#প্রেমময় তৃষ্ণা
#writer -TaNiA[🖤]
#part-8
বেশ কিছু দিন পার হয়ে গেলো।শুভ আবার নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পরলো,কিন্তু ব্যস্ততার মাঝেও শুভকে একটা জিনিস খুব তারা দিচ্ছে,তা হলো কিছুূদিন ধরে কলির বিহেভিয়ার। কলি কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে কথা বলে।শুভ অনেক বার জানতে চেয়েছিলো কলির কি হয়েছে।কিন্তু অবশেষে শুভকে নিরাশ হতে হলো।
সেদিন এর ঘটনার পর কলির জীবনে কিছুটা না ……বেশ কিছুটা প্রভাব ফেলেছে।পুরো গ্রামে কানাকানি হতে লাগলো।এবং এর রেস কলির বাসায়ও পৌছালো।গ্রামের মানুষের কানাকানি যে তার মেয়েকে নিয়ে কলির বাবা তা ভালো করে বুঝতে পারলো।কিন্তু আসলাম আমীর বুঝতে পারছে না শুভর এমন করার কারন।কলিকে শুভ ছোটকাল থেকেই খুব আদর করতো,কিন্তু এখন শুভর কাজ কর্মে অন্য কিছুর অভাস পাচ্ছে।এগুলো এখনি থামাতে হবে তানা হলে অনেক দেরি হয়ে যাবে বলে আসলাম আমীর মনে করে।তাই কলিকে ডেকে শুভর সাথে কম কথা বলতে বললো
|
শুধু বাসায় না কলিকে স্কুলও খুব প্যারা সইতে হলো।টিফিন প্রিয়ডে কলি,শিলার সাথে বসে গল্প করছিলো।এমন সময় ওদের ক্লাশের কিছু মেয়ে এসে কলিকে খুব আজেবাজে কথা শুনিয়ে গেলো।শুভকে কিভাবে ফাঁসিয়েছো,টাকার লোভে নিজের থেকে বড় একজন মানুষকে ফাঁসাতে লজ্জা করে নাই।আর শুভ চৌধুরী ও বা কিভাবে তোমার মতো মেয়েকে পছন্দ করেছে আল্লাহই জানে।কিশোরী কলি,বয়স টাবি কতো।এক সাথে এতো কিছু হজম করতে পারছে না।মন আর ব্রনের মাঝে জেনো এক বিশাল লড়াই পেকে গেছে।যার থেকে কলি বের হতে পারছে না।গ্রামের মেয়ে কলি,কখন কারো সাথে তেমন মিশে নাই,ঝগড়া তো দূরে থাক।আর এসব কিছুর প্রভাব কলি আর শুভর সম্পর্কেও পরছে।
|
অফিস আর কলির টেনশন নিয়ে শুভ এমনেই হাফিয়ে পরছে।তার উপর বাসায় গিয়ে শুভর মন মেজাজ আরো খারাপ হয়ে গেলো,যখন শুভর বাবা শুভর বিয়ের কথা তুললো।পরিবারের বড় ছেলে শুভ,বিয়ের বয়সও পার হয়ে যাচ্ছে,অথচ বিয়ে নিয়ে শুভর কোনও মাথা ব্যাথা নেই,বিয়ের প্রতি শুভর এমন উদাশিনতা দেখে আজমাল চৌধুরী ছেলের উপর খুব বেশি নারায।তবে আজ ছেলেকে জবাব দিতে হবে।কারন
শুভর জন্য খুব ভালো একটা প্রস্তাব আসছে,এমন ভালো ভালো প্রস্তাব প্রায়ই আসে,কিন্তুু শুভ এসব কিছু কখনো সিরিয়াস নেয় না।আর আজও নিলো না।তাই মুখের উপর না বলেই শুভ ড্রয়িংরুম ত্যাগ করলো।আজমাল চৌধুরী বাদে সবাই জানে এই নার কারন কি।
|
কিছুদিন পর কলির জন্মদিন, আর এবার কলি ১৭ তে পা দিবে।আর এবারের জন্মদিনে শুভ কলির সাথেই কাটাতে চায়।আর সামনে গেলে জানাও যাবে কলি কেনো এমন করছে।কি দোষ শুভর …কেনো সম্পর্কে দূরত্ব টা বেড়ে গেলো হঠাৎ ।তোর দূরত্ব যে আমাকে বিষন পরিমান পুড়াচ্ছে তা কি তুই বুঝতে পারিস না।
সকাল সকালই শুভ গ্রামের উদ্দেশ্য রওনা দিলো,তবে এবার শুভ একাই গেলো।কাউকে সাথে করে নেয়নি।
|
কলির জন্মদিনের জন্য,সকাল সকালই কলির মা কলির জন্য পায়েস রান্না করলো এবং নিজের হাতে মেয়েকে খাইয়ে দিলো।প্রতি বছরি,কলির জন্মদিনে ওর মা পায়েস রান্না করতে ভুলে না,কলির পছন্দ বলে।কলি তার মাকে বাবার কথা জিঙ্গেস করলো____মা বাবা কোথায়।______তোর বাবা তোর ছোট ফুফুকে দেখতে গেছে,কালরাত ফোন এসেছিলো।তোর ছোটফুফু নাকি অসুস্থ, তাই ফজরের নামায পড়েই রওনা দিয়ে দিলো।
আমাকে ডাকলে না কেনো,আমিও যেতাম বাবার সাথো,কতোদিন হলো দেখি না।_____সে কি করে হয়।তোর না কিছুদিন পর পরীক্ষা।পরীক্ষার পর তোর মিলি আপুর বাসা থেকে কিছুূদিন ঘুড়ে আসিস।মেয়েটা বারবার ফোনদেয় তোকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।____সত্যিই মা।____হুমমম সত্যি।আমি তোর বাবাকে বলে দেবোনি।
|
কলি,শিলা ও নিপার সাথে স্কুলের দিকে যাচ্ছিলো।কিন্তু হঠাৎ পথে শুভর গাড়ী দেখে থেমে যায়।শুভকে এতো সকালে দেখতে পেয়ে কলি খুবই আশ্চর্য হলো।তার মানে শুভ রাতভোর ড্রাইভিং করে কলির সাথে দেখা করতে এসেছে।শিলা ও নিপা কলিকে রেখে স্কুলের দিকে চলে গেলো।কিন্তু কলি এখনো সেখানই দাঁড়িয়ে আছে।আর পাশে পাসে কেউ আছে কিনা বার বার ছেক করছে।গাড়ীতে বসে,এতোক্ষন ধরে কলির সব কিছু দেখছিলো শুভ।কলিকে হাতদিয়ে ইশারা করার পরও যখন কলি গাড়ীতে উঠলো না,তখন শুভই বের হয়ে কলির হাত ধরে টেনে এনে গাড়ীতে বসাল।
#প্রেমময় তৃষ্ণা”
#writer-TaNiA[🖤]
#part-9
গাড়ী চলছে তার আপন গতিতে।কলি আড়চোখে বার বার শুভর দিকে তাকাচ্ছে,আসলে বুঝার চেস্টা করছে শুভ রেগে আছে নাকি…।কিন্তু আজ কলি ব্যর্থ, শুভর মুখের ভঙ্গিমা দেখেও কিছুই বুঝার উপায় নেই।কিন্তু কলি ভীষণ ভয়ে আছে।কারন কলি জানে কয়েকদিন ধরে শুভর সাথে একটাবারও ভালো করে কথা বলেনি,শুভর ফোন, মেসেজ এর রিপ্লাই ও ঠিকমতো দেয়নি।তার জন্য আজ তাকে কয়টা থাপ্পড় খেতে হয় কে জানে।কলি গালে হাত দিয়েই কথাগুলো ভাবছে।’এই লম্বু জানি তোর কি অবস্থা করে আল্লাহই জানে কলি।’
|
গাড়ী অনেকক্ষন ধরে চলছে,কোথায় যাচ্ছে দেখার জন্য কলি বাহিরের দিকে তাকিয়ে খেয়াল করলো,গ্রাম থেকে অনেকটা দূরে চলে আসছে তারা।আসেপাসে এখন আর বাড়ীঘর দেখা যাচ্ছে না,তবে পথের দুধারে ঘন শালবন,যতোদূর চোখ যায়,শুধু গাছ আর গাছ।কিছুক্ষন পর একটা বিলের পারে এসে গাড়ীটা থেমে গেলো।কলি চারপাশে তাকিয়ে দেখে জায়গাটা অনেক সুন্দর,লতাপাতা গুল্মেভরা বিলের পানিতে ফোটা অজস্র লাল শাপলাগুলো যেনো আজ সূর্যের লাল আভাকেও হার মানিয়ে দেবে।
দেখলেই চোখ ধাধিয়ে যায়, মন জুড়িয়ে যায়।এমন জায়গায় কলির আগে আসা হয়নি।চারপাশে প্রকৃতি দেখতে কলি এতোটাই ব্যস্ত যে,পাশে বসা শুভ যে তার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,তার কোনও খবর নেই।মুখে বিশাল হাসি বিস্তৃত করে যখন শুভর দিকে তাকালো,মুহুর্তেই মুখটা মলিন হয়ে গেলো।সাথে সাথে চোখ সরিয়ে ফেললো কলি।কারন শুভর চোখে তাকালে কলির যে হারিয়ে যেতে মন চায়।এই চোখের মায়ায় যে পরে যায় বার বার।ছেলেদের চোখও যে এতো সুন্দর হয় তা হয়তো শুভকে না দেখলে কলি জানতেই পারতো না।
|
তুই কি জানিস তোর হাসিটা দিয়ে কতো ভাবে আমাকে ঘায়েল করিস।যখন তুই প্রান খুলে হাসিস,আমার মনে হয়,আমার মনের বাগানের সব ফুলগুলো যেনো,একত্রে ফুটে উঠছে।বার বার তোর এই হাসি মাখা মুখটার কাছে আমার রাগ অভিমানগুলো যেনো ধূয়োর মতো উড়ে যায়।
______কলি চুপচাপ মাথা নিচু করে কথাগুলো শুনছিলো। কিন্তু মুখ দিয়ে কিছুই বলছিলো না।
|
তাই শুভ কলিকে টেনে কাছে এনে নিজের কোলে বসালো।হাত দুটো দিয়ে কলির কোমড়কে আবদ্ধ করে ফেললো।কি হয়েছে,জান।এমন কেনো করছিস আমার সাথে, বল।তোর এই চুপ্পি,আর মলিন মুখ আমাকে শান্তি দিচ্ছে না।আমি কি এমন কিছু করেছি,যাতে তুই কষ্ট পেয়েছিস, বল প্লিস। আমি নিজেকে শুধরিয়ে নেবো,প্রোমেজ।শুভ কলির কাধে নিজের মাথাটা রেখে…তবুও আমাকে এভাবে শাস্তি দিস না।
|
কলি কি বলবে, কলিতো নিজেই গোলক ধাধার মধ্যে ঘুড়ছে,সেতো নিজেও জানে না।অন্যের অভিমানগুলো সব শুভর উপর ফেলছে।সবার কটুকটু কথাগুলো কলিকে ভীষন ভাবে ভেঙ্গে ফেলছে।কারন কলির ছোট মন এসবের জন্য প্রস্তুত ছিলো না।মুহুর্তের মধ্যে শুভকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো কলি।
____শুভও কলিকে নিজের সাথে জরিয়ে নিয়ে শান্ত করার চেস্টা করছে।কিছুক্ষন পর কলির কান্না কিছুটা বন্ধ হলে,শুভ কলির মুখটা দুহাত দিয়ে ধরে,কি হয়েছে বল।
|
এবার কলি মুখ খুললো। সেদিন শুভ যাওয়ার পর থেকে কি কি হলো সব বললো।বাবাও আপনার সাথে কথা বলতে মানা করেছে।কেনো সবাই এমন করছে।
|
এসব শুনে শুভও কিছুটা চিন্তা করলো,সেদিন ওর এমন করাটা ঠিক হয়নি,কলির কথাটা অত্যন্ত ভাবার উচিৎ ছিলো।আজ ওর রাগে করা একটা ভুল কাজের জন্য কলির দিকে আঙ্গুল তুলার সাহস পাচ্ছে সবাই।
|
শুভ কলির ছোট ছোট আঙ্গুলের মধ্যে নিজের আঙ্গুল গুলো ডুকিয়ে মুঠো করে নিলো,জানিস কলি আমি বলছিলাম না আমাদের সম্পর্কটা এতোটা সহয না।তোর আর আমার মাঝে একটা বিশাল দেয়াল আছে।এই দেয়ালটা পাড় করা এতোটা সহয হবে না আমাদের জন্য।কারন যখনই আমরা এক হতে চাইবো দেয়ালটা আরো উঁচু হয়ে যাবে আমাদেরকে বাঁধা দেয়ার জন্য।
তোকে আমাকে আরো অনেক কিছু শোনার জন্য তৈরি হয়ে থাকতে হবে,অনেকে অনেক কথা বলবে,কিন্তু সবথেকে সত্য কথা হলো তুই আমাকে ভালোবাসিস আর আমি তোকে।সারা দুনিয়া এসেও এটা চেন্জ করতে পারবে না,নাহি তোকে আমার কাছ থেকে আলাদা করতে পারবে।তাই আর কোনও দিন এসব কথা শুনে আমাকে শাস্তি দিস না।আমি এসব সহ্য করতে পারবো কিন্তু তোর এই অবহেলা সহ্য করতে পারবো না।
___শুভর কথা গুলো শুনে কলিও শুভকে টাইট করে জড়িয়ে ধরলো।তা দেখে শুভ হেসে দিলো,তুই কি জানিস, তুই যে একটা পাগল।আর আমাকেও পাগল করে দিচ্ছিস দিন দিন।
____হুম, শুভর পাগল।
|
কলিকে নিয়ে শুভ গাড়ী থেকে নেমে বিলের পারে বসলো।লাল শাপলা দিয়ে পুরো বিলটা ভরে আছে।মাঝে মাঝে কিছু সাদা বক এসে উড়ে যায়।
___আচ্ছা আপনার গার্ল ফ্রেন্ড আছে।
শুভ কিছুক্ষন কলির দিকে তাকিয়ে বোঝার চেস্টা করছে,হঠাৎ কলির মাথায় এ প্রশ্ন কেনো আসলো।আর কলি, সে তো এখনো শুভর দিকে তাকিয়ে আছে উত্তর জানার জন্য।
হুম, কয়েকজন আছে।
___কয়েকজন আমিতো দেখলাম আপনার আইডিতে ছেলের থেকে মেয়ে সংখ্যা বেশি।তা আবার যেমন তেমন না এক একটা লুচ্চা মার্কা।
কলির কথা শুনে শুভর চোখগুলো বের হয়ে যাবার মতো,কি বলছিস।আর এক মিনিট তুই আমার আইডি চেক করেছিস,কবে…।তুই আইডি খুলেছিস।
|
না…আমি এখনো খুলি নি।আমাকে তো শিলা দেখালো।ভাবছি এবার আমারো খোলা দরকার, তাহলে আমারও কয়েকটা বয়ফ্রেন্ড হবে।কি বলেন… কলি শুভর দিকে ভ্রুটা উচুনিচু করে বললো।
____শুভ বুঝতে পারলো তার পিচ্ছি তাকে কথার জালে কি বুঝাতে চাইছে।তাই শুভ কলির এক বেনী টেনে নিজের সামনে বসালো।
______আআআআআ লাগছে।
পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে কলির হাতে দিলো।আমি এটা দিয়ে কি করবো।তোর যা চেক করার দরকার করতে পারিস।আমার কোনও কিছু তোকে লুকিয়ে চেক করতে হবে না।আর ফ্রেন্ড লিস্ট এ হাজার ফ্রেন্ড থাকলে কি হবে,আমি তো কারো সাথে কথা বলি না,তুই চেক করতে পারিস।
____ফোনটা তো লক করা।
পাসওয়ার্ড দে খুলে যাবে।
____আপনার পাসওয়ার্ড আমি কি করে জানবো।
হুম তাইতো,আচ্ছা lovekoly টাইপ কর।
____কলি শুভর দিকে অবিশ্বাসী চোখে তাকালো,তার পর টাইপ করলো,মোবাইল সত্যিই খুলে গেলো।কলির মুখে রাজ্যজয় করা হাসি ফুটে উঠলো।এর পর শুভর আইডিতে গেলো।এখানেও সেম পাসওয়ার্ড ছিলো। প্রায় এক ঘন্টা ধরে কলি শুভর মোবাইলটা চেক করলো, এদের মধ্যে কয়েকজনকে তো ব্লক লিস্টে ফেলে দিলো কলি।আর শুভ বসে বসে কলির কান্ডগুলো দেখছে।
শুভ জানে কলি ওকে সন্দেহ করছে না,কিন্তু আজ শুভ কলিকে বাধা দিলে না চাওয়া সত্যেও সন্দেহ অবশ্যই করতো।এসব কিছু কলির বয়সের দোষ।সময়ের সাথে মেচিউরিটি বাড়লে কলি ও এসব আবোল তাবোল চিন্তা আর করবে না।
|
অনেকদিন পর শুভ কলির সাথে কিছু ভালো সময় কাটালো,কিন্তু এখন যেতে হবে কারন কলির স্কুলের ছুটির সময় হয়ে যাচ্ছে,তার আগেই কলিকে পৌঁছে দিতে হবে।কলিকে বাড়ীর সামনে নামিয়ে দিয়ে শুভও আবার ঢাকায় রওনা দিলো।
|
অর্পা ফ্রেন্ডসদের সাথে সোপিং করতে এসেছিলো।সোপিং শেষে সবাই কফি হাউজে কপি খাওয়ার প্লানিং করলো।সেখানে হঠাৎ চোখ পড়লো সামনের টেবিলে বসে থাকা কাপলের উপর।এ আর কেউ না ওরি হাসবেন্ড ফাহিম।তা আবার একটা সুন্দরি মেয়ের সাথে।
কিছুক্ষন পর মেয়েটি ফাহিমের হাতটা ধরে,ফাহিমও মুছকি হেসে অন্য হাত দিয়ে মেয়েটার হাত ধরে কিছু একটা বলে,যার কারনে মেয়েটি খুশি হয়ে যায়।
|
অর্পা রাগে ফুস ফুস করতে করতে ফাহিমের সামনে যায়।ঘরে বউ রেখে এসব করতে লজ্জা করে না তোমার ফাহিম।
|
সামনে তাকিয়ে দেখি অর্পা দাঁড়িয়ে আছে, সুন্দর চেহারাটা রাগে পেত্নীর মতো করে ফেলেছে।অর্পা তুমি!তুমি এখানে কি করো।
|
কেনো এখানে বুঝি আমার আসা নিষেধ,আর ভালোই হয়েছে এসে,আজ না আসলেতো তোমার প্রেমলিলা দেখতে পারতাম না।
|
কি যা তা বলছো,তোমার মাথা ঠিক আছে,বাসায় যাও।পরে কথা বলবো।
|
কি বললে ফাহিম তুমি,আমি পাগল।
____আরে আশ্চর্য! আমি কখন তোমাকে পাগল বললাম।
|
এই মাত্র কি বললা।আমার মাথা খারাপ।এই মেয়ের কারনে তুমি আমাকে পাগল বললে,আমি আজ এই মেয়েকে কালা পানিতে চুবিয়ে মারবো বলে অর্পা ইশিতার দিকে আগালে ফাহিম অর্পাকে ধরে ফেলে।কি করছো অর্পা।
|
ও আমার আর শুভর কলেজ ফ্রেন্ড।কালই লন্ডন থেকে আসছে,ওর হাসবেন্ড এর সাথে ওর কিছু ঝামেলা চলছিলো বলে,আমার আর শুভর হেলপ চাইতে আসে।শুভতো নেই,তাই আমি একা এসেছি ওর সাথে দেখা করতে।
|
তুমি অর্পা,রাইট।ফাহিমের ওয়াইফ।তোমার কথা অনেক শুনেছি,ফাহিমের কাছে।ফাহিম যা বলছে সত্য,বিশ্বাস না হলে শুভকে জিঙ্গেস করতে পারো।ফাহিম আজ আমি আসি রে,শুভ আসলে আমাকে কল করিস।
|
ইশিতা চলে গেলো,ফাহিম ও যাওয়ার জন্য পা বাড়ালেই,অর্পা এক হাত ধরে সরি বলে।
____ফাহিম অর্পার হাতটা সরিয়ে,সরি শব্দটার মিনিংস ও জানো না তুমি, যদি জানতে তাহলে আমার সরি গুলো এতোদিনে একসেপ্ট করে নিতে।আর আমি যে তোমার হাসবেন্ড এখনো সেটা মনে রাখার জন্য ধন্যবাদ।ফাহিম চলে গেলো।কিছুটা রাগ আর কিছুটা অভিমান নিয়ে।
____আর অর্পা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফাহিমের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে,চোখগুলো কখন ছলছল হয়ে গেলো অর্পার বুঝতেও পারলো না।
|
কলি বাড়ীতে এসে, ওর কাজিনদের চিল্লাচিল্লি শুনতে পায়,দৌঁড়ে ঘড়ের ভেতরে গিয়ে দেখে মামুন পায়ের উপর পা তুলে মোবাইল টিপছে,আর জুঁই জবা প্রতিবারের মতো এবারও ঝগড়া করছে।তাও আবার একটা সিঙ্গারা নিয়ে।জুঁই বলছে এটা ওর ভাগের আর জবা বলছে ওর।কলি যে ওদের সামনে কখন ধরে দাঁড়িয়ে আছে সে দিকে কোনও খবরি নেই কারোর।তাই কলি সিঙ্গারাটা নিয়ে খেতে খেতে নিজের রুমের দিকে চলে গেলো।জুঁই জবার এতোক্ষন পর হুস আসলো।কলি এবারও ওদের ঝগড়ার ফয়দা নিলো।দুজনেই কলিইইই…… বলে চিল্লিয়ে উঠলো।এতোক্ষন পর মামুন ও বুঝতে পারলো এখন রুমের মধ্যে ছোটখাটো একটা টর্নেডো হবে।জুঁই জবা কলিকে মারার জন্য ওর পিছে ছুটতে লাগলো।কলিও বুঝতে পেরে দৌঁড়ে ওর ফুফুর পিছনে লুকিয়ে পড়লো।কলির ফুফুও কলিকে আড়াল করে ফেললো।এই থাম,খবরদার আমার মেয়ের দিকে যদি এককদম আসিস।তাহলে কিন্তু তোদের দুজনকেই আজ কিছুই খেতে দেবো না।
_____মা তুমি সবসময় কলির সাপোর্ট করো কেনো।জানো ও কি করেছে।
____আমার জানতে হবে না।যা তোরা এখান থেকে আমার মেয়েটার সাথে বাজাবাজি করার বাহানা খুঁজোস।
সত্যি বলছো ফুফু তুমি।তুমি আমাকে বেশি আদর করো বলে ওরা আমাকে হিংসা করে।কলি ওর ফুফুকে জড়িয়ে ধরে একটু ন্যাকামি করে বলছে।
|
সেলিনা বেগম কলির বাবার আপন ছোট বোন।আজ সকালে কলির বাবা সেলিনা বেগমকেই দেখতে গিয়েছিলো।আসলে ভাইকে নিজের অসুস্থতার মিথ্যা কথা বলে নিজের বাড়ীতে আসতে বাধ্য করলো।ব্যস্ততার অজুহাতে কলির বাবা অনেকদিন ধরেই বোনের সাথে দেখা করতে পারছিলো না,তাই ভাইকে দেখার জন্যই একটু মিথ্যা বলতে ক্ষতি নেই সে মনে করে।কলিকে ছোট কাল থেকে খুব আদর করে,এমনকি নিজের মেয়েদর থেকে বেশি।সে তো আশায় আছে মামুনের বউ করে কলিকে সে নিজের কাছেই একেবারে নিয়ে যাবে।
চলবে………
[অহংকার স্রষ্টাকে মানায়,সৃষ্টিকে নয়।মহান আল্লাহ অহংকারীকে পছন্দ করে না।অহংকারী ব্যক্তি নিজেই নিজের পতনের কারন হয়।]