প্রেমময় প্রহরে তুমি পর্ব-১৯ এবং শেষ পর্ব

0
3512

#প্রেমময়_প্রহরে_তুমি💖
#ইশা_আহমেদ
#অন্তিম_পর্ব

২২.
সকালে ঘুম থেকে উঠে জিরিশা নিজেকে মাহাজের বাহুডোর আবিষ্কার করে।জিরিশা মাহাজের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে পরে।ফ্রেশ হয়ে এসে শাড়ি ঠিক করে।চুলগুলো হাতখোপা করে নেয়।সকালের রান্না করতে হবে তাকে।সে মাহাজের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ।মাহাজকে ঘুমন্ত অবস্থায় নিষ্পাপ দেখাচ্ছে।জিরিশার মাহাজের কপালে চুমু দিয়ে বেরিয়ে পরে রুম থেকে।

রান্নাঘরে এসে সবার পছন্দের সব কিছু রান্না করে।রান্না করে মাহাজের কফি বানিয়ে রুমে আসে।মাহাজ ওয়াশরুম থেকে বেরিয়েছে মাত্র ফ্রেশ হয়ে।জিরিশা মুচকও হেসে বলে,
“এই জনাব আপনার কফি”

মাহাজ জিরিশার কাছে এসে ওর কোমড় জড়িয়ে ধরে,কোমড়ে স্লাইড করতে করতে বলে,
“উফ এই ঘামে ভেজা শাড়ি আর বিরক্তিকর চাহুনিও আমায় ঘায়েল করছে বউ।কি করবো বলো তো”

জিরিশা মাহাজকে সরানোর চেষ্টা করে।কিন্তু মাহাজের শক্তির সাথে বরাবরের মতোই পারে না।জিরিশা মাহাজকে বলে,

“শুনুন আপনি আর কখনো কোনো মেয়ের কথা বলবেন না আমার সামনে আমার ভীষণ কষ্ট হয়।কালকে একটু বেশি রিয়াক্ট করে ফেলেছি।কি করবো বলুন আপনার সাথে ওই মেয়েটাকে দেখে সয্য হচ্ছিল না।আমি কখনোই আপনার অতীতের কথা ভেবে বর্তমান নষ্ট করবো না।”

জিরিশার কথা শেষ হতেই মাহাজ আলতো করে ওর ঠোঁটে চুমু দিয়ে ছেড়ে দেয়।তারপর বলে,
“আমি এখন শুধু মাত্র একটি নারীতে আসক্ত আর সে হলো তুমি।আমি তুমি ব্যাতীত এই তিন চার বছরে অন্যকোনো মেয়ের দিকে ফিরেও তাকায়নি”

“ওহ ভালো কথা আপনি আমার ওই ছবি কোথায় পেলেন আর তার থেকে বড় কথা আপনি আমায় তখন থেকে পছন্দ করেন?”

মাহাজ জিরিশার দিকে ঝুঁকে ওর নাকে নাক ঘষে বলে,
“তোমাকে সেদিন শাড়ি পড়া দেখে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম আমি।মনে হচ্ছিল তোমাকে নিজের সামনে বসিয়ে দেখি।কিন্তু তা তো ডখন সম্ভব ছিলো না”

জিরিশা লাজুক হাসে।মাহাজও জিরিশাকে হাসতে দেখে হাসে।এই হাসির প্রেমে বারবার বারংবার পরতে চায়সে।ইশ কি সুন্দর সেই হাসি।যা দেখলেই মাহাজের অন্য নারীর দিকে তাকানোর ইচ্ছা মরে যায়।

২৩.
আজকে ফাহার গায়ে হলুদ।জিরিশার শরীরটা ক’দিন যাবত খারাপ।মাহা ঘুরছে কিছু খেতে ইচ্ছে করে না।মাছ দেখলে বমি আসে।জিরিশা বুঝতে পারছে না কেনো এমন হচ্ছে।মাহাজে সে এ ব্যাপারে কিছুই বলেনি।জিরিশা চাইছে না ফাহার বিয়েতে কোনো ঝামেলা হোক।জিরিশা আর শিরিন দু’জনে মিলে সব দিক সামলাচ্ছে।মাহাজ আর মিহান বাইরের ডেকোরেশন দেখছে।

জিরিশার অনেক খারাপ লাগছিলো তাই সে রুমে এসে একটু রেস্ট নেয়।আবারও কাজে হাত লাগায়।ফাহার ভীষণ মন খারাপ।সে চেয়েছিলো জিরিশা তার বিয়ের সময় তার পাশে থাকুক সম্পূর্ণ সময়।কিন্তু এখন তার ভাবি হওয়ার পর থেকে কেমন পাল্টে গিয়েছে।সেই চঞ্চল জিরিশা আর নেই ভীষণ বুঝদার হয়ে গিয়েছে।বিয়ে হলে হয়তো সবাই এমন বুঝদার হয়ে যায়।

ফাহা মন খারাপ করে বসে ছিলো।শিরিন এসে মেয়েকে মন খারাপ করে বসে থাকতে দেখে বলে,
“কি হয়েছে ফাহা তোর আজকে গাশে হলুদ আর তুই এখানে মন খারাপ করে বসে আছিস”

ফাহা বিষন্ন মন নিয়ে বলে,
“আমি যা চেয়েছি তা কি হচ্ছে আম্মু।দেখো জিরিশা এখন আমার পাশে নেই আমি চেয়েছিলাম ও সারাটা সময় আমার পাশে থাকুক এখন দেখো বউয়ের মতো কাজ করছে”

শিরিন আলতো হেসে ফাহার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
“আমি পাঠাচ্ছি ওকে দাড়া।ওর শরীরটাও খারাপ ক’দিন ধরে খেয়াল করছি।কিন্তু তোর বিয়ের জন্য মাহাজকে বলা হয়নি।আর ও তো জানিসই কখনোই মুখ ফুটে বলবে না”

ফাহা খুশি হয়।শিরিন যাওয়ার কিছুক্ষণ পর জিরিশা আসে।জিরিশা তো সেকি বকাবকি ফাহাকে।ফাহা শুনেছে আর হেসেছে।ওরা এখন পার্লারে যাবে সাজতে।জিরিশা শাড়ি নিয়ে নেয়।বাড়ির বউ সে এখন তাই শাড়ি পরছে।পার্লারে জিরিশা আর ফাহা সাজতে বসেছে।জিরিশা মাথা চক্কর দিয়ে উঠে।বমি পায় ও দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। খানিক্ষন বাদে ফিরে আসে।ফাহা ওকে দেখে বলে,
“তোর কি বেশি শরীর খারাপ করছে”

জিরিশা হেসে না বলে।ওরা সেজে বাসায় চলে আসে।ফাহা রুমে গিয়ে বসে অনুষ্ঠান শুরু হতে দেরি আছে।জিরিশাও নিজের রুমে যায়।আশেপাশের চিৎকার চেচামেচি ভালো লাগছিলো না আরো গরম পরেছে।জিরিশা রুমে এসে লক করে শাড়ির আচলটা সরিয়ে শুয়ে পরে।ভারি শাড়ি পরায় অস্থির অস্থির লাগছিলো।মাহাজ বেলকনিতে দাঁড়িয়ে দেখছিলো সব কিছু।ভেতরে ঢুকে জিরিশাকে ওই অবস্থায় দেখে থমকায়।

মাহাজ ঘোরে চলে যায়।জিরিশার কাছে এসে ওর উপর আধশোয়া হয়ে ওর গলায় মুখ ডোবায়।জিরিশা হঠাৎ এমন হওয়ায় ভড়কে যায়।পরে নিজেকে সামলে নেয়।জিরিশা ঠোঁটের দিকে এগোতে থাকে মাহাজ।ঠোঁটে ঠোঁট মেলাতেই জিরিশা ধাক্কা দেয় মাহাজকে।জিরিশা দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।মাহাজ ভয় পেয়ে যায়।সেও ওয়াশরুমে জিরিশার কাছে আসে।জিরিশা বমি করছে।

মাহাজ অস্থির হয়ে যায় জিরিশা অবস্থা দেখে।মাহাজ অস্থির হয়ে বলে,
“কি হয়েছে বউ,তুমি কি অসুস্থ”

জিরিশা কিছু বলে না।বলার শক্তি নেই তার।সকাল থেকে অনেকবার বমি করেছে সে।জিরিশা মাহাজের বুকে ঢলে পরে।মাহাজ ভড়কে গিয়ে ওকে কোলে তুলে নেয়।কোলে তুলে বিছানায় শুইয়ে দেয়।জিরিশা মাহাজকে ভাঙা গলায় বলে,
“আআআপনি এএএককটু জড়িয়ে ধরবেন আমায়?”

মাহাজ জিরিশা পাশে শুয়ে ওকে বুকে আগলে নেয়।জিরিশাও গুটিসুটি মেরে শুয়ে থাকে মাহাজের বুকে।কিছুক্ষন পর মাহাজ নরম কন্ঠে জিরিশাকে বলে,
“তুমি কি অসুস্থ”

জিরিশা মাথা নাড়ায়।মাহাজ বলে,
“কতদিন ধরে এমন হচ্ছে তোমার”

“এই তো এই কয়েকদিন ধরে।”

মাহাজ রেগে যায়।এতোদিন ধরে ও অসুস্থ আর সে তাকে কিছু জানায়নি।মাহাজ দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
“বলোনি কেনো আমাকে এতোদিন”

জিরিশা ক্লান্ত কন্ঠে বলে,
“আপনি শান্ত হন।ফাহার বিয়ে এখন যদি আপনাকে কিছু বলতাম আপনি তো হইচই বাঁধিয়ে ফেলতেন তাই কিছু বলিনি”

“ওকে চলো তোমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে।”

মাহাজ উঠতে নিলে জিরিশা বাঁধা দিয়ে বলে,
“প্লিজ আজকে না কালকে যাবো প্রমিস ফাহাকে বিদায় দিয়েই যাবো।”

মাহাজ কিছু বলে না।জিরিশার দিকে গম্ভীর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে শুয়ে থাকে।রাতে ফাহার গায়ে হলুদের সময় মাহাজ জিরিশাকে নিজের কাছ ছাড়া করেনি।এক জায়গায় বসিয়ে রেখেছে।জিরিশা ফাহাকে হলুদ মাখিয়ে এসেছে মাত্র।ফাহা জিরিশাকে ভূত বানিয়ে ছেড়েছে।জিরিশা রুমে চলে এসেছে।রুমে আসতেই মাহাজ এসে রুম লক করে দেয়।

জিরিশা চমকে মাহাজের দিকে তাকায়।মাহাজ এসে জিরিশার কোমড় জড়িয়ে ধরে কাছে এনে ঝুঁকে ওর হলুদ লাগানো গাল ঘষে দেয়।জিরিশা কেঁপে উঠে।মাহাজ জিরিশাকে ছেড়ে দেয়।

আজকে ফাহার বিয়ে।জিরিশার ভালো লাগছে না।সে মোটেও মেনে নিতে পারছে না ফাহা চলে যাবে।জিরিশা রুমে বসে আছে দরজা বন্ধ করে।মাহাজ অনেকবার ডেকে গেলেও দরজা খুলেনি ও।মাহাজ নিজের কাছে থাকা চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢোকে।জিরিশা কাঁদছিলো।মাহাজ এসে ওকে জড়িয়ে ধরে।জিরিশা ঝাপিয়ে পরে মাহাজের বুকে।

জিরিশা কাঁদতে কাঁদতে ভাঙা গলায় বলে,
“আআআমি ফাহাকে কোথাও যেতে দেবো না আপনি ওদের আসতে নিষেধ করে দিন না প্লিজ”

মাহাজ মুচকি হাসে।মেয়েটা বড্ড ভালোবাসে ফাহাকে।সে জিরিশার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
“কি বলছো তুমি বউজান একটু ভাবো মেয়ে ও অন্যের বাড়ি তো যেতেই হবে তুমি এমন করলে হবে বলো তো”

“কি করবো বলুন ও যে পর হয়ে যাবে কথাটা কল্পনাও করতে পারি না আমি।”

“কে বলেছে বোকাপাখি ও পর কেনো হবে।ও তো শুধু মেহেরাবদের বাসায় যাচ্ছে।এই দেখো তুমিও কিন্তু আমার কাছে চলে এসেছো তাও কি তোমার তোমার ভাই আম্মু আব্বুর প্রতি ভালোবাসা কমেছে”

জিরিশা মাথা নাড়ায়।মাহাজ হাসে।জিরিশা রেডি হতে থাকে।সে আজকে অনেক সাধারণ একটা শাড়ি পরে।রুম থেকে বের হয়ে ফাহার কাছে যায়।জিরিশার বারবার চোখ ভিজে আসছিলো।ফাহার বিয়েটা হয়ে যায়।এবার বিদায়ের পালা।জিরিশা তো কেঁদেই যাচ্ছে।শিরিনও কাঁদছে।মাহাজ কি করবে ভেবে পায় না।

ফাহা সবাইকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে।শেষে জিরিশার কাছে আসলেই।জিরিশা ওকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।কাঁদতে কাঁদতে দু’জনেরই হেচকি উঠে গিয়েছে।ওদের ওইভাবে কাঁদতে দেখে একজন মহিলা বলে,
“ফাহা একটা ভাবি পেয়েছে ভাগ্য করে”

অন্যমহিলাটা বলে,
“আরে তুমি জানো না ওরা বেস্টফ্রেন্ড ছোটবেলা থেকে”

ফাহা চলে গিয়েছে।জিরিশা হুট করে শরীরটা খারাপ হয়।ও মাথা ঘুরে পরে যেতে নেয় তার আগেই মাহাজ ওকে ধরে ফেলে।শিরিন দৌড়ে আসে।মাহাজ ওকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে আসে।জিরিশার জ্ঞান ফিরতেই মাহাজ ওকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে আসে।ডাক্তার ওকে দেখে কিছু টেস্ট দেয়।বলে কালকে নিয়ে যেতে এসে।

মাহাজ জিরিশাকে নিয়ে ফুটপাত দিয়ে হাঁটছে।জিরিশা জেদ করেই এসেছে।মাহাজ মোটেও আসতে চাইছিলো না।ওরা দু’জন কিছুটা সময় একান্তে কাটিয়ে বাসায় চলে যায়।

২৩.
ফাহা বসে আছে ফুলে সজ্জিত রুমে।সেও এই কয়েক মাসে মেহেরাবকে ভালোবেসে ফেলেছে।দরজা খোলার শব্দে ফাহা নড়েচড়ে বসলো।মেহেরাব এসে ফাহার ঘোমটা তুলে বলল,,
“মাশাআল্লাহ আমার বউকে আজ পরির মতো সুন্দর লাগছে”

ফাহা লজ্জা পায়।সে মাথা নিচু করে লাজুক হাসে।মেহেরাবও হেসে বলে,
“এই ভারি জামাকাপড় পাল্টে এসো দুজনে দু’রাকাত নফল নামাজ পরে নেই।”

ফাহা মাথা নাড়ায়।ওরা দুজন নামাজ পরে।বেলকনিতে গিয়ে বসে।মেহেরাব ফাহাকে নিজের কোলে বসায়।ফাহা লজ্জা পায়।মেহেরাব তা দেখে আলতো হেসে বলে,
“তুমি এতো লজ্জা পাও কেনো বউ”

বউ শব্দটা মেহেরাবের মুখ থেকে শুনে শরীরে শিহরণ বয়ে যায় ফাহার।সে বলে,
“আপনি জানেন না মেয়েরা একটু লজ্জা বেশিই পায়”

মেহেরাব অসহায় কন্ঠে বলে,
“এবার তো বলে দাও ভালোবাসো”

ফাহা তাকায় মেহেরাবের দিকে।তারপর হেসে বলে,
“আমি আপনাকে ভালোবাসি মেহেরাব”

মেহেরাব খুশিতে ফাহাকে জড়িয়ে ধরে তারপর ওর সারা মুখে চুমু খায়।ফাহা লজ্জায় লাল হয়ে যায়।ফাহার কথা শুনে মেহেরাব মনে হয় আকাশের চাঁদ পেয়ে গিয়েছে।ওরা বসে চন্দ্রবিলাস করতে থাকে।

২৪.
মাহাজ সকাল সকাল বেরিয়েছে রিপোর্ট আনতে।ওর ভীষণ ভয় করছে।ডাক্তারকে রিপোর্ট দেখাতেই সে হেসে বলে,
“মিস্টার খান আপনি বাবা হতে চলেছেন”

মাহাজ স্তব্ধ হয়ে যায়।সে বাবা হবে।এ কেমন অনুভূতি।মাহাজ এলোমেলো ভাবে রিপোর্টটা নিয়ে বাসায় চলে আসে।জিরিশা তখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল খোপা করছিলো।মাহাজ এসেই ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে চুল খুলে তাতে মুখ ডোবায়।জিরিশা কেঁপে উঠে।জিরিশা নিজের কাঁধে তরল কিছু অনুভব করতেই মাহাজের দিকে ফিরে।মাহাজকে কাঁদতে দেখে থমকায় জিরিশা অস্থির হয়ে বলে,

“কি হয়েছে মাহাজ বলুন আমায় কাঁদছেন কেনো”

মাহাজ কথা বলে না জিরিশাকে ঝাপটে ধরে বুকের সাথে মিশিয়ে রাখে।জিরিশার মনে পরে রিপোর্টের কথা।ও মাহাজকে কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,

“আমার কি কোনো বড় রোগ হয়েছে।রো গ হলে কি আর করার আপনি একটা বিয়ে করতে পারবেন।নতুন লাল টুকটুকে বউ আনবেন হ্যা”

মাহাজ রেগে বলে,
“চুপ করবে তুমি কি ফালতু কথা বলছো”

“তো কাঁদছেন কেনো আপনি।”

মাহাজ জিরিশাকে বিছানার উপর বসিয়ে।ওর পেট থেকে শাড়ি সরিয়ে পেটে হাত রেখে কিছু অনুভব করতে চায়।জিরিশা অবাক হয়ে মাহাজের কান্ড দেখছে।মাহাজ নেশাক্ত কন্ঠে বলে,
“জিরিশাপাখি”

জিরিশা কেঁপে উঠে।মাহাজ পেটে হাত রেখেই বলে,
“এখানে আমার অস্তিত্ব আছে বউ।আমাদের ভালোবাসার ফসল।তুমি আমায় আমার জীবনের সেরা অনুভূতির সাথে পরিচয় করালে।ধন্যবাদ তোমাকে।”

জিরিশা থমকে যায়।সে মা হবে।তার ভেতরে ছোট্ট একটা প্রান আছে ভাবতেই আনমনে পেটে হাত চলে যায়।জিরিশার চোখ দিয়ে পানি পরে।সে মুছে নেয়।মাহাজ রুম থেকে বের হয়ে শিরিনকে খবরটা দিতেই শিরিন তো মহাখুশি।ফাহাকেও জানায় মাহাজ খবরটা।ফাহা তো ভীষণ খুশি।

রাতে মাহাজ জিরিশাকে নিয়ে বসে আছে বেলকনিতে।মাহাজ বলে,
“তোমায় ধন্যবাদ বউ আমার জীবনে আসার জন্য।আমাকে ভালোবাসার জন্য।আমাকে বাবা হওয়ার অনুভূতির সাথে পরিচয় করানোর জন্য।”

জিরিশা ও হেসে বলে,
“আপনাকে ধন্যবাদ মাহাজ আমার জীবনকে আলোকিত করার জন্য।”

মাহাজ চারপাশে তাকে বলে,
“আজকের পরিবেশটাও প্রমময় বউ।আমার প্রতিটা #প্রেমময়_প্রহরে_তুমি টাকে চাই।আমার তুমি হলেই চলবে আর কোনো মেয়েকে প্রয়োজন”

“মাহাজ”

“হুম বললো”

“আজকে আমাকে একবার ভালোবাসি বলবেন।আমি জানি আপনি আমায় ভীষণ ভালোবাসেন কিন্তু একবার আপনার মুখ থেকে শুনতে চাই”

মাহাজ আলতো হেসে জিরিশার কানে ফিসফিস করে বলে,
“আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি জিরিশাপাখি”

জিরিশা হাসে।সে মাহাজের বুকে মাথা রেখে বলে,
আমিও আপনায় ভালোবাসি প্রিয়।

#সমাপ্ত~

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে