২৫হাজার টাকার চাকরি করতে আসছেন কেন?
.
none of your business!,নিজের কাম করো
যাও নিজের চরকায় তেল দাও
.
হুহ!!
আহানা চলে গেলো ভার্সিটির দিকে
শান্ত দাঁত কেলিয়ে টাই ঠিক করতে করতে বাইকে উঠলো,যাক ভালোই হয়েছে,ডেইলি ওরে জ্বালাতে পারবো?
আহানা আজ অনেক খুশি,অনেক অনেক,এভাবে টিকে যাবে সে একদমই ভাবতে পারেনি,কাল থেকে নো টিউশনি,ইয়ে?
শান্ত বটতলায় বসে নওশাদের সাথে কথা বলতেসে
আহানা ক্লাসে বসে উঁকি দিয়ে শান্তকে দেখছে,সবসময় আল্লাহ আমার সাথে ওরেই কেন রাখে বুঝি না,চড় মারার পর থেকে এমন কোনো দিন যায়নি যেদিন এর চেহারা দেখতে হয়নি আমার,উফ!
ব্রেক টাইমে ক্যামপাসে আসতেই ২সেকেন্ড ও হয়নি শান্ত সামনে এসে হাজির
.
কি?
.
আমার নোটবুক দাও
.
দাঁড়ান আনতেসি,আহানা গিয়ে ব্যাগ থেকে নোটবুক এনে শান্তকে দিলো
.
হুম গুড জব,আর এই নাও আজকের নোটস
.
আহানা নোটস হাতে নিয়ে মুখ বাঁকিয়ে চলে যেতে লাগলো
.
এই মিস আহানা!
.
আহানা থেমে পিছনে তাকিয়ে বললো কি?
.
তুমি কি জানো তুমি এখন থেকে আমার সহকারী কর্মচারী
.
কে বলসে?
.
জাকির বস বলসে,আর বিশ্বাস নাহলে তোমাকে যে কাগজ দিসে আজকে সেটায় চেক করিও,আমার কথা মতো চলবা ঠিক আছে?আমি তোমার বস,আর আমার বস জাকির স্যার
.
হুহ,বয়ে গেছে আমার,যান এখান থেকে,বসের গুষ্টি কিলাইতাম!!
আহানা চলে গেলো ক্লাসের দিকে
শান্ত কোমড়ে হাত দিয়ে ভাবতেসে এই মেয়েটার এত তেজ কেন বুঝি না
ঠিক আছে! কাল থেকে তেজ বুঝাবো!
.
আহানা নাচতে নাচতে পিউদের বাসায় গিয়ে বললো যে আর পড়াতে পারবে না
আহা কি মজা,মিষ্টির আম্মুকে মানা করবো না,ভোরে আমার কোনো কাজ থাকে না,এটা পড়ালে বারতি ইনকাম হবে
শয়তান শান্ত ৩হাজার দিবে,মাস শেষে বেতন হবে ১৫হাজার টাকা,বেতন পেয়ে ভালো করে বাজার করবো
.
আহানা খুশিতে আজ আলুর ভর্তা বানালো,আহা আমার সুদিন আসতেসে☺মজা করে ভাত খেয়ে নিলো
তারপর নামাজ পড়ে নিয়ে বই নিয়ে বসলো,পড়তে পড়তেই ঘুমিয়ে গেলো,শান্তর নোট লিখতেই ভুলে গেলো
পরেরদিন ভোরে মিষ্টিদের বাসায় ঢুকার সময় শান্ত পিছন থেকে ডাক দিলো
.
তুমি আমার নোটস কমপ্লিট করেছো?আজকে স্যার বলসে সবার আগে আমার নোটস চেক করবে
.
ইসসস আমি ভুলে গেছি কাল ক্লাসের পড়া পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে গেছিলাম হুস ছিল না একদম
.
কিহ?তুমি এখনও লিখো নাই!!আজ যদি স্যার আমাকে কথা শুনায় তোমার হাড্ডি আমি সত্যি সত্যি ভাঙ্গবো
.
এই কথায় কথায় মারার হুমকি দেন কেন এতো?আমি ভার্সিটিতে আসার আগে পুরোটা কমপ্লিট করে নিয়ে আসবো
.
আসলেই ভালো
.
আহানা ভয়ে মিষ্টিদের বাসায় ঢুকে গেলো,ওকে পড়িয়ে এক দৌড় দিলো বাসার দিকে,বাসায় ফিরে হাত থকে ব্যাগ রেখেই টেবিলে বসে গেলো নোট লিখার জন্য,৩ঘন্টা ধরে খাটনি খেটে অবশেষে নোট কমপ্লিট করলো,২/৩লাইন বাকি ক্লাসে গিয়ে লিখবো,বাপরে বাপ,খাওয়া দাওয়া কিছু হয়নি আমার
.
ক্রিং ক্রিং
ফোন বাজতেসে
কার কল আবার সেই শয়তানটার!কল করে করে মাথা খাবে আমার,এই নিয়ে ৫বার কল করেছে
.
হ্যালো কি সমস্যা আপনার?বলসি না আমি সব কমপ্লিট করে আনবো,অসহ্য
.
এই আমাকে ভাব দেখাবা না,আমি তোমার বস
.
কচুর বস আপনি!মানি না আমি,ফকিন্নি বস একটা!
.
কি?আমি ফকিন্নি বস??তোমার সাহস হয় কি করে আমাকে এটা বলার,আজ দেখিও অফিসে তোমার কি হাল করি আমি
.
কচু করবেন আমার,আপনার মন্ডু করবেন,ছাতার মাথা করবেন
.
এই চুপ,আবোলতাবোল এসব কি বলে যাচ্ছো,মগজ কি গুলে গেছে তোমার?
.
না গুলে নাই,আপনার গুলে স্যুপ হয়ে গেছে
.
কিহহহহ,কথা সামলিয়ে বলো আহানা
.
আপনি কি সামলায় বলতেসেন যে আমি সামলিয়ে বলবো?মিঃ অশান্ত
.
এই আমাকে অশান্ত ডাকবা না একদম,আমার নাম শাহরিয়ার শান্ত,ওকে?গট ইট?
.
নো,আপনার নাম অশান্ত
.
দরজা খুলো
.
মানে?
.
খুলো বলতেসি
.
আহানা চোখ কপালে তুলে দরজার কাছে গিয়ে দরজা খুলতেই শান্ত ভিতরে চলে আসলো
কানে ফোন,দরজা লাগিয়ে এগিয়ে গেলো সে আহানার দিকে
আহানা ঢোক গিলে কানের থেকে ফোন রেখে দিলো
.
কি বলছিলে তুমি?আমার মগজ গুলে স্যুপ হয়ে গেছে?আমি অশান্ত?
.
আআআআআপপপপপনি এখানে কি করে?
.
বাইকে বসলাম এক টানে চলে এলাম হাই স্পিড দিয়ে,ভাবসিলাম তোমাকে অফিসে টাইট দিব বাট সব বসই তো তাদের পিএ কে অফিসে টাইট দেয় আমি নাহয় ইউনিক কিছু করি
.
আহানা পিছোতে পিছোতে দুম করে খাটে বসে গেলো
.
শান্ত টেবিল থেকে নোটবুক নিয়ে চেক করতেসে
আহানা এই সুযোগে পালাতে যেতেই শান্ত ওর হাত ধরে ফেললো
.
আরে থামো থামো,কই যাও তুমি?এখনও তো কিছু করলাম না,ডেইলি আমার সাথে ঝগড়া করার শাস্তি তোমায় আজ পেতে হবে
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
চা খাবেন?
.
শান্ত মুচকি হেসে এগিয়ে গেলো আরও
চা??না তোমাকে খাব!
.
আহানা চোখ কপালে তুলে পিছোতে পিছোতে বললো বাঁচাও বাঁচাও
.
শান্ত কাছে এসে আহানার মুখ চেপে ধরে বললো চুপ!!
তোমাকে বলসি না তোমার প্রতি আমার interest নেই,ওরকম কিছু করবো না ওকে?
.
তাহলে কি করবেন?
.
দাঁড়াও ভাবতে দাও
.
শান্ত আহানার পাশে বসে গেলো,গালে হাত দিয়ে ভাবনায় পড়ে গেলো সে আহানার সাথে কি করবে
আহানা আবার পালিয়ে যেতে নিতেই ওর হাত ধরে ফেললো সে
.
প্লিস ছাড়ুন!
.
কি বলছিলে যেন?
.
না না কিছু না,আর কখনও বলবো না সত্যি!
.
যাও চা বানাই আনো,চা খেতে খেতে ভাববো তোমাকে কি শাস্তি দিব এখন
আহানা হাত ছাড়িয়ে রান্নাঘরে গেলো,এই ছেলেটা জোঁক টাইপের,উফ,একেবারে বাসায় চলে আসলো,তারেক আঙ্কেল জানলে নির্ঘাত আমাকে বাসা থেকে বের করে দিবে
আহানা চা নিয়ে এসে দেখলো শান্ত নোট বাকিগুলো লিখতেসে
.
নিন আপনার চা
.
হুম,তোমার জন্য বানাও নি?
.
দুধের গুড়ি শেষ
.
আরেকটা কাপ আনো
.
কেন?
.
আনতে বলসি আনো
.
নিন
.
শান্ত এক কাপের চা দুকাপ করলো,অর্ধেক অর্ধেক,নাও খাও
.
খাব না আমি
.
খাও বলতেসি,সবসময় না ছাড়া কিছু বলতে জানো না??
খালি না না না,আমার সাথে সবসময় হ্যাঁ হ্যাঁ বলবা,ওকে?
.
না?
চলবে ♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে