প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_১১

0
2518

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_১১
#Writer_Afnan_Lara
?
মেয়েটা বুঝতে পারলো শান্ত তার কানের দিকে তাকিয়ে আছে,মুচকি হেসে বললো এই কানের দুলটা আমি নতুন কিনেছি এক বইনের থেকে,হিহি
মেয়েটা হেসে চলে গেলো হাত পা নাচিয়ে
শান্ত কিসব ভেবে দরজা লাগালো
.
ভার্সিটিতে এসে আহানা ক্লাসে ঢুকে চুপচাপ এক কোণায় গিয়ে বসে আছে
রুপা চুপিচুপি এসে আহানার হাত শক্ত করে ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো
.
কিরে আমাকে কই নেস তুই,ক্লাস করবি না?কিরে?
.
চল তোকে নিয়ে শপিংমলে যাব,মিরার জন্য কিছু কিনতে হবে তো
.
বাজেট কত?
.
৫হাজার
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
কিহ!এত টাকা?
.
তো কিছে?বাবা তো আমাকে ৬হাজার দিসে,আমি ১হাজার মাইর দিসি?
রুপা আহানাকে নিয়ে একটা শাড়ীর দোকানে আসলো
.
দোকানদারকে বললো শাড়ী দেখাতে ৫হাজারের মধ্যে
.
আহানা তো রীতিমত অবাক,শাড়ী একটার চেয়ে একটা অসম্ভব সুন্দর,আহানার একটা শাড়ী আছে,তার আশ্রমের মা মারা যাওয়ার পর আসার সময় তার একটা শাড়ী নিয়ে সে এসেছিল,সাদার উপর লাল লাল সুতোর ডিজাইন করা শাড়ীটা,তেমন দামি না,৭০০/৮০০টাকার হবে
.
আহানা মন চাইলেই সেটা পরে পরে দেখে,শাড়ীটা ইউজ করা ছিল বলে আঁচল দিয়ে ছেঁড়া তাই সেটা পরে আহানা কোথাও যায় না
.
কিরে কি ভাবিস কোনটা ভালো লাগে বল
আহানা একটা গোলাপি রঙের শাড়ী হাতে নিয়ে বললো এটা সুন্দর
রুপা সেটাই কিনে নিলো,দুজনে আবার ভার্সিটিতে ফিরে আসলো
.
আহানা শান্তকে দেখে রুপাকে বললো চলে যেতে,তারপর জ্যাকেটটা নিয়ে শান্তর কাছে এসে তার দিকে বাড়িয়ে ধরলো
.
শান্ত জ্যাকেটটা হাতে নিয়ে তার ব্যাগ থেকে আহানার ওড়নাটা নিয়ে দিলো
আহানা ৫হাজার টাকা নিয়ে শান্তকে বললো নিন আপনার টাকা
.
এই টাকা আমাকে দিচ্ছো কেন?
.
এগুলা আপনার জ্যাকেটের পকেটে ছিল
.
ওহ আমি ভুলে গেসিলাম
শান্ত জ্যাকেটটা নিয়ে ঘ্রান নিয়ে দেখলো রিং পাউডারের সুবাস নয় তবে যে সুবাস সেটা শান্তর ভালো লাগলো কিছুটা
.
রুপা ব্যাগ থেকে একটা প্যাকেট নিয়ে আহানার হাতে ধরিয়ে দিলো
আহানা প্যাকেটটা খুলে দেখলো একটা জামা,খয়েরী রঙের,বেশ দেখতে,আহানা খুব খুশি হলো
.
কাল সেজেগুজে ভার্সিটির আসবি আমি আর তুই মিরাদের বাসায় যাব
.
ওকে
.
এক মিনিট,তোর কানের দুল কই?
.
ইয়ে আসলে হারিয়ে গেছে
.
একসাথে দুটোই?
.
না একটা হারিয়েছে তাই আরেকটা রেখে দিয়েছি
.
ওহ,তো অন্য একটা কানের দুল দিয়ে আসতি
.
বাদ দে,কানের দুল দিলে আমার কানে ব্যাথা করে
.
ওমা সেকি,কি বলিস তুই
.
হুম
.
ভার্সিটিতে ছুটি দেওয়া হয়ে গেছে
আহানা তার ওড়নাটা হাতে নিয়ে দেখতে দেখতে হাঁটতেসে,মনে হয় ভালো করে ধুয়েছে,কি সুন্দর মিষ্টি ঘ্রান আসতেসে,নিশ্চয় রিং পাউডার হবে
আমার ওড়নাকে তো নতুন বানিয়ে দিছে একদম
.
শান্ত ওড়নাটা বুয়াকে দিয়ে ধুইয়েছিল
.
আহানা কৃষ্ণচূড়া গাছটার নিচ দিয়ে যাচ্ছে,বাতাসে গাছটা নড়ে উঠতেই ফুল কতগুলো ঝরে নিচে পড়তে লাগলো
আহানা থেমে গিয়ে চোখ বন্ধ করে দাঁড়ালো,কি ভালো লাগতেসে,হাত বাড়িয়ে ধরলো আহানা,হাতে কতগুলো ফুল আর ফুলের পাপড়ি পড়ে জমা হচ্ছে
শান্ত ১০হাত দূরে একটা গাছে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,এই নরমাল ফুল মানুষ এত পছন্দ করতে পারে জানতাম না!
আহানা আবারও কতগুলো ফুল কুড়িয়ে ব্যাগ থেকে সুতা টেনে ছিঁড়ে কানের দুল বানালো,কিন্তু কথা হলো কানে ঢুকাবে কি করে
১১
পরে বুদ্ধি করে কানের উপর দিয়ে সুতা নিয়ে গিট্টু দিলো,বাহ আমার কানের দুল হয়ে গেছে☺
আহানা খুশিতে লেকটার দিকে যাচ্ছিলো নিজেকে দেখার জন্য হঠাৎ ওর চোখ গেলো শান্তর দিকে
শান্ত কিছুটা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে, আহানার কানে দুল নেই,তাহলে কি আমার বাসার বুয়ার মেয়ের কানের দুলটা আহানা দিয়েছিলো,কিন্তু কেন?
আহানা আর লেকে গেলো না,নিজের ব্যাগটা নিয়ে হাঁটা ধরলো
.
দাঁড়াও!
.
কি?
.
তোমার কানের দুল কই?
.
আহানা কিছুটা হকচকিয়ে বললো কেন?
.
বলো শুনি
.
আপনাকে কেন বলবো?
.
কাকে দিয়েছো?
.
ককককককি,কাউককককে দিই নাই আমি,হারিয়ে গেছে
.
ওহ!
শান্ত জ্যাকেটটা ঠিক করতে করতে চলে গেলো
আহানা বুঝতেসে না শান্ত কি করে জানলো সে কাউকে দুলটা দিয়েছে ভাবতে ভাবতে হাঁটা ধরলো সে

বুয়া!!বুয়া!
.
জি বলেন বাবা
.
আপনার মেয়েকে একটু ডাকেন তো
.
কেন কি হয়েছে?ও কি কোনো ভুল করেছে?
.
নাহ ভুল করেনি,একটা কাজ ছিল,কিছু কথা জিজ্ঞেস করবো,ডাকেন ওরে
.
আইচ্ছা
বুয়া তার মেয়েকে ডেকে নিলো
মেয়েটা ভয়ে ভয়ে শান্তর সামনে গিয়ে বললো
কি হইসে ভাইয়া?
.
তোমার ঐ কানের দুল কত দিয়ে নিয়েছিলে?
.
২০টাকা
.
২০টাকা?কে দিয়েছিল নাম জানো?
.
না তো,তবে মেয়েটার কাছে টাকা ছিল না বলে কানের দুল বিক্রি করে টাকা নিয়ে চাল কিনেছে
.
২০টাকার চাল?

জি ভাইয়া,১০টাকা করে ২০টাকার ২কেজি চাল
.
ওহ,মেয়েটার কি থুঁতনিতে তিল ছিল?
.
হহহহ ভাইয়া,যা সুন্দর লাগতেসিলো,আমি এরকম আর আগে দেখি নাই কোনোদিন, কিন্তু আপনি জানলেন কেমনে?
.
তোমার ঐ দুল আমাকে দাও,আর নাও ১০০টাকা
মেয়েটা দাঁত কেলিয়ে ১০০টাকার নোট নিয়ে দুলটা খুলে শান্তকে দিয়ে চলে গেলো
.
শান্ত দুলটার দিকে তাকিয়ে বসে আছে,২০টাকার জন্য মানুষ তার দুল বিক্রি করে?তাও যার কাছে একটাই দুল আছে?এই মেয়েটার সাথে অনেক অনেক রহস্য জড়িয়ে আছে
শান্ত দুলটা দেখে আলমারিতে তুলে রাখলো
আহানা বাসায় ফিরে কানের থেকে ফুলের দুলটা খুললো,কান খালি,গলা খালি,হাত ও খালি,কাল জামার সাথে কিছু পরা হবে না,কিরকম লাগবে আমাকে?
আগে তো গলায় একটা রুপালি হার ছিল,এমিটেশনের,সেটাও ৩০টাকা দিয়ে বিক্রি করে দিসিলাম,সেই টাকা দিয়ে পেঁয়াজ কিনেছিলাম,আর আজ দুল,আর কিছু নাই যে বিক্রি করবো
পেঁয়াজ একটা কেটে মরিচ নিয়ে ভাতে পানি ঢেলে বাটিটা নিয়ে বসে আছে আহানা,আজ কেন জানি খেতে মন চাচ্ছে না,রোজ রোজ একি খাবার,অবশ্য কাল ভালো খাবার পাবো☺
আহানা একটু পড়ে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো,আবার ভোরে উঠে নামাজ পড়ে রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হলো মিষ্টিদের বাসায় যাওয়ার জন্য
বাসার সামনে এসে হাঁপাচ্ছে আহানা,এতদূর বাসাটা,কমপক্ষে ৫০টাকার ভাড়া হবে,এতদূর কি আর হাঁটা যায়
লিফটে উঠে দোয়া দরুদ পড়লো যাতে শান্তর মুখ না দেখতে হয়,৫তলায় এসে গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে দেখলো শান্তর ফ্ল্যাটের দরজা অফ,খুশিতে মিষ্টিদের বাসায় গিয়ে দরজা নক করলো সে,ওদের বুয়া এসে দরজা খুললো
মিষ্টিকে পড়ানো শেষে বাসা থেকে বেরিয়ে আহানা উপরের দিকে তাকালো,শান্তর রুমের বারান্দার দিকে,বারান্দায় একটা কি ২টা ফুলের টব ঝুলছে,আর কিছু দেখা যায় না,অনেক উপরে তো তাই
আহানা হেসে হেসে হাঁটা ধরলো,আজ আর ঐ বেয়াদবটার সাথে দেখা হবে না সারাদিন ?
বাসায় এসে আহানা বই নিয়ে বসলো,বই পড়া শেষ করে ১০টায় উঠে রেডি হতে গেলো,জামাটা পরে আহানার মনের ভেতরটা কেমন করতেসে নিজেকে কেমন লাগছে তা জানার জন্য
ফোনে নিজেকে দেখে মুখটা কালো করে ফেললো,গলায় কিছু নেই,হাতেও নেই,আর কান তো
ওড়নাটা পরে একটা পার্স নিয়ে বের হলো আহানা
ভার্সিটির সামনে এসে রুপার জন্য অপেক্ষা করতেসে সে
রুপা ৫মিনিটেই এসে পড়লো,সেও রেডি হয়ে এসেছে কমলা রঙের জামা পরে
.
কিরে,তোর গলায় কানে কিছু দেখি নেই,হাতেও তো নেই
.
বাদ দে,এসব পরতে ভালো লাগে না আমার
.
তাই বলে ওকেশানেও পরবি না?
.
তো কিছে,চল তো,দেরি হয়ে যাবে
দুজনে মিরাদের বাসায় আসলো,এক তলা বাড়ি,পাশে একটা পুকুর,আশেপাশেও বাড়ি আছে
কিছু টিনের কিছু ইটের
আহানা আর রুপা ভেতরে ঢুকতেই মানুষের ঠেলাঠেলিতে ওদের দুজনের দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম
বাসাটার পিছনে একটা উঠান,সবাই বাসার ঠেলাঠেলি সহ্য না করতে পেরে উঠানটায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে
রুপা গাল ভেটকিয়ে একটা কাছের দিকে তাকিয়ে আছে,পুরা গ্রাম মনে হয় তাই না?
.
তাও তো কি শান্তি এখানে,শহরের কোনো ছাপ নেই,আমার তো বেশ লাগতেসে
.
মিরাকে একটা রুমে পার্লারের লোক সাজাচ্ছে
.
আহানার গলা শুকিয়ে গেছে,বাসার ভেতরে এসে ডাইনিং টেবিল থেকে পানি নিতে গিয়ে চমকে গেলো শান্তকে দেখে,সে সোফায় বসে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে বিরক্তি নিয়ে
.
আহানা চোখ বড় করে ভাবতে লাগলো ও এখানে কি করে,পাশেই এলিনা বসে আছে,পায়ের উপর পা তুলে,ফোন দেখতেসে,কারোর দিকে তাকাচ্ছে না সে
.
আহানা পানি খেয়ে এক দৌড়ে পালালো
বর এসেছে বলে সবাই চিৎকার দিতেছে
আহানা আর রুপা উঁকি দিয়ে বরকে দেখতে গেছে
শান্ত স্টেজের সামনে একটা চেয়ারে বসে আছে,এত বরিং লাগতেসে আজ,উফ!!
এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে শান্তর চোখে পড়ে গেলো আহানাকে
আহানা রুপা আর একটা মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলতেসে
.
শান্ত আহানাকে দেখে চেয়ার থেকে উঠে এগিয়ে গেলো,যা ভেবেছিলাম তাই!আহানার কান খালি
.
ওটা আহানারই দুল তাহলে
.
খুব জোরে গান বাজতেসে
.
আহানা রুপার সাথে এক কোণে বসে আছে চুপচাপ,মনে হয় এখানে কেউ ওদের চেনে না,সব মিরার রিলেটিভ
একটা মেয়ে ট্রেতে করে পিঠা,শরবত দিয়ে গেলো রুপা আর আহানার সামনে
আহানা হাতে নিয়ে দেখতে লাগলো এটা কি পিঠা,পিঠা জিনিস সম্পর্কে ওর ধারনা কম,সারাজীবন ভাত পেঁয়াজ,আলু আর কিছু তরকারি ছাড়াও যে কিছু খাবার থাকতে পারে তা আহানার অজানা
তো পিঠা দেখে এমন অবাক হওয়ারই কথা
.
কিরে এমন করে চেয়ে আছিস কেন?এটা ডিমের পিঠা
.
ওহ
আহানা মুখে দিয়ে বেশ মজা পেলো,এরকম পিঠা থাকলে তো বাসায় আর বিসকিট খেতে হয় না তার
.
শুন আমার না এখন কিছু খেতে মন চাচ্ছে না,আমি ৫টা পিঠা ব্যাগে করে নিয়ে যাই?
.
ওমা তের খিধা নাই কেন?আচ্ছে নে
আহানা তার ব্যাগে ৫টা পিঠা নিয়ে নিলো,খুশি লাগতেসে,কাল সকালে ভাত খাব না,পিঠা খেয়ে ভার্সিটিতে যাব,ভাত বেঁচে যাবে?
.,
বৌকে সাজানো হচ্ছে,রুপা আর আহানা বসে বসে সেটা দেখতেসে
.
আহানা?তুমি একটু সাজো ও নাই কেন,এরকম খালি খালি এসেছো কেন?কেমন লাগতেসে তোমাকে!
.
না আসলে এমনিতেই ভালো লাগে না
.
মিরার খোঁপায় ৪টা গোলাপ ফুল লাগতো,আছে ২টা
মিরাদের বাসা এমন একটা জায়গায় যেখান থেকে মেইন রোড অনেক দূরে,এখন ফুলের জন্য কাকে পাঠাবো সেটা নিয়ে গোলমাল শুরু হয়ে গেছে
.
আহানার মনে পড়লো রিকসা দিয়ে আসার সময় তারা একটা গোলাপগ্রাম দেখেছিল,বেশি দূরে না সেটা
মিরার যত কাজিন ভাই ছিল তারা নানা কাজে বিজি,একজন তো বলেই দিলো কি দরকার ফুল দিয়ে,এত সং সেজে লাভ কি,ফুল দিলেও বিয়ে হবে না দিলেও বিয়ে হবে
.
এদিকে স্টেজ সাজানো হয়েছে রজনীগন্ধা আর গাঁদা দিয়ে,গোলাপ দিয়ে সাজালে সেখান থেকে থেকে আনা যেতো
শেষে আহানা আর রুপা ঠিক করলো ঐ গোলাপগ্রামে যাবে কারন মিরা ততক্ষণে কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে,তার কথা হলো তার বিয়ে perfectly end হবে,কোনো কমতি যদি তার বিয়েতে হয়ে যায় তা সারাজীবন মনে রেখে ফুঁফিয়ে কাঁদবে,এটা সে কিছুতেই সহ্য করতে পারবে না
আহানা আর রুপা রওনা হলো,হাঁটতেসে চিকন একটা রোড দিয়ে,দুপাশে ক্ষেত,ধানের ক্ষেত
হঠাৎ সামনে নওশাদ এসে দাঁড়ালো
আহানা চমকে তাকিয়ে আছে,কারন নওশাদ এখানে কেন সেটায় ভাবতেসে সে,ওদিকে রুপা মুচকি মুচকি হাসতেসে,ও আচ্ছা তার মানে শয়তান শান্তর চ্যালা নওশাদ হলো রুপার বফ,এবার বুঝলাম আমি
নওশাদ আহানাকে বললো দাঁড়াতে ওরা একটু ঘুরে আসবে বাম পাশের নির্জন রোডটা থেকে
রুপা আহানার হাতে গোলাপ কিনার টাকা দিয়ে চলে গেলো
আহানা ঠিক আছে বলে দাঁড়িয়ে আছে,পরে দেখলো আর কয়েক পা হাঁটলেই গোলাপ গ্রাম,দূর থেকে লাল রঙ চোখে আসতেসে
আহানা হেঁটে সেখানে গিয়ে দাঁড়ালো
হঠাৎ ওর নজরে পড়লো শান্ত আর এলিনাকে,এলিনা একটা ছোট বাচ্চা মেয়েকে দিয়ে পিক তুলাচ্ছে আর শান্ত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গোলাপ গাছ দেখতেসে
.
আহানা চুপচাপ ভেতরে ঢুকে ক্ষেতের মালিককে টাকা দিয়ে দুটো ফুল নিলো,উনি আরেকটা ফ্রি দিয়ে দিলেন
আহানা খুশি হয়ে সেটা কানে গুজে নিলো
.
পেছন থেকে শান্ত বলে উঠলো তোমার কানের দুল কই?
.
আহানা চোখ বড় করে পেছনে তাকালো
.
আমার কানের দুলের পেছনে লাগছেন কেন,বলসি না হারায় গেছে
.
তো বাসায় আর কানের দুল নেই?
.
আপনার কি?আমার ইচ্ছা আমি কানে কিছু লাগাবো না
.
তাহলে ফুল লাগালে কেন
.
আহানা রেগে আর কিছু না বলেই হাঁটা ধরলো
ক্ষেতের মাঝখান দিয়ে সরু উঁচু পথ,সেটাতে আহানা হেঁটে চলে যাচ্ছে
রেগে শান্তকে বকতেসে সে
হঠাৎ পড়ে যাওয়া ধরতেই শান্ত হাত ধরে ফেললো ওর
.
আপনি আমাকে ফলো করতেসিলেন?
.
শুনো এটা তোমার বাপের রাস্তা না,আমি যেখান দিয়ে ইচ্ছা সেখান দিয়ে হাঁটবো,তোমার কি,আর তোমাকে সেভ করায় এ কথা বলতেসো? ফাইন!
শান্ত আহানার হাত ছেড়ে দিলো,আহানা সাথেসাথে দুম করে পড়ে গেলো নিচে
.
হুম এই জায়গা তোমার জন্য ঠিক আছে একদম
.
শান্ত ভেংচি দিয়ে চলে গেলো
আহানা হাত পা মুছে উঠে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে আছে শান্তর দিকে
বেয়াদব কোথাকার,অসভ্য?
.
শান্ত আগে আগে হেঁটে যাচ্ছে সরু পথটা ধরে
.
আহানা আস্তে আস্তে পিছন পিছন আসতেসে
শান্ত পিছন ফিরে আহানার দিকে তাকালো,আহানা মুখ বাঁকিয়ে আরেকদিকে ফিরে গেলো
শান্ত দাঁড়িয়ে পড়ে হাতের কব্জি কচলানো শুরু করে দিসে
.
হুহ,আমি ভয় পাই নাকি
আহানা গোলাপে এক চাপ দিলো রাগে,হাতে যে কাঁটাযুক্ত গোলাপ আছে তা সে জানত না
চাপ দেওয়ার ফলে হাতে কাঁটা ঢুকে গেলো পুরোটা
.
উফ!
হাতের দিকে তাকিয়ে আহানার কলিজা মনে হয় বেরিয়েই যাবে,এত বড় কাঁটা ঢুকে গেছে তার উপর শান্ত কব্জি কচলাচ্ছে
আহানা কাঁটা সমেত হাতটা লুকিয়ে হাঁটা ধরলো আবার
চলবে♥
(বাসায় মেহমান আসছে তাই দিতে দেরি হলো?)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে