প্রেমের নাম বেদনা পর্বঃ০৬

0
1811

#প্রেমের_নাম_বেদনা?
#পর্বঃ০৬
#Arshi_Ayat

পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখলো নেহাল ছাতা ওদের মাথায় দিয়ে দাড়িয়ে আছে।অর্নি হাসতে হাসতে বলল

“নেহাল তুমিতো নিজেই ভিজে যাচ্ছো।”

“সমস্যা নেই তোমরা না ভিজলে ই হলো।”

এবার বর্ষা খোঁচা মেরে বলল

“আমরা নাকি অর্নি?”

“ছাতা তো তোমাদের দুজনের ওপর ই ধরেছি তাহলে শুধু অর্নি হবে কেনো?”

বর্ষা আবার কিছু বলতে যাবে তার আগেই অর্নি কথা ঘুরিয়ে বলল

“নেহাল ছাতাটা বন্ধ করে দাও।চলো তিনজনে ভিজতে ভিজতে যাই।”

“ওকে।”

তারপর তিনজনই বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে হাঁটা শুরু করলো।অর্নি বাসায় আসতেই ওর মা বলল

“ইশশ!তাড়াতাড়ি ওয়াশরুমে গিয়ে চেঞ্জ করে নে।”

“আচ্ছা মা যাচ্ছি।কিন্তু লাগেজ গোছাচ্ছো কেনো?”

“রাতে তোর সামিয়া খালারা সহ আমরা নারায়ণগঞ্জ যাবো।”

“কেনো?”

“ওই যে আরিয়ানের খালাতো বোনের বিয়ে। তাই দাওয়াত দিয়েছে।”

অর্নি খুশী হয়ে বলল

“ইয়াহু আরিশা আপুর বিয়ে।আচ্ছা গায়ে হলুদ কি কালকে?”

“হ্যাঁ। এখন যা বেশি কথা না বলে চেঞ্জ করে নে।”

“ওকে।”

অর্নি চেঞ্জ করে এসে শুয়ে পড়লো শরীরটা কেমন যেনো খারাপ লাগছে।হয়তো বৃষ্টিতে ভিজেছে বলে।

রাত ৮.০০ টা…

অর্নি জ্বরে কাঁপছে।তবুও ও যাবে।কিন্তু ওর মা ওকে নিতে নারাজ।কিন্তু অর্নির জেদের জন্য ওকে নিতে হলো।অর্নির মা আর আরিয়ানের মা একসাথে বসলো।অর্নি আর আরিয়ান সামনে বসলো।আরিয়ানের আব্বু আর অর্নির আব্বু অন্য গাড়িতে আসছে।আপাতত অর্নির গায়ে জ্বর নেই।ওষুধ খেয়েই গাড়িতে উঠেছে।আরিয়ান গাড়ি ড্রাইভ করছে আর অর্নি গান শুনছে।গান শুনতে শুনতেই অর্নি আরিয়ানকে জিগ্যেস করলো

“রিমনকে আনিস নাই?”

“রিমন কালকে সকালে আসবে ওর আজকে কাজ আছে তাই আসতে পারবে না।”

“ওহ!!”

“হুম।তোর শরীর কেমন এখন?”

“এখন ভালোই।ওই তো বৃষ্টিতে ভিজেছিলাম তো তাই।”

“সে কি ছাতা নিস নি?”

“আরে ভুলে গেছিলাম।কিন্তু পরে নেহাল ছাতা নিয়ে এসেছিলো।তবুও ভিজেছি।”

“সেই জন্যই এই অবস্থা।এতো ভালোবেসে তোর জন্য ছাতাটা নিয়ে আসলো আর তুই ভিজলি।”

“মানে?কি বললি?”

“কি মনে করছিস আমি জানি না?নেহাল তোকে পছন্দ করে।”

অর্নি চোখ বড়বড় করে বলল

“সত্যি?”

“হ্যাঁ সত্যি।”

“তোকে বলেছে?”

“বলা লাগে?হাবভাব দেখলেই বোঝা যায়।”

“আচ্ছা আসতে বল।আম্মুরা শুনতে পাবে তো।”

“না শুনবে না দুজনেই গহনার আলাপে ব্যাস্ত।”

“তাও সাবধান।”

“ওকে,কিন্তু তুই ওকে পছন্দ করিস?”

“জানি না রে,আমার ফিলিংস টা বুঝতে পারছি না ঠিক।”

“আচ্ছা এই কয়দিনে যদি তুই ওকে মিস করিস তাহলেই বুঝবো তুই ওকে ভালোবাসিস।”

“ওকে,দেখি কি হয়।”

এদিকে নেহাল বসে বসে পড়ছিলো।কিন্তু হঠাৎ করেই অর্নির কথা মনে পড়ে গেলো।আজ বৃষ্টিতে একসাথে ভিজেছিলো।নেহাল চোখ বন্ধ করে বুকে হাত দিয়ে ভাবছে ও কি কখনো বুঝতে পারবে না আমাকে?তারপর চোখ খুলে ফোনটা হাতে নিয়ে অর্নিকে কল দিলো।

অর্নি তখন সিটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে গান শুনছিলো।হঠাৎ কারো কল দেখে চোখ খুলে দেখলো নেহাল।স্ক্রিনের ওপর নামটা দেখে আরিয়ানের দিকে তাকালো।আরিয়ান মুচকি মুচকি হাসছে।অর্নিও একটা হাসি দিয়ে কল রিসিভ করলো

“হ্যালো অর্নি?”

“হ্যাঁ নেহাল বলো।”

“বৃষ্টিতে ভেজার পর জ্বর আসে নি তো?”

“হ্যাঁ সামান্য।তোমার কি অবস্থা?”

“আমি ঠিকাছি।তুমি মেডিসিন নিয়েছো তো?”

“হ্যাঁ নিয়েছি।আর এখন ঠিকাছে।”

“আচ্ছা।কালকে হচ্ছে।”

“না হচ্ছে না।”

“কেনো?”

“আমি নারায়ণগঞ্জ যাচ্ছি।একটা দাওয়াতে।”

“ওহ!!আসছো কবে?”

“চার/পাঁচ দিন পর।”

নেহাল মলিন মুখে বলল

“আচ্ছা নিজের খেয়াল রেখো।রাখছি।”

“আচ্ছা।তুমিও সাবধানে থেকো।”

এই বলে অর্নি ফোন রেখে দিলো।আরিয়ান আস্তে আস্তে বলল

“আহারে কি কেয়ার!!আমি বললাম না ও তোকে ভালোবাসে।”

অর্নি কিছু বলছে না হাসছে।হঠাৎ অর্নির মা বলল

“তোরা কি ফুসুরফাসুর করছিস রে?”

আরিয়ান হেসে বলল

“না আন্টি আসলে আমরা বলছিলাম কোন গহনার কতো দাম।ওইটাই।”

আরিয়ানের কথা শুনে সবাই হেসে দিলো।আর আরিয়ানের মা ওর কান মলে দিলো।

চলবে…

(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে