প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_১৯

0
2604

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_১৯
#Writer_Afnan_Lara
?
শান্ত চোখ বন্ধ করে আছে
হাত মুঠো করে নিজেকে কনট্রোল করে নিলো
আহানা বাসায় এসে মুখ গোমড়া করে বসে আছে,আজ ভার্সিটি প্রাইভেট কোনোটাতেই যাব না,মেজাজ বিগড়ে গেছে পুরা
শান্ত সেই কখন থেকে ভার্সিটির গেটের দিকে চেয়ে বসে আছে
.
রুপা আমাকে বললো আহানা আজ আসবে না
.
নওশাদের কথা শুনে শান্ত চুপ করে জ্যাকেটটা হাত থেকে পরে নিয়ে কৃষ্ণচূড়া ফুলের গাছটার নিচে এসে বসলো
বিকাল ৪টা পর্যন্ত বসে ছিল ভাবলো আহানা হয়ত টিউশনি করাতে যাবে এখান দিয়ে,কিন্তু না সে আজ টিউশনি করাতেও আসেনি
শান্তর রাগ খুব বেড়ে গেলো বাসায় ফিরে এসে দরজা বন্ধ করে বসে আছে চুপচাপ
আহানা জানালার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে শুয়ে আছে,কাল রাতে যে পানি আর বিসকুট খেয়েছিল এখন পর্যন্ত কিছুই খায়নি সে
আকাশ দেখে যাচ্ছে চুপচাপ
মীম রান্না করে খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে আবার ঘুম থেকে উঠে কাজে চলে গেছে
আহানা খেয়েছে কি খায় নাই সেদিকে তার বিন্দু মাত্র নজর নেই
রাত ৮টা বাজে,আহানাকে এবার খিধা ভালো করে ধরলো উঠে গিয়ে পানি আর বিসকিট একটা নিয়ে এসে বসলো খাটের উপর
বাইরে থেমে থেমে মেঘ গর্জন দিচ্ছে,যে কোনো সময় বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে
শান্ত ছাদে এসে বসে আছে
আহানাও উঠানে দাঁড়িয়ে নির্ভয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে
বৃষ্টি ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে,আহানা চোখ বন্ধ করে ভিজতেসে
শান্ত ছাদে বসে নিচের দিকে তাকিয়ে ভিজতেসে,মনে হচ্ছে সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যাচ্ছে
বৃষ্টির পানি আহানার মুখ ছুঁইয়ে নিচে পড়ছে আর শান্ত নিচের দিকে মুখ করে থাকায় সোজা তার পিঠের উপর পড়তেসে
♥”খুব অদূরে রাত্রি ভোরে
ইচ্ছে গুলো হচ্ছে নিখোঁজ”
“জানাশোনা তোর বায়না
আনমনা হই আমি অবুঝ♥
একটু নয় অনেক বেশি!না বাসি না,আমি আহানাকে ঘৃনা করি ঘৃনা!!
শান্ত পা দিয়ে ফুলের টব একটা ফেলে দিলো নিচে থাকা একটা ডোবায়
আহানার গা কেঁপে উঠলো হঠাৎ চোখ মেলতেই দেখলো আকাশে তার কাঁটার মত কি যেন,বজ্রপাত,এগুলো সে ছোটবেলায় দেখলে ভয় পেতো অনেক,আবার নিজে নিজে সাহসের সাথে এসবের দিকে তাকিয়ে থেকে নিজেকে শক্ত করতো
শরীর কাঁপতেসে হঠাৎ করে আর থাকা যাবে না এখানে
আহানা তার রুমে ফিরে গেলো
শান্ত চুলের থেকে পানি ঝাড়তে ঝাড়তে নিচে নেমে আসলো
আহানা রুমে ফিরে গামছা দিয়ে গা মুছতেসে,মুছা শেষ করে শুয়ে পড়লো
.
সকাল ৬টা বাজে!শান্ত ১০০বার লিফটের দিকে তাকিয়েছে,২০০বার রোডের দিকে তাকিয়েছে,কিন্তু আহানা আসতেসে না,কি হয়েছে ওর!
১০টার দিকে রেডি হয়ে ভার্সিটিতে আসলো শান্ত
নাহহ আজও সে আসেনি,কি হয়েছে যে ভার্সিটিতেও আসতেসে না
শান্ত বাইক নিয়ে বের হতে যেতেই এলিনা এসে পথ আটকালো
.
বেব চলো আজ ঘুরতে যাই দূরে কোথাও
.
নাহ,আমার জরুরি একটা কাজ আছে,বাই!
.
শান্ত বাইক স্টার্ট দিয়ে সোজা আহানার বাসার সামনে আসলো,জানালা বন্ধ বাসার
শান্ত দরজার সামনে এসে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে সাহস করে নক করতে যেতেই দরজাটা খুলে গেলো,দরজা আগে থেকেই খোলা ছিল,জাস্ট দরজা একটু লাগানো ছিল,ফাঁক ছিল না বলে বাইরে থেকে বোঝা দায় যে এটা বন্ধ নাকি খোলা
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
শান্ত অবাক হয়ে এক পা এক পা করে ভিতরে ঢুকলো
রুমটা অন্ধকার হয়ে আছে,হালকা আলো তা দিয়ে বিছানা স্পষ্ট দেখা যায়
কোণার বিছানাটায় আহানা চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে,বাকি বিছানাগুলো খালি,বাসায় তো আহানা ছাড়া আর কেউ নেই মনে হয়
শান্ত একটু এগিয়ে এসে আহানার বিছানার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো
আহানার শুকনো মুখটা দেখা যাচ্ছে বাকিটা চাদরে ঢাকা
শরীর খারাপ নাকি ওর,বেলা ১২টা বেজে আসছে এখনও শুয়ে আছে
শান্ত হাতটা নিয়ে আহানার কপালে রাখতেই চমকে উঠলো,এত জ্বর!!
শান্ত তাড়াতাড়ি করে রান্নাঘরে গিয়ে একটা মগে করে পানি নিয়ে এনে আহানার পাশে বসলো,কথা হলো কি দিয়ে মাথায় পোটি দিবে
আহানার মাথার পাশে ওর গায়ের ওড়না রাখা
শান্ত সেটা নিয়ে ভিজিয়ে আহানার কপালের উপর রাখলো তারপর দেরি না করে বাসার বাইরে গিয়ে নওশাদকে ফোন দিয়ে বললো রুপাকে নিয়ে জলদি আহানার বাসায় আসতে
দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে আহানা ভাবলো তার রুমমেট মীম এসেছে,সে এসময়ে আসে,তাই আহানা দরজা আটকায়নি
একটু কেশে আহানা বললো
মীম আপু এসেছো?আমার জন্য সহ একটু রাঁধবে আজকে?
আমার শরীর ভালো না,রাঁধতে পারিনি,কাল থকে ভাত খাইনি,আমি ভাত দিয়ে নুন দিয়ে খেতে পারবো,এক বাটি ভাত দিলেই হবে
শান্ত রোবটের মত দাঁড়িয়ে আহানার কথা শুনতেসে,চোখ দিয়ে এক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো তার
শান্ত গিয়ে আহানার বেডের পাশের আলমারিটা খুললো,তেমন আহামরি কিছু নেই,একটা জামা ভাঁজ করা আছে,পুরনো,মনে হয় বাসায় পরার জামা এটা,আর নিচের তাকে ২টা বোয়াম,তাও খালি পড়ে আছে
বাকিদের আলমারি লক করা
কিচেনে গিয়ে দেখলো সেখানে কিছুই নেই বাড়তি খাবার বলতে
শান্তর বুকটা ফেটে যাচ্ছে এসব দেখে

শান্ত এসে ওড়না আবার ভিজিয়ে আহানার মাথায় দিলো,বাসার দরজা লাগিয়ে বের হয়ে গেলো,পথেই রুপা আর নওশাদের সাথে দেখা হলো ওর
.
রুপা! আহানার অনেক জ্বর,তুমি গিয়ে ওকে একটু দেখো আমি ঔষুধ আনতেসি
রুপা চলে গেলো আহানার বাসার দিকে
নওশাদ শান্তর সাথে গেলো ঔষুধ আনতে
.
রুপা আহানার মাথায় পোটি দিতে থাকলো,ইস গায়ে এত জ্বর একবার ফোন করেও বলে নাই,আমার ফোন ও ধরে নাই
.
শান্ত ঔষুধ কিনে একটা রেস্টুরেন্টে গেলো
.
কিরে কি করবি?
.
আরে ওর বাসায় কোনো খাবার নাই,কিছু খেয়ে তো ঔষধ খাবে
.
বাইরের খাবার খেয়ে পাক্কা আরও অসুস্থ হয়ে যাবে,তুই এক কাজ কর,বাজার কর,রুপা রান্না করবে
.
হুম ভালো বুদ্ধি
শান্ত তরকারি, চাল আর মাছ কিনে আহানার বাসায় ফিরে গেলো নওশাদকে নিয়ে
রুপা চোখ বড় করে চেয়ে বললো আমি তো রান্না করতে পারি না!
নওশাদ ব্রু কুঁচকে বললো তুমি না বিরিয়ানি রাঁধতে পারো?
.
আরেহহ সেটা তো এমনি বলছিলাম?সত্যি সত্যি বাপি আমাকে কখনও কিচেনে যেতে দেয়নি
.
ওকে চল নওশাদ আমি আর তুই রাঁধি
.
আর ইউ ম্যাড শান্ত!!রুপা মেয়ে হয়ে রান্না পারে না আর আমি আর তুই ছেলে হয়ে পারবো?
.
একটু মগজ লাগায় কাজ কর,ইউটিউব থাকলে রানী ভিক্টোরিয়ার নাতনিও রান্না পারবে
.
শান্ত রান্নাঘরে গিয়ে হাতে আলু পেঁয়াজ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
.
শান্ত বল কি লিখে সার্চ করবো?
.
হাউ টু মেক তরকারি
.
শুন,কতগুলো ভিডিও এসেছে কিন্তু কথা হলো ইউটিউব চ্যানেলের কিছু আপু ভাইয়ারা তরকারিতেও দই ইউস করে,দই ছাড়া কিছু বুঝে না,দই পাবো কই?
.
নওশাদ!মাথা খারাপ করিস না
.
হ্যাঁ আমি বলতেসি প্রথমে তেল দিয়ে পেঁয়াজ দে
.
এক মিনিট,পেঁয়াজ কাটে কেমনে?
.
ওহ তাই তো দাঁড়া সার্চ করতেসি
.
একটা থাবড় দিমু,ইউটিউবে পেঁয়াজ কাটা দেখাবে?
.
আরে দেখাবে,আমি একবার দেখসিলাম দরজা কিভাবে খোলে?
.
দেখ এমন করে কাটে
.
ওকে!
শান্ত ছুরি নিয়ে পেঁয়াজ কাটতেসে আর কেঁদে যাচ্ছে
নওশাদ দাঁত কেলিয়ে চেয়ে আছে
.
আম্মু!!?ভাগ্যিস মাছ কাটিয়ে আনছিলাম বাজার থেকে
.
ভাই কি দরকার তোর আহানার জন্য এত কষ্ট করার!
.
আমি বলেছিলাম তোকে রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার আনবো,তুই শুনিস নিই আমার কথা,তোর সো কলড গফ নাকি রান্না পারবে,এখন হলো তো!!
.
আমি কি জানি রুপা রান্না পারে না
.
ডান,পেঁয়াজ কাটা শেষ
.
ওকে এবার পাতিলে তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি দে,তারপর রসুন,আদা বাটা দে
.
এক মিনিট রসুন আদা বাটা কই পাবো?
.
আরে আগুন কমা,তেল পুড়ে যাবে,আগে বলবি তো বাটা মসলা নাই,এক কাজ কর গোটা দিয়ে দে,বাটা বাটি তো পারি না আমরা
.
ওকে
.
পাঁচমেশালি করে অবশেষে ইলিশ মাছ দিয়ে বেগুন আলু দিয়ে তরকারি রাঁধলো দ্যা গ্রেট শাহরিয়ার শান্ত আর সহযোগিতায় ছিলেন নওশাদ রহমান
.
রুপা আহানাকে উঠিয়ে বসালো
আহানা রুপাকে দেখে চমকে বললো তুই?এখানে?আমি ভাবলাম মীম আপু
.
তোর জ্বর হয়েছে একবারও বলিস নি কেন?
.
তুই বাসায় আসলি কি করে আমি তো দরজা লাগিয়েছিলাম,ওহ নাহ মনে হয় লাগাই নিই,মীম আপু আসার কথা ছিল তাই দরজা লাগাই নি
.
আহানা টেবিলের উপর তাকিয়ে দেখলো একবাটিতে তরকারি আরেক বাটিতে ভাত
.
এগুলা?
.
রুপাকে শান্ত বলেছে যাতে ওর নাম না নেয়
.
আমি রেঁধেছি,তোর তো ঔষধ খেতে হবে তাই রান্না করেছি
.
এমন সাদা সাদা কেন?
.
শান্ত নওশাদের মাথায় ঘুষি দিয়ে বললো কিরে সাদা কেন?
.
তোরে কইসি হলুদ দিতে তুই দেস নাই?
.
শান্ত আর নওশাদ রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে ফিসফিস করে কথা বলতেসে
.
কখন বলেছিস?
.
রান্না শেষ হওয়ার পর নামানোর আগেই তো বলসি হলুদ দে
.
আহানা ভাত নিয়ে তরকারি এক চামচ নিলো,তারপর মাখিয়ে এক লোকমা মুখে দিতেই মাথা ঘুরিয়ে বমি আসতেসে তার
এত বিশ্রি খাবার,হলুদ নাই,নুন বেশি,ঝাল তো নাই একদম তার ওপর বাটা মসলার জায়গায় গোটা দিসে সব
আহানা বিছানা থেকে নেমে বাথরুমে গেলো বমি করতে
.
শান্ত রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে চোরের মত তাকিয়ে আছে সেদিকে
কি হলো?বমি করতেসে কেন?
.
রুপা বুঝতেসে না,তাই সে এক চামচ নিয়ে মুখে দিয়ে চোখ মুখ খিঁচিয়ে বললো এই অখাদ্য কে রেঁধেছে?
ওয়াক,রোগীকে এটা খাইয়ে মারতে চাও তোমরা?
আহানা কেঁপে কেঁপে বাথরুম থেকে বেরিয়ে বাইরে পা রাখতেই পড়ে যেতে নিলো শান্ত সাথে সাথে ধরে ফেললো ওকে
আহানা মুখ তুলে তাকিয়ে দেখলো শান্ত ওকে ধরে আছে
তাড়াতাড়ি হাত ছাড়িয়ে দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো সে
.
আপনি?আমার বাসায়?
.
ইয়ে আসলে সরি
.
আহানা ব্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে গিয়ে বিছানায় বসলো
.
তোর আইডিয়াতে আমি বাসায় রান্না করার জন্য হ্যাঁ বলেছিলাম,দেখলি তো এখন!
এখন যা বাইরের একটা ভালো মানের রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার প্যাক করে আন
.
শান্ত একটা চেয়ার টেনে একটু দূরে গিয়ে বসলো
.
আহানা রান্না করা খাবার গুলোর দিকে তাকিয়ে আছে
এক গ্লাস পানি নিয়ে খেয়ে বললো এটা?তুই রেঁধেছিস রুপা?
.
না?আমি কি রান্না পারি নাকি,এটা শান্ত ভাইয়া রাঁধছে
.
শান্ত এমন অখাদ্য রেঁধেছে শুনে আহানা ফিক করে হেসে দিলো,শান্তর মুখেও হাসি ফুটলো আহানার হাসি দেখে,রুপাও হেসে দিলো
.
এতসবের দরকার ছিল না
আহানা ভাত আলাদা করে নিয়ে পানি ঢেলে খেয়ে নিলো ২মিনিটেই
রুপা আর শান্ত অবাক হয়ে চেয়ে আছে
.
নওশাদ খাবার আনতে গেছে,তুই শুধু ভাত খেতে গেলি কেন?
.
সমস্যা নেই
.
আহানা ঔষুধ একটা নিয়ে পানি দিয়ে খেলো
নওশাদ খাবার নিয়ে এসে গেছে
আহানা বললো সবাইকে খেয়ে নিতে
রুপা আর নওশাদ রাক্ষসের মত খাচ্ছে,মনে হয় কয়েকবছর ধরে খাবার খায়নি,শান্ত আহানার মত করে খালি ভাতে পানি দিয়ে লুকিয়ে খেলো
.
কিরে চিকেন নেস না কেন?তুই তো চিকেন ছাড়া খেতে পারিস না
.
না খাওয়া হয়ে গেছে আমার
.
আহানা ঘুমিয়ে পড়েছে,জেগে থাকার চেষ্টা করেছে এতক্ষণ তাও ঘুম এসে গেলো চোখে
.
বিকাল হয়ে গেছে,শান্ত বললো আরেকটু থাকবে কিন্তু নওশাদ টেনে নিয়ে গেলো ওকে
রুপা বললো আহানা ঘুম থেকে উঠলে তারপর সে যাবে
আহানা ৬টটার দিকে উঠলো,রুপা ওকে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বাই বলে সেও চলে গেলো বাসা থেকে
আহানা দরজা লাগিয়ে রান্নাঘরে আসলো,কেয়ামত বানিয়ে রাখছে রান্নাঘরকে,আল্লাহ!!
অবশিষ্ট বেগুন,আলু,চাল কতগুলো রয়ে গেছে
শান্ত ইচ্ছে করে বেশি বেশি কিনেছে যেন আহানা পরেও রান্না করে খেতে পারে
আহানা তাকের উপর দেখলো প্যাক করা খাবার রেস্টুরেন্টের
শান্ত আলাদা এক প্যাকেট রেখে গেছে
উপরে ছিল একটা চিঠি
তাতে লেখা ছিল-
এগুলা খেয়ে ঔষুধ খাবা
ইতি রুপা
.
আমি জানি এটা শান্ত লিখেছে,নিজের নাম লিখে নাই কারন ভেবেছে নিজের নাম লিখলে হয়ত আমি খাব না
আহানা সব গুছিয়ে খাবারের প্যাকেটটা নিয়ে টেবিলে রেখে বিছানায় এসে বসলো
.
সাড়ে ৮টা বাজে,আহানা জানালায় মাথা ঠেকিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে,২টা দিন টিউশনি করাতে পারিনি,কি জানি চাকরি থাকবে কি থাকবে না
ফোন বাজতেসে,আহানা হাতে নিয়ে দেখলো unknown নাম্বার,এটা আবার কার নাম্বার?
রিসিভ করে হ্যালো বললো সে
ওপাশ থেকে কোনো আওয়াজ আসতেসে না শুধু হালকা করে শ্বাস নিশ্বাসের আওয়াজ ভেসে আসতেসে
.
কে?হ্যালো?
.
তোমার শরীর কেমন এখন?
.
আপনি কে?

শশশশশাননননন্ত
.
ওহ,আপনি আমার নাম্বার পেলেন কই?
.
রুপার কাছ থেকে নিয়েছি,তোমার শরীর কেমন এখন সেটা বলো,তোমার সাথে ফালতু কথা বলার সময় নেই আমার
.
আহানা রেগে বললো ভালো আছি,মরি নাই
শান্ত ও রেগে গেলো মরার কথা শুনে
কেটে দিলো লাইন
আহানা চোখ বড় করে ফোন রেখে দিয়ে আবারও বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকলো
এই ছেলেটা সুন্দর করে কথাই বলতে জানে না,বেয়াদব কোথাকার!
খাবার খেয়ে ঔষুধের কথাই ভুলে গেলো আহানা,শুয়ে পড়লো সে
রাজ্যের ঘুম চোখে এসে গেসে তার
হঠাৎ ফোনটা আবার বেজে উঠলো,আহানা ঘুম ঘুম চোখে রিসিভ করলো
.
হ্যালো!কে?
.
আমি
.
আমি কে?

শান্ত
.
কি হয়েছে?নাম্বার পেয়ে মনে হয় হাতে আকাশের চাঁদ পেয়েছেন,আমাকে এত ডিস্টার্ব করেন কেন,একদম ব্লক মেরে দিব
.
শুনো তোমাকে ডিস্টার্ব করার ইচ্ছা নাই আমার,জাস্ট জানতে কল করেছিলাম ঔষুধ খেয়েছো কিনা
.
ইস ভুলে গেসিলাম,এইতো খাচ্ছি
.
কিহ!ভুলে গেসো মানে?ঔষুধের কথাও মানুষ ভুলে যায়?তুমি আসলেই একটা বেয়াদব মেয়ে
.
এই ঠিক করে কথা বলেন,আমি ঔষুধ না খেলে আপনার কি?
.
কাল ভার্সিটিতে আসিও,বুঝাবো আমার কি!
শান্ত লাইন কেটে দিলো কথাটা বলে
.
কচু করবে আমার?
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে