#প্রেমের_নাম_বেদনা?
#পর্বঃ০৫
#Arshi_Ayat
অর্নি মুখ বেকে বলল
“না জানু এখন না।যখন সময় হবে তখন।”
“এই যে মনে রাখলাম কিন্তু তুই আমারে কস নাই না!!দেখিস আমিও একদিন পেরেম করমু কিন্তু তোরে কমু না।”
অর্নি হাসতে হাসতে বলল
“ওক্কে বিয়াতো আর না জানায় করতে পারবি না।তখন জানলেই চলবো।”
বর্ষা মুখ ভেংচি দিয়ে বলল
“বুঝছি বয়ফ্রেন্ড পাইয়া বান্ধবী ভুইল্লা গেছোস।”
“হ,,,তুই বুঝতে থাক।আরে বাপ কইলাম তো আগে সময় হোক তারপর তোরেই আগে জানামু।”
তারপর দুজনে বকবক করতে করতে বাসায় চলে গেলো।
সন্ধ্যা নেমেছে একটু আগে তা আকাশ দেখলেই বোঝা যায়।এখন আবছা আলো দেখা যাচ্ছে আকাশে।খুব একটা গরম পড়ে নি তবে কমও বলা যাবে না।অর্নি বসে বসে ফেসবুক চালাচ্ছে।হঠাৎ আরিয়ান এসে ওর হাত থেকে ফোনটা নিয়ে বিছানায় রেখে বলল
“চলে এলাম।শুরু করবি না?”
“হ্যাঁ তুই বোস।আমি আসছি।”
“ওকে যা।”
অর্নি চলে যেতেই আরিয়ান ওর ফোনটা নিয়ে কি একটা যেনো করলো তারপর বাঁকা হাসি দিয়ে ফোনটা জায়গা মতো রেখে দিলো।একটুপর অর্নি কিছু নাস্তা নিয়ে ঘরে ঢুকলো।অর্নিকে নাস্তা নিয়ে আসতে দেখে আরিয়ান বলল
“আরে আমি তো খেতে আসি নি।এগুলো আনতে গেলি কেনো?”
অর্নি দাঁত বের করে হেয়ে বলল
“এগুলো তোর জন্য এনেছি কে বলল?এগুলো তো আমার জন্য এনেছি।আমি আবার পড়তে বসার সময় খাবার নিয়ে বসি।খেতে খেতে পড়ার জন্য। ”
“ও এই জন্যইতো দিনদিন মুটি হচ্ছিস।”
“এই যে মিস্টার মুখ সামলে কথা বলুন।আ’ম অনলি ফর্টি এইট কেজি।”
“খাওয়া কন্ট্রোল কর নাহলে ফর্টি এইট থেকে এইট টি ফোর হয়ে যাবি।”
এটা বলই হাসা শুরু করলো।অর্নি রেগে তেড়ে এসে ওর পিঠে কিল মেরে বলল
“আর তুই কি?নিজে আস্তো একটা হাতি।তার ওপর আবার আমাকে বলছিস।”
আরিয়ান হাসতে হাসতে বলল
“ওকে ফাইন চল শুরু করি।”
“ওকে!!”
দু’জনই প্র্যাকটিক্যাল শুরু করলো।ওদের শেষ করতে করতে রাত ১০.০০ টা বেজে গেছে।তারপর অর্নির মায়ের জোরাজুরিতে আরিয়ান খাওয়া শেষ করে বাসায় ফিরলো।
রাত ১১.৩০…
“হ্যালো আরিয়ান।”
“হ্যাঁ অর্নি বল।”
“একটু আমাদের বাসার সামনে আয় প্লিজ।”
“কেনো?”
“আসতে বলছি আয়।”
“ওকে আসছি।”
আরিয়ান বাসার সামনে আসতেই অর্নি সবাইকে ফাঁকি দিয়ে নিচে নামলো।অর্নিকে দেখে আরিয়ান বলল
“কি রে এতো জরুরি ভাবে ডাকলি যে?”
“আরে নেহালকে উইশ করবো আজ রাত ১২ টায়।আমি সবার আগে করবো উইশ টা।”
“ওহ!! কি বলিস নেহালের বার্থ ডে আর আমি ভুলেই গেছিলাম।ওকে দ্যান চল।”
“ওকে।”
ওরা দুজন চললো নেহালের বাসার দিকে।এদিকে অর্নির মা অর্নি আর আরিয়ানকে একসাথে কথা বলতে দেখে নেয়।তারপর একটা মুচকি হাসি দেয়।আর আরিয়ানের মাকে কল দেয়।কল রিসিভ করতেই অর্নির আম্মু বলল
“কি রে তোর ছেলের এতো রাতে প্রেম করতে ইচ্ছে হলো যে।”
“আরিয়ান কি তোদের ওখানে?”
“হুম মাত্র অর্নিকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো।”
“যাক দুটো মিলতে শুরু করেছে।”
“হ্যাঁ।আচ্ছা আমরা ওদেরকে সত্যিটা বলে দেই না!।”
“না না এখন না।লাস্ট সেমিস্টার টা বাকি আছে।ওটা দিক।অনার্স শেষ করুক। তারপর বলো।ততোদিনে ওরা দুজন দুজনকে ভালোবাসুক।”
“হুম ঠিক বলেছিস তুই।”
“আচ্ছা রাখি।”
“আচ্ছা।”
নেহালের বাসার সামনে এসে অর্নি নেহালকে কল দেয়।কল রিসিভ করতেই অর্নি বলল
“নেহাল তুমি কোথায় এখন ই আসো।”
“কেনো?কি হয়েছে?”
“আ…..বাঁচাও বাঁচাও…”
“অর্নি কি হইছে?আসতেছি দাড়াও।হ্যালো হ্যালো..”
অর্নি কল কেটে দিলো।নেহাল কোনোমতে বাইকের চাবিটা নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।গেটের বাইরে আসতেই অর্নিকে দেখে চমকে উঠলো।অর্নি নেহালের সামনে এসে হাত বাড়িয়ে বলল
“হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ নেহাল।”
নেহাল স্তম্ভিত হয়েছিলো।তারপর অর্নির সাথে হাত মিলিয়ে বলল
“থ্যাংকিউ।বাট রিয়েলি ভয় পেয়ে গেছিলাম।”
তারপর আরিয়ানও নেহালকে উইশ করে।যদিও দুজন দুজনকে দেখতে পারে না।তবুও আরিয়ান উইশ করলো।তারপর কিছুক্ষণ তিনজনে মিলে কথা বলে যে যার বাড়িতে চলে গেলো।
পরেরদিন…
ভার্সিটি থেকে বের হতে হতে বর্ষা বলল
“সিরিয়াসলি আজ যে নেহালের বার্থ ডে ছিলো ভুলেই গেছিলাম।বাই দ্যা ওয়ে উইশ করেছিস ওকে?”
“হ্যাঁ করেছিতো?”
“কখন?”
“রাত ১২ টায়।ওর বাসার সামনে গিয়ে এন্ড আ’ম ফার্স্ট।”
বর্ষা হকচকিয়ে উঠে বলল
“কেমনে কি?”
অর্নি কালকে রাতের সব কাহিনি বর্ষাকে বলল।সব শুনে বর্ষা দুষ্টু হেসে চোখ মেরে বলল
“সামথিং সামথিং উইথ…. ”
অর্নি কিছু না বলে হাসতে থাকে।বর্ষাও বিভিন্ন ভাবে অর্নিকে লজ্জা দিচ্ছে।হঠাৎ হাসি থামিয়ে বর্ষা বলল
“দোস্ত আমার আরিয়ানকে নিয়ে কেনো যেনো সন্দেহ হচ্ছে।”
“কেনো?”
“ও এতো ভালো কি করে হতে পারে?”
“বর্ষা একটা মানুষ ভালো হলেও তোর সমস্যা। কেনো রে?ও আসলেই ভালো।”
“চুপ থাক শয়তান কোনোদিন শয়তানি ভোলে না।আবার কোন ফন্দি আটছে আল্লাহই জানে।”
“বর্ষা রিয়েলি তোর গোয়েন্দাগিরীতে নামা উচিত।ওইখানে তুই খুব ভালে করতি।”
ওরা বকবক করতে করতে হাটছিলো হঠাৎ করেই বৃষ্টি নামা শুরু হলো।হঠাৎ বললেও ভুল হবে সকাল থেকেই আকাশটা মেঘলা হয়েছিলো কিন্তু এখন যে বৃষ্টি নামবে এটা ওরা দুজন আশা করে নি।সাথে ছাতাও নেই।
কিন্তু হঠাৎ মনে হলো চারপাশে বৃষ্টি হলো কিন্তু ওদের মাথায় বৃষ্টির ফোটা পড়ছে না।পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখলো…
চলবে…..
(ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)