#প্রেমের_নাম_বেদনা?
#পর্বঃ০৪
#Arshi_Ayat
অর্নি সোজা হয়ে দাড়িয়েই আরিয়ানকে একটা কষে থাপ্পড় মারলো।তারপর নেহালের হাত ধরে লাইব্রেরি থেকে বেরিয়ে গেলো।ঘটনার আকস্মিকতায় আরিয়ান ভ্যাবলার মতো চেয়ে রইলো অর্নি আর নেহালের যাওয়ার দিকে।পিছন থেকে রিমন এসে আরিয়ানের কাঁধে হাত রেখে বলল
“দোস্ত মেয়েটাকে একটা শিক্ষা দেওয়া দরকার।দেখছিস তোকে লাইব্রেরির সবার সামনে থাপ্পড় দিয়ে গেলো।”
আরিয়ান গালে হাত দিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল
“শিক্ষা তো আমি দিবোই শুধু একটু অন্য পদ্ধতিতে।”
“মানে?”
“মানে হলো এবার আর ওকে মারবো না বা খাতা নিয়ে যাবো না।এবার একটু অন্য পদ্ধতিতে ওকে শিক্ষা দিবো।”
“প্ল্যান টা কি রে?”
“নাহ!প্ল্যান বললে মজা নষ্ট হয়ে যাবে তার চেয়ে তুই শুধু দেখ আমি কি করি।”
এটা বলেই আরিয়ান বেরিয়ে গেলো।আর এদিকে অর্নি আর নেহাল হাটছে।কথা বলতে বলতে নেহাল বলল
“অর্নি তোমার প্রিন্সিপালের কাছে কম্প্লেইন করা উচিত।”
“সেটা করতে পারলে অনেক আগেই করতাম।”
“কেনো?সমস্যা কোথায়?”
“ও আমার মায়ের বান্ধবীর ছেলে।”
“তাহলে তো ভালোই তুমি তোমার মা কে বিষয়টা শেয়ার করো।”
“লাভ নেই।”
“কেনো?”
“মা আরিয়ান কে খুব ভালো জানে।সে বিশ্বাস ই করতে চায় না যে আরিয়ান এমন।ওর নামে কোনোকথা বললে উল্টো আমাকেই….. ”
এতটুকু বলতেই নেহাল ওকে ধাক্কা দিলো।ধাক্কা খেয়ে সামলাতে না পেরে অর্নি পড়ে গেলো।নেহাল দ্রুত এসে অর্নিকে উঠিয়ে বলল
“ঠিকাছো?”
অর্নি জামা থেকে বালু ঝাড়তে ঝাড়তে বলল
“হ্যাঁ ঠিকাছি।”
“ইশশ!!আরেকটু হলেই তো রিকশার নিচে চলে যেতে।”
“থ্যাংকিউ নেহাল।”
“ধূর এতো থ্যাংকিউ দেওয়া লাগবে না।আমরাতো ফ্রেন্ড ই।”
অর্নি হালকা হাসলো কিন্তু কিছু বলল না।তারপর যে যার যার বাসায় চলে গেলো।
পরেরদিন….
অর্নি ভার্সিটিতে ঢুকতেই আরিয়ান ওর পথ আটকে দাড়ালো।অর্নি মুখ শক্ত করে বলল
“যেতে দাও।”
“অর্নি কিছু কথা ছিলো তোর সাথে।”
“হ্যাঁ,বল।”
“সরি ইয়ার।তোর সাথে অনেক অন্যায় করেছি।প্লিজ মাফ করে দে।”
অর্নি হালকা হেসে বলল
“ইটস ওকে।ফ্রেন্ডই তো।চল ক্লাসে চল।”
আরিয়ান আর অর্নি একসাথে ক্লাসে চলে গেলো।ওদের দুজনকে একসাথে হেঁসে হেঁসে আসতে দেখে মোটামুটি সারা ক্লাস বিষ্ময়ে চেয়েছিলো কারণ ভার্সিটির বেশিরভাগ স্টুডেন্ট ই ওদের মধ্যকার সাপ বেজির সম্পর্কটা জানে কিন্তু হঠাৎ এতো গলায় গলায় ভাব কেনো!!অর্নি এসে বর্ষার পাশে বসলো।বর্ষা ভ্রু কুচকে জিগ্যেস করলো
“কাহিনি কি মামা?আরিয়ান এত্তোভালো হলো কিভাবে?”
অর্নি হেসে বলল
“জানি না।ও আজকে সরি বলছে।তাই মাফ করে দিছি।”
“হঠাৎ সরি বললো কেনো?নিশ্চয়ই কোনো গন্ডগোল আছে।”
অর্নি বর্ষার দিকে উৎসুক দৃষ্টিতে চেয়ে বলল
“কিসের গন্ডগোল?”
“হয়তো তোকে লাইন মারার চেষ্টা করছে।”
অর্নি বর্ষার মাথায় গাট্টা মেরে বলল
“তোর আষাঢ়ে গল্প বন্ধ কর বইন।প্লিজ।”
“দোস্ত সত্যি বিশ্বাস কর।আমার মনে হয় না ও এতো সহজে তোর পিছু ছাড়বে।ও হয়তো তোর সাথে প্রেম করে তোকে কষ্ট দিতে চায়।”
“তোর এটা কেনো মনে হলো?”
“কারণ যে ছেলে তোর ছায়া ও মাড়ায় না।ওই ছেলে এক রাতের মধ্যে ভালো হয়ে গেলো কি করে?”
“এখন ছেলেটা সরি বলে সব ঠিকঠাক করতে চাইছে এতেও তোর সন্দেহ?তুই গোয়েন্দাগিরি তে নামলেই পারিস।”
“দোস্ত এভাবে কাউকে বিশ্বাস করিস না প্লিজ।শেষে দেখবি তোর এই বিশ্বাসটাই তোর কাল হয়ে দাড়িয়েছে।”
“ওফফ!!!বর্ষা ফালতু পেচাল রাখ তো।”
বর্ষা আর কিছু বলল না।দুজনই ক্লাসপ মনোযোগ দিলো।
ক্লাস শেষে অর্নি আর বর্ষা লাইব্রেরির দিকে যাচ্ছে।পিছন থেকে আরিয়ান এসে বলল
“লাইব্রেরিতে যাচ্ছিস তোরা?”
“হুম।” (অর্নি)
“শোন অর্নি আজ সন্ধ্যায় তোদের বাসায় আসবো।আমার আজকের প্র্যাকটিকালে তোর হেল্প লাগবে।”
“ঠিকাছে চলে আসিস।”
“ওকে।”
এই বলে আরিয়ান ক্যান্টিনে চলে গেলো।অর্নি আর বর্ষা গেলো লাইব্রেরিতে।লাইব্রেরিতে নেহালও ছিলো।ওদের দুজনকে দেখে বলল
“হাই।”
“হ্যালো,কেমন আছো নেহাল?” (অর্নি)
“নেহাল তুমি কিন্তু আগের থেকেও হ্যান্ডসাম হয়ে যাচ্ছো।”(বর্ষা)
নেহাল মুচকি হেসে বলল
“সুন্দরীদের নজর পড়লে ছেলেরা এমনিতেই হ্যান্ডসাম হয়ে যায়।”
“তাই নাকি?তাহলে কোন সুন্দরীর নজর পড়লো তোমার ওপর?”
নেহাল আবারও মুচকি হেসেই বলল
“সেটা নাহয় পরেই জেনো।”
“ঠিকাছে।পরেই জানিও।(বর্ষা)
তারপর অর্নি, নেহাল আর বর্ষা কিছুক্ষণ স্টাডি করে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে পড়লো।নেহাল ওর বাসায় চলে গেলো।বর্ষা আর অর্নি নিজেদের বাসার দিকে হাটছে।হঠাৎ বর্ষা বলল
” দোস্ত আরিয়াব থেকে একটু সাবধানে থাকিস।”
“আরে টেনশন নিস না।তোর আষাঢ়ে গল্প যদি সত্যিও হয় তাহলেও আমি ওর সাথে প্রেম করবো না।কারণ আমি ভালোবাসি অন্য একজনকে।”
বর্ষা লাফিয়ে ওঠে বলল
“কাকে?”
চলবে…..
(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।ধন্যবাদ)