#প্রেমের_নাম_বেদনা?
#পর্বঃ০৩
#Arshi_Ayat
আরিয়ানের কথা শুনে বর্ষা আমতা আমতা করতে করতে বলল
“ক কি যে বল না তুমি।ও অর্নি হতে যাবে কেনো!!ও আমার বোন।আর এখন আমাদের যেতে হবে। দেরি হয়ে যাচ্ছে তো।”
আরিয়ান কিছু একটা ভেবে বলল
“আচ্ছা যাও।তবে অর্নিকে বলে দিও ওকে কালকে ভার্সিটিতে পেলে এমন হাল করবো ও ভাবতেও পারবে না।বাটপারি করে আমার সাথে!! বাটপারি ছুটাচ্ছি ওর।”
এই বলে আরিয়ান চলে গেলো।বর্ষা আর অর্নিও হাফ ছেড়ে বাচলো তারপর ওরা ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে গেলো বাসায় চলে গেলো।
ঘড়িতে বিকেলে ৩.০০ টা বাজে..
অর্নি বিছানায় উল্টো হয়ে ঘুমাচ্ছে।হঠাৎ মনে হলো ওর চুল ধরে কেউ টানছে।বিরক্তিতে চোখ খুলেতেই দেখলো আরিয়ান সামনে দাড়িয়ে আছে।অর্নি বিড়বিড় করতে করতে বলল
“শালা শয়তান।ভার্সিটিতেও শান্তি দেয় না।এখন স্বপে এসেও জালাচ্ছে।”
অর্নি আরিয়ানকে স্বপ্ন ভেবে আবার চোখ বন্ধ করে ফেললো।কিন্তু একি কান মোচড়াচ্ছে কে?আবার চোখ খুলতেই আরিয়ান দাঁত কেলিয়ে বলল
“তুই স্বপ্ন দেখেছিস না।তোর সামনে আরিয়ান চৌধুরী ই দাড়িয়ে আছে।”
আরিয়ানের কথা শুনে অর্নি এক লাফে শোয়া থেকে বসে পড়লো তারপর আতঙ্কে বলল
“তুই এখানে কেনো?”
“আজকে তোর মা আমার মা কে দাওয়াত দিয়েছে।তাই আমিও এসেছি যাতে তোকে পিটাতে পারি ইচ্ছামতো।”
অর্নি মনে মনে বলল মা এই বদকে কেনো দাওয়াত দিয়ে আনতে গেলে?আজ ও আমার অবস্থা টাইট করে দিবে।
অর্নিকে চুপ থাকতে দেখে আরিয়ান বলল
“তোর কি এখনও স্বপ্ন মনে হচ্ছে?দাড়া তোর স্বপ্নকে সত্যি করি।”
এই বলে টেবিল থেকে একগ্লাস পানি অর্নির মাথায় ঢেলে দিলো।অর্নি রেগে বলল
“তুই এটা কি করলি?ভিজিয়ে দিলি তো!!”
আরিয়ান ঠোঁট বেকে বলল
“আরে না আমি তোকে ভিজালাম কই?আমি তো তোর স্বপ্নটা ভাঙ্গলাম।”
অর্নি চেহারাটা বাংলার পাঁচ এর মতো করে ওয়াশরুম চলে গেলো।আর আরিয়ান ওর বেডে বসে হাসছে।আর মনে মনে বলছে আজ তোকে ভালোমতো শিক্ষা দেওয়া যাবে!!ওফ ভাবতেই কি আনন্দ লাগছে।
অর্নি ওয়াশরুম থেকে কাপড় পাল্টে বের হতেই আরিয়ান সামনে এসে বলল
“তোর প্র্যাকটিক্যাল করা শেষ?”
অর্নি মনে মনে বলল একে কোনো ভাবেই সত্যি বলা যাবে না।তাই ও আরিয়ানকে বলল
“না এখনো করি নি।”
“ও কিন্তু আন্টিতো বলল তোর নাকি সব কমপ্লিট।”
“না মানে…”
“মিথ্যা বলছিস কেনো?”
“সত্যিতো বললাম।”
আরিয়ান চোখ গরম করে বলল
“তাড়াতাড়ি প্র্যাকটিক্যাল খাতা গুলো বের কর।”
“ভুলে গেছি কই আছে।”
“ও আচ্ছা এভাবে হবে না।আমি আন্টি কে বলবো যে তুই আমাকে প্র্যাকটিক্যাল খাতা দিস না।”
অর্নি বিরক্তিতে মুখ কুচকিয়ে বলল
“আচ্ছা দিচ্ছি।”
এই বলে ওর প্র্যাকটিকাল খাতা গুলো বের করে আরিয়ানকে দিলো।আরিয়ান খাতাগুলো মুচড়ে বাইরে ফেলে দিলো।অর্নি ধস্তাধস্তি করেও থামাতে পারলো না।আরিয়ান সবগুলো খাতা বাইরে ফেলে দিলো।অর্নি মুখ ঢেকে বসে পড়লো।তারপর কাঁদতে কাঁদতে বলল
“এমন কেন করলি তুই?তুই জানিস না কলকে প্র্যাকটিক্যাল খাতা সাবমিট করতে হবে।”
“জানি বলেই তো এমন করলাম।কালকে তুই প্র্যাকটিকাল সাবমিট করতে পারবি না।আমার যে কি খুশী লাগবে।ভাবতেই পারবি না।”
অর্নি কিছু বলছে না।চুপচাপ বসে রইলো।আর আরিয়ান ওর ঘর থেকে চলে গেলো।অর্নি ঘরের দরজা বন্ধ করে দিলো।ওর মা বাবা সবাই মিলে ডাকছে কিন্তু ও দরজা খুলছে না।সবাইকে বলছে আমার কালকে প্র্যাক্টিক্যাল সাবমিট করতে হবে আমাকে বিরক্ত করো না তোমরা যাও।প্লিজ!!তারপর ওর বাবা মা আর ডাকলো না।
পরেরদিন…
আরিয়ান ক্লাসে বসে আছে।ও ভেবেছে আজ বোধ হয় অর্নি আসবে না।কিন্তু ক্লাসের দরজায় চোখ রাখতেই দেখলো অর্নি ক্লাসে ঢুকছে।আরিয়ান ওর দিকে এগিয়ে এসে হাসতে হাসতে বলল
“কি রে প্র্যাকটিক্যাল খাতা ছাড়াই চলে এলি!!এখন প্র্যাকটিক্যাল জমা দিবি কি করে?”
অর্নি কিছুই বলল না।চুপচাপ বসে রইলো।অর্নিকে চুপ দেখে আরিয়ানও নিজের জায়গায় চলে গেলো।একটুপর সবাই এক এক করে প্র্যাকটিক্যাল সাবমিট করতে গেলো।যখন আরিয়ানের পালা এলো তখন বড়ো রকমের একটা শক খেলো।ওর প্র্যাকটিক্যাল খাতায় লিখা নেই।সাদা খাতা।আরিয়ান অর্নির দিকে তাকাতেই অর্নি হাসতে লাগলো।আরিয়ান বুজতে পারলো কাজটা অর্নির কিন্তু ও এটা করলো কিভাবে?আরিয়ানের ভয়ে হাত কাপছে।আজ সাবমিট করতে না পারলে আর হবেও না।অর্নি উঠে এসে আরিয়ানের হাতে ওর প্রাকটিক্যাল খাতা দিয়ে বলল
“আমি তোর মতো না।তোকে একটু ভয় দেখাতে চেয়েছিলাম তাই এমন করেছি।যা জমা দিয়ে আয়।”
আরিয়ান কিছু না বলে উঠে গেলো।তারপর অর্নিও প্র্যাকটিক্যাল জমা দিয়ে বাইরে এসে দেখলো নেহাল দাড়িয়ে আছে।ও গিয়েই নেহালের হাত ধরে বলল
“থ্যাংকিউ সো মাচ।তুমি কাল দি আমাকে লিখে না দিতে।তাহলে আজ আমি জমা ই দিতে পারতাম না।”
নেহাল হেসে বলল
“ওয়েলকাম।এখন কি বাসায় যাবে?”
“না লাইব্রেরিতে।”
“ওহ!!চলো আমিও যাবো।”
এদিকে আরিয়ান লাইব্রেরিতে আগেই বসে ছিলো অর্নিকে সরি বলার জন্য। কিন্তু নেহালের সাথে ওকে ঢুকতে দেখেই ওর মাথা গরম হয়ে গেলো।আর নেহালকে আরিয়ান একদম সহ্য করতে পারে না।আরিয়ান সামনে গিয়ে আচমকাই অর্নিকে ল্যাং মারলো কিন্তু অর্নি পড়লো না।নেহাল ওকে ধরে ফেললো।….
চলবে….
(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।ধন্যবাদ)