প্রেমের আটফোড়ন পর্ব-০৪

0
1524

#প্রেমের আটফোড়ন 🍁
#writer : Arshiya shidratul falak
#পর্ব :৪

অধরা চোখের পাতা দুটো এক করে ফেলে ভয়ে। একরাশ ভয় তাকে ঘিরে চেপে আছে,,, কিছুতে চোখ দুটো খোলছে না।
অধরা চোখের পাতা দুটো এক করে ফেলে ভয়ে। একরাশ ভয় তাকে ঘিরে চেপে আছে,,, কিছুতে চোখ দুটো খোলছে না।

তাকে অভাক করে দিয়ে আরিফ চৌধুরি, অধরার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বল্লেন,,

ঘরর আসো মা,,,,,

অধরা মা শব্দটা শুনে বুকটখানি মোচড় দিয়ে উঠলো। কারন তার বাবা কখনো তাকে এমন ভাবে ডাকেনি। ডাকবেই বা কি করে তার বাবা যে তার জন্মের পর পরই মারা যায়।

অধরা স্হিরভাবে চোখ দুটো মেলল, তাকিয়ে দেখলো একজন সুঠাম বৃদ্ধ লোক তার সামনে দাড়িয়ে আছে বয়স 4৫-৫০ হবে আনুমানিক,,

ততারপর আরিফ সাহেব রেহানার উদ্দেশ্যে বলতে লাগলেন,,,
বৌমাকে ঘরে নিয়ে যাও রেহানা,।
রেহানাও বাবার কথায় সম্মতি দেয়।

রেহানা এবার বলতে লাগলো কি রে কি করে হলো এসব,, , কবে থেকে প্রেমের টাংকি চলছে তদের হুম,,,,,
রেহানার কথা থামিয়ে এবার অধরা বলতে লাগলো, তুই যে ঐ এনাকন্ডার বোন আমাকে বলিস নি কেন,,,

অধরার মুখে ভাইয়ের নাম এনাকন্ডা নাম শুনে হো হো করে হেসে উঠলো রেহানা, ,, কারন তার ভাই যা রাগি এসব শুনলে। অধরাকে তার বাড়ি পৌছে দিয়ে আসবে,,

আরে না তোকে বলতাম কোনো না কোনো দিন,, তবে দেখ তর সাথে আজই আমার প্রথম দেখা হলো। আর আজই তোদের বিয়ে এসব,,, তাহলে বলার মতো চান্সটা কোথায়,এখন আমি কিছু সুনতে চাইনা আগে বল তদের বিয়ে কিভাবে হল আমার জানামতে তো কেউ কাউকে চিনিস না তাহলে??

তারপর অধরা ভার্সিটি থেকে এখন অপদি যা যা হল সব কিছু রেহানাকে খুলে বলল।রেহানা তো এগুলো শুনে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। কিন্তু ভাইয়া হঠাৎ বিয়ের ডিসিশন নিল কেন সেটাই তো বুঝলো না,,,, তাই অধরাকে প্রশ্ন করল,,,

আচ্ছা অধরা ভাইয়া হঠাৎ বিয়ের সিদ্ধান্ত নিল কেন, রে। আর তুই বা জানা নেই শুনা নেই বিয়ে করে ফেললি তাকে যাচাইও করতে গেলি না। হোয়াই???

অধরা কিছুটা ভাবান্তর হয়ে রইল। তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,,,

ওনি আমাকে বিয়ে কেন করেছেন আমি জানিনা,, শুনেছি ওনার জন্য নাকি সুন্দর সুন্দর মেয়েরা লাইন লেগে থাকে,, সেখানে হয়তো আমি কিছুই না,, তবে আমি বিয়ে করেছি রৌদ্দুর ভাইয়ার জন্য এটা বলতে পারব,,,।।

রৌদ্দুর এর কথা শুনে রেহানা বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে রইলো অধরার দিকে,,

রৌদ্দুর ভাইয়ার জন্য মানে,,,

আমি যখন সেন্সলেস হই,তখন নিজেকে কাজী অফিসে দেখে চমকে ওঠি। তার কিছুক্ষন পর রৌদ্দুর ভাইয়া আমাকে ডাক দেয়,,ওনার সাথে আমি একটা রুমে যাই,, তারপর ভাইয়া আমাকে করোন কন্ঠে বলে,,,

তোমার বাসায় কে কে আছে,,,,,,
ওনার এই প্রশ্নে আমি কিছুই বলিনি শুধু বলেছি আপনার আপন বলতে দুনিয়ায় কেউ নেই,, তারপর উনাকে সব বলি,,

তারপর দেখি তার চোখেপানি,, ওনার চোখে পানি দেখে কেন জানিনা মায়া হল,,

মানুষ বড়ই অদ্ভুত। আমার মতো মেয়ের জীবন কাহিনী শুনেও ওনার চোখে পানি। বিশ্াবস করতে পারছিলাম। কারন এই পৃথিবীটা তো বড়লোকের কেনা,, সেখানে আমাদের মতো সামান্য মানুষ কিছুইনা,,
তারপর ওনি বলতে লাগলেন,,,

জানো তোমার মতো আমিও এতিম,, আমারও এই বন্ধু গুলো বাদে কিছু নেই,, যখন ক্লাস ৫ম ভর্তি হই তখন আমার মা মারা যায়। তারপর বাবা বিয়ে করেন, আমি পরিবারের বড় সন্তান ছিলাম, কিন্তু মা মারা যাওয়ার পর বাবা বিয়ে করেন,, বাবা বিয়ে করার পর থেকে নতুন মায়ের কথা মতো চলতে থাকেন, নতুন মা আমাকে দু চোখে সহ্য করতে পারেন নি।বাবা দিনে অফিস করে যখন রাতে বাসায় ফিরতেন তখন নতুন মা আমার নামে তার কাছে নানা রকমের কথা বার্তা বলতে এবং তিনি মাকেই বিশ্বাস করতেন। ওনাকে বিশ্বাস করে আমাকে মারধর করতেন, সেদিন থেকেই নিজেকে এতিম ভাবতে শুরু করি। তারপর কোনো রকমে এসএসসি পাশ করে ঢাকায় আসি,,ঢাকায় আসার পর থেকে এ বন্ধুগুলোই এক মাত্র আপন।

ওনার কথাগুলো শুনে কেন জানিনা নিজের অজান্তেই কেদে ফেলি তখন ওনি আমার চোখে পানি মুছে বলে,,,

যারা অন্যের দুঃখে কান্না করতে যানে, পৃথিবীতে তারাই বালো মনের মানুষ বলে গন্য করি ৷ তারপর ওনি বললেন,,

আমার বোন হবে তুমি,, কথা দিচ্ছি একজন ভালো দায়িত্বশীল বড় ভাই হয়ে দেখাব তোমাকে,,
কেন জানিনা ওনার কথাটা শুনে কিছু না বলেই হ্যা বলে দেই,,, তারপর ওনি বল্লেন,,,

তাহলে ওয়াদা দাও আমি যা বলি তুমি তাই করবে একজন ছোট বোন হিসাবে,,,
আমি তার কথার সম্মতি দেই,,
তারপর ওনি যা বল্লেন সেটার শুনার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না, ওনি বল্লেন আমাকে,,,

বিয়েটা করে ফেল তুমি, ওনার কথা শুনে ওনার কাছে অবাক চোখে তাকাই,,
আর বলতে থাকি,, জানেো ভাইয়া ওনার সাথে আমার যখনই দেখা হয় তখনই ঝগড়া বাদে আর তার সাথে কিভাবে সারাজীবন থাকবো এসব কি বল,,

তারপর ভাইয়া বলে
আমি রিহানকে অনেকদিন যাবত চিনি, আর সে অনেক ভালো একটা ছেলে,, তাই তুই রাজি হ,
বড় ভাই হিসাবে তোর কাছে এ চাওয়াটাই আমার,, আজ যদি তোর নিজের ভাই হতাম তাহলে তো কিছুই বলতি না রাজি হতি। আমি তো তোর কিছুই না পর।

পর শব্দটা শুনে বুকের ভেতরটা মোচর দিয়ে ওঠলো তাই আর কিছুই বল্লাম না ভাইয়ের সম্মতিতেই বিয়েটা করে নেই,,,

অধরা সব কিছু বলে রেহানার দিকে তাকায় দেখে রেহানার চোখেও পানি৷

ওকি তুই আবার কাদছিস কেন

কই না তো এমনেই, আচ্ছা চল তুই ফ্রেস হয়ে নে আমি খাবার বাড়ছি,,

তারপর অধরা কিছুক্ষন বসে রইল,, রেহানা দেখতে পেল অধরা বসে আছে এখনো তারপর বলতে লাগলো,, কিরে তুই এখানে বসে আছিস তকে না বল্লাম ফ্রেশ হতে,,,

আসলে আমি তো কিছু চিনিনা কোথায় যাব এত বড় ঘরের ভেতর দিয়ে,,

ও আসলে আমি পাগল তকে খেয়ালই ছিলনা।
তারপর রেহানা অধরাকে রিহানের রুমে নিয়ে গেল,,,

রিহান তখন ওয়াস রুমে। পানির শব্দ শুনা যাচ্ছে, অধরা কিছুক্ষন বসে রইলো তারপর রিহান ওয়াস রুম থেকে বের হল,, সে তো অধরাকে দেখে নি তাই খালি গায়ে তোয়ালে পেচিয়ে ওয়াস রুম থেকে বের হয়,,,

অধরা রিহানের এমন অবস্হা দেখে বিছানা থেকে লাফিয়ে আ আ আ করে দেয় চিল্লান ,,,
অধরার এমন চিল্লানের আওয়াজ শুনে রিহান তো বোকার মতো চেয়েই রইল,, তারপর হুস ফিরতেই দিল দৌড় আবার ওয়াস রুমে,, তারপর সেখান থেকে টিশার্ট আর টাওজার পরে বের হয়,,

কপালে ভেজা চুলগুলো লেপ্টে আছে সেগুলো থেকে ক্রমশই বিন্দু বিন্দু পানি পড়ছে,,ফর্সা শরীরে হলুদ টিশার্ট ভিজে একাকার হয়ে আছে,,
অধরা না চাইতেও চেয়ে রইলো এদিকে রিহান তো রাগে ফুসছে,,,

তারপর অধরার কাছে এসে বলতে লাগলো,,,

হেই ইউ, তুমি জানো না কারো রুমে ডুকতে হলে নক করে ডুকতে হয়,,

আ আ আ আ

এভাবে আ আ আ আ করছো কেন???

আ আ আ ক ক ক

এসব কি অ আ ক কি এসব???

ভুলে গেছি 😂😂

কি আজিব কি ভুলে গেছ??

ক ক কথা।

রিহানের এবার হাসি পাচ্ছে সাথে রাগও…. !!!!!

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে