প্রেমেপড়েছিঅদৃশ্য_কিছুর
পার্ট: ৪
চোখ খুলে দেখি আমি বিছানায় দেয়ালে ঘরির দিকে থাকিয়ে দেখলাম রাত ৮টা বাজে, হঠাৎ অনুভব করলাম কপালে জলপট্টি দেওয়া, বাসায় তো কেউ নেই আমি অজ্ঞান হবার পর রোমে কে আনলো আর কপালে জলপট্টি কে দিলো, ভাবলাম আম্মুরা চলে এলো না তো তাই আস্তে আস্তে উঠে নিচে গেলাম কিন্তু মেইন দরজা তো বন্ধ আম্মুরা কেউ নেই, তাহলে আমাকে রোমে কে আনলো এসব ভাবতে ভাবতে আবার রোমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম, প্রচন্ড জ্বর এসেছে মাথা ব্যাথা করছে হঠাৎ অনুভব করলাম একটা শীতল হাত আমার চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে খুব আরাম লাগছে কিন্তু মাথায় কে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে পাশে তো কাউকে দেখছি না তাহলে কি ভূত, লাফ দিয়ে উঠে বিছানায় বসলাম ভাবছি ভূত কে আবার ডাকবো ভয় পাবো না কারন ভূত যেহেতু এতো দিন আমার কোনো ক্ষতি করেনি এখনো করবে না, তাই ডাকতে শুরু করলাম
–ভূত আমি জানি তুমি এই রোমেই আছ প্লিজ দেখা দাও
–(নিশ্চুপ)
–তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে হচ্ছে আর তুমি গান গাও না কেন জানো না তোমার গান না শুনলে আমার ভালো লাগে না
–(নিশ্চুপ)
–ভূত প্লিজ দেখা দাও নাহলে আমি আবার নিজেকে কষ্ট দিবো
হঠাৎ কানের কাছে ঠান্ডা বাতাস লাগলো তারপর কে যেন ফিসফিস করে বললো
–আমাকে দেখলে তুমি ভয় পাবে আমি নাহয় অদৃশ্য হয়েই থাকি
–তুমি তো আমার কোনো ক্ষতি করনি ভয় পাবো কেন প্লিজ দেখা দাও
–যদি ভয় পাও
–পাবো না প্লিজ দেখা দাও
–জিদ করো না প্লিজ
–ঠিক আছে আমি নিজেকে কষ্ট দিবো
–না না আমি দেখা দিবো তুমি নিজেকে কষ্ট দিও না প্লিজ তোমার কষ্টে আমারো অনেক কষ্ট হয়
–ঠিক আছে কষ্ট দিবো না দেখা দাও
–চোখ বন্ধ কর যখন বলি চোখ খুলো
–ঠিক আছে (চোখ বন্ধ করলাম)
–চোখ খুলো
চোখ খুলে তো আমি রীতিমতো ক্রাশ খেয়ে ফেলছি, এইটা তো একটা ছেলে ও ভূত হয় কিভাবে, ফর্সা লম্বা স্লিম চুল গুলো উসকোখুসকো চোখ গুলা কেমন যেন একটু গোলাটে আর খুব শান্ত, আমি এক দৃষ্টিতে ওর দিকে চেয়ে রইলাম, আমাকে এভাবে চেয়ে থাকতে দেখে ও হেসে দিলো, উফফফফফফ কি সুন্দর হাসি ছেলেরা এতো সুন্দর করে হাসে কিভাবে আমি তো ওর হাসির প্রেমে পড়ে গেছি
–এভাবে কি দেখছ
–তোমাকে দেখছি আর ভাবছি এতো সুন্দর ছেলে ভূত হয় কিভাবে আচ্ছা তুমি কি সত্যি ভূত
–ভূত বলতে পৃথিবীতে কিছুই নেই
–তাহলে তুমি কি
–আমি একসময় মানুষ ছিলাম এখন একটা আত্মা
–মানুষ থেকে আত্মা হলে কিভাবে
–সে অনেক কথা অন্য দিন বলবো আজ তুমি অসুস্থ ঘুমিয়ে পর এখন
–ছাদ থেকে কি তুমি আমাকে রোমে নিয়ে এসেছ
–হ্যা তুমি এতো জেদি মেয়ে যে আমার উপর রাগ করে বৃষ্টিতে ভিজে অজ্ঞান হয়ে পরেছিলে তারপর তোমাকে কোলে করে রোমে নিয়ে এসেছি
–তারমানে তুমি আমার ভেজা ড্রেস চেঞ্জ করেছ
–মৃদু হেসে বললো ভয় নেই আমি আত্মা হলেও খারাপ না চোখে কাপর বেধে চেঞ্জ করেছি আর কোনো উপায় ছিল না তো ভেজা কাপড় থাকলে তোমার জ্বর আরো বেড়ে যেতো
–তুমি খুব ভালো ভূত হিহিহি
–ভূত না আত্মা
–আচ্ছা তোমার নাম কি
–মন খারাপ করে বললো আত্মা দের কোনো নাম থাকে না
–যখন মানুষ ছিলে তখন তো নাম ছিল সে নামটাই বলো
–সাইয়ান
–অনেক সুন্দর নাম আমার নাম জিজ্ঞেস করবে না
–আমি জানি তোমার নাম অর্পিতা
–কিভাবে জানো
–তোমার আম্মু এই নামে তোমাকে ডাকতে শুনেছি
–আচ্ছা একটা কথা বলতো তোমার গান গিটারের শব্দ শুধু আমি কেন শুনতে পাই আম্মুরা কেন শুনে না
–আমি ইচ্ছে করেই শুধু তোমাকে শুনাই
–কেন
–আমি সবসময় চাইতাম এই বাসায় শুধু আমি থাকবো কিন্তু তোমরা বাসাটা কিনে নিলে তারপর প্রথম দিনেই তুমি আমার চিলকোঠোর ঘরে গিয়েছ ফুল বাগানের মালি নিজেকে ভেবেছ তাই আমার খুব রাগ হয় তোমার উপর তাই তোমাকে ভয় দেখানোর জন্য শুধু তোমাকে শুনাতাম, ভেবেছিলাম তুমি ভয় পেয়ে আর ছাদেই যাবে না কিন্তু তুমি তো নাচোরবান্ধা মেয়ে প্রতিদিন আমার রোমে যাওয়া শুরু করেছ একসময় আমার ভয় দেখানো গুলোকে তুমি ভালোবেসে ফেলেছ তাই আর ভয় দেখাইনি, এখন তোমাকে শুনানোর জন্য গান গাই গিটার বাজাই
–আমি যেদিন তোমার রোমে গিয়ে বলেছিলাম গান শুনাতে শুনাও নি কেন
–গিটার নিজে থেকে বাজছে দেখলে তুমি ভয় পেতে তাই তুমি রোমে আসার পর গান গাইছি
–হুম বুঝলাম কিন্তু আমার টেবিলে প্রতিদিন ফুল রাখো কেন
–এইটা বলা যাবে না
–কেন
–সব কথা বলতে নেই
–হুম তিন দিন তোমার কোনো খুঁজ ছিল না কেন
–ইচ্ছে করেই তোমার থেকে লুকিয়ে ছিলাম
–কেন
–তোমার থেকে দূরে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু তুমি ঠিকি কাছে নিয়ে আসলে
–দূরে যেতে চাও কেন
–এমনি এখন ঘুমাও তুমি অসুস্থ সকালে সব কথা বলবো
–ঠিক আছে
আমি বিছানায় শুয়ে পরতেই অনুভব করলাম একটা হাত আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে বুঝলাম এইটা সাইয়ান এর হাত, চুপ করে ঘুমিয়ে পড়লাম…..
চলবে?