প্রেমের নাম বেদনা পর্বঃ০২

0
2313

#প্রেমের_নাম_বেদনা?
#পর্বঃ০২
#Arshi_Ayat

এবার অর্নি আরিয়ানের লুঙ্গির দিকে হাত বাড়াতেই আরিয়ান ওর হাত ধরে ফেলে আর হাত পিছনে মুচড়ে ধরে ধরে ওর বান্ধবীদের বলে

“হুম এবার একটা ছবি তোলো।ফেসবুকে আপ দিতে হবে তো।”

ওর বান্ধবীরা না তুললেও রিমন আর রাদিফ ছবি তুলে ফেলল।তারপর আরিয়ান অর্নির কানে কানে বলল

“তোকে কাল দেখে নিচ্ছি।”

এটা বলেই চলে গেলো।সাথে রিমন আর রাদিফ ও গেলো।

আর অর্নি হাত ডলতে ডলতে বললো
শালা তোরে যদি পাগলা কুত্তার কামড় না খাওয়াইছি আমার নামও আনিকা অর্নি না।বর্ষা অর্নির কাধে হাত রেখে বলল

“দোস্ত ও তোর সাথে এমন করে কেন রে?তোর সাথে ওর কিসের শত্রুতা?”

“ও তো ছোটবেলা থেকেই আমার শত্রু।ওর মা আমার মা এর বান্ধবী।তাই দুজনেই আমাদের ব্যাপারে আলোচনা করে।এখন ওর মা আমার প্রশংসা শুনে ঘরে গিয়ে ওকে বকে তাই ও আমার ওপর ওর রাগ ঝাড়ে।শয়তান একটা।এতদিন সহ্য করছি আর না!!এবার ওরে শিক্ষা দিবো প্রতি পদে পদে।”

“দেখিস কিন্তু আরিয়ান কিন্তু অনেক খারাপ।”

“ওর চেয়ে বেশি খারাপ আমি।কালকে আসুক তারপর দেখিস কি করি।”

বর্ষা আর অর্নি বাসায় চলে গেলো।

পরেরদিন….

আরিয়ান ভার্সিটির গেটের সামনে অর্নির জন্য অপেক্ষা করছে।কিন্তু ও এখনো আসছে না।এদিকে পরীক্ষার সময়ও হয়ে গেছে।আরিয়ান মনে মনে বলল’পরিক্ষা কি দিবে না নাকি!!
আরিয়ান আর অপেক্ষা না করে ক্লাসে চলে গেলো।ক্লাসে গিয়েই ওর চোখ কপালে উঠে গেলো।অর্নি ওর দিকে তাকিয়ে বত্রিশ দাত বের করে হাসছে।আরিয়ানের মাথায় আগুন ধরে গেলো।ও অর্নির সামনে গিয়ে বলল

“তুই আসলি কখন?”

এবার অর্নি ঢং করে বলল

“এ মা!!সে কি?তুই দেখিস নি?আমি তো তোর সামনে দিয়েই এসেছি?”

আরিয়ান কপাল কুচকে বলল

“কিভাবে?”

অর্নি বোরকা দেখিয়ে হাসতে লাগলো।আর আরিয়ান রাগে কিছু না বলে সিটে গিয়ে বসলো।আর মনে মনে বলল’পরিক্ষা দিয়া খালি বের হ তোরে উল্টো ঝুলাইয়া পিটামু শালী রে।আমার সাথে বাটপারি!!আজকে খালি ক্লাস থেকপ বের হ।

এদিকে অর্নি মনে মনে বলছে তোরে সুযোগ পাইলে লাল পিপড়ার কামড় খাওয়ামু দাড়া!!

দুজনেই পরীক্ষা দিতে বসলো কিন্তু দুজনের মনই কাকে কে শায়েস্তা করতে পারে এই জায়গায়।পরীক্ষার হলেও একজন আরেকজনকে চোখ রাঙাচ্ছে।

অর্নির পরিক্ষা শেষ হতেই ও বেরিয়ে পড়লো।তারপর বাথরুমে গিয়ে দু নাম্বার বোরকাটা পড়লো।কারণ অর্নি জানে আগের বোরকাটা পরলে আরিয়ান ওকে চিনে ফেলবে।বোরকা পরে বের হতেই দেখে আরিয়ান ক্লাস থেকে বের হয়েছে।আরিয়ানকে দেখেই অর্নি উল্টো দিকে হাঁটা ধরলো।আরিয়ান অর্নি খুজছে কিন্তু পাচ্ছে না।হাঁটতে হাটতে হঠাৎ রিমন বলল

“হতে পারে ও বোরকা পরেই আমাদের সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিন্তু আমরা চিনতে পারছি না”

“রাইট।কিন্তু রাদিফ কই?”

“শালায় খাইতে গেছে।”

“ধূর!!পেটুক হারামি।আচ্ছা ওর কথা বাদ।চল অর্নি রে খুজি।”

“ওকে।”

“শোন তুই যদি ওরে দেখতে পাস তাইলে আমারে কল দিবি।তুই ওই দিকে যা আমি এই দিকে যাই।”

রিমন আর আরিয়ান দুজনে দুদিকে গেলো।

এদিকে অর্নি এসে লিফটে ঢুকলো।সাথে সাথে আরিয়ান এসেও ঢুকলো।আরিয়ানকে ঢুকতে দেখে অর্নির ভয়ে কলিজা শুকিয়ে গেছে।অর্নির ভয় করছে আরিয়ান চিনে ফেললো নাকি!!কিন্তু আরিয়ান এসে ফোন বের করে কাকে যেনো কল দিলো তারপর বলল

“কি রে রিমন ওরে পাইছিস?”

“…….”

“আচ্ছা খুঁজতে থাক।”

এই বলে কল কেটে দিলো।অর্নি এবার একটা নিশ্চিন্ত মনে শ্বাস ফেললো যাক চিনতে পারে নি।লিফট একতলায় আসতেই দরজা খুলে গেলো আর আরিয়ান আগে বেরিয়ে গেলো।তারপর অর্নি বের হলো।ও বের হওয়ার সাথে সাথেই বর্ষা এসে বলল

“দোস্ত আরিয়ান কিন্তু তোকে খুজছে।”

“আমি জানি।তুই আমার সাথে কথা বলিস না।ও দেখলে কিন্তু চিনে ফেলবে।”

“ওকে।”

এটা বলে বর্ষা চলে গেলো।আরিয়ান হাটতে হাটতে দেখলো বর্ষা আসছে।ও বর্ষার পথ আটকে বলল

“অর্নি কই?”

“বাসায় চলে গেছে।”

“কিহ!!কই আমি তো দেখলাম না।”

“তুমি বের হওয়ার আগেই চলে গেছে।”

আরিয়ান বিরক্তিতে বলল

“আচ্ছা যাও।”

তারপর বর্ষা যেতেই মনে মনে বলল
আমার ভয়ে পালাইছে।দেখি কতোদিন পালাতে পারিস।তারপর রিমনকে নিয়ে ক্যান্টিনে গেলো।

এদিকে অর্নি বর্ষাকে নিয়ে ক্যান্টিনে ই বসে ছিলো।হঠাৎ আরিয়ান আর রিমনকে দেখে দুজন দুজনের দিকে তাকালো।তারপর সামনে তাকিয়ে দেখলো ওরা এই টেবিলের দিকেই আসছে।ভয়ে ঢোক গিলছে অর্নি।আল্লাহ কিছু একটা করতে হবে।অর্নি বর্ষার হাত ধরে উঠতে বলল।ওরা ওঠে যেতে নিলেই আরিয়ান বর্ষা বলে ডাক দিয়ে ওদের সামনে আসলো।তারপর অর্নির দিকে চেয়ে বলল

“এটা কে?”

“ও আমার বোন।আমাকে নিতে এসেছে।”

“ও।আচ্ছা যাও।”

আরিয়ানের কাছ থেকে ছাড় পেতেই ওরা তাড়াতাড়ি হাটা শুরু করলো।আরিয়ান পিছনে ফিরে আবার ওদের ডাক দিলো।এবার দুজনে খুব ভয় পেলো।আল্লাহ ই জানে চিনে ফেলছে নাকি।ওদিকে আরিয়ানের মনে সন্দেহ জাগছে পাশের মেয়েটা অর্নি না তো!!অর্নির পায়েও একই জুতো আছে।আরিয়ান ওদের দিকে এগুতো লাগলো।অর্নি ভয়ে বারবার ঢোক গিলছে।আরিয়ান ওদের সামনে এসে বর্ষাকে বলল

“তোমার আপুর মুটা একটু দেখবো।”

“না না আপু মুখ দেখায় না কাউকে।”

“আচ্ছা সত্যি করে বলতো এটা তোমার আপু নাকি অর্নি?”

বর্ষা ভয়ে ভয়ে বলল

“আপুই তো।”

“কোন ক্লাসে পড়ে?”

“পড়ে না বিয়ে হয়ে গেছে।”

“ওহ!!কিন্তু আমার মনে হয় তুমি মিথ্যা বলছো।ও অর্নি তাই না?”

চলবে…

(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে