#প্রেমের_নাম_বেদনা?
#পর্বঃ১৩
#Arshi_Ayat
আজ সকালে আরিয়ান তাড়াতাড়িই উঠেছে ঘুম থেকে।উঠে ফ্রেশও হয় নি মায়ের কাছে গিয়ে জিগ্যেস করলো
“মা ওই বাড়ি যাবো কখন?”
“দুপুরের দিকে।”
আরিয়ান হতাশ গলায় ‘ও’বলে চলে এলো রুমে।এসে রিমন আর রাদিফকে উঠালো।রাদিফ চোখ ডলতে ডলতে বলল
“শান্তিতে একটু ঘুমাইতেও দিবি না নাকি?”
“এইদিকে আমি অর্নিরে দেখতে না পাইয়া অশান্তিতে আছি আর তোরা আরামে ঘুমাবি!!এটা হবে না।তাড়াতাড়ি ওঠ।”
“আরে এতো উতলা হইছিস কেন?দুপুরেই তো যাইতাছি ওই বাড়ি।(রিমন)
” এখনও তো অনেক সময়।”
“আচ্ছা একটা কাজ কর ওর সাথে একটু কথা বল তাইলেই তো হয়।”(রাদিফ)
“হুম দাড়া কল দেই।”
“আবার দাড়ামু কেন?আমরা ঘুমাইলাম তোরা কথা বল।”
আরিয়ান অর্নিকে কল দিলো।একবার রিং হওয়ার পরই কল রিসিভ হলো।
“আরে আজকে সূর্য কোনদিকে উঠছে!!তুই আজকে এতো তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠলি কেমনে?”
“আরে একজন রে এমন ভাবে মিস করছি যে আর ঘুমাইতে পারি নাই।”
“ওহ!!এই খবর।তো কাকে মিস করলি এতো গভীর ভাবে?”
“আছে একজন পরে বলবো তোকে।”
“এখন বল ওইখানে কি অবস্থা?নাস্তা হইছে তোর?”
“হুম খাওয়া শেষ আমার আর এদিকে ভালোই চলছে।আচ্ছা রাখি আরিশা আপু ডাকে।”
এটা বলে অর্নি ফোন রেখে আরিশার রুমে গেলো।আর আরিয়ান মনে মনে বলল ‘ধূর!!এখনি আরিশা আপুর ডাকা লাগলো!!”
অর্নি কথা বলে নিজের রুমে আসতেই নেহাল কল দিলো।
“হ্যা প্রিয়তম বলুন।আপনার কলের অপেক্ষাই করছিলাম।’
” তাই নাকি?তাহলে অপেক্ষা না করে প্রিয়তমা কল দিলেই পারতো।”
“প্রিয়তমা ভেবেছিলো প্রিয়তম’র এখনো ঘুম ভাঙেনি তাই কল দেয় নি।”
“প্রিয়তমার উত্তর শুনে কালকে সারা রাত ঘুমাইতে ই পারি নাই।”
“আহারে আমার প্রিয়তম চিন্তা করো না আমি আজ বিকেলেই রওনা হবো আর কাল ভার্সিটিতে দেখা হবে।”
“তবুও আরো একদিন দেখা হবে না।”
“আহারে কি কষ্ট!!”
“হুম গো!তোমার কি কষ্ট লাগে না?”
“লাগলেও বা কি করবো বলো!!আচ্ছা এখন বলো কি করো?”
“নাস্তা খেয়ে রুমে আসছি মাত্র।তুমি?”
“আমিও বসেই আছি।দুপুরের দিকে আম্মুরা আসবে আপুকে নিতে।”
“ওহ!!তোমার সাথে আর কেউ আসছে?”
“হুম বোনেরা আসছে।
” আচ্ছা সাবধানে থেকো।এখন রাখি ভার্সিটির জন্য বের হতে হবে।”
“তুমিও সাবধানে থেকো।আল্লাহ হাফেজ।”
অর্নি আর নেহাল কিছুক্ষণ কথা বলে ফোন রেখে দিলো।
দুপুর ১.০০ টা..
এই সবে মাত্র আরিয়ান রা এই বাড়ি এসেছে।আরিয়ান বাড়িতে ঢুকেই দুচোখ দিয়ে এদিক সেদিক অর্নিকে খুজছে।কিন্তু পেলো না।হঠাৎ মাথায় একটা বুদ্ধি এলো অর্নিকে খুজে পাওয়ার।আরিয়ান নিজের মায়ের কাছে গিয়ে বলল
“আম্মু আরিশা আপুর সাথে দেখা করে আসি চলো।”
“আচ্ছা চল।”
ওই বাড়ির দু একজনকে জিগ্যেস করে মা ছেলে দুজনই আরিশার রুমে গেলো।অর্নির মা আরিশার শাশুড়ির সাথে কথা বলতে ব্যাস্ত।
আরিয়ান আরিশার রুমে গিয়ে দেখলো অর্নি ওই রুমেই আছে আরিশাকে সাজাচ্ছে।আরিয়ান মনে মনে বলল ‘যাক পাওয়া গেলো অবশেষে।’তারপর বলল
“আরিশা আপু তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।”
“থ্যাংকিউ ভাই। (আরিশা)
” আর অর্নিকে লাগছে পেত্নী।”(আরিয়ান)
আরিয়ানের কথা শুনে সবাই হেসে দিলো কিন্তু অর্নি মুখ গোমড়া করে ওখান থেকে উঠে চলে গেলো।আরিয়ানও মুচকি হেসে পিছু পিছু গেলো।অর্নি সোজা ছাদে গিয়ে পিছন ফিরে দাড়িয়ে রইলো।আরিয়ান পাশে এসে দাড়িয়ে হাসতে হাসতে বলল
“তুই কি রাগ করেছিস?”
“…..”
“আচ্ছা সরি কিন্তু ওইখানে তোকেই সব থেকে সুন্দর লাগছিলো কিন্তু সবাই তোকে হিংসা করবে তাই বলি নি।”
অর্নি মুখ গোমড়া করেই বলল
“হুম কচু সুন্দর লাগছে।”
“সত্যিই সুন্দর লাগছে।”
এবার অর্নি ভাব মেরে বলল
“হুম আমি জানি তোকে বলতে হবে না।কারণ আরো একজন বলেছে তো।”
“কিহ!!কে বলেছে?”
“নেহাল।”
আরিয়ান ভ্রু কুচকে বলল
“নেহাল তোকে দেখলো কিভাবে?”
“আমি ছবি দিয়েছি।”
“কেনো?”
অর্নি হেসে বলল
“আই লাভ হিম।”
আরিয়ান উত্তেজিত হয়ে বলল
“কি বলছিস?”
“সত্যি কালকে আমাকে এখানে এসে প্রপোজ করে গেছে।আর একটা গোলাপ….”
আর কিছু বলার আগেই অর্নির ফোন বেজে উঠলো।অর্নি কথা বলা বন্ধ করে স্ক্রিনে দেখলো নেহাল কল দিছে।অর্নি ফোন রিসিভ করে সাইডে চলে গেলো।
আরিয়ানের চোখে অজান্তেই জল চলে এলো।প্রায় দশমিনিট এভাবে দাড়িয়ে ছিলো।কিছুক্ষণ পর অর্নি এসে বলল
“কি রে এভাবেই দাড়িয়ে আছিস কেনো”
আরিয়ান কিছুই বলল না শুধু চোখের পানিগুলো লুকিয়ে ছাদ থেকে নেমে গেলো।
চলবে…
(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)