#প্রেমের_নাম_বেদনা?
#পর্বঃ১২
#Arshi_Ayat
অর্নি নেহালের সাথে কথা বলে আবার আরিশার পাশে বসতে না বসতেই আরিয়ান কল দিলো।
“হ্যালো,অর্নি একটু বাসা থেকে বের হবি?”
“কেনো?”
“আমরা তিনজন বাসার সামনে আছি।”
“তোরা এইখানে কি করিস?”
“এমনিতেই আসছি তুই একটু আয়।”
“আচ্ছা আসছি।”
অর্নি আরিশার কানে কানে ওদের কথা বলে নিচে গেলো।নিচে গিয়ে দেখে তিনজনই গেটের সামনে দাড়িয়ে আছে।অর্নি ভ্রু কুচকে জিগ্যেস করলো
“কি বলবি বল?”
“তোর না আসলে হতো না?”
“কেনো?আসলে কি সমস্যা?”
আরিয়ান কিছু বলার আগেই রাদিফ বলল
“ওই যে কালকে আবার ফিরতে হবে না তাই আর কি!!”
“ওহ!!সেটা তো বিকেলে।”
আর কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ভিতর থেকে শিউলী এসে বলল
“অর্নি আপু তোমাকে আরিশা আপু ডাকে।”
“আচ্ছা চলো।”
এটা বলে অর্নি চলে গেলো।আরিয়ানরা ও হতাশ হয়ে বাড়ির পথে চলল।
রাত ১০.০০ টা..
অর্নি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে।এই ঘরের জানালা দিয়ে রাস্তার বেশখানিকটা স্পষ্ট দেখা যায়।অর্নি ফোন বেজে উঠলো
“হ্যালো অর্নি তুমি কি একটু বাইরে আসতে পারবা?”
“এখন?কেনো?”
“একটু আসো না।তারপর বলছি।”
“আচ্ছা আসছি। ”
অর্নি ঘরের বাইরে গিয়ে দেখে এখনো বাড়িতে মানুষ কমে নি ও এই সুযোগে ও বাসার বাইরে এলো।এসেই দেখে জলজ্যান্ত নেহাল হাসি মুখ করে দাড়িয়ে আছে।অর্নি অবাক হয়ে বলল
“তুমি?এখানে?এতো রাতে?কিভাবে?”
নেহাল হাসতে হাসতে বলল
“সকালে রওনা দিয়েছি এখন এসে পৌছুলাম মাত্র।”
“কেনো?”
নেহাল একটা খাম বের করলো খামের সাথে একটা গোলাপ ও দিলো আর বলল
“এই খামটা তুমি সবাই ঘুমোলে লাইট বন্ধ করে মোম জ্বালিয়ে পড়বে।তাহলেই বুঝতে পারবে আমার এখানে আশার কারণ কি?আর এই খামটা পড়ে যা বুঝেছো তা কালকে আমাকে বলবে।”
এই বলেই নেহাল ঘুরে হাটা ধরলো।অর্নি পিছন থেকে বলল
“এখন কোথায় যাচ্ছো?”
“ফিরে যাচ্ছি।”
অর্নি আর কোনোকথা বলতে পারলো না তার আগেই নেহাল মিলিয়ে গেলো।অর্নি খাম আর ফুল এনে রাখলো ওর রুমে ওকে এই রুমে থাকতে দেওয়া হয়েছে।ওর ইচ্ছে করছে এখনি পড়তে চিঠিটা কিন্তু নেহালের কথা মনে পড়ায় নিজেকে অনেক কষ্টে সংবরণ করলো।
প্রায় একটা,,
টেবিলে মোম জ্বালিয়ে অর্নি খামটা খুললো।
অর্নি,,,
তোমার সাথে পরিচয়টা সাধারণ ভাবেই হয়েছিল।তুমিও ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে রিকশা পাচ্ছিলে না আমিও পাচ্ছিলাম না তারপর যাও একটা রিকশা পেলাম দুজনেই দৌড়ে গেলাম তাতে তুমি আমি দুজনেই ধাক্কা খেলাম অন্য সব মেয়েদের মতো তুমি বলো নি যে’চোখ কোথায় থাকে?দেখে হাটতে পারেন না?নাকি মেয়েদের দেখলেই ধাক্কা দিতে মন চায়।হ্যাঁ এগুলোর কিছুই তুমি বলো নি শুধু বলেছিলে ‘আমি ভিষণ ভাবে দুখিঃত!আপনার কি কোথাও লেগেছে?আসলে তাড়াহুড়োয় এমনটা হলো।আচ্ছা এই রিকশায় আপনিই চলে যান।তোমার কথাগুলো হয়তো অসাধারণ কোনো কথা ছিলো না খুব সিম্পল ছিলো কিন্তু কেনো যেনো তোমার সেই সিম্পল কথাগুলোই আমার হৃদয়হরণ করেছিলো।মানে লাভ এট ফার্স্ট সাইট যাকে বলে।আমি স্বভাবতই মেয়েদের সাথে কথা বলতাম না কিন্তু সেদিনের পর থেকে আমিই বেহায়ার মতো তোমার সাথে কথা বলতে যেতাম।জানো নিজের কাজে নিজেই অবাক হয়ে যেতাম।তারপর ধীরে ধীরে তোমার সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়ে গেলো।আমি জানি না তুমি আমাকে ভালোবাসো কি না?কিন্তু বুকে হাত রেখে বলতে পারি ভালোবাসি ❤ভালোবাসি❤ ❤ভালোবাসি।ভালোবাসবে?
বাসে বসে লিখেছিলাম তাই আর কিছু মাথায় আসছিলো না যা আসলো তাই লিখলাম।
ইতি নেহাল।
অর্নি চিঠিটা ভাজ করে রেখে মুচকি হাসলো।তারপর নেহালকে কল দিলো।
“হ্যালো।”
“হুম বলো।”
“আমি কি বলবো তুমি আগে বলো।”
“তুমি ফোন করেছো তাই তুমি আগে বলবে।”
“ভালোবাসি আমিও।”
“আমিতো উত্তরটা সকালে চেয়েছিলাম।এখনতো আমার রাতে ঘুম হবে না।তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করবে। কি করি বলতো?”
“কি আর করবে আপাতত ছবি দেখো।”
“ছবি আর আসল এক না।”
“কেনো ছবিতে কি নাক উপরে উঠে যায় আর চোখ নিচে নেমে যায়?”
নেহাল হাসতে হাসতে বলল
“না তেমন না আসলে সামনাসামনি তোমার চঞ্চলতা গুলো দেখা যায় কিন্তু ছবিতে তোমার স্থিরতা আমায় কষ্ট দেয়।”
“আহা!কবি কবি ভাব কবিতার অভাব।”
“তুমি যে আমার কবিতা
আমারও বাঁশীর রাগিণী।
আমারও স্বপন আধো জাগরণ,
চিরদিনই তুমি যে আমার।”
“বাহ!!আবার গানও গাইছো।”
“কি করবো বলো।বুকের ভেতরটা শান্তি শান্তি লাগছে।”
“আমারও।”
এদিকে…
আরিয়ান শুয়ে শুয়ে অর্নিকে নিয়ে ভাবছে আর মুচকি মুচকি হাসছে।রাদিফ গেমস খেলতে খেলতে আরিয়ানের মুখের দিকে তাকিয়ে বলে
“কি ভাবছিস?”
আরিয়ান উত্তর দেওয়ার আগে রিমন বলল
“আরে অর্নির কথা ভাবছে বুঝিস না কেনো?”
“ওহ!!তাইতো বন্ধুর মনেতো আবার লাড্ডু ফুটেছে।”
আরিয়ান হেসে বলল
“এই প্রথম কাউকে ভালোবাসলাম তাও যাকে দেখতে পারতাম না তাকে।এখান থেকে গিয়েই নেহালের সামনে ওকে প্রপোজ করবো।তারপর দেখবো বেচারা নেহালের কি হাল হয়।”
আরিয়ানের কথা শুনে রিমন রাদিফ দুজনেই বড় একটা ঢোক গিললো।
চলবে….
(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)